টকশোঃ প্রকান্ড মৌলবাদীর উদাহরণ। (বিষয়: সংখ্যালঘুদের উপর হামলা)
লিখেছেন লিখেছেন মিষ্টি স্বপ্ন আরিফ ১৪ জানুয়ারি, ২০১৪, ০২:৪০:০৩ দুপুর
আজকাল আর টেলিভিশন টকশো দেখতে মন চায় না। মানুষ এতো জ্ঞানপাপী আর মৌলবাদী হতে পারে তা টকশো দেখলে পরে ভাবার কুল পায় না। কোন এক বিখ্যাত কথক যে কিনা মোটামুটি উভয় কূলই অর্থাৎ ডান বাম সবার আলাচনায় আসেন মাঝে মাঝে। তিনি জনাব নুরুল কবীর, নিউ এজ সম্পাদক। গত এক টকশোতে তিনি আসেন এবং আরেক মহিলা আসেন। আমি তাদের এই বলে হাহাকারে এবং মর্মবেদনায় মরতে দেখলাম যে সংখ্যালঘুদের উপর হামলায় তারা ভিমরী খাওয়ার দশা। এহেন ন্যাক্কারজনক কাজ কোন মানুষ করতে পারে না।, এটা ১৯৭১ এর পুনরাবৃত্তি, আমরা এখনো সেটেল হতে পারিনি ইত্যাদি ইত্যাদি।
আরেক জায়গা এক আইন বিশেষজ্ঞসহ আরো দুই জ্ঞানের ঝোলা তাদের জ্ঞান জাহির করছিল যে, এই সংখ্যালঘুদের উপর হামলার মামলাগুলো নতুন কোন আইন করে কঠোর থেকে কঠোরতর হতে যেমন: নারী নির্যাতন আইন, যুদ্ধাপরাধী আইন।
এখন কথা হলো অবশ্যই যারা সংখ্যালঘু কিংবা অন্য কোন ধর্মের অনুসারীদের হামলা করে সেটা রাষ্ট্র, ধর্ম, সমাজ তথা মানবতা বিরোধী এই বিষয়ে কারো কোন মত পার্থক্য আছে এমন ব্যাক্তি নাই, আমি অন্তত দেখি নাই। অবশ্যই যারা কোন নিরপরাধ ব্যক্তির উপর হামলা করে তারা ঘৃণ্য অপরাধী।
এখানে যে বিষয়টা আমি বলতে চাই সেটা হলো প্রায় সকল টকশো আলোচকরা এই অপরাধের জন্য একটা দল বা বিশেষ গোষ্ঠীকে-ই দায়ী করে। আর আরেকটা গোষ্ঠীকে দায়ী করে তাদের সেল্টার দেওয়ার জন্য। এখন কথা হলো
১। যারা রাস্তায়ই নামতে পারে না সরকারের জিরো টলারেন্সে। তাহলে তারা কেন আবার সংখ্যালঘুদের উপর হামলা করে নিজেদের আরো ওয়ান্টেড করবে আমার বোধগম্য নয়।
২। হামলা করে কখনই নিজেদের আদর্শ প্রতিষ্ঠা করা যায় না বরং আরো সবার কাছেই হেয় হতে তাহলে তারা কেন এই কাজ করবে?
৩। এই হামলাগুলো বিশেষ বিশেষ সময়ে যেমন, নির্বাচন পূর্বে এবং পরে, বিরোধী দলের কর্মসূচীর আগে ও পরে। এই বিষয়গুলো কিন্তু একটা নির্দিষ্ট ইঙ্গিত বহন করে।
৪। নির্দিষ্ট কিছু এলাকাতে এগুলো বারবার ঘটে যা ঘোষিত আসামীদের পক্ষে অসম্ভব।
৫। বিভিন্ন মিডিয়ায় এই বিষয়য়ে আওয়ামী ঘরানার লোকদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয় অথচ যাদের দায়ী করা হয় তাদের কোন ভিডিও বা ফটো পাওয়া যায় না। অথচ আজকাল ঘরেও কোন সমস্যা হলে সেটা মিডিয়ায় চলে আসছে।
৬। আমি কয়েকটি জামায়াতের নির্বাচনী এলাকার খবর জানি এবং দুয়েক জায়গায় আমি গিয়েছি এবং দেখেছি সেখানে হিন্দুদের একটা বৃহত অংশ থাকে এবং তারাও জামায়াতকে ভোট দেয়। এখন পর্যন্ত আমি মিডিয়া বাদে সরাসরি বা অন্য কোন মাধ্যমে তাদের কোন অভিযোগ শুনিনি।
এ রকম আরো অনেক পাওয়া যাবে। কিন্তু এই বিষয়টি কেউ তুলে না মিডিয়ায়। তাহলে আমরা ধরে নিতে পারি তারা কোন পক্ষের কাছে জ্ঞান বিকিয়ে দিয়েছে।
পক্ষান্তরে বিরোধী লোকদের বাসায় গিয়ে গুলি করে হত্যা করছে, যে কোন আন্দোলনে সরাসরি গুলি বাসায় বাসায় তল্লাশীর নামে ভাংচুর, ছিনতাই, হয়রানী, একজনকে আরেকজনের মামলায় দেখিয়ে শ্রীঘরে প্রেরণ। এসব বিষয়ে এরা চুপ, পারলে বিপরীতটা বলে।
এরা এদের সব জ্ঞান যেমন অন্যের কাছে নিলাম দিয়েছে ঠিক তেমনি তাদের বিবেকটাও। অব্যশই বিবেকটা থাকলে জ্ঞানটাও নিলামে যেত না।
ইসলামী কোন বিষয়ে শক্ত অবস্থান করলে আপনি মৌলবাদী, জঙ্গিবাদী ইত্যাদী। ওরা যখন একচোখা দোষ দিয়ে যায় যত দোষ নন্দঘোষ থিওরী মেনে চলে। তাদেরও তো মৌলবাদী বলতে হয়। কারণ তাদের অন্তরে ভয় আতঙ্ক শুধু এক গোষ্ঠী ঘিরে সেখানে অন্য কারো অবস্থান নেই।
আমার মতে বুঝবান এবং পুরুষ মানুষ মাত্রই মৌলবাদী। আমি যেটা ভালো মনে করবো, যেটা সঠিক সেই মতে বা পথে আমি একান্ত অবিচল থাকব এটাই যদি মৌলবাদীতা হয় তাহলে মৌলবাদীরা-ই তো সঠিক। কিন্তু মূল প্রশ্ন হলো আপনার তত্ব বা আপনার পথ বা মতটা ঠিক কিনা।
আল্লাহ সবাইকে সঠিক পথে প্রকৃত মৌলবাদী করুন। আমীন।
বিষয়: বিবিধ
৯৭৭ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন