গ্রেফতারকৃত শওকত কোন রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত? কক্সবাজার শহীদ মিনারে অধ্যাপক মুনতাসির মামুন ও কবি মুহম্মদ নূরুল হুদার মাঝখানে এক বিশেষ মুহূর্তে শওকত।

লিখেছেন লিখেছেন কথার_খই ২৫ আগস্ট, ২০১৩, ০১:৪৯:১৩ রাত



ঢাকাস্থ মিসর দূতাবাস বোমায় উড়িয়ে দেয়ার হুমকির অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া কক্সবাজারের ছাত্র শওকতের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে। র‌্যাবের দাবি সে শিবিরের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। শওকতের পরিবারের দাবি, শওকত কোনো রাজনীতির সাথেই জড়িত নয়, সে ষড়যন্ত্রের শিকার। সে কোনো ধরনের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার সাথে ছিল না। তবে কক্সবাজারে তার ওঠাবসা ও চিন্তা চেতনা ছিল ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতিকে কেন্দ্র করে। তার পরিবারও আওয়ামী রাজনীতির সাথেই জড়িত। গত বুধবার ঢাকা থেকে র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর শওকত আফসার ওরফে শওকত ওসমানের গ্রামের বাড়ি কক্সবাজার সদর উপজেলার পালাকাটা এলাকাসহ পুরো জেলায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার অনেক মানুষ জানান, আমাদের চোখের সামনে বেড়ে ওঠা শওকত ঢাকায় যাওয়ার সাথে সাথে কিভাবে চরম সন্ত্রাসী বনে গেলো এটাই তাদের জিজ্ঞাসা। শওকতের ভাই নাসির মিয়া জানান, শওকত গত ১৯ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং করার জন্য কক্সবাজার থেকে ঢাকা গিয়েছিল। সে ঢাকা শহর চেনে না এমনকি ঢাকার কোনো অলিগলি চেনার প্রশ্নই ওঠে না। অথচ ঢাকা যাওয়ার এক দিনের মধ্যে কিভাবে তার পক্ষে এ কাজ করা সম্ভব? তিনি বলেন, ঘটনাটি পুরো বানোয়াট। তিনি আরো জানান, আমাদের পরিবার কখনো জামায়াত শিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত নয় কিন্তু নিজেরা কোনো রাজনীতি না করলেও আত্মীয়স্বজন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার বদিউল আলমের আপন ভাগিনা শওকত। শওকতের ভাই মোক্তার আহমদ ঈদগাহ পালাকাটা ৮ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আমান উল্লাহ শওকতের ফুপা। শওকত আবছার কক্সবাজার সিটি কলেজ থেকে এ বছর বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পাস করেছে। আমরা মনে করি শওকত কোনো ষড়যন্ত্রের শিকার। সে এমন কাজ করতে পারে না। প্রাপ্ত তথ্য মতে, সে গ্রেফতার হওয়ার পর আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাকে শিবির হিসেবে চিহ্নিত করলে দেখা দেয় নানা প্রতিক্রিয়া। আলোচনায় চলে আসে কক্সবাজার অবস্থানকালে শওকতের রাজনৈতিক ওঠাবসা ও চিন্তা চেতনা নিয়ে। কক্সবাজার সিটি কলেজে পড়ার সময় সে চলাফেরা করত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সাথে। তার বিশেষ আড্ডা ছিল ধর্মনিরপেক্ষপন্থী কবি সাহিত্যিকদের সাথে। ২০১০ সালে কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত কবিতা মেলায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কবিরা কক্সবাজার এলে শওকত তাদের সাথে আড্ডা দেয়। কক্সবাজার শহীদ মিনারসহ বিভিন্ন স্থানে এসব কবির সাথে ফটো সেশন করে। কক্সবাজার শহীদ মিনারে এমটি একটি ছবিতে তার সাথে অধ্যাপক মুনতাসির মামুন ও কবি মুহম্মদ নূরুল হুদাকেও দেখা যায়। খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়, কক্সবাজার সদর উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের দণি পালাকাটার মরহুম সোলতান আহমদ মেম্বারের ছয় ছেলেমেয়ের মধ্যে সবার ছোট শওকত আফছার। বড় ভাই নুরুল কবির বীমা প্রতিষ্ঠান ডেলটা লাইফে কাজ করেন। মেজো ভাই জসিম উদ্দিন ও চতুর্থ ভাই আশেক উদ্দিন সৌদিপ্রবাসী। সেজো ভাই হাফেজ সাহাব উদ্দিন স্থানীয় এক মসজিদের ইমাম। শওকতের ইমিডিয়েট বড় ভাই নাসির উদ্দিন কাজ করেন ফারইস্ট ইসলামী লাইফে। তারা সবাই জানান,শওকত চিন্তা চেতনায় কোনো রাজনীতির সাথে বিশ্বাস থাকলেও নাশকতামূলক কাজ করবে এটা কোনোভাবেই বিশ্বাসযোগ্য হতে পারে না। র‌্যাব শওকতকে দিয়ে আরো একটি জজ মিয়া নাটক সাজাতে চায়। তারা এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক রাজিবুল হক রিকুর মতে, শওকত শিবিরের সাথে আগে থেকে সম্পৃক্ত না থাকলেও ঢাকায় ফোকাসে ভর্তি হওয়ার সুবাদে সে শিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত হয়। জালালাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাস্টার আমান উল্লাহ ফরাজী জানান, শওকতকে এলাকার সাবেক মেম্বরের ছেলে হিসেবে চিনি। যে অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে তা আমাদের বিস্মিত করেছে। উল্লেখ্য, বোমা মেরে ঢাকাস্থ মিসর দূতাবাস উড়িয়ে দেয়ার হুমকির অভিযোগে গত বুধবার ঢাকায় গ্রেফতার হন কক্সবাজারের শওকত আফছার।Click this link

বিষয়: বিবিধ

১৫৬০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File