মহাশূন্যের ঘ্রান নেবেন নাকি? ( বৈজ্ঞানীক তথ্য ।)
লিখেছেন লিখেছেন সিকদারর ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০৯:৫৯:৪০ রাত
এই পৃথিবীতে সবকিছুরই নিজস্ব গন্ধ বা ঘ্রাণ রয়েছে। কিছু জিনিসের সুবাস আমাদের মন মাতিয়ে দেয়। যেমন গোলাপ ফুলের ঘ্রান আমাদের মোহিত করে ফেলে।
আবার কিছু জিনিসের গন্ধ এতটাই বাজে যে সবাই সেটি থেকে দূরে থাকতে চায়। গন্ধক পোড়া ঘ্রান যা মানুষ সহজে সহ্য করতে পারে না। এই পৃথিবীর প্রায় সব কিছুর ঘ্রান সম্পর্কে আমাদের সবারই কিছু না কিছু ধারনা আছে।
কিন্তু কেউ যদি আপনাকে এসে জিজ্ঞেস করে যে, পৃথিবীর বাইরেই যে মহাশূন্য তার কি কোন বিশেষ গন্ধ বা ঘ্রাণ রয়েছে? থাকলে সেটা কি ধরণের? সেই সম্পর্কে আপনার কোন ধারনা আছে কিনা ?
শুনতে অদ্ভুত হলেও এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়েছেন বিজ্ঞানী লুইস এলামন্ডা। তিনি NASA Ames Research এর জ্যোতির্পদার্থবিদ্যা ও জ্যো্তি-রসায়নবিদ্যা গবেষণাগারের পরিচালক।
মহাশূন্যের পরিবেশের ঘ্রাণ বা গন্ধটি হচ্ছে গলিত ধাতু, পোড়া ডিজেল আর বার্ব-ই-কিউ এর মিলিত গন্ধ! আর এই গন্ধের উৎস হচ্ছে মৃতপ্রায় বা ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে থাকা নক্ষত্রগুলো। এই নক্ষত্রগুলো এদের জীবন কালের শেষ পর্যায়ে এসে পুড়ে গিয়ে পলিসাইক্লিক এরোমেটিক হাইড্রোকার্বন নামে এক ধরণের তীব্র গন্ধ যুক্ত যৌগ উৎপন্ন করে। আর এই যৌগের অণুগুলো পুরো মহাশূন্যে জুড়েই আছে। এই গন্ধযুক্ত অণুগুলো মহাজাগতিক ধূলা, উল্কা আর ধূমকেতুর মাধ্যমে সাড়া মহাশূন্যে জুড়েই এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ভেসে বেড়ায়।
আমরা জানি মহাশূন্যে কোন প্রাণীর স্বাভাবিকভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। কারন সেখানে বাতাস নাই । এরপরও মহাশূণ্য নিরাপত্তা ব্যাবস্থা খুলে ঘ্রান নিতে গেলেও সেটা হবে চরমভাবে ঝুঁকিপূর্ণ। মানুষের পক্ষে মহাশূন্যের প্রতিকূল বাতাসহীন অক্সিজেন মুক্ত পরিবেশে নিঃশ্বাস গ্রহণ করে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়।
মহাশূন্যর নভোচারীরা যখন স্টেশন থেকে
বের হয়ে মহাশূন্যে যান,তখন মহাশূন্যর বিভিন্ন ধুলাবালি তাদের স্পেস-শ্যুটে লেগে যায়।
আর সেগুলো এতোটাই জোরে ভেসে এসে তাদের গায়ে এসে লাগে যে, শেষ পর্যন্ত নভোচারীরা তাদের মহাশূন্য স্টেশনে ফিরে আসতে বাধ্য হন। ফিরে আসার পর তারা বলেন, "মহাশূন্যে তারা পোড়া মাংস, পেট্রল বা ডিজেল পোড়ানোর মত গন্ধ অনুভব করেছেন। যা এতটাই প্রকট যে তারা এই কারনে মহাশুন্য বেশিক্ষন থাকতে অস্বস্তি বোধ করেন।
মহাশূন্যের অসহনীয় গন্ধের কারনে নাসাকে শেষ পর্যন্ত সুগন্ধি নির্মাতাদের শরণাপন্ন হতে হয়। সম্প্রতি তারা চাঁদের পরিবেশের ঘ্রাণ নিয়েছেন। এটা নাকি অনেকটা গান-পাউডারের গন্ধের মত। মহাশূন্যের পরিবেশের গন্ধ এতটা তিক্ত ও উগ্র হওয়ার কারণ, এখানে কার্বনের পরিমাণ অনেক বেশি কিন্তু অক্সিজেন একদমই নেই। তাই এই রকম পরিবেশে বিভিন্ন ধরণের দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়। বিজ্ঞানী লুইস এলামন্ডা আরো জানান, "যদি কেউ আমাদের পরিচিত ছায়াপথ থেকে আরো দূরে যায় তবে সে নানা ধরণের চমৎকার কিন্তু অদ্ভুত ঘ্রাণের মুখোমুখি হবে।"
বিশাল মহাশূন্যের এখানে-ওখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে নানা ধরণের জটিল সব রাসায়নিক যৌগ। যেগুলোর কারণে একজন নভোচারী মহাশূন্যে চিনির মিষ্টি সুগন্ধ থেকে সালফারের পচা ডিমের মতো গন্ধ, সবই অনুভব করতে পারবেন।
পাঠক যারা যারা মহাশুন্যর এই বিদঘুটে ঘ্রান নিতে চান তারা অতি সত্বর নাসার সাথে যোগাযোগ করুন। নাসার ঠিকানা গুগোল মামার কাছে খোঁজ করুন।
তথ্য সুত্রঃ বাংলাদেশ ওপেন সায়েন্স অর্গানাইজেশন ।
বিষয়: বিবিধ
১৫৯৮ বার পঠিত, ১৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আচ্ছা সিকাদার ভাই, আপনিও কি আমার মত বাসায় নতুন কম্পিউটার নিয়েছেন? আপনার পোস্টের সময় দেখে মনে হচ্ছে আপনি এই মুহুর্তে বাসায় অবস্থান করছেন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন