হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা বিশ্লেষণ ও প্রাসঙ্গিক ভাবনা ঃ পর্ব - ২৪
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ শাব্বির হোসাইন ২৯ মে, ২০১৪, ০১:২৬:২০ দুপুর
১৩ দফা বিশ্লেষণ
প্রথমেই বলে রাখা প্রয়োজন, ১৩ দফা নিয়ে আমার এ বিশ্লেষণ নিতান্তই আমার সীমিত জ্ঞানের পরিধির মধ্যে থেকে যতটা সম্ভব নিরপেক্ষভাবে বিশ্লেষণ এবং উপস্থাপনার প্রচেষ্টা। আমার বিশ্লেষণের সাথে পাঠকমাত্রেই দ্বিমত পোষণ করতে পারেন। আমার বিশ্লেষণ যদি কারো স্বার্থ পরিপন্থী হয় কিংবা কাউকে কষ্ট দেয় তবে আমি আন্তরিকভাবেই দুঃখিত। কেননা কাউকে আঘাত দেয়া আমার উদ্দেশ্য নয় বরং ঘটনার সত্যতা এবং কুরআন ও হাদীসের আলোকে যতটা সম্ভব ব্যাখ্যা করার প্রয়াস মাত্র। মহান রাব্বুল আলামীন আমাকে সঠিকভাবে এ বিষয়ে খুঁটিয়ে দেখা এবং বর্ণনা করার তাওফিক দান করুন। আমীন।
পূর্ববর্তী অধ্যায়ে আমরা সরকারসহ বিভিন্ন ব্যক্তিগণের প্রতিক্রিয়া দেখার চেষ্টা করেছি। তাঁদের এ বক্তব্যগুলো আমাদের দেশের বহুল প্রচারিত পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, যার সূত্রসহ বর্ণনা করা হয়েছে। যাঁরা যা বলেছেন তা হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা পুঙ্খানুপুঙ্খ পড়েই বলেছেন, শুনে বলেছেন নাকি ‘চিলে কান নিয়ে গেল বলে চিলের পেছনে দৌড়’, এভাবে বলেছেন সে প্রশ্নও তুলেছেন কেউ কেউ। তবে আমি বিশ্বাস করতে চাই মিডিয়াতে যাঁদের প্রতিক্রিয়া ছাপা হয়েছে তাঁরা অবশ্যই সবকিছু পড়েই বলেছেন। কেননা এরকম গুরুত্বপূর্ণ ও দায়িত্ববান ব্যক্তিদের নিকট থেকে জাতি অবিবেচকের মতো কোনো কিছু আশা করে না।
তাঁদের বক্তব্যগুলোকে সারমর্ম করলে মোটামুটি যা দাঁড়ায় তা হলো নিম্নরূপ ঃ
১। ১৩ দফা দাবী সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক অর্থাৎ, সংবিধান বিরোধী। শুধু তা-ই নয় এটা দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকীস্বরূপ। এ দাবী মানলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে ওঠা মূল্যবোধ ও আদর্শ ধ্বংস হয়ে যাবে।
২। এটা মধ্যযুগীয় দাবী। এর সাথে বাস্ততার কোনো সম্পর্ক নেই। এটা মানলে দেশ মধ্যযুগে ফিরে যাবে।
৩। ১৩ দফা বাস্তবায়িত হলে নারীরা ঘরে বন্দী হয়ে পড়বে। কাজেই এটা নারী অধিকারের পরিপস্থী।
৪। এ ধরণের দাবী সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদী ও অশ্লীল।
৫। এ দাবী মানলে দেশ তালেবান রাষ্ট্রে পরিণত হবে।
৬। এ দাবী মানলে নারীরা বেকার হয়ে যাবে, দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
৭। শিক্ষানীতি ও নারীনীতি সংশোধন করতে বলা সভ্য জাতির উপর আক্রমনের সমান।
৮। ইসলামের হেফাজতের দায়িত্ব একমাত্র আল্লাহর। ১৩ দফা দাবীর একটাও ইসলাম সমর্থন করে না।
৯। ধর্মের অপব্যবহার করে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টা। যারা ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে নারীদের ঘরে আটকে রাখতে চায় তাদের প্রতিহত করা হবে।
মন্ত্রী, এমপি, নেতা-নেত্রীসহ বিভিন্ন ব্যক্তিদের ১৩ দফা সম্পর্কে দেয়া বক্তব্যের আলোকে সারমর্ম করলে এ রকম দাঁড়ায়। আমি এখন পর্যায়ক্রমে উল্লেখিত বিষয়গুলি বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করব। তবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গত ৪ মে সংবাদ সম্মেলনে যে লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফার জবাব দিয়েছেন সে প্রসঙ্গে আমি শেষে আলোকপাত করব ইন্শাআল্লাহ। সবশেষে হেফাজতের ১৩ দফাকে কুরআন ও হাদীসের আলোকে দেখার আশা রাখি। আল্লাহ আমার সহয় হোন।
(চলবে)
বিষয়: বিবিধ
১৩০৯ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
দেখা যাক কি বিশ্লেষণ নিয়ে আপনি অাসেন।
স্বাগতম
মন্তব্য করতে লগইন করুন