ঈদের কিছু মজার ঘটনা আর বাঙালির ঈদ অনুভবঃ
লিখেছেন লিখেছেন আতিক খান ৩১ জুলাই, ২০১৪, ১১:৪৮:৩৫ রাত
১। ঈদের দিনটা শুরু হয়েছিল মহানন্দ নিয়ে, শেষটা হল কালিমা লেপন দিয়ে.........।
- সাতসকালে রাস্তাঘাট ফাঁকা দেখে তীব্র আনন্দ নিয়ে গাড়ি চালিয়ে ৮ মিনিটে অন্য সময়ের ৪৫ মিনিটের রাস্তা পাড়ি দিয়ে শালা শ্বশুরের সাথে ঈদের নামাজ পড়তে গেলাম।
- পথে শুধু ইউনিফর্ম পড়া ট্রাফিক পুলিশকে দেখেই খুব মায়া লাগলো, কোলাকুলি বাদ দিয়ে হাত নাড়ানাড়ি নিয়েই ব্যস্ত।
- আমরা বাঙ্গালিরা আসলেই অদ্ভুত প্রানি। শেষ মুহূর্তে বেতন পায় এমন লোকদের বাদ দিলেও অসংখ্য লোক বসে থাকে চাঁদ রাতে শপিংএর জন্য। সকাল ৫ টা পর্যন্ত মার্কেটে লোকজনের ভিড়। তারপর সেই কাপড় পড়ে ঈদের দিন পড়ে পড়ে ঘুমানো!!
- ২২ টা পরিবারের আতিথ্য নেয়া হল, খাবার অবশ্য ২২ প্লেট খাই নাই। তাই নজর দিয়েন না......
- তেলাপোকা নিয়ে লেখার পর হতেই আমার উপর আক্রমনের তীব্রতা বেড়েছে। চাঁদ রাত আর ঈদের দিন ২ বার গাড়ির স্টিয়ারিং এর সামনে ঘুরাঘুরি করছিলো। অতঃপর ২ বারই হার্ডব্রেক, ৪ দরজা খুলে ৫ জন যাত্রীই গাড়ির বাইরে পলায়ন......।।
- দিনশেষে বাসায় ফিরে নিউমার্কেটের ডাটাবাজার হতে কেনা ১৫০০ টাকার স্যান্ডেল খুলতেই দেখি দুই পা পুরাই কাল। পায়ের পাতার উপরে ও নিচে............। জুতা কোম্পানির দেয়া ঈদ উপহার !!
২। ঈদের আনন্দ মানেই আমার কাছে,
- উপহার দেয়া আর নেয়া (জোর করে দিলে কি করব? )
- ঈদের সালামি বা ঈদি। ছোটদের দিলে যে হাসি ফুটে মুখে সেটাই ঈদের আনন্দ। এখনো পাই, সবচেয়ে বড় অঙ্কটা আসে অবশ্য শ্বশুর হতে । অনেকে কত দিবে বুঝে উঠতে পারেন না। ন্যুনতম ৫০ টাকা দিলেও মাইন্ড করি নাই। এখন মেয়েকে দেখি দলবল নিয়ে ব্যাগ হাতে বের হয়। আর ঘণ্টায় ঘণ্টায় গুনে, কত হল।
ছোটকালে সব ঈদি জমা দিতে হত মা বাবার কাছে। পরে সম্ভবত সেই টাকা বাসার নানা খাতে খরচ হয়ে যেত। আর আমরা সারা বছর, বাবা মা বকা দিতে চাইলে বা অপছন্দনীয় কিছু করলেই খালি হুমকি দিতাম, এক্ষুনি সব ঈদি ফেরত দাও। ধমকে কাজ হত মাঝে মাঝে।
- ঈদের বেড়ানো। বেশ কবছর আগে ঈদসহ ৩ দিনে গিয়েছিলাম ৫২ টা বাসায়। সাথে অতগুলো বাসার খাবার টেস্টিং । আমার সেই রেকর্ড এখনো মজবুত। গিনেসে আবেদন করব ভাবছি। আর কেউ ভেঙ্গে থাকলে প্রমানসহ জানাবেন......।
- নামাজ এবং অন্যান্য দোয়ায় আমরা যেন গাজাবাসিকেও শামিল করি। ঈদ এই দেশে আসে শুধু সচ্ছলদের জন্য। যাদের অর্থাভাবে কাপড় আর খাবার জুটে না, আল্লাহ ওদের মুখে হাসি ফুটানোর তৌফিক দিন আমাদের সবাইকে।
৩। ঈদ কেমন কাটল?
- বিরক্তিকর / একঘেয়ে / ফালতু / মোটামুটি / এই যেমন কাটে আরকি / আমাদের আবার ঈদ......
এই জাতীয় উত্তরই বেশি পাওয়া যায় জিজ্ঞেস করলে। ঢাকা - চট্টগ্রামের মানুষদের জন্য সবচেয়ে আনন্দদায়ক ব্যাপার হল রাস্তাঘাট ফাঁকা পাওয়া। এমনকি রিকশাও অন্য সময়ের গাড়ির চেয়ে জোরে চলে।
কি কি করা হল বা করা যায় ঈদে,
- ঈদের নামাজ / ঈদি দেয়া নেয়া / আপ্যায়ন / প্রতিবেশী - আত্মীয়দের বাসায় বেড়ানো / মুরুব্বিদের সালাম / খুব অসুস্থ কাউকে দেখে আসা / বন্ধুদের সাথে আড্ডা, রি ইউনিয়ন / টুরিস্ট স্পটে বেড়ানো / কক্সবাজার, থিম পার্কে বেড়ানো আর সর্বোপরি নতুন কাপড়ের সাজ দেখানো এবং দেখা......... আর কারো জন্য হয়ত পড়ে পড়ে ঘুমানো / গান শুনা / নাটক - মুভি দেখা.........।
উপরের কাজগুলো পুরো বা আংশিক করে থাকলে ঈদ সফল হয়েছে বা হচ্ছে বলা যায়। আমাদের প্রত্যাশা সবসময় আকাশ ছুঁয়ে যায়, তাই মনে হয় অপ্রাপ্তিগুলোই বেশি মনে রেখে আফসোসে পুড়ি। আশা করি ভালো মন্দ মিলিয়ে সবার ঈদ ভালো কেটেছে...... এবং কাটছে...
ঈদ মোবারক সবাইকে।
বিষয়: বিবিধ
১৮০৭ বার পঠিত, ২৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
হা আর আমার বোনাস কই?
আপনার মানিব্যাগের উপর হামলা হবে কিন্তু বলে দিলাম।
সব নেবো একটাও কাউকে দেবোনা।
পালাইছি
কি করবো লিখতে পারছিলাম না।
বৃত্তের ভিতরেই ছিলাম, তেলাপোকার ভয়ে এখন বাইরে
মন্তব্য করতে লগইন করুন