MOOD CHANGER (Neuro Sciences and Technology )
লিখেছেন লিখেছেন লজিকাল ভাইছা ২৪ নভেম্বর, ২০১৪, ০২:৩০:৪০ রাত
Neuro Sciences and Technology
একঃ হাসান খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে, গোসল সেরে নাস্তার টেবিলে বসল। আজ তার জীবনের প্রথম চাকরীর ইন্টার ভিউ। গতকাল রাতের সিলেক্ট করা ড্রেস পরে আয়নার সামনে গিয়ে নিজেকে পিট করে এসেই নাস্তার অপেক্ষায়। মায়ের মমতায় মাখা হাতের তৈরি নাস্তা ভাবতেই জিবে জল এসে যায়। দ্রুত হাতে নাস্তা করতে গিয়ে হঠাৎ ভাঁজির একটু ঝোল এসে পড়ল তার জামায়, মেজাজটা চর্মে উঠে গেল। মুড চেইঞ্জ !!!!
দুইঃ আজ আম্মার এর অফিসে অনেক কাজ, বিদেশী ক্লাইয়েন্ট এর সাথে মিটিং সকাল ১০ টায়। তাই দ্রুত হাতে প্রেজেন্টেশান তৈরি করছে। হঠাৎ পাশে রাখা চায়ের কাপ পড়ে গেল, নষ্ট হয়ে গেল কিছু পেপের। যদিও আবার প্রিন্ট করে নেওয়া যাবে কিন্তু কারেন্ট নেই। মুডটাই খারাপ হয়ে গেল !!!!
তিনঃ শফিকের আজ গণিত পরীক্ষা, প্রস্তূতি ও ভাল। সে বরাবরই গণিতে খুব ভাল, তাই কোন প্রকার টেনশনই নেই ।বেশ ফুঁরফুঁরে মেজাজে আজ সে, ভাবল মৌকে একটা ফোন দেই ( ওহ মৌ হল তার উনি, মানে প্রেমিকা)। যেমন ভাবনা তেমন কাজ, সাথে সাথে ফোন দিল মৌকে কিন্তু একি মৌ ফোন রিসিভ করছে না কেন? এক দুই তিন চার ......সাত বার !!!! কিন্তু মৌ ফোন রিসিভ করছেনা। করবে কি ভাবে সে ত বেঘোরে ঘুমাচ্ছে। মেজাজ চর্মে উঠে গেল!! মনে মনে ভাবছে আর সন্দেহ করছে, চরম গালা গাল করছে মৌকে , সারা রাত কারো সাথে কথা বলেছে নিশ্চয়। মুডটায় নষ্ট হয়ে গেল!!!! (এই অবস্থায় মাথা দিয়ে আজ আর ম্যাথ বাহির হবেনা)
চারঃ মাহমুদের আজ নতুন অফিসের প্রথম দিন, তাই ভাল ভাবে সেজেগুজে হাতে সময় নিয়ে অফিসের দিকে রওয়ানা হল। নতুন অফিস, তার উপর প্রথম দিন, নতুন বসদের নিকট নিজেকে স্মার্ট ও সিনচিয়ার হিসাবে উপস্থাপন করতেই হবে। রিক্সায় চেপে বসলো, হঠাৎ উপর থেকে কি যেন এসে পড়ল মাথায়, হাত দিয়ে দেখে একি, পিছনে তাকিয়ে দেখে শার্টের কলারের দিকেও এসে পড়েছে। উপরে তাকিয়ে দেখে কারেন্টের এলোমেলো তারের উপর বসে তার দিকে বাঁকা চোখে তাকিয়ে দেখছে, সে চির শত্রু শহুরে কাক। শিউর হতে চাচ্ছে গোলা গুলো ঠিক জায়গায় পড়েছে কিনা? মেজাজ ৪৪০ ভোল্টে চড়ে গেল !!!!! মুড চেইঞ্জ !!!!
পাঁচঃ বাদল তার যাবতীয় প্রস্তূতি সম্পরন্য করে রাতে তারাতারি ঘুমিয়ে পড়ল।কাল কলেজে সকালেই তার প্রথম ক্লাস, কেমিস্ট্রির জারণ- বিজারণ টপিক এর উপর লেকচার দিতে হবে। যে ভাব সেই কাজ , সকাল সকাল উঠে কলেজের চলে আসল। গেট দিয়ে ঢুকার পূর্ব মহুরত্যে যত বিপত্তি, কলেজের ঝাড়ুদার ময়লা ফেলছিল, আর অমনি সব এসে পড়ল তার গায়ে। মনে হল জারণ-বিজারণ সব বিক্রিয়া হয়ে তার নাক, কান দিয়ে বাহির হচ্ছে। মুড চেইঞ্জ !!!!
এই রকম হাজার ঘটনা ঘটছে, প্রতিনিয়ত আমাদের চারপাশে । ভাল একটা মুড কে মহুরত্যেই চিতপটাং করে, জীবনের উপর বিরুপ প্রভাব পেলছে। উপরের ঘটনা গুলোতে মুড পরিবর্তনের পিছনে কিছু দুর্ঘটনা জড়িত।
আবার কিছু মুড আছে যে গুলো কোন কারণ ছাড়াই, যে কোন সময়, যে কোন অবস্থায় পরিবর্তন হয়ে যায়। যেমনঃ বৃষ্টি, তার মুড গুলো আজবই বলতে হয়। গণিত পরীক্ষার আগের রাতে হঠাৎ তার ফিজিক্স পড়তে ইচ্ছে করে, আবার ফিজিক্স পরীক্ষার আগের রাতে তার কেমিস্ট্রি পড়তে মুড হয়। বিচিত্র সব মুড
মাহমুদের মুড গুলো কম বিচিত্র নয়। পরীক্ষার আগের দিন রাত প্রায় ১০ টায়, হঠাৎ তার মুড হল, তাকে গরুর দুধের চা খেতে হবে। অন্য চা হলে কিম্বা কন্ডেন্স মিল্ক এর চা হলে হবে না, আবার চা না খেলেও সারা রাত আর পড়া- লেখাত হবেই না, রাতে ঘুম ও হবে না। অথবা মাঝে মাঝে পরীক্ষার রাতে তাকে মুভি দেখতে হয়। এই সব বিচিত্র মুড, নষ্ট হয়ে যাচ্ছে অনেক স্বপ্ন।
আমার এক বড় ভাই আব্দুল মতিন, তার মুড গুলো আর ও ভয়ংকর। মতিন গত দুই বছরে তিন বার বাড়ি যাওয়ার জন্য, বাসা থেকে রওয়ানা হয়ে বিমান বন্দর থেকে ফিরে এসেছে। কারণ এয়ারপোর্ট এ যাওয়ার পর হঠাৎ তার মুড চেঙ্গ সে বাড়ি যাবে না। অন্য একবার সে ওমান যাওয়ার জন্য শারজা থেকে গাড়ি নিয়ে রওয়ানা হয়ে, ওমান বর্ডার গেট থেকে ফিরে এলো, কারণ তার হঠাৎ তার যেতে ইচ্ছে করছেনা। তার বিয়ে ঘটনা ত আরো বিস্ময় কর, সে বিয়ে করবেনা, পাত্রী প্রস্তূত অভিবাবকরা প্রস্তূত কিন্তু সে বিয়ে করবেনা। বিদেশ থেকে ঘুরে এসে তার পর বিয়ে করবে। যাত্রার ৬ ঘণ্টা আগে হঠাৎ Mood Change , সে বিয়ে করবে । ব্যস বিয়ে করে সোজা এয়ারপোর্ট।
কিন্তু যদি এমন কিছু থাকত, যা দিয়ে উপরোক্ত ব্যাক্তিদের হঠাৎ মুড Change হওয়া কে কন্ট্রোল করা যেত। একটা মুডকে খারাফ হওয়া থেকে রক্ষা করা যেত!! তবে কতই না উত্তম হত, অনেক গুলো মানুষের জীবনে হয়ত অনেক রঙ্গিন কিছু ঘটত।
হুম,এই রকম একটা বিষয় নিয়েই কাজ করছেন যুক্তরাষ্টের কিছু Neurologist. এবং Neuro Sciences technology নিয়ে কাজ করা কিছু প্রতিষ্ঠান । এই লক্ষে তারা ১৩ মিলিয়ন ডলারের একটি project হাতে নিয়েছেন। তারা কিছু Wearable technology বাজার জাত করবেন, এগুলো হতে পারে একটা স্মার্ট ফোন, স্মার্ট ঘড়ি,ব্যান্ড, ব্রেসলেট, হতে পারে খুব সুন্দর একটা বিয়ের আংটি।
২০১৫ সালের মধ্যে এই Neuro Science Electronics ডিভাইস সমুহ বাজারে আসবে বলে বিজ্ঞানীরা আশা প্রকাশ করছেন। যখন কোন মানুষের মুড হঠাৎ খারাফ হতে যাবে ঠিক ঐ সময় তার পরিহিত এই ডিভাইস টি একটি আলট্রা সাউন্ড বা মাইক্রো Wave Electromagnetic signal এর ন্যায় একটি সিগন্যাল, মানুষের নার্ভকে নিয়ন্ত্রণ কারী নিউরন গুলোতে পাঠাবে, এবং নিউরন গুলো মহুরত্যেই সজীব হয়ে উঠবে। এভাবে মহুরত্যেই খারাপ মুড হাওয়া হয়ে, মনটা ফুরফুরে হয়ে উঠবে।ফলে In Future কোন মানুষকে তার মুড ঠিক করার জন্য সিগারেট, মদ, গাঁজা,বিয়ার এর মত ক্ষতি কর জিনিস গুলো সেবন করতে হবে না।
Thanks’ a lot to “Thync Science and Technology”
বিষয়: সাহিত্য
১২০৬ বার পঠিত, ১৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
আপনার কথা ও ঠিক, তবে সেই মানুষদের লেবেলটা অনেক উপরে। তাদের সংখ্যাটাও হাতে গুনা কয়েকজন। ফাঁসির রায় শুনে V চিহ্ন দেখাতে পারা কিংবা হাঁসতে হাঁসতে ফাঁসির মঞ্চের দিকে এগিয়ে যাওয়া।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
(মুড চেইঞ্জ। ইচ্ছে হলো ক্লিয়ার করে বলার, নয়তো হয়তো বুঝবেন্না কেন থ্যাংকস!
এক বার রেজাল্ট প্রকাশিত হওয়ার পর হেড স্যার ডাকলেন আমাকে,(গণিত ম্যাডামের কারসাজিতে) বললেন" তুমি বাংলায় এবং ইংরেজিতে এত খারাপ কেন? অথচ গণিত, ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি তে তুমি স্কুল সেরা !!" জবাবে আমি বলেছিলাম "স্যার বাংলা এবং ইংরেজি বিষয় গুলোতে তে কোন লজিক নেই"।
দেশ থেকে বন্ধু এসেছে! আজ তাই বল্গে সময় বরাদ্দ কম। লেখনী পড়েই চলে যাব! মন্তব্যের জন্যে বরাদ্দ আরো কম!
শুধু ভাল লাগা রেখে গেলাম!!!
এটা আপনার জন্য । দিনে একটা করে সকালে। অবস্থা সিরিয়াস হলে দুটা করে , সকালে ১ টা রাতে একটা । অল্প পানিতে, খাবার পূর্বে। চলবে....
ভাইয়া পোষ্ট এত রাতে দিয়েছেন কেন আমি তো ৫ম হয়ে গেলাম ভাইয়া ।
আমরা যারা ধর্ম কর্ম ভাল ভাবে পালন করিনা, তাদের মুড প্রায় খারাপ হয়, এবং ইউরোপিয়ানদের জন্য কিন্তু আবিষ্কারটি খুব কাজে লাগবে।
অনেকের মুসলিম ভাইয়ের মুখে শুনি মুড ঠিক করার জন্য সিগারেট সেবন করে, এই আবিষ্কারটি তাদের কে একটি গুনার কাজ থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করবে বলে আশাকরি।
হুম!! ৫ম , ভালতো। আমার প্রিয় নাম্বার ২,৪,৫,৯,১০ । আমার প্রিয় বোনটি আমার প্রিয় নাম্বার এই আছে। অনেক অনেক ধন্যবাদ আল্লাহ্ তোমাকে ভাল রাখুক। আমীন।
বেশি ভাববেন না বৃত্তের বাইরে আপু/ভাইয়া , নষ্ট ঘড়িও দিনে দুই বার সঠিক সময় দেয়।
পড়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ
মন্তব্য করতে লগইন করুন