ভালবাসা দিবস সম্পর্কে সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ওলামা পরিষদের ফতোয়া
লিখেছেন লিখেছেন ইমরান ভাই ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০৮:৪৭:৪৬ সকাল
ভালবাসা দিবস সম্পর্কে সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ওলামা পরিষদের ফতোয়া
( ফতোয়া নং ২১২০৩ তারিখঃ ২৩-১১- ১৪২০ হি. )
ফতোওয়াটি সর্বোচ্চ ওলামা পরিষদে বিশ্লেষণের পর এই মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছে যে, কুরআন সুন্নাহর স্পষ্ট প্রমাণাদি দ্বারা এ কথা অকাট্যভাবে প্রমাণিত যে, ইসলামে ঈদ বা উৎসবের দিন মাত্র দু’টি। সালাফে সালেহীনগণও এ বিষয়ে একমত হয়েছেন। ইসলামে স্বীকৃত ঈদ দুটির একটি হল ঈদুল ফিতর, অপরটি হল ঈদুল আজহা বা কুরবানির ঈদ। উল্লিখিত ঈদ দু’টি ব্যতীত যত ঈদ বা উৎসব আছে, হোক না তা কোন ব্যক্তির সাথে সম্পৃক্ত, বা কোন গোষ্ঠীর সাথে সম্পৃক্ত, বা কোন ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত, তা বিদআত। মুসলমানদের তা পালন করা বা পালন করতে বলা বৈধ নয় এবং এ উপলক্ষে আনন্দ প্রকাশ করা ও এ ব্যাপারে কিছু দিয়ে সাহায্য করাও নিষেধ। কেননা এ ধরনের কাজ আল্লাহ তা’আলার সীমা লঙ্ঘন বৈ অন্য কিছু হবে না। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর সীমা লঙ্ঘন করবে সে নিজের উপর অত্যাচার করবে। এ ধরনের কালচার বিধর্মীদের অনুসরনের কল্পে গ্রহণ করা হলে অপরাধ আরো মারাত্বক হবে। কারণ এর মাধ্যমে তাদের সদৃশ্যতা গ্রহণ করা এবং তাদেরকে এক ধরনের বন্ধু বানানো হয়। অথচ আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে এ থেকে বারণ করেছেন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
من تشبه بقوم فهو منهم যে ব্যক্তি কোনো সম্প্রদায়ের সাথে সাদৃশ্যতা অবলম্বন করল সে তাদের দলভুক্ত বলে গণ্য।
ভালবাসা দিবস পালন করাও এ নিষেধের অন্তর্ভুক্ত। কেননা এটি খৃষ্টানদের উৎসব। যে মুসলমান আল্লাহ এবং পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে তার জন্য এ কাজ করা দেয়া বা এই দিনে কাউকে ফুল বা অন্যকোনো উপহার দেয়া বৈধ নয়। বরং তার কর্তব্য হল আল্লাহ এবং তার রাসূলের হুকুম পালন করা এবং আল্লাহর শাস্তি ও গযব আসে এমন কাজ থেকে নিজে দূরে থাকা ও অন্যদের দূরে রাখা।
অতএব এ দিবসকে কেন্দ্র করে পানাহার করা, ক্রয়-বিক্রয় করা, কোন কিছু প্রস্তুত করা বা উপঢৌকন দেয়া, চিঠি-পত্র চালাচালি করা ও প্রচার-পত্র বিলি করা অবৈধ। এ সমস্ত কাজের মাধ্যমে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নাফরমানি করা হয়।
আল্লাহ তা’আলা বলেন,
وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَى وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ المائدة2
ফতোয়াটি যারা সত্যায়ন করেছেন :
সৌদি আরবের গবেষণা ও ফতোয়া প্রদান বিষয়ক স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ও সদস্যবৃন্দ:
১.আব্দুল আযিয বিন আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ আলে শেখ
২.সদস্য: সালেহ বিন ফাওজান আল-ফাওজান
৩.সদস্য: আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহমান আল-গদইয়ান
৪. সদস্য: বকর বিন আব্দুল্লাহ আবু জায়েদ
বিস্তারিত এখানে
বিষয়: বিবিধ
১৪৪১ বার পঠিত, ১৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তবে একটা অপ্রিয় সত্য হলো। আমরা এবং আমাদের সম্মানীত আলেমে দ্বীনগণ মোবাহ এবং সুন্নাতের খেলাপ নিয়ে যতটা মাতা মাতি করি, ফরজ বা অবশ্য কর্তব্য সম্বলিত বিষয়ে তার চেয়ে লক্ষগুন দূরে থাকি। এটাই আজকের বিশ্ব মুসলিমদের দুর্দশার মূল কারণ।
একটু ভাবুন তো! সৌদি আরব এবং অন্যান্য আরব দেশগুলো মিসরের বৈধ ইসলাম প্রিয় সরকারের বিপক্ষে অবস্থান নিলো তখন এসব অলেম সাহেবরা কোথায় ছিলেন? ধন্যবাদ
ফেতনা ঘরের কোনায় কোনায় পতিতহবে এটা আমারা সবাই জানি যে ভাবে রসুল (সা) বলেছেন।
বর্হিবিশ্বের সকল দল গুলো সম্পর্কে স্পস্ট জ্ঞান ছারা কথা বলতে আমি চাইনা। কেননা এ সকল দল সম্পর্কে আমার স্পস্ট জ্ঞান নেই।
আর সৌদি সরকার জদি এ রখম করেই থাকে তাহলে কেন তার করলো সেটা তাদের কাছে জানা খুবই জরুরী, না জেনে কিছু বলা ঠিক হবে না।
তবে এটা বলতে পারি,
ইসলাম বিনষ্ট কারি বিষয়ের মাঝে একটি হচ্ছে "মুসলিমের বিরুদ্ধে মুশরিকদের সাহায্য করা" (সুরা মায়িদা/৫১)
আর সৌদি সরকারকে আমরা মুসলিমরা অনুসরন করি না। আমরা মুসলিমরা অনুসরন করি কোরআন ও সহিহ হাদিস এবং যারাই এই দুইটির পক্ষ্যে কথা বলেন।
জাজাকাল্লাহু খায়রান।
যাই হোক মূল বিষয়ে আসি। শ্রদ্ধেয় মোহাম্মদ লোকমান ভাই যে মন্তব্য করেছেন আমিও তার কথার সাথে একমত। আমার কথাগুলো তার মন্তব্যের মধ্যে এসে গেছে। বর্তমান সৌদি শাসক গোষ্টীর উচ্চ বিলাসী ও অপচয়বাদী ভোগ বিলাশের কীর্তিকলাপ কোন গোপন বিষয় নয়। বর্তমান শাসকগন নিকট অতীতের পূর্বসূরীরা যে মহান আদর্শ ও খূলুসিয়তের নিয়তে শাসন কার্য পরিচালনা করেছিলেন সেই নীতি আদর্শ থেকে তারা অনেক দূরে সরে গেছে। বর্তমান সৌদি রাজ বংশের হাতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাকে ঠিকিয়ে রাখার জন্য তারা কোরআনী শাসন, ইসলামী আইন, ইসলাম, হারামাইন আশ শরীফাইন ইত্যাদি সংবেদনশীল ব্যাপারগুলোকে তারা যে ডাল হিসেবে ব্যবহার করছে তা আজ মুসলিম উম্মাহার কাছে স্পষ্ট। এখনো এক সপ্তাহও হয়নি নতুন এক অদ্ভুত ডিগ্রী জারি করেছে সৌদি বাদশা আব্দুল্লাহ। কোন সৌদি নাগরিক দেশের বাইরে গিয়ে শসস্ত্র জিহাদে শরীক হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাকে সর্বোচ্চ ত্রিশ বছরের জেলসহ বিভিন্ন নির্যাতনমূলক আইন প্রণয়ন করেছে। সৌদি রাজ বংশের বিভিন্ন ইসলাম বিরোধী ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করার কারণে ড. শায়খ আল গরণীসহ শীর্ষস্থানীয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ আলেমকে তারা বন্দী করে রেখেছে। এহেন পরিস্থিতিতে মুসলিম উম্মাহর কাছে সৌদি রাজ বংশের নিয়ন্ত্রনাধিন "সর্বোচ্চ ওলামা পরিষদ" এর "ফতোয়া বোর্ড"টির রায় কতটুকু গ্রহণযোগ্যতা পাবে? যদিও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তাদের দেয়া ফতওয়াটি দুনিয়ার বেশির ভাগ আলেম ওলামারা অনেক আগে থেকেই সহমত পোষণ করে আসছেন।
তবে এটা বলতে পারি,
ইসলাম বিনষ্ট কারি বিষয়ের মাঝে একটি হচ্ছে "মুসলিমের বিরুদ্ধে মুশরিকদের সাহায্য করা" (সুরা মায়িদা/৫১)
সৌদি সরকারকে আমরা মুসলিমরা অনুসরন করি না। আমরা মুসলিমরা অনুসরন করি কোরআন ও সহিহ হাদিস এবং যারাই এই দুইটির পক্ষ্যে কথা বলেন।
জাজাকাল্লাহু খায়রান।
আমিও "ভালোবাসা দিবসকে" ঘৃনা করি। তবে সবাইকে যে রখম ভালোবাসতাম সব সময় সে ভাবেই ভালো বাসবো সব সময়।
জাজাকাল্লাহু খায়রান।
সৌদি সরকারকে আমরা মুসলিমরা অনুসরন করি না। আমরা মুসলিমরা অনুসরন করি কোরআন ও সহিহ হাদিস এবং যারাই এই দুইটির পক্ষ্যে কথা বলেন।
জাজাকাল্লাহু খায়রান।
আশাকরি বুঝতে পারছেন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন