যে সূর্য আজও উদয় হয় নি...
লিখেছেন লিখেছেন এ,এস,ওসমান ২২ মে, ২০১৫, ০৯:২৫:০৮ রাত
ছোট বেলা হতেই গল্পের বই এর প্রতি আমার একটা আলাদা আকর্ষন ছিল। আর শফীউদ্দীন সরদারের বই হলে তো কোন কথায় নায়। যায় হোক শফীউদ্দীন স্যারের বেশ কিছু বই পড়েছি। বখতিয়ারের তলোয়ার, গোড় থেকে সোনারগাঁ,বার পাইকার দূর্গ, বিদ্রোহী জাতক, দাবানল, সূর্যাস্ত যার মর্ধ্যে উল্লেখযোগ্য।
তার লেখা উপন্যাসে তিনি তুলে ধরেছেন ভারতবর্ষের মুসলমানদের বীর গাঁতা কাহিনী আর হিন্দুদের নজরবিহীন বৈঈমানী।
সূর্যাস্ত উপন্যাসটি ঠিক তেমনি একটা উপন্যাস। উপন্যাসটি ১৭৫৭ সালের পলাশী প্রান্তরে স্বাধীনতা নামক শব্দটি ঢুবে যাওয়াকে নিয়ে লেখা।
সোহেল বেনে এই উপন্যাসের নায়ক। যিনি পেশায় ফেরিওয়ালা হলেও কর্মে বিনাপয়সার গোয়েন্দা।
তার বাবা ১৭৪০ সনে গিরিয়ার ময়দানে নবাব সরফরাজ খানের হয়ে সুবেদার আলিবর্দীর বিরুদ্ধে লড়াই এ নামেন।জগৎ শেঠ ফতেচাদ আর রায় রায়ান আলম চাদের নজরবিহীন বেইমানীর কারনে জয়লাভ করেও নবাব সুজাউদ্দীনের পুত্র নবাব সরফরাজ খান গিরিয়ার ময়দানে পরাজিত এবং নিহত হন। পরে নতুন নবাবের রোষানলে পড়ার ভয়ে পালিয়ে যান পূর্ববঙ্গের প্রত্যন্ত এলাকায়।
৮-১০ বছর যখন আবার মুর্শিদাবাদে আসেন তখন জানতে পারেন,নতুন নবাবকে যারা সিংহাসনে বসিয়েছে সেই তারাই মেতে উঠেছেন নবাবকে সিংহাসন হতে নামানো জন্য। তারা সিংহাসনে বসাতে চায় কোন ননীর পুতুলকে,যে দেশে নামে মুসলমান আর কাজে হিন্দুদের শাসন চালাবে।
সোহেল বেনে সকল ঘটনা জানতে পেরে বন্ধু আব্দুল রশিদের অনুরোধে আর মুসলিম শাসন ব্যবস্থা বজায় রাখার জন্য অতীতকে ভুলে নিজ উদ্বেগে দ্বায়িত্ব নেন স্বেচ্ছাসেবিক গোয়েন্দার।
এরপর সোহেল বেনের অক্লান্ত পরিশ্রম সাথে তন্দ্রাবাঈ এর সহযোগিতা আর পলাশীর প্রান্তে মীরমর্দান ও মোহনলালের সাথে ঈমানদারী সৈনিকদের বীরত্ব; মীরজাফর-রায়দুর্লভ ও জগৎ শেঠের নজরবিহীন বৈঈমানীর কারনে পশ্চিমের আকাশে অস্ত যায় স্বাধীনতা নামক সূর্যটি। যে সূর্য এখনও উদয় হয় নি।কবে যে উদয় হবে তাও বলে যায় নি।
"বই টিতে নবাব আলিবর্দী খান ও শাহজাদা সিরাজউদ্দৌলাহের কথকপনের একটা অংশ,
নবাবঃ মারাঠাদের মূল শক্তি ঐ মীরহাবিব,তাতো তুমি জানোই। মারাঠাদের ডেকে নিয়ে এসে এমন মরিয়া হয়ে আমাদের পেছনে তার লেগে থাকার কারণটারও জানো।একটা অতীত আক্রোশ চরিতার্থ করার হুজুগে ঐ মীরহাবিব টা যে বাংলা মুলুকের কি ক্ষতিটা করলো,তা পরিমাপ করার উপায় নেই।
শাহজাদাঃ জ্বি - জ্বি।
নবাবঃ মারাঠা তোমার স্বজাতি নয়,মারাঠা মুলুক তোমার স্বমুলুক নয়,মারাঠাদের জয় তোমার নিজের গৌরব বা ফায়দা হাসিলের বিষয় নয়,অথচ তুমি একজন মুসলমান আর যে বাংলার সমৃদ্ধির জন্য একদিন তুমি এত করলে,সেই বাংলারই এতবড় সর্বনাশটা করলে তুমি?জিদ যে মানুষের হিতাহিত জ্ঞান লোপ করে,ঐ মীর হাবিবই তার জ্বলন্ত প্রমাণ।
শাহজাদাঃ জ্বি,এটা দিন বরাবর সত্য।
নবাবঃ তার পুরষ্কার সে পেয়েছে।ঐ মারাঠাদের হাতেই,অর্থাৎ রঘুজী ভোসলের পুত্র জানোজীর হাতেই করুণভাবে তাকে জান দিতে হয়েছে।
শাহজাদাঃ তা তো হবেই নানাজান!উন্মাদের পরিণতি এই রকমই হয়।"
বিষয়: Contest_priyo
১৪৭৮ বার পঠিত, ১৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
গতরাতেই আমি উপন্যাসটা আবার পড়লাম।'বিপন্ন প্রহর' এবং 'সুর্যাস্ত' এই দুটি উপন্যাস এই বাংলার তথা উপমহাদেশ এর স্বাধিনতা হরন কিভাবে হয়েছে তার বিবরন দেওয়া হয়েছে। শফিউদ্দিন সরদার একজন শ্রেষ্ঠ বাংলা লেখক হয়েও শুধু তার বিশ্বাস এর জন্য স্বিকৃতি পাচ্ছেন না।
তবে মনে রাখবেন এই বিজ্ঞানটাই সৃষ্টি হয়েছে কোরআন হতে।
আসলে মানুষের জীবনটা হঠাৎ করেই বদলে যায়। আমিও আগে বই এর খুব পোকা ছিলাম।পরে কম্পিউটার কিনার পর হতে বই আর খুব বেশি একটা পড়া হয় না।
সত্যিই মন আঁকুপাকু করছে বাট এখন কিছু বই পড়ছি একসাথে ইনশাআল্লাহ সূর্যাস্ত পড়বো দ্রুত।
আমি বইটি খোজ করেছি অলরেডি বইয়ের দোকানে পাইনি ।
তবে পিডিএফ পেলেও আপাতত কাজ চলবে।
জাজাকাল্লাহ
সফীউদ্দিন স্যারের একটা বই মাত্র পিডিএফ হিসেবে পেয়েছি।
আর সূর্যাস্ত বইটা পড়লে অনেক অজানা বিষয়ে জানতে পারবেন যা শুধু আপনার অন্তরটাকেই কাঁদাবে না, চোখটাকেও কাঁদাবে।
আপনাকেও ধন্যবাদ।
আশা করি সূর্যাস্ত বইটি পড়বেন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন