আজ ২০১৫,৪ মার্চ। আজ হাডিং ব্রীজের শতবর্ষ পূর্ন দিন।
লিখেছেন লিখেছেন এ,এস,ওসমান ০৪ মার্চ, ২০১৫, ১২:০২:২৯ রাত

ঈশ্বরদীর সদর হতে ৮ কিঃ মিঃ উত্তরে পাকশী ইউনিয়নে অবস্থিত এশিয়ার এবং বাংলাদেশের সর্বো বৃহত্তম রেলসেতু হাডিং ব্রীজ। ১৮৮৯ সালে তৎকালীন অবিভক্ত ভারত সরকার আসাম, ত্রিপুরা, নাগাল্যান্ড ও উত্তরবঙ্গের সাথে কলকাতার যোগাযোগ সহজতর করার লক্ষ্যে পদ্মা নদীর উপর ব্রীজ নির্মাণের প্রস্তাব করেন। পরবর্তীতে ১৯০৮ সালে ব্রীজ নির্মাণের মঞ্জুরী লাভের পর বৃটিশ প্রকৌশলী স্যার রবার্ট গেইল্স সেতু নির্মাণের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
হার্ডিঞ্জ ব্রীজ প্রজেক্ট টিম 
হার্ডিঞ্জ ব্রীজ সারা থেকে ৩ মাইল ভাটিতে নির্মিত হয়েছে। ব্রীজ নির্মাণের পূর্বে ফেরী ঘাট ছিল সারাতে। সেই সময়ে ব্রীজটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছিল ৪৭,৬৬৮,৮৬৩.০০ রূপী। প্রায় ২৫,০০০ শ্রমিক এই প্রজেক্টে কাজ করেছিল। স্যার রবার্ট রিচার্ড জেইলস (Sir R. R. Gailes) প্রজেক্টের প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করেছেন।
১৯০৯ সালে ব্রীজ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ১৯১০-১১ সালে পদ্মার দুই তীরে ব্রীজ রক্ষার বাঁধ নির্মাণ হয়। ১৯১২ সালে ব্রীজটির গাইড ব্যাংক নির্মাণের কাজ শুরু হয়। পাশাপাশি ব্রীজটির গার্ডার নির্মাণের কাজ শুরু হয়। অতঃপর ব্রীজটির গার্ডার নির্মাণের জন্য কূপ খনন করা হয়।
নদী শাসনের কাজ চলছে
নির্মিত হচ্ছে স্প্যান


চলছে গার্ডার নির্মাণ কার্যক্রম



১৯১৫ সালের ১ জানুয়ারী পরীক্ষামূলকভাবে কয়েকটি মালবাহী বগি নিয়ে একটি ইঞ্জিন সেতু অতিক্রম করে। জানা যায়, সোনা মিয়া নামে এক চালক প্রথম ইঞ্জিন নিয়ে পাড়িদেন সেতু।
নির্মাণ সমাপন ও পরীক্ষা 

অবশেষে ১৯১৫ সালের ৪ মার্চ তৎকালীন ভাইস লর্ড হার্ডিঞ্জ আনুষ্ঠানিকভাবে ১,৭৯৮.৩২ মিটার বা ৫৯০০ফুট দৈর্ঘ্যের সে সময়ের বৃহত্তম রেল সেতুর উদ্বোধন করেন। 
এরপর ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার মাত্র ৫ দিন আগে ১১ ডিসেম্বর
পাকহানাদার বাহিনী দু’টি স্যাবরজেট বিমান দিয়ে বোমা ফেলে এই ব্রীজে। যার ফলে ১২ নম্বর স্প্যানের মারাত্মক ক্ষতি হয়।


পরে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ভারত ও ব্রিটিশদের সহযোগিতায় ব্রিজের স্প্যানের উদ্ধার ও মেরামত করে রেলগাড়ি চলাচলের উপযোগি করে তোলা হয়। মেরামত করে ভারতের পূর্ব রেলওয়ে শ্রী এইচকে ব্যানার্জী, চীফ ইঞ্জিনিয়ার শ্রী আরকে এসকে সিংহ রায়, ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার, শ্রী পিসিজি মাঝি, এ্যাসিসন্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার এছাড়াও বাংলাদেশের ইঞ্জিনিয়ারদের মধ্যে ছিলেন রেলওয়ের চীফ ইঞ্জিনিয়ার আমজাদ আলী, ইঞ্জিনিয়ার ইন চীফ ইমাম উদ্দিন আহমেদ, ডিভিশনাল সুপার এম রহমান প্রমূখ।
এই ভাবেই স্বাধীনতার সাক্ষী হয়ে যায় ব্রিটিশদের নির্মিত এই হাডিং ব্রীজ।
বিষয়: বিবিধ
২১৬৪ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য






































পাঠকের মন্তব্য:
অসাধারণ পোস্ট। অনেক অনেক ধন্যবাদ।
যতদূর জানি, ব্রীজে পাক হানাদার নয়, ইন্ডিয়ান আর্মি বোমা মেরেছিল। একই সঙ্গে তারা বোম্বিং করে, ভৈরব সেতু, দিনাজপুরের কাঞ্চন ব্রীজ ইত্যাদি যাতে পাক হানাদার বাহিনীর যোগাযোগ বিচ্ছিন হয়ে যায়।
ধন্যবাদ
মন্তব্য করতে লগইন করুন