ছন্দে ছন্দে আল কুরআন -১৭
লিখেছেন লিখেছেন ফাতিমা মারিয়াম ০৫ জুন, ২০১৩, ০৭:২৮:০৯ সন্ধ্যা
ইসলামী সমাজ গঠনের মূলনীতি
****************************************
মহা পবিত্র তিনি,
স্বীয় বান্দাকে একরাতে ভ্রমণ করালেন যিনি।
'মসজিদুল হারাম' থেকে 'মসজিদুল আকসা'।
বরকতময় পরিবেশ বিরাজিত ছিলো সেথা।
.
কিছু নিদর্শন তিনি তাকে দেখিয়েছেন,
শ্রোতা তিনি সবকিছুর, সবই তিনি দেখেন।
ইসলামী সমাজ গঠনের তরে রবের ফায়সালা শোন,
( মেনে নেবে এর সবগুলো অবহেলা নয় কোন )।
.
ইবাদাত কর শুধুমাত্র মহান আল্লাহর,
পিতামাতার সাথে করো ভালো ব্যবহার।
একজন বা উভয়েই যদি বৃদ্ধাবস্থায় থাকে,
'উহ' বলোনা কিংবা ধমক দিওনা তাদেরকে।
.
কথা বলো তাদেরকে দিয়ে মর্যাদা,
বিনম্র থাকো; আর দেখাও দয়া ও কোমলতা।
প্রার্থনা করো রবের নিকট শুধুই তাদের তরে,
'হে রব; রহম করো, তারা করেছিল যা শৈশবে আমারে।'
.
রব জানেন তোমাদের কার মনে কি আছে,
সৎকর্মশীল হও! অসীম ক্ষমা পাবে তাঁর কাছে।
নিজের ভুল সংশোধন করে বন্দেগী করো তাঁর,
( এটাই তোমার মুক্তির পথ জেনে রাখো বারবার )।
.
আত্মীয়কে দিয়ে দাও তাদের অধিকার,
মিসকীন ও মুসাফিরকেও অধিকার দাও তার।
অপব্যয়ী হয়োনাকো কভু সে যে শয়তানের ভাই,
শয়তানেরতো রবের প্রতি কোন কৃতজ্ঞতা নাই।
.
যদি কভু তুমি দুখীজন থেকে মুখ ফিরিয়ে নাও,
তবে তাদের নরম ভাষায় সে কথা বুঝিয়ে দাও।
নিজের হাতকে গলায় বেঁধে কৃপণতা করোনা,
আবার বেহিসেবী খরচ করে সে হাত ছেড়ে দিওনা।
.
তাহলে তু্মি নিন্দিত ও অক্ষম হয়ে যাবে,
( মধ্যবর্তী নীতি তুমি সদা সর্বদা মেনে চলবে )।
রব ( তাঁর ইচ্ছামত) রিজিক কমবেশি করে দেন,
জানেন তিনি তাদের অবস্হা তাদেরকে তিনি দেখেন।
.
নিজ সন্তান হত্যা করোনা দারিদ্র্যের ভয়ে,
সবার রিজিক আমিই দেব ( যাবেনা তা কভু ক্ষয়ে )।
জেনে রাখো সন্তান হত্যা কঠিন মহাপাপ,
যিনার কাছেও যেওনা কভু ওটা জঘন্য খারাপ।
.
হারাম করেছেন হত্যা করতে আল্লাহ পাক যাকে,
তাকে হত্যা করোনা কভু সত্য ব্যতিরেকে।
মজলুম অবস্হায় নিহত হয় যে,
কিসাসের অধিকার দিয়েছি তার অভিভাবককে।
.
এই ব্যাপারে কেউ সীমা লঙ্ঘন করোনা,
সাহায্য করবো তাকে ( হতাশ হয়োনা)।
যেয়োনাকো কভু তুমি ইয়াতিমের সম্পদের ধারে,
যতদিন না সে বালেগ হয় দেখাশোনা করো তারে।
.
প্রতিশ্রুতি পালনে তুমি করোনা অবহেলা,
জবাবদিহী করতেই হবে ( জেনে রাখো এই বেলা)।
পরিমাপ পাত্র ভরে দাও মেপে দেয়ার সময়,
পরিণামের দিক দিয়ে উত্তম এটা জেনে রাখো নিশ্চয়।
.
এমন কিছুর পিছনে লেগোনা যা তুমি জানোনা,
চোখ,কান,দিল জিজ্ঞাসিত হবে ( এ কথা কি মানোনা? )
দম্ভভরে কভু চলোনা জমীনের বুকে,
চিরে ফেলতে পারবেনা তুমি কখনোই জমীনকে।
.
পাহাড়সম উচ্চতায় যাবে তাও সম্ভব নয়,
( কাজেই তুমি তোমার রবকে করো অতিশয় ভয় )।
এ বিষয়গুলির মধ্যে প্রতিটির খারাপ দিক,
অপছন্দ তোমার রবের ( জেনে নাও ঠিক ঠিক )।
.
[ সূরা বনী ইসরাঈল । আয়াত নং; ১ এবং ২৩-৩৮ ]
.
আয়াতসমূহের অর্থঃ
১.) পবিত্র তিনি যিনি নিয়ে গেছেন এক রাতে নিজের বান্দাকে মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আক্সা পর্যন্ত, যার পরিবেশকে তিনি বরকতময় করেছেন, যাতে তাকে নিজের কিছু নিদর্শন দেখান। আসলে তিনিই সবকিছুর শ্রোতা ও দ্রষ্টা।
........
২৩.) তোমার রব ফায়সালা করে দিয়েছেনঃ (১) তোমরা কারোর ইবাদাত করো না, একমাত্র তাঁরই ইবাদাত করো। (২) পিতা-মাতার সাথে ভালো ব্যবহার করো। যদি তোমাদের কাছে তাদের কোন একজন বা উভয় বৃদ্ধ অবস্থায় থাকে, তাহলে তাদেরকে “উহ্” পর্যন্তও বলো না এবং তাদেরকে ধমকের সুরে জবাব দিয়ো না বরং তাদের সাথে মর্যাদা সহকারে কথা বলো।
২৪.) আর দয়া ও কোমলতা সহকারে তাদের সামনে বিনম্র থাকো এবং দোয়া করতে থাকো এই বলেঃ হে আমার প্রতিপালক! তাদের প্রতি দয়া করো, যেমন তারা দয়া, মায়া, মমতা সহকারে শৈশবে আমাকে প্রতিপালন করেছিলেন।
২৫.) তোমাদের রব খুব ভালো করেই জানেন তোমাদের মনে কি আছে। যদি তোমরা সৎকর্মশীল হয়ে জীবন যাপন করো, তাহলে তিনি এমন লোকদের প্রতি ক্ষমাশীল যারা নিজেদের ভুলের ব্যাপারে সতর্ক হয়ে বন্দেগীর নীতি অবলম্বন করার দিকে ফিরে আসে।
২৬.) (৩) আত্মীয়কে তার অধিকার দাও এবং মিসকীন ও মুসাফিরকেও তাদের অধিকার দাও।
২৭.) (৪) বাজে খরচ করো না। যারা বাজে খরচ করে তারা শয়তানের ভাই আর শয়তান তার রবের প্রতি অকৃতজ্ঞ।
২৮.) (৫) যদি তাদের থেকে (অর্থাৎ অভাবী, আত্মীয়-স্বজন, মিসকীন ও মুসাফির) তোমাকে মুখ ফিরিয়ে নিতে হয় এজন্য যে, এখনো তুমি প্রত্যাশিত রহমতের সন্ধান করে ফিরছো, তাহলে তাদেরকে নরম জবাব দাও।
২৯.) (৬) নিজের হাত গলায় বেঁধে রেখো না এবং তাকে একেবারে খোলাও ছেড়ে দিয়ো না, তাহলে তুমি নিন্দিত ও অক্ষম হয়ে যাবে।
৩০.) তোমার রব যার জন্য চান রিযিক প্রশস্ত করে দেন আবার যার জন্য চান সংকীর্ণ করে দেন। তিনি নিজের বান্দাদের অবস্থা জানেন এবং তাদেরকে দেখছেন।
৩১.) (৭) দারিদ্রের আশঙ্কায় নিজেদের সন্তান হত্যা করো না। আমি তাদেরকেও রিযিক দেবো এবং তোমাদেরকেও। আসলে তাদেরকে হত্যা করা একটি মহাপাপ।
৩২.) (৮) যিনার কাছেও যেয়ো না, ওটা অত্যন্ত খারাপ কাজ এবং খুবই জঘন্য পথ।
৩৩.) (৯) আল্লাহ যাকে হত্যা করা হারাম করে দিয়েছেন, সত্য ব্যতিরেকে তাকে হত্যা করো না। আর যে ব্যক্তি মজলুম অবস্থায় নিহত হয়েছে তার অভিভাবককে আমি কিসাস দাবী করার অধিকার দান করেছি। কাজেই হত্যার ব্যাপারে তার সীমা অতিক্রম করা উচিত নয়, তাকে সাহায্য করা হবে।
৩৪.) (১০) ইয়াতীমের সম্পত্তির ধারে কাছে যেয়ো না, তবে হ্যাঁ সদুপায়ে, যে পর্যন্ত না সে বয়োপ্রাপ্ত হয়ে যায়। (১১) প্রতিশ্রুতি পালন করো, অবশ্যই প্রতিশ্রুতির ব্যাপারে তোমাদের জবাবদিহি করতে হবে।
৩৫.) (১২) মেপে দেবার সময় পরিমাপ পাত্র ভরে দাও এবং ওজন করে দেবার সময় সঠিক দাঁড়িপাল্লায় ওজন করো। এটিই ভাল পদ্ধতি এবং পরিণামের দিক দিয়েও এটিই উত্তম।
৩৬.) (১৩) এমন কোন জিনিসের পেছনে লেগে যেয়ো না যে সম্পর্কে তোমার জ্ঞান নেই। নিশ্চিতভাবেই চোখ, কান ও দিল সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
৩৭.) (১৪) যমীনে দম্ভভরে চলো না। তুমি না যমীনকে চিরে ফেলতে পারবে, না পাহাড়ের উচ্চতায় পৌঁছে যেতে পারবে।
৩৮.) এ বিষয়গুলোর মধ্য থেকে প্রত্যেকটির খারাপ দিক তোমার রবের কাছে অপছন্দনীয়।
সাহায্য চাই, প্রভু এখানে
.
.
বিষয়: বিবিধ
৩২৮১ বার পঠিত, ৩৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
গুরুত্বপূর্ন আয়াতের আলোকে রচিত কবিতা এবং শিক্ষা পড়ে উপকৃত হলাম! হুকরিয়া!
ঘুম ভাংগাতে চাই জাযাকাল্লাহু খাইর দাওয়াতের জন্য!
আমি ভালো আছি
আপপপপি, দুলাভাইকে বলেন আমরা টুডে ব্লগের সবাই একই বিল্ডিংএ পাশাপাশি ফ্ল্যাট নেই। বিল্ডিংএর নাম রাখবে "টুডেবিল্ডিং"
আমার লাভ: ছোটটটট্ট ভাই হিসেবে ডেইলি খবার ফ্রি
আর আপনি তো একদিন ও খাওয়ালেন নাহ্ আপনার রান্না পঁচা (খাওয়ালে ভালো বলবো )
মন্তব্য করতে লগইন করুন