কলিজার টুকরা ফেলানী ও না বলা কথা

লিখেছেন লিখেছেন সালাহ ০৭ জানুয়ারি, ২০১৪, ০১:১৫:৫৩ দুপুর



আমার কিছু আপনজনের প্রশ্নবানে জর্জরিত হয়ে অবশেষে এই বিষয়টা নিয়ে লিখতে সঙ্কল্প করলাম । আমার আশা ছিল এই বিষয়টা নিয়ে লিখবনা কারন এতে শুধু হৃদয়ের রক্তক্ষরণই বাড়বে না ।সাথে ফলাফল হবে শূন্য ।কিন্তু তবুও কি করব আমার ভেতরের ময়না পাখিকে যে আর পোষ মানাতে পারছি না ।আমি মুখ ধুতে গেলে ,একাকী চলতে গেলে ,এমনকি যখন রান্না করতে যাই সেখানেও ফেলানীর ছবি ভেসে উঠে ।

হায়রে অভাগী বোনটা সেদিন কি আকুতিটাই না করেছিল বি এস এফের হাত থেকে বাঁচার জন্য ।কিন্তু সে কি পেরেছিল সেদিন আমাদের বন্ধু রাষ্ট্রের সীমান্তরক্ষীর হাত থেকে নিজের জীবন বাঁচাতে । কই সেদিনতো আমাদের বন্ধুরা বন্ধুর মত আচরন করেনি । তারাতো সেদিন অত্যাচারী জমিদারের চ্যালা চামচাদের মত আচরনই করেছিল ।তারা কি সেদিন কোন জাতীয় বা আন্তর্জাতিক নীতির অনুসরন করেছিল ।

ফেলানীতো শুধু মাত্র একটি ঘটনা ।বছরের অন্য দিনগুলোতে যা হয় তার সব কি আমাদের মিডিয়া প্রচার করে থাকে । অনেক ঘটনা তো থেকে যায় পর্দার অন্তরালে । যখন বি এস এফ স্বামী -সন্তানকে বেঁধে রেখে ,মা-মেয়েকে উপর্যুপরি ধর্ষণ করে তখন সেটাকে আপনারা কিভাবে গ্রহন করবেন । কেউ কি বলতে পারবেন এমন কোন মাস কি বাংলা বাসী প্রত্যক্ষ করেছে যে মাসে কোন বাংলাদেশীকে হত্যা করা হয়নি । বি এস এফ যা করে তা কি বন্ধুত্বের অভিধান সাপোর্ট করে না কি দাসত্বের অভিধান সাপোর্ট করে সে বিচারের ভার আপনাদের উপরই রইল ।

সব ঘটনারতো সেভাবে মিডিয়া কভারেজ হয় না । যাও এক ফেলানীর মিডিয়া কভারেজের বদৌলতে ভারতীয় প্রশাসন বিচার করতে বাধ্য হয়েছিলো । তাও কিনা বিচারক ফেলানীর ঘাতককে অত্যন্ত নির্লজ্জের ন্যায় খালাশ করে রায় দিল । যে দেশে হরিন স্বীকার করার কারনে ভি ভি আইপিকে জেল দেয়া হয় । যেখানে ইজরাইলে জেলে আত্নহত্যাকারী বন্দীকে ১ কোটির উপর মার্কিন ডলার ক্ষতি পূরন দেয়া হয় । সেখানে কি না সজ্ঞানে দিনের আলোয় একটা স্বাধীন দেশের নাগরিককে হত্যার কোন বিচার হল না । হায়রে মানবাধিকার ।আবার কেউ সবক দেন ভারতের কাছে অনেক কিছু শেখার আছে ।ভারতের কাছে অবশ্যই শেখার আছে - সেটা হল কিভাবে বন্ধুত্বের বিনিময়ে দাসত্ব উপহার দিতে হয় । কিভাবে প্রতারনা করতে হয় তাও মনে হয় আমরা ইন্ডিয়ার কাছ থেকেই শিখতে পারি ।

তবে যদি দেশ স্বাধীনের পরের দিকে তাকান আর হিসাব মিলান তাহলে অনেক হিসাব মিলে যেতে বাধ্য । স্বাধীনতার পর আমাদের অস্ত্র ভান্ডার ভারত লুটে নিয়েছিল কি না সে দিকে আমি যাবনা ।কারন হাতি গর্তে পড়লে চামচিকাও লাথি মারার সুযোগ হাত ছাড়া করে না ।আমরা তখন বিপদে ছিলাম এজন্য ইন্ডিয়া কিছু লুটপাট চালাতেই পারে । তবুও তারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের তবী তীরে ভেড়ানোর সময় সহযোগিতা করে আমাদের উপকার করেছিল এটাই বড় কথা ।বিজয়ের দিনে কেন জানি আমার সেনা প্রধান এম এ জি ওসমান গনির পরিবর্তে পাকিস্তানের সাথে চুক্তিনামার মাঝে জেনারেল অরোরার স্বাক্ষর পড়েছিল দেশপ্রেমিক জনতার কাছে সে প্রশ্ন আজীবন প্রশ্ন হয়েই থাকবে উত্তর কিন্তু মিলবেনা এ ধরনীতে ।

স্বাধীনতার পর আমার সবুজ বাংলার স্বপ্নদ্রষ্টা সাড়ে সাত কোটি মানুষের হৃদয়ের মধ্যমনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সংবিধান সংশোধন করে ভারতকে হস্তান্তর করল বেরূবাড়ি । কিন্তু ৪২ বছরে এসেও কি আমার ভারতীয় বন্ধুরা আমাদের আঙ্গরপাতাদহগ্রাম হস্তান্তর করে তাদের নেত্রী ইন্দিরা গান্ধীর প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পেরেছে ।তারপর পরীক্ষার নাম করে ফারাক্কা বাঁধ চালু করে আজ পর্যন্ত কি তারা সেই বাঁধ প্রত্যাহার করেছে ।উল্টো সেই পরীক্ষামূলক বাঁধ দিয়েই আমার দেশটাকে মরূভূমিতে পরিনত করার সব আয়োজন সম্পন্ন করেছে আমাদের প্রেয়সীও বন্ধুরাষ্ট্র ভারত ।

তারপর বানিজ্য ঘাটতির কথায় আসি ।আমি অর্থনীতির ছাত্র নই তাই গভীরে জাবনা ।তবে ভারতের সাথে আমাদের যে পরিমান বানিজ্য ঘাটতি বিশ্বে আর কোন অঞ্ছলে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মধ্যে আমার মনে হয় এ পরিমান বানিজ্য ঘাটতি নেই ।যেখানে আমরা তাদেরকে ইলিশ মাছ দেই । সেখানে ভারত আমাদেরকে ফেনসিডিল ,ইয়াবা সহ বিভিন্ন মাদক সামগ্রী উপহার দিয়ে ধন্য করে । হায় সেলুকাশ । এটাকে কি আমার মত কম লেখা-পড়া জানা মানুষ বন্ধুত্ব হিসেবে চিত্রিত করবে নাকি দাসত্ব হিসেবে কবুল করবে সেটা মনে হয় কবি নজরুল অথবা শের এ বাংলা এ কে ফজলুল হক জীবিত থাকলে বলতে পারতেন ।

২১ আগষ্টের কথা আমরা ভুলে গেছি । সেদিন বাবা-মা , ভাই হারা এক অসহায় কন্যা ও আমাদের কলিজার টুকরা বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য যে গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হল - সে গ্রেনেড কোথায় থেকে এসেছিল ? তারপর চারদলীয় জোট সরকারের আমলে যে দশ ট্রাক অস্ত্র ধরা খেয়েছিল সেটা কি ইন্ডিয়া থেকে এসেছিল নাকি অন্য কোথাও থেকে এসেছিল তা মনে হয় আপনারা আজো ভুলে যাননি ।তারপর ইন্ডিয়ার পত্রিকাগুলি আমাদের বিরুদ্ধে কিভাবে প্রচারনা চালায় তাও কি আপনাদের অজানা ।তারপর ইন্ডিয়ার মধ্যে উগ্র বাদী কয়েকটা সংগঠন রয়েছে যারা কিনা আমার দেশের সীমান্ত মুছে দেয়ার হুমকি দেয় প্রতিনিয়ত ।

একটি ইংরেজী দৈনিকের রিপোর্ট পড়ে আমি রীতিমত হতবাক হয়ে গেলাম ।আপনাদের অবগতির জন্য আমি রিপোর্টের কিছু অংশ তুলে ধরলাম।

UN report // Violence

One man in 10 in parts of Asia admits to forcing women to have sex

Maria Chengap

London // About one man in 10 in some parts of Asia has admitted raping a woman who was not his partner,according to the first large studies of rape and sexual violence .

In the new research ,male interviewers surveyed more than 10,000 men in Bangladesh,China,Cambodia,Indonesia,Sri

The lowest rates were in Bangladesh and Indonesia and the highestt was in Papua New Guinea.

*Associatedd Press

ইন্ডিয়া নামক দেশটি যখন নারীদের জন্য অনিরাপদ দেশ হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি পেয়েছে । যখন তাদের ইমেজ দুশ্চরিত্রের কারনে সভ্য সমাজে জমিনের সাথে মিশে গেছে ঠিক তখনি বিশ্বের সংখ্যা গরিষ্ট দুটি মুসলমান দেশের মুখে তারা কলঙ্কের একটা তিলক লেপে দিল আর এই ভেবে আত্ন তৃপ্তির ঢেঁকুর নিল বিশ্বের মুখকে তারা অন্য দিকে ফিরিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে । যেভাবে আই পি এলের কেলেঙ্কারি ঢাকতে বলির পাঁঠা বানানো হল সহজ সরল বাংলাদেশী আশরাফুল সহ কয়েকজন সতীর্থকে ।

বিষয়: আন্তর্জাতিক

৯২২ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

159923
০৭ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০১:৪৭
জেদ্দাবাসী লিখেছেন : অনেক ভালো লাগলো ধন্যবাদ
159924
০৭ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০১:৫১
আমি মুসাফির লিখেছেন :
159931
০৭ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০২:১৫
সালাহ লিখেছেন : আলহামদুলিল্লাহ ।আপনার অনুভূতি প্রেরনা হয়ে থাকলো । আর আপনার জন্য রইল লাল গোলাফের শুভেচ্ছা ।@ জেদ্দাবাসী
160727
০৯ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০২:৩৬
সালাহ লিখেছেন : আমিও আল্লাহর কাছে কামনা করি । আল্লাহ যেন আমাদের দেশপ্রেমকে জাগিয়ে তুলেন ।@ আমি মুসাফির

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File