আত্মার খোরাক (১৩)
লিখেছেন লিখেছেন মাহবুবা সুলতানা লায়লা ২৬ এপ্রিল, ২০১৫, ০২:১০:২১ রাত
মুসলামানের পরষ্পরের উপর পরষ্পরের হক্ব সম্পর্কে হাদীসঃ-
"হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ মুসলমান পরষ্পরের ভাই। সতরাং সে তার উপর কোন প্রকার জুলুমও করতে পারেনা এবং তাকে অসহায় অবস্থায় ফেলতে পারেনা। আর যে তার মুসলমান ভাইয়ের অভাব পূরণ করবে, আল্লাহ তার অভাব পূরণ করবেন। অনুরুপ ভাবে যে কোন মুসলমানের দুঃখ দুর করে দিবে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার দুঃখ দুর করে দিবেন। আর যে ব্যাক্তি কোন মুসলমানের ত্রুটি গোপন করে রাখবে, আল্লাহ হাশরের দিন তার ত্রুটিও গোপন করে রাখবেন।"
(বুখারী, মুসলিম)
হযরত আনাস (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ তোমার মুসলমান ভাই জালেম হোক, কিংবা মজলুম হোক, তাকে তুমি সাহায্য করবে। একজন সাহাবী জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর নবী (সঃ)! মজলুম কে তো আমি সাহায্য করতে পারি, কিন্তু জালেমকে আমি কি করে সাহায্য করবো? হুযুর (সঃ) বললেন, তুমি তাকে জুলুম হতে বিরত রাখবে এটাই হবে তোমার জন্য তাকে সাহায্য করা।"(অর্থ্যাৎ একজান মুসলমানকে যখন জুলুম হতে বিরত রাখা হয়, তখন তাকে একটি ভয়ংকর পাপ কার্য হতে ফিরান হয়, পাপ কার্যটি তাকে জাহান্নামের আগুনে নিক্ষেপ করতো। আর এটাই হলো তাকে সাহায্য করা।)
(বুখারী,মুসলিম)
হযরত আনাস (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ যে মহা-মহীয়ান আল্লাহর হাতে আমার জান, আমি তার শপথ করে বলছি, কোন লোকই প্রকৃত মু'মিন হতে পারবেনা, যে পর্যন্ত না সে নিজের জন্য পছন্দ যা করে, তা তার অন্য ভাইয়ের জন্য পছন্দ করবে।"
(বুখারী, মুসলিম)
হযরত আবু আইউব আনসারী (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সঃ) কারো পক্ষে (মুসলমান) ভাইয়ের সহিত তিন দিন ও রাত্রি সম্পর্ক ছিন্ন করে রাখা বৈধ হবে না, এমন ভাবে যে, পরষ্পর পরষ্পর হতে মুখ ফিরিয়ে নিবে। হাঁ তাদের এ নিরবতা প্রথমে যে সালাম দিয়ে ভঙ্গ করবে সেই উত্তম।"
(বুখারী, মুসলিম)
ব্যাখ্যাঃ- যদি কোন কারনে দু'জন মুসলমানের মধ্যে মনোমালিন্য ঘটে আর তার ফলে তাদের সম্পর্ক তিক্ত হয়ে কথাবার্তা বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে তাদের এ অবস্থানটা তিন দিনের বেশী বজায় থাকাটা ইসলামের দৃষ্টিতে দোষণীয়। তিন দিনের মধ্যেই তাদের মনোমালিন্য মিটিয়ে ফেলা উচিৎ। আর এব্যাপারে উভয়েরমধ্য যে ব্যক্তি প্রথম তার রাগ প্রশমিত করে অন্য ভাইয়ের প্রতি মিলনের হাত প্রসারিত করবে, তাকেই হুযুর (সঃ) উত্তম ব্যাক্তি বলে আখ্যায়িত করেছেন।
শিক্ষাঃ- এই হাদীসদ্বয় থেকে আমাদের জন্য শিক্ষনীয় হলো মানুষের হক্ব সম্পর্কে জানা ও মানুষের হক্ব পুরোপুরি আদায় করতে সচেষ্ট হওয়া। বর্তমানে আমরা মানুষের হক্ব তো আদায় করিইনা তারউপর যত জুলুম আছে তা প্রয়োগ করি। মহান আল্লাহ আমাদেরকে সঠিক দ্বীন জানার তৌফিক দিন ও সে অনুযায়ী আমল করার ও তৌফিক দিন। আমিন ছুম্মা আমিন!
বিষয়: বিবিধ
৯৮১ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
হাদীসগুলো পড়ার সুযোগ করে দেয়ার জন্য শুকরিয়া! শুধু পড়ে যাওয়া নয় বরং যথাযথ আমল করার জন্য দোআ প্রার্থী! জাযাকিল্লাহু খাইর!
ধন্যবাদ আপনাকে সে সব অমুল্য কথাগুলো তুলে ধরার জন্য।
জাজাকাল্লাহ খাইরান আপু ।
দারুন লিখেছেন।অনেক ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন