যুব সমাজের অবক্ষয়, কারণ ও প্রতিকার (পর্ব-৩)
লিখেছেন লিখেছেন ইমরান ভাই ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৯:০৭:৪৮ সকাল
যুব সমাজের অবক্ষয়, কারণ ও প্রতিকার (পর্ব-২)
====================
যুব সমাজের অবক্ষয় ও তার কারণ:
যুব সমাজের অবক্ষয়, পদস্খলন ও অধঃপতনের কারণ অনেক। সবগুলোর আলোচনা এ ছোট নিবন্ধে একত্র করা সম্ভব নয়। তবে আমরা মারাত্মক কয়েকটি অবক্ষয়ের কারণ ও তার পরিণতির কথা আলোচনা করব।
এক- মাদক সেবন:
মনে রাখতে হবে, বর্তমানে আমাদের যুব সমাজ অসংখ্য সংকট ও সমস্যায় জর্জরিত। এ সব সংকট ও সমস্যার মধ্য হতে অন্যতম সংকট ও সমস্যা হলো মাদক সেবন ও নেশা করা। ইসলামে সব ধরনের মাদকদ্রব্য নিষিদ্ধ হলেও ধর্মীয় মূল্যবোধ হারিয়ে যুব সমাজ মাদকের মরণ নেশায় মেতে উঠেছে। বাংলা ‘নেশা’ শব্দটি মূলত ফার্সি শব্দ ‘নাশাতুন’ থেকে উদ্ভূত, যার অর্থ হচ্ছে ‘মত্ততা’। বর্তমান সময়ে অধিকাংশ যুব সমাজ মাদক-আক্রান্ত হয়ে ধ্বংসের অবলীলায় নিপতিত হতে দেখা যায়। বিভিন্ন ধরনের মাদকের সয়লাব যুবকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়াতে তারা কোনো না কোনো উপায়ে নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। মাদক বর্তমানে এত বেশি ব্যাপক আকার ধারণ করছে, যার ভয়ানক প্রভাব ও বিস্তার লক্ষ্য করা যায় আমাদের মানুষ গড়ার আঙ্গিনা-শিক্ষাঙ্গনগুলোতেও। এটি বর্তমান সময়ে যুব সমাজের জন্য একটি ভয়ানক পরিণতি ও অশনি সংকেত। তাই, বর্তমানে যদি একজন যুবক নষ্ট হয়ে যাওয়ার আগে তাকে সঠিক পথে রাখার জন্য কিংবা মাদক থেকে দূরে রাখার জন্য সময়মত সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করা হয়, তাহলে যুব সমাজের কাছে জাতির যে প্রত্যাশা তা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হতে বাধ্য।
যুব সমাজ ধ্বংস ও তাদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের প্রধান অন্তরায় মাদক। মাদক শুধু একজন যুবকের মেধা ও সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের প্রতিবন্ধক নয় বরং মাদক একজন যুবককে ধ্বংসের অবলীলা ও মারাত্মক পরিণতির দিক ঠেলে দিয়ে তাকে চিরতরে ধ্বংস ও অকেজো করে দেয়। তার মূল্যবান জীবনটা নষ্ট হয়ে যায়।
ইসলামি মূল্যবোধ বান্ধব সমাজ ব্যবস্থা ছাড়া সব সমাজেই মাদকের ছুটাছুটি পরিলক্ষিত। মুসলিম পারিবারিক বন্ধন ও ইসলামি মূল্যবোধ কম-এমন পরিবারের সদস্যরা অতি সামান্য কারণে মাদকদ্রব্যে অধিকতর আসক্ত হচ্ছে। যারা নেশা করে তাদের অধিকাংশই জানে, নেশা কোনও রকম উপকারী বা ভালো কাজ নয় এবং তা মানুষের জীবনীশক্তি বিনষ্ট করে। এসব জেনেশুনেও মাদকাসক্ত মানুষ নেশার অন্ধকার জগতের মধ্যে থাকতে চায়। মাদকাসক্ত তরুণ প্রজন্ম ধর্ম-কর্ম সবকিছু বিসর্জন দিয়ে হতাশাকে সঙ্গী করে জীবনের চলার পথ থেকে বিভ্রান্ত হয়ে পড়ছে এবং বিবেক-বুদ্ধি হারিয়ে সামাজিকতা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। ইসলাম মানুষকে নেশা গ্রহণ ও মাদক সেবন হতে সম্পূর্ণ নিষেধ করে। মানুষকে ধ্বংস ও করুণ পরিণতি হতে রক্ষা করার জন্য ইসলামী অনুশাসন মেনে চলার কোনো বিকল্প নাই। তাই আমাদের জানতে হবে ইসলাম মাদক সম্পর্কে কি দিক-নির্দেশনা দেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সতর্কবাণী উচ্চারণ করে বলেছেন,
«كل شراب أسكر فهو حرام»
“যে কোনো ধরনের নেশাজাত পানীয় হারাম”। (বুখারী, হাদিস: ৫৫৮৫) তিনি আরও বলেন,
«كُلُّ مُسْكِرٍ خَمْرٌ، وَكُلُّ مُسْكِرٍ حَرَامٌ، وَمَنْ شَرِبَ الْخَمْرَ فِي الدُّنْيَا فَمَاتَ وَهُوَ يُدْمِنُهَا لَمْ يَتُبْ، لَمْ يَشْرَبْهَا فِي الْآخِرَةِ» رواه مسلم.
‘নেশাজাতীয় যেকোনো দ্রব্যই মাদক, আর যাবতীয় মাদকই হারাম, যে ব্যক্তি দুনিয়াতে মাদক সেবন করে, অতপর নেশাগ্রস্ত অবস্থায় মারা যায় এবং সে তাওবা না করে, আখিরাতে সে মদ পান করা হতে বঞ্চিত হবে’। (মুসলিম, হাদিস: ২০০৩)
মানবসভ্যতার প্রতি মারাত্মক হুমকি সৃষ্টিকারী দেশের অন্যতম অভিশাপ মাদকাসক্তি। মাদকদ্রব্যের নেশার ছোবল এমনই ভয়ানক যে তা ব্যক্তিকে পরিবার, সমাজ, দেশ থেকেই বিচ্ছিন্ন করে না; তা সমগ্র জীবন ধ্বংস করে দেয়। মাদক কেবল সমাজ, জাতি ও রাষ্ট্রেরই ক্ষতি করে না; সভ্যতা ও সংস্কৃতিকেও বিপন্ন করে। পরিমাণে অল্প হোক আর বেশি হোক-পান বা অন্য কোনোভাবে গ্রহণ করা হোক, নেশা ও চিত্ত-বিভ্রমক হলেই তা ইসলামে সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। মানবতার মুক্তির কাণ্ডারি ইসলামই সর্বনাশা মাদক সম্পর্কে মানব জাতিকে সর্বোচ্চ সতর্ক করছে। মানুষ যাতে মাদক থেকে দূরে থাকে তার জন্য মাদক সেবনে এ নেশাগ্রস্থ ব্যক্তির জন্য শাস্তির ব্যবস্থা করেছেন। এ সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে ঘোষিত হয়েছে,
﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ إِنَّمَا ٱلۡخَمۡرُ وَٱلۡمَيۡسِرُ وَٱلۡأَنصَابُ وَٱلۡأَزۡلَٰمُ رِجۡسٞ مِّنۡ عَمَلِ ٱلشَّيۡطَٰنِ فَٱجۡتَنِبُوهُ لَعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُونَ ٩٠ ﴾ [المائدة: ٩٠]
‘ওহে মুমিনগণ! নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, প্রতিমা ও ভাগ্য নির্ণায়ক তীর হচ্ছে ঘৃণ্য বস্তু, শয়তানের কারসাজি। সুতরাং, তোমরা এসব বর্জন করো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার”। (সূরা আল-মায়িদা, আয়াত-৯০ )
মাদক হলো এমন এক ধরনের অবৈধ ও বর্জনীয় বস্তু, যা গ্রহণ বা সেবন করলে আসক্ত ব্যক্তির এক বা একাধিক কার্যকলাপের অস্বাভাবিক পরিবর্তন বা বিকৃতি ঘটতে পারে। মাদকাসক্তিতে মানুষের কোনও না কোনও ক্ষয়ক্ষতি তো হয়ই এবং ধীরে ধীরে তা নেশাগ্রস্ত ব্যক্তিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়। মাদক কেবল একক অপরাধ নয়, মাদকাসক্তির সঙ্গে সন্ত্রাস ও অন্যান্য অপরাধ অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত।
মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে মানুষের অন্তরে মাদকের ক্ষতির অনুভূতি জাগ্রত করে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«لا تشربوا الخمر؛ فإنها مفتاح كل شر»
‘তোমরা মাদক ও নেশা পান করো না; কেননা এটা সব অপকর্ম ও অশ্লীলতার মূল’।(ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৩৩৭১। হাকিম, হাদিস: ৭২৩১; হাদিসটি সহীহ বুখারি মুসলিম এর শর্ত অনুযায়ী।)
মাদকের করাল গ্রাসে তরুণ সমাজ আজ সৃষ্টিশীল ও সৃজনশীল কাজে মেধা, যোগ্যতা, প্রজ্ঞার আশানুরূপ অবদান রাখতে পারছে না। যে তরুণ তার অমিত সম্ভাবনাকে পরিবার, দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজে লাগাতে পারত, মাদকের নীল দংশন তার সুকুমার বৃত্তি নষ্ট করে, এমনকি ক্রমান্বয়ে তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। উপরন্তু তথা কালেমা, নামাজ, রোজা, হজ ও জাকাতসহ আল্লাহ তায়ালার বিধিবদ্ধ দৈহিক ও আর্থিক ইবাদত থেকে দূরে রাখে এবং পাপাচারে লিপ্ত করে। এতে মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তা‘আলা অসন্তুষ্ট হন। এ মর্মে কুরআনে মাজীদে আল্লাহ বলেন,
﴿إِنَّمَا يُرِيدُ ٱلشَّيۡطَٰنُ أَن يُوقِعَ بَيۡنَكُمُ ٱلۡعَدَٰوَةَ وَٱلۡبَغۡضَآءَ فِي ٱلۡخَمۡرِ وَٱلۡمَيۡسِرِ وَيَصُدَّكُمۡ عَن ذِكۡرِ ٱللَّهِ وَعَنِ ٱلصَّلَوٰةِۖ فَهَلۡ أَنتُم مُّنتَهُونَ ٩١﴾ [المائدة: ٩١]
‘নিশ্চয় শয়তান মদ ও জুয়ার দ্বারা তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক শত্রুতা ও বিদ্বেষ ঘটাতে চায় এবং তোমাদের আল্লাহর স্মরণ ও সালাত থেকে বিরত রাখতে চায়, তবু কি তোমরা নিবৃত্ত হবে না ?’(সূরা আল-মায়িদা, আয়াত-৯১)
যেহেতু মাদকাসক্তি একটি জঘন্য সামাজিক ব্যাধি, জনগণের সামাজিক আন্দোলন, গণসচেতনতা ও সক্রিয় প্রতিরোধের মাধ্যমেই এর প্রতিকার করা সম্ভব। ঘর থেকে শুরু করে স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, বিশ্ববিদ্যালয়সহ পাড়া-মহল্লা ও এলাকায় মাদকদ্রব্য ব্যবহারের বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে ঘৃণা প্রকাশের আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। মাদকদ্রব্যের মারাত্মক পরিণতি সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করে তুলতে নিয়মিত সভা-সমিতি, সেমিনার, কর্মশালার আয়োজন করতে হবে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় ধর্মীয় বিধিবিধান সম্পর্কিত শিক্ষামূলক ক্লাস নিতে হবে। মাদকদ্রব্য উৎপাদন, চোরাচালান, ব্যবহার, বিক্রয় প্রভৃতি বিষয়ে প্রচলিত আইনগুলোর বাস্তব প্রয়োগ ও কঠোর বিধান কার্যকর নিশ্চিত করা দরকার। সমাজজীবনে এহেন ঘৃণ্য মাদকদ্রব্যের ব্যবহার ও প্রসার রোধ করা অত্যন্ত জরুরি। এ ক্ষেত্রে যারা মাদকদ্রব্য প্রস্তুত, এর প্রচলন ও সরবরাহের কাজে জড়িত তাদের দেশ ও জাতির স্বার্থে এহেন অনৈতিক কাজ অবশ্যই বর্জন করা উচিত।
প্রতি শুক্রবার জুমার নামাজের আগে মসজিদের ইমাম-খতিবের ভাষণে মাদকের বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে সোচ্চার থাকতে হবে এবং মাদকের কুফল সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টি করে মাদকের অবৈধ উৎপাদন, বিপণন, ব্যবহার ও চোরাচালান রোধসহ সকল স্তরের মুসল্লিদের কঠোর অবস্থান নিতে হবে। শুধু মদ্যপায়ী ও বিক্রেতা নয়, বরং মদ ও মাদকদ্রব্যের সঙ্গে সম্পর্কিত ১০ জনের প্রতি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অভিসম্পাত দিয়েছেন। তারা হচ্ছে,
«لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الخَمْرِ عَشَرَةً: عَاصِرَهَا، وَمُعْتَصِرَهَا، وَشَارِبَهَا، وَحَامِلَهَا، وَالمَحْمُولَةُ إِلَيْهِ، وَسَاقِيَهَا، وَبَائِعَهَا، وَآكِلَ ثَمَنِهَا، وَالمُشْتَرِي لَهَا، وَالمُشْتَرَاةُ لَهُ»
“১. মদ্যপানকারী, ২. মাদক প্রস্ততকারক ৩. মাদক প্রস্তুতের উপদেষ্টা, ৪. মাদক বহনকারী, ৫. যার কাছে মাদক বহন করা হয় ৬. যে মাদক পান করায়, ৭. মাদক বিক্রেতা, ৮. মাদকের মূল্য গ্রহণকারী ৯. মাদক ক্রয়-বিক্রয়কারী, ১০. যার জন্য মাদক ক্রয় করা হয়” ।(তিরমিযী, ১২৯৫)
সমাজের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গসহ সকল শ্রেণীর ধর্মপ্রাণ লোক স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে মাদকদ্রব্যের প্রসার রোধে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা চালালে দেশ থেকে মাদকদ্রব্যের ব্যবহার চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে। এ ব্যাপারে ইসলামে কঠোর শাস্তির বিধান আছে। ইহকাল ও পরকালে মাদকাসক্তির ভয়াবহতা জনগণের সামনে তুলে ধরার পরও যারা এ ভয়ঙ্কর নেশা ছাড়ে না তাদের জন্য আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দণ্ডবিধি প্রবর্তন করেছেন, যাতে তারা সংশোধিত হয় এবং অন্যরা শিক্ষা নিতে পারে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ইসলামী মূল্যবোধে উজ্জীবিত হওয়ার শিক্ষাই মাদকের সর্বনাশা অভিশাপ থেকে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তরুণদের রক্ষা করতে পারে।
অতএব, ধর্মভীরু মা-বাবা ও অভিভাবকদের উচিত সর্বনাশা মাদকের কুফল ও ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সন্তানদের সচেতন করা। তাহলেই মাদকাসক্ত সন্তানদের নিয়ে মা-বাবার সমস্যা অনেক কমে যাবে। মা-বাবা ও অভিভাবকেরা, নিজেদের সন্তানদের সামনে ধর্মীয় রীতিনীতি, ইসলামি মূল্যবোধ ও নীতি-নৈতিকতার সুন্দর আদর্শ তুলে ধরুন। কারণ তারাই একদিন সমাজ-সংসার তথা দেশের কর্ণধার হবে। প্রত্যেক অভিভাবকের উচিত, তাদের সন্তান যাতে কোনও অসৎ সংস্রবে পড়ে মাদকাসক্ত না হয় সেদিক সজাগ দৃষ্টি রাখা। এ ক্ষেত্রে পারিবারিক শৃঙ্খলা, সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক, সর্বোপরি মানসিক বিকাশের উপযোগী পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি।
মাদক ত্যাগের ব্যাপারে আসক্ত ব্যক্তিদেরও আত্মপ্রত্যয়ী হওয়া দরকার। মাদক থেকে বিরত থাকার জন্য নিজস্ব উদ্যোগই সবচেয়ে ভালো। নিজ থেকে নেশা ছাড়া সম্ভব না হলে তাদের ইসলামি মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ করতে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ বা রাষ্ট্র প্রদত্ত সহযোগিতা গ্রহণ করতে হবে। তরুণ প্রজন্ম ও যুব সমাজে মাদকাসক্তির নেশায় যে নৈতিক ও সামাজিক অবক্ষয়ের সৃষ্টি হয়েছে তা কেবল ইসলামি মূল্যবোধই প্রতিরোধ করতে পারে। আসক্তদেরকে মাদক ত্যাগে উৎসাহিত করতে সর্বস্তরের জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে।
হাদিসে মাদকের সেবনের বিভিন্ন পরিণতির কথা উল্লেখ করে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষের অন্তরে মাদকের প্রতি ঘৃণা সৃষ্টি করেছেন এবং বিভিন্ন প্রকার শাস্তি ও আযাবের কথা উল্লেখ করে মানুষকে সর্তক করেছেন। যেমন-রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাদকের বিস্তারকে কিয়ামতের আলামত বলে আখ্যায়িত করেন।
মাদকের বিস্তার কেয়ামতের আলামত:
মাদক ও নেশাজাত দ্রব্যের বিস্তার কিয়ামতের আলামত। আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
إن من أشراط الساعة: أن يرفع العلم ويثبت الجهل، ويُشرب الخمر، ويظهر الزنا رواه البخاري ومسلم،
“কিয়ামতের আলামতসমূহের কতক আলামত হল, দুনিয়া থেকে ইলম তুলে নেয়া হবে, অজ্ঞতা-নিরক্ষরতা-প্রতিস্থাপিত হবে, মদ্য পান ব্যাপক হবে এবং ব্যভিচার বৃদ্ধি পাবে।(বর্ণনায় বুখারি, হাদিস: ৮০, মুসলিম, হাদিস: ২৬৭১ )
অর্থাৎ কিয়ামতের পূর্বে মানুষের মধ্যে মদ্যপান ও নেশা গ্রহণ অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাবে। যেমনটি অপর একটি হাদিস দ্বারা প্রমাণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ويكثر شرب الخمر “এবং মদ্যপান বৃদ্ধি পাবে”। (বুখারি, হাদিস: ৫২৩১)
কিয়ামতের পূর্বে দেশ ও সমাজে মাদকের সয়লাব এত ব্যাপক হবে, কেউ কেউ মাদক সেবন করাকে অপরাধও মনে করবে না। তারা মনে করবে মাদক সেবন করা কোনো অপরাধ নয় বরং তা হালাল। অনেক সময় দেখা যাবে, মাদক ও নেশা জাতীয় বস্তুর নাম পরিবর্তন করে বিভিন্ন প্রকার কোমল পানীয় ও শরবতের নামে নামকরণ করে তা পান করা হবে। তারা মনে করবে নাম পরিবর্তন করা দ্বারা তা হালাল হয়ে যাবে। ফলে মাদক সেবন যে হারাম ও নিষিদ্ধ তা তাদের অন্তর থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবে। মাদকের প্রতি তাদের আগ্রহ বাড়বে, এটা যে নিষিদ্ধ তার প্রতি কোনো ভ্রূক্ষেপ করা হবে না।
‘উবাদাহ ইবন সামেত রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«ليستحلنّ طائفة من أمتي الخمر، باسم يسمّونها إياه»
“আমার উম্মতের মধ্যে একটি গোষ্ঠী এমন হবে, যারা মদকে ভিন্ন নামে নামকরণ করে সেটাকে হালাল মনে করবে”। (আহমদ, হাদিস:২২৭০৯)
এর চেয়েও অধিক শক্তিশালী হাদিস -যাতে এ ধরনের অপরাধীদের বিষয়ে কঠোর হুশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে- যেটি ইমাম বুখারী রহ. সহীহ বুখারিতে আবু মালেক আল আশ‘আরী হতে বর্ণনা করেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«ليكوننّ من أمتي أقوام، يستحلّون الحِرَ والحرير، والخمر والمعازف، ولينزلن أقوام إلى جنب عَلَم، يروح عليهم بسارحةٍ لهم، يأتيهم -يعني الفقير- لحاجةٍ فيقولون: ارجع إلينا غداً. فيبيّتهم الله، ويضع العَلَم، ويمسخ آخرين قردة وخنازير إلى يوم القيامة»
“আমার উম্মতের কতক সম্প্রদায় এমন হবে, যারা যিনা-ব্যভিচার, রেশমী কাপড় পরিধান করা, মাদক সেবন করা ও গান-বাজনাকে বৈধ মনে করবে। আর উম্মতের একটি সম্প্রদায় একটি পাহাড়ের পাদদেশে অবতরণ করলে তাদের নিকট তাদের রাখাল তাদের ছাগলগুলো নিয়ে উপস্থিত হবে। তখন তাদের নিকট একজন ভিক্ষুক এসে ভিক্ষা চাইলে তারা তাকে বলবে, তুমি আমাদের নিকট আগামীকাল এস। রাতে তাদের উপর আযাব এসে তাদের ধ্বংস করে দেবে। আর আল্লাহ তাদের উপর পাহাড় ধ্বসে দিবেন। আর তাদের কতেককে তিনি কিয়ামত পর্যন্ত বানর ও শুকরের আকৃতিতে পরিণত করে দিবেন। (বুখারি, হাদিস: ৫৫৯০)
যারা মাদককে হালাল বলে তাদের দুটি উপায়ে সংশোধন করতে হবে:-
এক: কোনো বস্তুকে অন্য নামে নামকরণ দ্বারা বস্তুর আসল রূপ পরিবর্তন হয় না। আর শরীয়তের সব বিধানই হল, স্পষ্ট, মজবুত ও শক্তিশালী। শরিয়তের বিধান দ্বারা কোনো প্রকার খেল-তামাশা করা বৈধ নয়। সুতরাং, যে নামেই নাম করণ করা হোক না কেন, তার মধ্যে যখন কারণ- নেশা-পাওয়া যাবে, তখন তা সেবন বা পান হারাম হবে। এমনকি যদি আমরা মদকে পানিও নাম রাখি, তা হলেও তা হারাম হবে। কারণ, হাদিসে স্পষ্ট ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, যে পানীয় দ্বারা মানুষের মস্তিষ্ক নষ্ট হয়, তা হারাম।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«كل شراب أسكر فهو حرام»
“যে কোনো ধরনের নেশাজাত পানীয় হারাম” ।(বুখারী, হাদিস, ৫৫৮৫)
অনুরূপভাবে রাসূল সা. বলেন,
«كل مسكر خمر، وكل مسكر حرام»
“নেশাজাতীয় যেকোনো দ্রব্যই মাদক, আর যাবতীয় মাদকই হারাম ।”(মুসলিম, হাদিস: ৫০০৫)
আর যারা মদ পান করাকে বৈধ দাবী এবং হালাল মনে করে তাদের বলা হবে, আল্লাহ তা‘আলা যে সব বস্তুকে হারাম করেছে, তাকে হালাল মনে করা দ্বারা একজন মানুষ ইসলামের বন্ধন থেকে বের হয়ে যায়। শেখ সুলাইমান আত-তামিমী রহ. বলেন, যে সব বস্তু নিষিদ্ধ হওয়া বা হালাল হওয় বিষয়ে উম্মতের ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সে ধরনের হালাল বা হারাম মনে করা কুফর। কারণ, আল্লাহ ও তার রাসূল যে বস্তুকে হালাল করেছেন, তার হালাল হওয়াকে অস্বীকার করা যাবে না এবং যে বস্তুকে হারাম করেছে তাকে হালাল বলে আখ্যায়িত করা যাবে না। এ ধরনের ধৃষ্টতা কেবল সেই দেখাতে পারে যে ইসলামের দুশমন, ইসলামের বিধি-বিধান অস্বীকারকারী এবং কুরআনও সুন্নাহ এবং উম্মতের ইজমাকে অমান্যকারী।
দুই: পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের হেফাযত করা একজন মানুষের জন্য খুবই জরুরী। পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের হেফাযত ছাড়া ইসলামের মাকাসেদ তথা মূল উদ্দেশ্যসমূহ বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। আর ইসলামের মাকাসেদকে সংরক্ষণ করার জন্য পরিপূর্ণ চেষ্টা করা একজন মুমিনের দায়িত্ব ও কর্তব্য। কিন্তু মদ মানুষের জ্ঞানকে নষ্ট করে দেয় যা একজন মানুষের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইন্দ্রিয়। মদ মানুষের জ্ঞানকে বিলুপ্ত করে, চিন্তা-ফিকিরকে নষ্ট করে দেয়। একজন মানুষ যাতে তার জ্ঞানহারা না হয়, এ কারণে আল্লাহ মানুষকে মদ পান হতে কঠিন হুশিয়ারি উচ্চারণ করে। আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে মদ থেকে দূরে থাকার জন্য সুস্পষ্ট ও পরিষ্কার নিষেধ করেন, যার মধ্যে কোনো প্রকার ব্যাখ্যা বা বিকৃতির সুযোগ নাই। এ কারণেই ইমাম কুরতবী রহ. আল্লাহ তা‘আলার বাণী فاجتنبوه এর তাফসীরে বলেন, আল্লাহর এ কথাটি দ্বারা মদ থেকে সম্পূর্ণ দূরে থাকাকে বুঝায়। ফলে মদ থেকে কোনো উপায়ে কোনো প্রকার উপকার গ্রহণ করা যাবে না। মদ পান করা যাবে না, বিক্রি করা যাবে না, শরবত বানানো যাবে না, ঔষধ বানানো যাবে না ইত্যাদি। ইমাম ইবন মাজাহ আবুদ দারদা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে একটি হাদিস বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন,
«لا تشربوا الخمر؛ فإنها مفتاح كل شر»
“তোমরা মদ সেবন করো না, কারণ, মদ সমস্ত অনিষ্টতার চাবি-কাঠি”। (ইবন মাজাহ, হাদীস নং, ৩৩৭১; হাকিম, হাদিস: ৭২৩১; হাদিসটি সহীহ বুখারি মুসলিম এর শর্ত অনুযায়ী।)
মদের ক্ষতি শুধু দু একটির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এর ক্ষতি এত ব্যাপক- যার কারণে আল্লাহ তা‘আলা মদ সেবন করাকে শুধু হারাম বা নিষিদ্ধ করেননি বরং মদ বিক্রি করা, তৈরি করা, আমদানি-রফতানি বিপণনসহ যাবতীয় সব কিছুকেই নিষিদ্ধ করেন। যারা মদের বাণিজ্য করে, তাদের ব্যাপারেও কঠিন হুশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে। যারা মদ পান করে তারা আখেরাতে এ জাতীয় পানীয় থেকে বঞ্চিত হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। যেমন, আব্দুল্লাহ ইবন ওমরের হাদিস বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«من شرب الخمر في الدنيا فمات وهو يدمنها لم يتب، لم يشربها في الآخرة»
“যে ব্যক্তি দুনিয়াতে মদ পান করে এবং নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তাওবা না করে মারা যায়, সে আখিরাতে ঐ জাতীয় কোনো পানীয় পান করতে পারবে না।(বর্ণনায় মুসলিম, হাদিস: ২০০৩, নাসায়ী, হাদিস: ৫৬৭৩)
আর জাবের রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে একটি হাদিস বর্ণিত, তাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«وإن على الله لعهدا لمن شرب المسكر أن يسقيه من طينة الخبال: عرق أهل النار»
“যারা দুনিয়াতে মাদক সেবন করে, তাদেরকে আখিরাতে জাহান্নামীদের দেহের পচা-গলা, পুঁজ ও ঘাম পান করানো বিষয়ে আল্লাহ তা‘আলা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”(বর্ণনায় মুসলিম, হাদিস: ২০০২। )
অনুরূপভাবে আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে একটি মারফু হাদিস বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«لا يدخل الجنة مدمن خمر»
“নেশাকরায় অভ্যস্ত ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না”।(ইব্নু মাযা, হাদিস: ৩৩৭৬ ইবনু হাব্বান, হাদিস: ৬১৩৭)
আবদুল্লাহ ইবন ওমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে আরও একটি হাদিস বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«من شرب الخمر لم تقبل له صلاةٌ أربعين صباحاً، فإن تاب: تاب الله عليه، فإن عاد لم يقبل الله له صلاة أربعين صباحاً، فإن تاب: تاب الله عليه، فإن عاد لم يقبل الله له صلاة أربعين صباحاً، فإن تاب: تاب الله عليه، فإن عاد الرابعة لم يقبل الله له صلاة أربعين صباحاً، فإن تاب لم يتب الله عليه، وسقاه من نهر الخبال».
“যে ব্যক্তি মদ পান করে, চল্লিশ দিন পর্যন্ত তার সালাত কবুল করা হবে না। যদি সে তাওবা করে আল্লাহ তা‘আলা তার তাওবা কবুল করবেন। তারপর যদি সে পুনরায় মদ পান করে, আল্লাহ আবারো চল্লিশ দিন পর্যন্ত তার সালাত কবুল করবেন না। তারপর যদি সে তাওবা করে আল্লাহ তা‘আলা তার তাওবা কবুল করবেন। তারপর যদি সে পুনরায় মদ পান করে, আল্লাহ আবারো চল্লিশ দিন পর্যন্ত তার সালাত কবুল করবেন না। যদি সে তাওবা করে আল্লাহ তা‘আলা তার তাওবা কবুল করবেন। তারপর যদি সে চতুর্থবার পুনরায় মদ পান করে, আল্লাহ আবারো চল্লিশ দিন পর্যন্ত তার সালাত কবুল করবে না। তারপর যদি তাওবা করে তার তাওবা কবুল করা হবে না। আল্লাহ তাকে জাহান্নামীদের পচা-গলা ও পুঁজের নহর থেকে পান করাবেন”।(বর্ণনায় তিরমিযি, হাদিস: ১৮৬২)
যারা প্রবৃত্তির পূজারি তাদের নিকট এ ধরনের উপদেশ অনেক সময় অমূলক। যারা আখিরাতে বিশ্বাস করে না, তাদের আখিরাতের ওয়াজ ও নছিহত দ্বারা মদ পান করা থেকে বিরত রাখা সম্ভব নয়। এ ধরনের লোকদের নিকট মদ পান বা নেশাজাত দ্রব্য পান করা দুনিয়াবি ক্ষতিগুলো তুলে ধরতে হবে। তাদের বুঝাতে হবে, মদ পান করা বা নেশা গ্রহণ করা কেবল শরীয়তের পরিপন্থীই নয় বরং নেশাজাত বস্তু সেবন করা দ্বারা একজন মানুষ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়, পারিবারিক ও সামাজিক শান্তি শৃঙ্খলা বিনষ্ট হয় ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধ্বংসের দিক ঠেলে দেওয়া হয়। মদ পানের কারণে ঘরে বাইরে অশান্তি তৈরি হয়, বৈবাহিক সম্পর্কে ফাটল দেখা দেয়, মারা-মারি হানা-হানি বৃদ্ধি পায়।
এ ছাড়াও রয়েছে একজন মানুষের দৈহিক ক্ষতি। মাদক সেবন দ্বারা বড় বড় রোগ-ক্যানসার, যক্ষ্মা ইত্যাদি মারাত্মক সংক্রামক ব্যাধি দেখা দেয়।
এত কিছুর পরও কি বলা যাবে, মাদক সেবন করা বৈধ এবং তা নিষিদ্ধ এবং হারাম নয়?
========
চলবে..........
বিষয়: বিবিধ
৪১২৯ বার পঠিত, ৭৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমি ততক্ষন খেয়ে দেয়ে সাবার করি
বড়দের নাম ধরে ডাকা ৳হ্যারিকাপুনি
===
কারোটাই নো ডিলেট...কমেন্টস উইল স্টে ইভার।
এই নেন.
কেন জেন ব্লগে ছবি এড ক্লিক করলে ইরোর দেখায়
আসসালামু আলাইকুম ।
Please try again later.}}
ব্লগের টেকনিক্যাল কোন প্রবলেম হয়েছে মনেহয় মডুমামীরা কি করে
যাক আপাততো এই চাটা নাও
[সালাম তোমার ভাবীকে পৈছেদিবো ইনশাআল্লাহ। কালকেও তোমাকে নিয়ে অনেক গল্প করছি আমার বউয়ের সাথে আমার বউ তোমাকে না দেখলেও তার সামনে এসে জদি বলো আমি আফরা তাহলেই চিবে]
@হ্যারি, তোমকেও চেনে, তবে মাঝে মাঝে তোমকে আ..Pu. ভাবে হাহাহাহা...
@হ্যারিকাপুনি
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপু
"/>"/>"/>
===
প্রশ্ন করো আফরা
ছাত্র-ছাত্রী, হেডমাস্টুর সবাই এক লাইনে দাড়াও
আপনারও মুখস্ত করা দরকার, যাতে আমাদের ভবিষ্যতের ভাইয়াটাকে উপহার দিতে পারেন এসব লেকচার
আসলে খারেজিদের সম্মন্ধ্যে কিছু স্ট্যাডি করে দেখলুম আমার ভিতরে কিছু লক্ষন আছে কিনা ঠিক বুঝতে পারছিলুম না তাই চলে যাবার চিন্তা করছিলুম
যাক আপাতত রইলুম তোমার জন্য নতুন একটা হাতুড়িড় অর্ডার দিলুম হাতুড়ির নাম দিলুম "হরিকেনের পাশে মুমবাতি" :-X
মন্তব্য করতে লগইন করুন