দাওয়াত ও তাবলীগের মেহনত যেন এক পরশ পাথর !
লিখেছেন লিখেছেন সত্যের বিজয় ১৭ জানুয়ারি, ২০১৪, ১০:২৫:১২ রাত
গত কিছুদিন পূর্বে স্হানীয় বাজারের জামে মসজিদে মাগরিবের নামায পড়তে গেলাম।আজানের একটু পূর্বে দেখা হল আমার পরিচিত এক প্রতিবেশির সাথে।প্রায় পাঁচ বছর পর দেখা ।প্রথমে হঠাৎ চিনতে পারি নি।পড়নে সুন্নতি লেবাস,মাথায় পাগড়ি,মুখে সুন্নতী দাড়ি।এক অপূর্ব নুরানী চেহারা ! অথচ একসময় সে নামায পড়ত না।গান বাজনা শুনে,টিভি সিনেমা দেখেই সময় কাটত তার ।এমন কি মদ গাঁজাতেও আসক্ত ছিল সে । এখন তাবলিগের উসিলায় আল্লাহ পাক তাকে হিদায়াত দিয়েছেন । এরকম আরো অনেক আছে যারা এই তাবলীগের মেহনতের বদৌলতে আজ দ্বীনের উপর চলার চেষ্টা করছেন।তেমনই এক ব্যক্তির ঘটনাঃ যিনি ছিলেন একজন পথভ্রষ্ট মানুষ।
কখনো নামাজ পড়েনি
কখনো রোযা রাখেনি।
দাঙ্গা-হাঙ্গামা, চুরি-ডাকাতি খুণ রাহাজানী, সন্ত্রাস
এসব ছিলো তার নিত্য দিনের পেশা। এলাকার লোকজন ভয়ে তার সাথে কথা বলতো না। এলাকা জুড়ে ছিলো তার ত্রাসের রাজত্ব। ভালো মন্দ সবাই তাকে ঘৃণা করতো। আবার মাঝে মধ্যে দেখতাম এলাকার বিভিন্ন ধর্মিয় অনুষ্ঠানে সে প্রধান বা বিশেষ অথিতির আসন গ্রহন করতো। বড় বড় আলেম, হাফেজ, কারী ও বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতারা তাকে সম্মান করতো। কখনো কোন আলেম তাকে বলতোনা যে আসুন, একটু নামাজ পড়ি। অথচ ঈদের জামাতে প্রথম কাতারে সুন্দর জায়নামাজে তার অবস্হান হতো। বিভিন্ন মাদ্রাসা স্কুল কলেজের অভ্যন্তরিন আলোচনাও তাকে ছাড়া হতো না। তার কুকর্মকে যদিও সবাই ঘৃণা করতো! মুলত তার সম্মান ছিলো অনেক উঁচুমানের। আবার তার প্রতি মানুষের ঘৃণা যত টুকু ছিলো! তার চেয়ে শ্রদ্ধা ছিলো অনেক বেশি। তবে আর্শ্চয্য বিষয় হলো, যে ব্যক্তিরা তাকে ঘৃণা করতো! তারাই তাকে সম্মান করতেন। মুলতঃ তার প্রাপ্য সম্মান ছিলো তার অনিষ্ট থেকে বাচার জন্য। একদিন সে বেড়াতে গেলো তার এলাকা থেকে অনেক দুরে কোন এক আত্মীয়ের বাড়ি। ওখানে গিয়ে সে তার সম্মান রক্ষার নিয়তে মসজিদে গেল নামাজ পড়তে। মসজিদে ছিলো একটি তাবলীগের জামাত। তার পাশে থাকা আত্মীয়ের মন রক্ষার্তেই তাবলিগী ভাইদের অনুরোধে সে কিছুক্ষন সময় ওখানে বসলো। আমীর সাহেব ছিলেন খুব বুদ্ধিমান। তিনি এমন কিছু বয়ান করলেন যেন তাকে নিয়েই আলোচনা। দির্ঘক্ষণ আলোচনা শোনার পর তার কাছে ভালো লাগলো। আবারো আসর বাদ ওখানে বসলো। এক পর্যায়ে মাগরিব ও ঈশা আদায় করেই বাসায় এলেন । তারপর ফজরের আজান হওয়ার সাথে সাথেই তার ঘুম ভাঙ্গে। আজ সে নিজ থেকেই মসজিদে গেলেন। আজও সারা দিন তাদের সাথেই কাটালেন। একপর্যায়ে আমীর সাহেবের সাথে কথা দিলেন সে বিশ্ব ইজতেমায় যাবে। আমীর সাহেবও নাছোড়বান্দা। তাকে সাথে নিয়েই ইজতেমার মাঠে চলে গেলেন। ওখান থেকে সে চলে গেলো ৪০ দিনের চিল্লায়। এর পর তিনি আর সহসাই ফিরলেন না। এক সাথে ৩ তিন চিল্লা দিয়েই তিনি বাড়ি ফিরলেন। যখন তিনি ফিরে আসলেন তখন ওনার গায়ে ছিলো সুন্নতী লেবাস, মাথায় পাগড়ী, মুখে দাড়ী, হাতে তাসবিহ পকেটে মেছওয়াক। তার নতুন জীবন শুরু হলো আলেম_ওলামাদের সাথে। এখন তিনি প্রতিনিয়ত তাহাজ্জুদ আদায় করেন। মানুষকে হক্ব পথে আহবান করছেন। কেউ তাকে আঘাত করলে তিনি তার প্রতিবাদ না করে উল্টো আক্রমন কারীর কাছেই ক্ষমা চাইছেন। তার এমন পরিবর্তন দেখে তার পুরোনো সাথিদের অনেকেও তার মতো তাবলীগে সময় দিয়ে সঠিক পথে ফিরে এসেছেন। এলাকার সাধারন মানূষ এখন তাকে সত্যিকার সম্মান করছেন। কিন্তু এতে ঐ বেদাতি, জামাতি, আহলে খবিসদের সর্বাঙ্গে যেন নতুন করে বিখাউজের জন্ম নিয়েছে। তাকে আজ ওরা বুঝানোর চেষ্টা করছে ! তাবলীগ খারাপ ! ওরা মুশরিক ওরা গাট্টিওয়ালা ! ওদের পেছনে চললে তোমার ঈমান চলে যাবে ! ওরা মুসলিম নয় ইত্যাদি বলে। আজ সে জানতে চায়, 'আমি যখন খারাপ ছিলাম। মদ খেয়ে রাস্তায় পড়ে থাকতাম। পর নারী বা তোমাদের বোন ও স্ত্রীর সাথে রাত কাটাতাম। তখনতো তোমরা আমাকে সম্মান করতে। তখন কোথায় ছিলো তোমাদের এসব নীতি বাক্য?? আজ আমার পরিবর্তন দেখে তোমাদের এতো চুলকানি কেন? তোমরা কি চাও আমি তোমাদের বোন/স্ত্রীর সাথে আবারো সিনেমা দেখতে যাই??
বিষয়: বিবিধ
১০৯০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য






































পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন