আজরাঈলের মৃত্যু.....!!!
লিখেছেন লিখেছেন কাহাফ ২১ অক্টোবর, ২০১৪, ০৭:২৪:২৩ সকাল
হিজরী ৬০২ সাল। বিশাল ইসলামী সম্রাজ্যের প্রাণকেন্দ্র রাজধানী বাগদাদ।
এই সম্রাজ্যেরই একজন উচ্চপদস্হ রাজ কর্মকর্তা 'ত্বাশতাকিন'। জাগতিক মর্যাদার সাথে সাথে পরকালীন সুউচ্চ মর্যাদার আকাংখা পুরণার্থে- মহান আল্লাহর ঘরে ২২ বার হাজিরা দিয়ে আমলের সম্পদও বৃদ্ধি করে চলেছেন বয়সের সাথে পাল্লা দিয়ে।এখন তার বয়স ৯০ বৎসর।
"তোমরা ভ্রমন করে করে আল্লাহ তায়ালার সৃষ্ট অপার সৌন্দর্য ও নান্দনিকতা অবলোকন করে হ্রদয়ে উপলব্ধি কর।"
ঐশী নির্দেশনায় অনুপ্রাণিত হয়ে ভ্রমনে বের হলেন,সৃষ্টির বৈচিত্রতা দেখছেন আর সেজদাবনত হচ্ছে তনোমন! কত পরাক্রমশালী সৌন্দর্যময় আল্লাহ!
সোবহানাল্লাহ!সোবহানাল্লাহ!!সোবহানাল্লাহ!!!
দজলা তীরবর্তী সবুজাভ মনোরম এক জায়গা পছন্দ হয়ে গেল,কিনতে না পেরে ৩০০ বৎসরের জন্যে ভাড়ায় চুক্তিপত্র করে নিলেন।
এখানে সুন্দর একটা বাড়ী করবেন,মনের মাধুরী দিয়ে বাড়ীটা কে সাজাবেন,জীবনের অবশিষ্ট সময় এখানেই কাটাবেন।
খবর টা ছড়িয়ে গেল পুরো বাগদাদময়।
তৎকালে জাগতিক-দ্বীনি সব বিষয়ের বিদ্যার্জনের কেন্দ্রস্হল ছিল এই বাগদাদ। 'অজানা'র আধার কে চিরতরে বিদূরীত করে 'জানা'র প্রজ্জ্বলিত শিখা সমুন্নত রাখার গুরুদায়িত্ব পালন করছিলেন কয়েক জন।তাদের একজন 'তাবিহা'এক জন মহান অধ্যাপক । যিনি স্বীয় গৃহে হাদিস-তাফসির-ফেক্বাহ-আধ্যাতিকতা সহ বিভিন্ন বিষয়ে তালিম দিতেন।
ছাত্রদের মাঝে তাক্বওয়া(প্রকৃত আল্লাহভীতি) জাগিয়ে তুলতে নিরন্তর প্রচেষ্টা চালাতেন।আপন সন্তানদের মতই ছিল ছাত্ররা তার কাছে। ছাত্রদের শোরগোলে মুখরিত থাকতো অধ্যয়ণাংগিনা। হাস্যরস-কৌতুকের মোড়কেও বিষয় টা ছাত্রদের মগজে গেথে দিতেন।
একদিন অধ্যাপনার এক পর্যায়ে খোশ মেজাজে ঘোষণা করলেন: প্রিয় ছাত্ররা আমার! তোমাদের জন্য একটা শুভ সংবাদ আছে,আর তা হলমালাকুল মউত আজরাঈল' মরে গেছে!
উপস্হিত সবাই বিশ্ময়ে হতবাক! কেমন খবর এটা! এমন তো হতেই পারে না!
কয়েকজন জিগ্যেস করল- এটা কিভাবে সম্ভব হতে পারে?
স্মীত হেসে জবাব দিলেন তিনি- তোমারা শুননি,ব্যাটা 'ত্বাশতাকিন' ওর বর্তমান বয়স ৯০ বছর, ৩০০ বছর মেয়াদী চুক্তিতে জমি ভাড়া নিয়েছে,সেখানে বাড়ী বানিয়ে সে থাকবে!
সে যদি আজরাঈলের মৃত্যু হয়েছে মর্মে নিশ্চিত না হতো,তাহলে এমন পরিকল্পনা সে কিভাবে নিল?
জবাব শুনে সবাই হাসতে হাসতে হাসির ফুয়ারা বানিয়ে দিল।।
বিষয়: বিবিধ
১৮২০ বার পঠিত, ৩৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অনেক ভালো লাগলো আপনার এ শিক্ষনীয় গল্প; আমরা সবাই দুনিয়াতেই যেন বেহস্ত চাই; আমার নিজের আশা আকাঙ্খাও কম না!
নিচে আমার মন্তব্যটি দেখার অনুরোধ
অধ্যয়ণে একগুয়েমী কাটাতে সামান্য হাসি-মস্করার বিকল্প নেই আসলেই।
আপনার চাহিত বেহেস্তী সুখ যেন আল্লাহ দান করেন এই দোয়া মহান রবের কাছে।
আশা-স্বপ্ন ই তো মানুষ কে বাচিয়ে রাখে!
অনেক ধন্যবাদ ও জাযাকাল্লাহ শ্রদ্ধেয় বুড়া মিয়া ভাই......
অনেক ভালো লাগলো আপনার এ শিক্ষনীয় গল্প।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
উৎসাহী দুরন্ত মন্তব্যের তীব্রতায় আমিও আপ্লুত,সামনে বাড়ার শক্তি যোগাচ্ছে যেন।
আল্লাহ আপনাকে যথোপযুক্ত প্রতিদান দান করুন, আমিন।
ভালো থাকবেন শ্রদ্ধেয় মামুন ভাই।
জাযাকাল্লাহু খাইরান.....।
নিচে আমার মন্তব্যটি দেখার অনুরোধ
ভালো লাগার অনুভূতি রেখে যাওয়ায়
আপনিও অজস্র ধন্যবাদ ও জাযাকাল্লাহ জানবেন।
ভালো লাগার ফুল-ঝুড়ি ছড়িয়ে গেলেন!
আপনাকেও ধন্যবাদ ও জাযাকাল্লাহ
নিচে আমার মন্তব্যটি দেখার অনুরোধ
পিছে পড়ে এই দুনিয়ায়-
পরকাল কে ভূলে যায়!
মন্তব্যের ময়দানে আপনার পদচারণা বরাবরই সাহস যোগায় আমাকে।
ধন্যবাদ অজস্র ও জাযাকাল্লাহ.....।
সম্ভবতঃ এটি একটি হাদীসে রাসুলﷺ অথবা
কোন সাহাবীর(রাঃ) উক্তি
সুতরাং......
দুনিয়াবিমুখ চিন্তা মুসলমানদের অধোপতনেরও অন্যতম কারণ বটে!
অনেক ধন্যবাদ, জাযাকুমুল্লাহ . .
অনেক সুন্দর অনুভূতি রেখে গেলেন শ্রদ্ধেয় ইবনে আহমদ ভাই!
অনেক ধন্যবাদ ও জাযাকাল্লাহ আপনাকে।
এমনও হতে পারতো-
ঐ স্থানটি তার বংশধরদের জন্য বাছাই করা হয়েছিল!!
[ইসলামী সাম্রাজ্যের ?] একজন রাজকর্মচারী যতই গাফেল ও অপরাধপ্রবণ হোক না কেন, অবশ্যই ৩০০বছর বাঁচার আশা করেনি- একথা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়!!
অথচ আপনিই বলেছেন-
জাগতিক মর্যাদার সাথে সাথে পরকালীন সুউচ্চ মর্যাদার আকাংখা পুরণার্থে- মহান আল্লাহর ঘরে ২২ বার হাজিরা দিয়ে আমলের সম্পদও বৃদ্ধি করে চলেছেন বয়সের সাথে পাল্লা দিয়ে।
সুতরাং কোথাও ভুল হয়ে থাকতে পারে
অধ্যাপক তাবিহা [আমি তাঁকে জানিনা] হয়তো তাঁর শিক্ষাদানে ঠিকই ছিলেন-
আল্লাহতায়ালাই ভালো জানেন!
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ
ওয়ালাইকুমুস্ সালাম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ......
দু'জনেই আল্লাহওয়ালা ছিলেন, ত্বাকওয়া মর্যাদায় কম-বেশী ছিলেন। ত্বাকওয়া বিষয়ে আগেকার যমানায় কেমন প্রতিযোগীতা হতো তা বুঝাতেই আলোচ্য পোস্টের অবতারণা।
অনুসন্ধানী বিশ্লেষণ মুলক সুন্দর মন্তব্যের জন্যে অনেক ধন্যবাদ ও জাযাকাল্লাহু খাইরান.....শ্রদ্ধেয় আবু সাইফ ভাই।
আপনার উৎসাহী মন্তব্য আমার সব সময়ের প্রেরণা হয়ে থাকবে।
ধন্যবাদ ও শুভ কামনা।
আপনার নান্দনিক দুর্দান্ত মন্তব্যে আমি আপ্লুত।
সামনে কদম বাড়াতে সাহস যোগাবে আমায়।
শুকরিয়া অজস্র সাথে সাথে'জাযাকুমুল্লাহু খাইরান'জানাচ্ছি শ্রদ্ধেয় ফখরুল ভাই।
শ্রদ্ধেয়া মাহবুবা সুলতানা লায়লা আপু,
আপনার রেখে যাওয়া বারে বারে ভাল লাগার অনুভূতি আমাকে অনুপমেয় সাহসী করে।
ধন্যবাদ-জাযাকাল্লাহর সাথে সাথে আপনার জন্যে শুভ কামনা রইল।
অনুভূতি রেখে যাওয়ায় অনেক ধন্যবাদ আপনাকে,ভালো থাকবেন অনেক.....।
আমরা আসলেই ভুলে যাই আমাদের দিন সিমাবদ্ধ।
সীমাবদ্ধ দিন নিয়েও সীমাহীন আশা আমাদের!
সুন্দর মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ ও জাযাকাল্লাহু খাইরান.....।
আপনাদের উৎসাহে কিছুটা পথ চলা আমার!
অনেক অনেক ভাল থাকুন-খোদার কাছে এই দোয়া করি! আমার জন্যেও দোয়া চাই ভাই!
ভাইয়া,
চিল্লায় গিয়ে মারে গেলে সয়ং আল্লাহ জান কবজ করেন ফেরেশতার দরকার হয়না।
কোথায় ছিলেন ভাই এতো দিন? মাশুকীতে মজে ছিলেন নাকি?
আপনার অভাব অনুভূত হয়েছে বারবার!
এখানেও আপনার রসাত্মক উপস্হিতি আনন্দ দিল ছালছাবিল ভাই!!!
এটি আমার উক্তি নয়। এটি তাবলিগ জামাতের আমীরের উক্তি
মাশুকি নেই
দ্বীন সম্পর্কে কম জানা লোকই এমন উক্তি করতে পারে! সে আমির হোক বা গোলাম!
আর মাশুকি মিলে যাক-এই শুভ কামনা রইল আপনার জন্যে!!
মন্তব্য করতে লগইন করুন