নারীর মর্যাদা
লিখেছেন লিখেছেন ফাতিমা মারিয়াম ০৬ মার্চ, ২০১৪, ০৫:০৯:০৮ বিকাল
যুগেযুগে আমি অবহেলা পেয়ে, সয়ে গেছি মুখ বুজে,
কোথায় রয়েছে সম্মান মোর, পাইনি কভু তা খুঁজে।
ঘরে বল, আর সমাজেই বল, ছিলনা কোথাও ঠাঁই,
আমিও যে মানুষ- এই কথা যেন ভুলে ছিল সবাই।
.
এই তন্ত্র, সেই মতবাদ, সবার দুয়ারে গিয়েছি,
সমাধান কভু পাইনি কোথাও ব্যর্থ হয়ে ফিরেছি।
চলার পথে সম্মুখে এক আলোর দেখা পেলাম,
ঝলমল করা সেই আলোটির নাম হল- ইসলাম।
.
ইসলাম মোরে দিয়েছে দেখ অগণিত সম্মান,
দুনিয়া ও আখিরাতের মুক্তির জয়গান।
যেদিন আমি জন্মেছিলাম এই ধরণীর বুকে,
জান্নাতের বারতা নিয়ে এসেছিনু হাসিমুখে।
.
স্নেহ দিয়ে মোরে পালন করেছে সযতনে পিতামাতা,
জেনে গেছে তারা এর সাথে আছে মুক্তির বারতা।
আরও জেনেছিল মোর সাথে যদি করা হয় সদাচরণ,
জান্নাতে হবে রাসুলের সাথে পাশাপাশি আবাসন।
.
ধীরেধীরে আমি বড় হতে থাকি সকলের ভালবাসায়,
এবার আমার জীবনে এলো নতুন এক অধ্যায়।
বধূরূপে আমি প্রবেশ করেছি নতুন এক জগতে,
এখানেও আমি আকাশের চাঁদ পেয়ে গেছি যেন হাতে।
.
সবাই আমারে করেছে আপন দিয়েছে ভালবাসা,
এরচেয়ে বেশি কোন কিছু কি মোর মনে ছিল আশা?
সবসময়ে সুখ আর দুখে পাশে থাকে যেইজন,
সে যে মোর স্বামী তার কাছে আমি অতি আপনজন।
.
এতসব আমি পেয়েছি কিভাবে? জানতে চাও? শোন!
মহান আল্লাহ দিয়েছেন মোরে এত সম্মান জেনো।
তিনি দিয়েছেন নারী পুরুষের সমান অধিকার
তাইতো আমি শুকরিয়া তাঁর জানাই বারংবার।
.
পূর্ণতা মোর আসলো সেদিন, যেদিন হয়েছি মা,
এত মর্যাদা আমিতো আর কোথাও দেখিনা!
সন্তানের জান্নাত সেতো আমারই পদতলে,
তাইতো তারা হাসিমুখে মোরে রেখেছে মাথায় তুলে।
.
বয়স আমার অনেক হল বৃদ্ধা হয়েছি আমি,
স্বজনের কাছে এখনও আমি অনেক বেশি দামী।
অনেক যতনে রেখেছে তাহারা শিশুসম আমারে,
এই সম্মান কি আর কোথাও পাওয়া যাবে? আহারে!
.
আলোকের সেই ঝর্ণাধারায় অবগাহন করি,
মুক্তির পরশ পেয়েছি আজ, আমি আলোকিত নারী।
এই আলোতেই সারাটা জীবন থাকতে আমি চাই,
উভয় জাহানে মুক্তির আর কোন উপায় নাই।
[নারীর মর্যাদা একটি দিবসের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। প্রতিদিনই হোক নারীর জন্য সম্মানের আর মর্যাদার। ইসলাম আমাদেরকে এই শিক্ষাই দেয়। জীবনের ধাপে ধাপে একজন নারীর যে সম্মান ও মর্যাদা পাওয়ার কথা, তা কেবল ইসলামের পরিপূর্ণ অনুশীলনের মাধ্যমেই সম্ভব। আল্লাহ আমাদেরকে সঠিক বুঝ দান করুন। আমীন।]
বিষয়: বিবিধ
১৩৯৮ বার পঠিত, ৬৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মহান আল্লাহ আমাদের সবার কলমকে আরো শক্তিশালী করুন। আমীন
ঝলমল করা সেই আলোটির নাম হল- ইসলাম।
[নারীর মর্যাদা একটি দিবসের মধ্যে সীমাবদ্ধ
নয়। প্রতিদিনই হোক নারীর জন্য সম্মানের
আর মর্যাদার। ইসলাম আমাদেরকে এই শিক্ষাই
দেয়। জীবনের ধাপে ধাপে একজন নারীর
যে সম্মান ও মর্যাদা পাওয়ার কথা, তা কেবল
ইসলামের পরিপূর্ণ অনুশীলনের মাধ্যমেই সম্ভব।
আল্লাহ আমাদেরকে সঠিক বুঝ দান করুন।
আমীন।]
কোথায় রয়েছে সম্মান মোর, পাইনি কভু তা খুঁজে।
ঘরে বল, আর সমাজেই বল, ছিলনা কোথাও ঠাঁই,
আমিও যে মানুষ- এই কথা যেন ভুলে ছিল সবাই।
*************
ধন্য হে কবি জীবনের ছবি
একেছ কবিতায়,
স্বপনে মননে মনের অাঙ্গিনায়
রেখেছ তোমার দায়।
ক্ষুব্ধ মনের কথা লিখেছ
কবিতা গেয়েছ গান,
পড়ে বুঝেছি পারবে তুমি
গাইতে জীবনের গান।
ভাল লাগল।
ধন্যবাদ।
সেই নারীকে পণ্য করে বিজ্ঞাপনে যারা,
অধিকারের দাবী জানায় মঞ্ছে উঠে তারা৷
খুন্তী দিয়ে চামড়া পোড়ায় চাক্কু চালায় গলে,
নারী স্বাধীনতার কথা তারাই আবার বলে৷
আসলেই অসাধারণ একটি কবিতা। আমাদের খুব ভাল লেগেছে।
তবে কবিতার উল্লেখিত অংশে ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে আমি আমার নিজস্ব অবজার্ভেশনটাই বুঝাতে চেষ্টা করেছি। পবিত্র কোরআন ও সুন্নাহতে নারী পুরুষের সমান অধিকারের কথা কোথাও আছে কিনা আমার জানা নেই। নারী ও পুরুষের জন্য সমান অধিকার দাবী করাটাও অযৌক্তিক। যদি এভাবে দাবী করা হয় তবে আল্লাহর নিয়ম ও বিধান রিয়েলাইজড করতে ব্যর্থ হয়েছে বলা যায়। মহান আল্লাহ তায়ালা হচ্ছেন চুড়ান্ত ইনসাফ পরায়ন। কাউকে তার প্রাপ্য অধিকার কম দিয়ে তাকে বঞ্চিত করার নিয়ম আল্লাহর সুন্নাহতে নেই। অথবা কাউকে তার প্রাপ্য অধিকারের চেয়ে বেশী দেয়াটাও আল্লাহ তায়ালা পারশিয়ালিটি করেন না। নারী পুরুষের সমান অধিকার দাবী করলে ক্ষেত্রে বিশেষে নারীকে অবমূল্যায়ন ও অপমানিত করা হয় আমার ক্ষেত্রে বিশেষে পুরুষকেও অবমূল্যায়ন ও অপমানিত করা হয়। এজন্যই হয়তো আল্লাহর দেয়া বিধানে কোন অসংগতি পরিলক্ষিত দেখা যায় না। যাকে যেখানে যে অবস্থায় যতটুকু অধিকার দেয়া উচিত তাকে সেখানে সে অবস্থায় ততটুকুই সম্মান ও অধিকার আল্লাহ নির্ধারণ করে দিয়েছেন। কোন ক্ষেত্রে পুরুষকে দিয়েছেন অগ্রাধিকার, আবার কোন ক্ষেত্রে নারীকে দিয়েছে অগ্রাধিকার। যেমন ধরুন পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে আর রিজালু কাউয়ামুনা আলান নিসা। অপর দিকে রাসুলের সুন্নাহতে দেখুন একটি হাদিসে- পুরুষের চেয়ে নারীকে তিনগুণ বেশী মর্যাদা দেয়া হয়েছে। আমরা যদি এসব বিষয়গুলো অতি সুক্ষ্মুভাবে চিন্তা করি তবে বুঝতে সহজ হবে যে, নারী পুরুষের আলাদা ফিজিক্যাল গঠন ও শক্তির বিচারে শারিরিক সামর্থ এক নয়। এজন্যই যার জন্য যেখানে যতটুকু মর্যদা দেয়া উচিত তাকে তার নিজস্ব জগতে সেভাবেই তার মর্যাদা, দায়িত্ব, কর্তব্যের মধ্যে তারতম্যে করে দিয়েছেন। এখানে কোন বৈপরিত্য নেই। আসলে প্রকৃত কথা হচ্ছে নারী পুরুষের সমান অধিকার দাবী করে তারাই যাদের মাথায় আল্লাহর বিধান ও নিয়ম বুঝার মত মগজ নেই।
আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি সুন্দর একটি কবিতা উপহার দেয়ার জন্য। আপনার কবিতাটি আমাদের পারিবারিক আড্ডায় আজ বেশ সুন্দর ও অন্য রকম একটি পরিশেষ সৃষ্টি হয়েছিল। মন্তব্যটি বেশ লম্বা হয়ে গেল। তার পরেও মনের ভাবটা সম্পূর্ণভাবে প্রকাশ করতে পারলাম না। অনেক চেষ্টা করি অল্প কথায় মন্তব্য করার জন্য। কিন্তু পারি না। অনেকেই বিরুক্ত হয়ে ইদানিং আমার মন্তব্য মুছে দেয়। আপনার কাছে আমি কৃতজ্ঞ অন্তত আমার মন্তব্যগুলো মুছে দেন না।
১) আমার খুব ভাল লাগলো এই জেনে যে একজন মুরুব্বীর আন্তরিক দুয়া পেয়েছি। খালাম্মা ও ভাবীকে আমার সালাম পৌঁছে দেবেন।
২) আমি যতটুকু বুঝেছি নারী পুরুষের অধিকার সমান। কিন্তু পুরুষের মর্যাদা ও কর্তৃত্ব বেশী। তবে সমান অধিকার নিয়ে তসলিমা নাসরিন ও তার অনুসারীদের মতবাদ থেকে নিজেকে যোজন যোজন দূরে রাখার চেষ্টা করি।
সংসারে সমাজে নারীরা আগে অবহেলিত ছিল। ইসলাম তাদের পরিপূর্ণ মর্যাদা দিয়েছে। পরিবারে তার মত প্রকাশের অধিকার যেমন আছে তেমনি জ্ঞানার্জন, খাওয়া, পরা, চলাফেরায় তার পরিপূর্ণ অধিকার/স্বাধীনতা রয়েছে। এখানে সমান অধিকার বলতে এসব গুলোর কথা বুঝানো হয়েছে। কবিতার স্বল্প পরিসরে বিস্তারিত লিখা সম্ভব ছিলনা।
তালাক প্রসঙ্গে সূরা আল বাকারাহ ; আয়াত নং- ২২৮ এর শেষ অংশে বলা হয়েছে -'নারীদের জন্যও ঠিক তেমনি ন্যায়সঙ্গত অধিকার আছে যেমন পুরুষদের অধিকার আছে তাদের ওপর। তবে পুরুষদের তাদের ওপর একটি মর্যাদা আছে। আর সবার ওপরে আছেন আল্লাহ সর্বাধিক ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের অধিকারী, বিচক্ষণ ও জ্ঞানী' ।
৩) আপনাদের পারিবারিক বৈঠকগুলো আরও ফলপ্রসূ হোক।
আপনার মন্তব্য সবসময়ই গঠনমূলক হয়। তাই মুছে দেয়ার প্রশ্নই আসেনা। ধন্যবাদ......।
মুক্তির পরশ পেয়েছি আজ, আমি আলোকিত নারী।
এই আলোতেই সারাটা জীবন থাকতে আমি চাই,
উভয় জাহানে মুক্তির আর কোন উপায় নাই।
অনন্যা সে যে অনন্যা হয়ে
বেচে থাক মোদের মাঝে
এমন তরো অনুভুতিরা
প্রমাণ হোক তার কাজে।
সফলতা পাক দীন-দুনিয়ায়
এমনই হোক তার সব
দুআ করি আরো শেষ দিবসে
মুক্তি দিক পাক রব।
ধন্যবাদ আপু, অনন্য সাধারণ কবিতার জন্য।
দারুন লিখেছেন আপু!!
অনেক অনেক ভালো লাগলো!!!
ধন্যবাদ
আমিওযে পড়েছি, উপকৃত হয়েছি আপনার লেখাথেকে তা জানানোর জন্য এইমন্তব্যখানা করিলাম। আশাকরি আমার অনুরোধটা ইগনোর করবেন না।
এই রোগের একমাত্র থেরাপি হলো
মন্তব্য করতে লগইন করুন