সংগ্রহশালা
লিখেছেন লিখেছেন এ,এস,ওসমান ০৩ মে, ২০১৩, ০৬:০৪:৪৭ সকাল
আল্লাহ কিংবা নবী-রাসূলকে গালাগালী করলে তার শাস্তির ব্যাপারে রাসূল [সা]এর আদর্শ কি? আসুন হাদিস থেকে সেটা দেখে নেই--------হযরত আনাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ যখন মক্কা বিজয়ের বছর মক্কায় প্রবেশ করেন,তখন রাসূল সাঃ এর মাথায় ছিল শিরস্ত্রাণ। তিনি মাথা থেকে তা খুললেন। সেসময় একজন এসে বললেন যে, ইবনে খাতাল কাবার গিলাফ ধরে বসে আছে। রাসূল সাঃ বললেন-তাকে হত্যা কর। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-১৭৪৯}ইবনে খাতালকে কেন কাবার গিলাফ ধরা অবস্থায়ও রাসূল সাঃ হত্যার নির্দেশ দিলেন?আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানী রহঃ বুখারীর ব্যাখ্যাগ্রন্থ ফাতহুল বারীতে বিস্তারিত ঘটনা উল্লেখ করে বলেন যে, লোকটি রাসূল সাঃ কেগালাগাল করত। {ফাতহুল বারী-২/২৪৮,আস সারেমুলমাসলূল-১৩৫}----হযরত জাবের বিন আব্দুল্লাহ রাঃ বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ কাব বিন আশরাফের ব্যাপারে কে আছো? কেননা আল্লাহ ও তার রাসূলকে কষ্ট দেয়। তখন মুহাম্মদ বিন মাসলামা দাঁড়িয়ে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি চান আমি তাকে হত্যা করি? তিনি বললেন, হ্যাঁ। {সহীহ বুখারী,হাদীস নং-৩৮১১}---------হযরত আলী রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন- যে ব্যক্তি নবীকে গালি দেয়, তাকে হত্যা কর। আর যে সাহাবীকে গালি দেয়, তাকে প্রহার কর। {জামেউল আহাদীস, হাদীস নং-২২৩৬৬, জমউল জাওয়ামে, হাদীস নং-৫০৯৭, দায়লামী, ৩/৫৪১, হাদীস নং-৫৬৮৮, আস সারেমুল মাসলূল-৯২}---------হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। একঅন্ধ সাহাবীর একটি উম্মে ওয়ালাদ বাদি ছিল। সে বাদিটি রাসূল সাঃ কে গালাগাল করতো। অন্ধ সাহাবী তাকে নিষেধ করেন, কিন্তু সে নিষেধ অমান্য করে, তিনি তাকে হুমকি দেন, তাতেও সে বিরত থাকে না। তিনি বলেন, একদা রাতে বাদিটি রাসূল সাঃ কে গালাগাল শুরু করে, তখন সাহাবী খঞ্জর নিয়ে তার পেটে চেপে ধরলেন। এবং জোরে চাপ দিলেন। ফলে বাদিটি মারা গেল। এমনকি বাদিটি দুই পায়ের মাঝখান দিয়ে পেটের বাচ্চা বের হয়ে যায়। বাচ্চাটি রক্তে রঞ্জিত হয়ে যায়। সকালে বিষয়টি রাসূল সাঃ এর কাছে উপস্থাপিত হয়। তখন রাসূল সাঃ সবাইকে একত্র করে বলেন, যে এ কাজ করেছে তাকে আল্লাহর কসম ও আমার উপর থাকা তার হকের কসম দিচ্ছি সে যেন দাঁড়িয়ে যায়। তখন সেই অন্ধসাহাবী দাঁড়ালেন। তিনি লোকদের ভীর ঠেলে কাঁপতে কাঁপতে এগিয়ে গেলেন। রাসূল সাঃ এর সামনে গিয়ে বসে পড়লেন। তারপর বললেন-হে আল্লাহর রাসূল! সে আপনাকে গালাগাল করতো, আপনার কুৎসা রটাতো। আমি তাকে এসব করতে বাঁধাদিতাম। কিন্তু সে বিরত হতো না। তাকে হুমকি ধামকি দিতাম, তবু সে থামতো না। আর আমার হীরারটুকরোর মত দু’টি সন্তান তার গর্ভ থেকে আছে। আমি তাকে খুব ভালবাসতাম। গতরাতে সে যখন সে আপনাকে গালাগাল শুরু করে, কুৎসা বলতে থাকে, তখন আমি একটি খঞ্জর তার পেটে চেপে ধরি। তারপর তা চাপ দিয়ে তাকে হত্যা করি। তখন রাসূল সাঃ বললেন- লোকেরা! তোমরা স্বাক্ষ্যি থাক! এর প্রাণটা বেঘোরে গেল। (কোন বদলা নেয়াছাড়া অনর্থক প্রাণ বিসর্জিত হল)। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪৩৬৩, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-১০৩, আল মুজামুল কাবীর, হাদীস নং-১১৯৮৪, বুলুগুল মারাম, হাদীস নং-১২০৪}বুলুগুল মারাম ফি আহাদীসিল আহকাম গ্রন্থে আল্লামা ইবনে হাজার লিখেন, অন্ধ সাহাবীর এ হাদীসটি প্রমাণ করে যে, নবীজী সাঃ কে মন্দ মন্তব্যকারীকে হত্যা করে দেয়া হবে। আর মুসলমান হলে সে মুরতাদ হয়ে যায়। আর তার থেকে তওবা করার আবেদন করার দরকার নেই। {বুলুগুল মারাম ফি আহাদীসিল আহকাম-১৩৩}----হযরত বারা ইবনে আজেব রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ একদা আব্দুল্লাহ বিন আতিক রাঃ কে আমীর বানিয়ে আবু রাফে ইহুদীকে হত্যা করতে পাঠালেন। আবু রাফে রাসূল সাঃ কে কষ্ট দিত এবং অন্যদের কষ্ট দিতে সাহায্য করত। আব্দুল্লাহ বিন আতিক বলেন, আমি তাকে প্রচন্ড আঘাত করলাম। কিন্তু হত্যা করতে পারিনি, তারপর তরবারীর ধারালো ডগা তার পেটে ঢুকিয়ে দিলাম এমনকি তা তার পিঠ ফুরে বেরিয়ে যায়। তখন আমি বুঝলাম যে, আমি তাকে হত্যা করতে সক্ষম হয়েছি। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৩৮১৩}এ হাদীস দ্বারা বুঝা যায় যে, কতিপয় লোক একাজে নিয়োগ রাখা দরকার। যারা রাসূল সাঃ কেযারাই গালাগাল করবে, অশ্লিল মন্তব্য করবে তাদের হত্যা করবে।
বিষয়: বিবিধ
৯৩৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন