সৌদিতে চার জনের শিরচ্ছেদ - অত:পর
লিখেছেন লিখেছেন প্রবাসী মজুমদার ২০ আগস্ট, ২০১৪, ১০:৪৫:৩৫ সকাল
আজ ২০শে আগষ্ট ২০১৪। ঢাকা টাইমস এর বরাত দিয়ে বিডি টুডেতে প্রকাশিত 'সৌদিতে চার জনের শিরচ্ছেদ' শিরোনামে লিখিত পোষ্টের বিভিন্ন বার্তা সংস্থা আর স্বার্থাম্বেষী মানবাধিকার সংস্থার মায়াকান্না দেখে বিস্মিত হলাম। এরা বরাবরের মতই এটিকে হিংসাত্মক বা বর্বর আইন বলে চিত্রায়িত করার অপচেষ্টা চালিয়েছেন। ইসলামের যে কোন আইন যতই স্বতসিদ্ধ হোক না কেন, এটির বিরোধীতা করা যেন তাদের নৈতিক দায়ীত্ব।
http://www.onbangladesh.org/newsdetail/detail/200/88168
আমার দেখা সৌদি আরব:
১৯৯১ সালের জুলাই মাস থেকেই সৌদি আরবে কর্মরত আছি। সারবাতলী স্টাবলিশমেন্টে রেন্ট কন্ট্রোলার হিসেবে কাজ করার সুবাদে ইউরোপের প্রায় অধিকাংশ দেশের উচ্চপদস্থ অনেক কর্মকর্তার সাথে মত বিনিময়ের সুযোগ হয়েছিল। প্রায় ৯৫০ টি সজ্জিত(ফার্নিশড) এপার্টমেন্ট নিয়ে গড়ে উঠা এ জনপ্রিয় হাউজিংটিতে বসবাস করত জেদ্দাস্থ অধিকাংশ অফিসের বড় কর্মকর্তারা। পাশাপাশি অবস্থানের কারণে এদের সাথে গড়ে উঠেছিল এক বন্ধুত্ব সম্পর্ক। বিশেষ করে একই আফিসে মিসেন রোজ ওয়াকার আর মিসেস এলিনর নামে দুই ব্রিটিশ ও আামেরিকান হাউজ ওয়াইফ সেলস এক্সিকিউটিভ হিসেবে কাজ করায় এখানে নিয়মিত আড্ডা বসত। সে সব আড্ডায় উঠে আসতো সৌদি আরবে থাকার অনুভুতি, বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় সৌদি আরবের সামাজিক ও রাষ্ট্রায় আইন, আতিথেয়তা ইত্যাদি নিয়ে। এক কথায় ইউরোপ থেকে চাকুরি নিয়ে আসা এসব ইউরোপীয়ান সাধারণ জনগন মনে করে, সৌদি আরব হলে পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ স্থান। এমনটি পৃথিবীর কোন দেশের সাথে তুলনা হয়না।
বাংলাদেশেসহ পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় প্রতিদিন. প্রতি মাসে বা প্রতি বছরে যত লোক রোড এক্সিডেন্ট. খাদ্যভেজাল, গুপ্ত বা প্রকাশ্যে রাজনৈতিক হত্যা, মন্ত্রী মিনিস্টআরদের আইনের মারপ্যাচে লোক হত্যা হয় সৌদি আরবে তার ৫ পাসেন্ট লোকও মরেনা।
এটি স্বতসিদ্ধ যে, যে কোন দেশের স্বার্থরক্ষার জন্য যদি সরকার মৃত্যুদন্ড জানিত কোন আইন জারি করে থাকে, আর সে দেশের কোন নাগরিক ক্ষুদ্র স্বার্থের জন্য নিজের শিরচ্ছেদের তোয়াক্কা না করে সেটিতে জড়িয়ে পড়ে. এসব লোকের শিরচেছদের জন্য মায়াকান্না করাও এক ধরণের মানবতাবিরোধি কাজ। কারণ যে সমন্ত লোক লক্ষ লক্ষ মানুষকে বিপথে নেয়ার জন্য কাজ করে তাদের এমনই হওয়া উচিত।
সৌদি আরবে বর্তমানে এমন আইন আছে বলেই সেখানে চুরি ডাকাতি রাহাজানি, দুনীতি, রাজনৈতিক নেতা কর্তৃক হত্যা, বিচারবিহীন হত্যাকান্ড কোন কিছুই নেই। এমন কি বন্যার সময় জেদ্দার গুয়েজাতে অনেকগুলো লোক মারা যাওয়ার কারণে সাবেক মিউনিসিপাল্টি প্রধাণকে ধরে এনে জেলে পুরে দেয়া হয়েছিল।
আমাদের দেশে প্রতি বছর হাজার হাজার লোক বিকলাঙ্গ লঞ্চডুবিতে মারা গেলেও মন্ত্রী উল্টো বলে বসে আমি কি লঞ্চের চালক ছিলাম? ছি। একজন মন্ত্রী এতবড় দায়ীত্বহীন হতে পারে কল্পনাই করা যায়না।
ইসলামের যে সব সৌন্দয্যর কারণে মদীনায় সোনালী রাষ্ট্র তৈরী হয়েছিল, সেসব আজ বাস্তবায়িত হলে লোকেরা দলে দলে ইসলামের দিকে ঝুকবে বলেই এসব মানবাধিকার সংস্থার গায়ে আগুনে লেগে যায়।
মিশরে যখন আর্মি জোর করে ক্ষমতা দখল করে হাজার হাজার লোককে হত্যা করে তখন এদের চোখ বন্ধ থাকে। বাংলাদেশে যখন জুডিশিয়াল কিলিং এ সরকার মরিয়া তখন এরা নিশ্চুপ. বার্মায় লক্ষ লক্ষ লোকের গণহত্যায় এরা নীরব। ফিলিস্তিন হত্যাকান্ড যেন আরব ভুমিতে নীল নক্সা বাস্তবায়নের এক দির্ঘমেয়াদী প্রজেক্ট বাস্তবায়নের স্বপ্ন। ইরাক, ইরান, আফগানিস্তানে যখন আমেরিকানদের বোমারু বিমানের আঘাতে লক্ষ লক্ষ মানুষের খন্ডিত দেহ পড়ে থাকে তখন এরা নিশ্চুপ থাকে। কারণ যাদেরকে হত্যা করা হয়েছে, এরা সবাই মুসলিম। আর এ ব্যাপারে ক্ষমতার লোভে মুসলিম নেতাগুলোও যেন তাদের পরম বন্ধু সেজে ক্ষমতা হারানোর ভয়ে বোবা হয়ে গেছে। এদেরকে ধিক্বার দেয়া ছাড়া আমাদের মত অসহায় জনগনের আর কোন ভাষা নেই ।
সৌদি আরবের রাষ্ট্র পরিচালনায় ইসলামের সাম্য ও ভ্রাতৃত্বের নিদর্শন এসব আইন নিয়ে দালাল সংস্থাগুলো বাড়াবাড়ি না করে নিজের চরকায় তেল দিলেই ভাল হয়। আমাদেরও এখন আর বুঝতে বাকী নেই যে, জাতিসংঘ নামের কলাগাছ সম সংস্থাটির গ্রহন যোগ্যতা অনেক আগেই হারিয়ে ফেলেছে। আর মানবাধিকার সংস্থা মানেই ইসলাম বিদ্ধেশীদের স্বার্থ রক্ষার জন্য গড়ে উঠা দালালদের মহাসংঘ।
বিষয়: বিবিধ
১৬১৬ বার পঠিত, ৫৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সহমত
তথাকথিত মানবতাবাদিরা মাদক চোরাচালানির মত মানুষদের মানবাধিকার নিয়ে চিৎকার করেন।যদিও সত্যই তাদের জন্য চিন্তা থাকত সেক্ষেত্রে তারা তাদের আইনি সহায়তা দিতেন। তার পরিবর্তে তাদের শাস্তি না দেওয়ার জন্য দাবি করেন!!!
কিন্তু হাজার হাজার নারি শিশু হত্যার জন্য এদের কোন কথা নাই।
স্বার্থের জন্য নিজের
শিরচ্ছেদের
তোয়াক্কা না করে সেট
িতে জড়িয়ে পড়ে. এসব
লোকের শিরচেছদের
জন্য
মায়াকান্না করাও এক
ধরণের
মানবতাবিরোধি কাজ।
প্রকৃতপক্ষে যেসব মানবাধিকার গোষ্টী সৌদিয়াতে ক্রিমিনালদের শাজা কর্যকর করাতে চ্যাতানার চামড়াতে বারশ ডিগ্রী তাপমাত্রার তেজস্ক্রীয়তায় চুলকানী শুরু হয়েছে আসলে এরা সবাই সেই সব ক্রিমিনালদের গোত্রভূক্ত।
যাদের কথা বলছেন - তারা নিজেদের পয়সা হালাল করার জন্য দালালীটা করে।
এই শ্রেণীর অর্থ্যাৎ তথাকতিথ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সেনাপতি শামীম ওসমানরা যখন ডজনে ডজনে মানুষকে হত্যা করে পানিতে ডুবিয়ে মারে তখন তারা চুপ থাকেন।
এগুলো বুঝা দরকার - বাংলাদেশের এই সমস্ত পেইড এজেন্টদের কর্মটা এমন।
আপনি সৎ হলে বলতেন সৌদী রাজ ও রাজপরিবারের অসততার জন্যও যেন ইসলামী বিধান কার্যকর করা হয়।
যারা চুরি করে তাদের শাস্তি হওয়াই উচিত।
একদম খাটি একটি কথা বল্লেন ভাই
একদম খাটি একটি কথা বল্লেন ভাই
আর এই জন্য হিজাব, মহিলাদের ড্রাইভিং, মৃত্যুদন্ড, আল কায়েদা, ইরান, ইয়েমেন ইত্যাদি ইস্যু সামনে রেখে রাজাদের ব্যস্ত রাখা হচ্ছে, দূর্বল করা হচ্ছে পাবলিকলী।
প্রয়োজনমত এসব ইস্যুতে প্রেশার দিয়ে ধর্মীয় অথরিটির সাথে কনফ্লিক্ট উসকে দেবে এবং দেশকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করবে।
সৌদী বাদশাহ জানে শরীয়া আইন ই তাকে ইন্টারনাল রিভল্ট হতে প্রটেক্ট করবে - সো সে ইন্টারনালী শরীয়া আইন বলবৎ রেখেছে।
আর এক্সটারনাল রিভোল্ট হতে - শরীয়া আইন যেহেতু তাকে রক্ষা করবে না - সো সে তার নিরপত্তার জন্য আল্লাহর পরিবর্তে, ১৯১৮ হতে ১৯৪৫ পয্যন্ত বৃটেনের উপর, ১৯৪৫ হতে ২০০১ পয্যন্ত ইউ এস এ এবং সাথে খানিকটা বৃটেনের উপর, আর ২০০১ সালের পর হতে ইসরাইলের উপর আর সাথে ইউএস আর ইউকের উপর নির্ভর করছে।
সারা বিশ্বের মুসলমানের পিঠে চুরি মেরে - সৌদ রা যেখানে প্রায় ১০০ বছর ক্ষমতা আকড়ে থাকতে পারলো, ভিসার প্রচলন করে যেখানে মুসলমানদের আগমন ও প্রস্থান নিয়ন্ত্রন করতে পারলো, মুসলমানদের তেলের হক চুরি করে সোনার প্লেন হজম করতে পারলো - সেখানে আপনি কোন অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন?
অর্থাৎ মুসলমানদের মান সম্মান নিয়ে এরা বেশী উন্মুখ ।
অর্থাৎ মুসলমানদের মান সম্মান নিয়ে এরা বেশী উন্মুখ ।
আমিও একমত.....
জাযাকাল্লাহ খায়ের
মন্তব্য করতে লগইন করুন