আধুনিক এই ছেলেমেয়েগুলোকে বলতে ইচ্ছে করে- একদিন চোখের পর্দা খুলে গেলে কাঁদবি বন্ধু, চোখের পর্দা খুলে গেলে কাঁদবি।
লিখেছেন লিখেছেন এ,এস,ওসমান ০৬ আগস্ট, ২০১৩, ১০:২৯:০১ সকাল
আমি ইসলামের পথে আসার আগে মূর্খতার
যুগে আমার ক্লোজ ফ্রেন্ডদের
মধ্যে একাধিক মেয়ে ছিল। তাদের
একজনের কাছে জেনেছিলাম, তাদের
কলেজের মেয়েরা কীভাবে হারাম
সম্পর্কে লিপ্ত হচ্ছে। তার অনেক
বান্ধবীই বয়ফ্রেন্ডের সাথে শারীরিক
সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছে, এর মধ্যে কেউ
কেউ বহুগামী।
মানে একটা মেয়ে কয়েকজন ছেলের
সাথে রাত কাটিয়েছে। ওদের ক্লাসের
এক মেয়ে হঠাৎ প্রেগন্যান্ট হয়ে পড়ায়
এইচএসসি পরীক্ষার মাত্র ২০ দিন
আগে তার গর্ভপাত করা হয়।
এছাড়া শারীরিক সম্পর্কের দৃশ্য
ক্যামেরায় ধারণ করে আদান-প্রদান,
সম্পুর্ণ উন্মুক্ত
হয়ে ছবি তুলে বয়ফ্রেন্ডের
মোবাইলে প্রেরণ-এসব তো ছিলই।
আমি শুনে অবাক হতাম-আমাদের দেশেও
এসব চলছে !! আমি জানতাম এ
পশ্চিমাদের সংস্কৃতি।
ধীরে ধীরে বুঝতে পারি এসব আমার
আশেপাশেই হচ্ছে। এক
হাতে তালি বাজেনা। মেয়েদের
কথা উল্লেখ করলাম মানে এই নয়
যে ছেলেরা সাধু। তারাও
সমানভাবে অপকর্মে লিপ্ত। তখন
আমি উপলব্ধি করতে পারলাম কেন বিয়ের
প্রতি বর্তমান সমাজের এই অনাসক্তি।
যা হোক, অতীতের কথা গেল। এখন
আসি আমার বর্তমান অবস্থায়।
আলহামদুলিল্লাহ
ইসলামকে বুঝতে চেষ্টা করার পর
থেকে আমার জীবনে অনেক পরিবর্তন
এসেছে। চোখের
সামনে অনেকগুলো দরজা খুলে গেছে-
যা দিয়ে ভালোমন্দ বুঝতে পারি আগের
চেয়ে অনেক বেশি। কিছুদিন আগে আমার
এক ইসলামপন্থী বন্ধু বলল
সে বিয়ে করতে ইচ্ছুক। তাতে করে আরেক
বন্ধু তাকে নিয়ে আমার ভার্সিটির
ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট দিল।
তাকে নিয়ে নানা তামাশা করা হল।
'মাত্র ফার্স্ট ইয়ারে পড়ে, এখনই
বিয়ে করতে চায়, সমস্যা কী?' এই টাইপ
চিন্তার মানুষগুলো তাকে নিয়ে ব্যাঙ্গ
করল।
আশ্চর্য,যে ছেলে মেয়েদের
গায়ে ঢলে পড়ে 'বন্ধুত্ব' দেখায়,রাত
কাটায় গার্লফ্রেন্ডের সাথে-
তারা ভালো ছেলে,আধুনিকমনা ছেলে,আর
যে ছেলেটি নিজেকে হারাম
থেকে বাঁচিয়ে রেখে পবিত্র সম্পর্ক
করতে চায় বিয়ের
মাধ্যমে,সমাজে সে ঠাট্টার পাত্র। এই
যেমন আমার ঐ বন্ধুটি নিন্দিত হল,অথচ
প্রায় দিনই আমার নন-ইসলামিস্ট
বন্ধুরা রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস দেয়-ইন এ
রিলেশন উইথ অমুক মেয়ে,তারা খুব
প্রশংসিত হচ্ছে। তাদের রিলেশনশিপ
স্ট্যাটাসে শয়ে শয়ে লাইক আর কমেন্ট-
কংগ্র্যাটজ, ট্রিট কবে,অভিনন্দন
ইত্যাদি।
এভাবে, ঠিক এভাবেই সমাজ আমাদের
হালালকে হারাম আর হারামকে হালাল
করে দেখাচ্ছে। সুশীল সমাজ আমাদের
বিয়েকে নিন্দার্থে প্রদর্শনে ব্যস্ত।
জাফর ইকবালের
বইয়ে বিয়েকে নিরুৎসাহিত করার স্পষ্ট
নিদর্শন দেখেছি। কর্পোরেট সমাজ
বন্ধুত্বের নামে নারী-পুরুষের অবাধ ও
অবৈধ মেলামেশাকে উৎসাহিত করার
কাজটা করে যাচ্ছে মহা সমারোহে।
বেশি কিছু না,মোবাইল অপারেটর
কোম্পানিগুলোর বিজ্ঞাপন দেখলেই
বোঝা যায়। আর সমাজের
কাছে তা বিয়েকে উপস্থাপন করছে এক
মস্ত বোঝা হিসেবে।
তারা দেখাচ্ছে এমনভাবে যে,
বিয়ে মানে হল একটা মেয়ের
ভরণপোষণের সম্পূর্ণ দায়িত্ব ছেলেটির
হাতে দেওয়া হবে। মেয়েটির সবরকম
দায়িত্ব পুরোপুরি ছেলেটির। কাজেই
অনেক বয়স এবং প্রচুর উপার্জন
না হলে বিয়ে দেওয়া যাবে না।
তারা এটা বলবে না বিয়ে হল
দুটি প্রাণের পবিত্র বন্ধন, জৈবিক
চাহিদা পূরণের একমাত্র হালাল পন্থা,
দুটো হৃদয়ের পরস্পরের
প্রতি দায়বদ্ধতা,যা জান্নাত লাভের
একটা মাধ্যম।
যা হোক। আল্লাহ ধৈর্যশীলদের
সাথে আছেন এই ভরসাতেই আমরা দিন
কাটাই। আল্লাহকে ভুলে থাকা আর
চরিত্রবান ছেলেমেয়েদের
নিয়ে তামাশা করা তথাকথিত আধুনিক এই
ছেলেমেয়েগুলোকে বলতে ইচ্ছে করে-
একদিন চোখের
পর্দা খুলে গেলে কাঁদবি বন্ধু, চোখের
পর্দা খুলে গেলে কাঁদবি।
বিষয়: বিবিধ
১৩৭৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন