একটি দুর্দশাগ্রস্থ মুসলিম জনপদের কাহিনী

লিখেছেন লিখেছেন অরুণোদয় ২২ মার্চ, ২০১৪, ০৬:২৪:১৮ সন্ধ্যা



নিরাপদ আশ্রয়ের উদ্দেশে রওনা হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন কিছু মুসলিম

খ্রিস্টান রক্ষীবাহিনী 'এন্টি-বালাকা'র সহিংসতার কারণে হাজার হাজার মুসলিম মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র থেকে পালিয়ে যাচ্ছে। ফলে দেশটি প্রায় মুসলিম শূণ্য হয়ে গেছে।

তবে এন্টি-বালাকা সহিংসতার জন্য অভিযুক্ত করেছে দেশটির দক্ষিণ অঞ্চলের মুসলিম বিদ্রোহী দল সেলেকা'কে। উল্লেখ্য, গত বছরের মার্চ মাসে সরকারের বিরুদ্ধে একটি অভ্যুত্থান করেছিল 'সেলেকা'।

দেশটিতে সহিংসতা শুরু হওয়ার পর যখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেল, তখন প্রথম মুসলিম প্রেসিডেন্ট পদত্যাগ করেন। এছাড়া, সার্বিক অবস্থার উন্নতি করার জন্য ফ্রান্স ও আফ্রিকান ইউনিয়ন সৈন্যবাহিনী মোতয়েন করে।

যাহোক, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে নতুন নির্বাচনের পর প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন একজন খ্রিস্টান ব্যক্তি। মুসলিম সম্প্রদায়ের অভিযোগ, নতুন প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব নেয়ার পর মুসলিমদের উপর দমন-নিপীড়ন বৃদ্ধি পেয়েছে।

মুসলিমরা আরো বলছেন, ফ্রান্সের সেনাবাহিনীর আচরণ পক্ষপাতদুষ্ট। মুসলিম বিদ্রোহীদের নিরস্ত্র করার পর তাদেরকে অসহায় অবস্থায় খ্রিস্টানদের হিংস্র গুন্ডাবাহিনীর হাতে ছেড়ে দিচ্ছে সেনাবাহিনী।



রক্ষীবাহিনীর কয়েকজন সদস্য

এন্টি-বালাকা রক্ষীবাহিনী কতটুকু হিংস্র?

মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রের পশ্চিম অঞ্চলের এক হাজারের কম মুসলিম নিজেদের বাড়িঘর ত্যাগ করেছেন। তাদের একটি বড় অংশ কারনটে'র স্থানীয় চার্চের একজন যাজকের কাছে আশ্রয় চেয়েছেন। আফ্রিকান ইউনিয়নের একটি ছোট শান্তিরক্ষী বাহিনী চার্চটি পাহারা দিচ্ছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এন্টি-বালাকা রক্ষীবাহিনীর হামলা থেকে চার্চকে রক্ষা করার জন্য শান্তিরক্ষী বাহিনী যথেষ্ট সামর্থ্যবান নয়। ইতোমধ্যে খ্রিস্টান এই রক্ষীবাহিনী হুমকি দিয়ে বলেছে যে, তারা চার্চে হামলা করে যাজক এবং আশ্রয়গ্রহণকারীদের হত্যা করবে।

মুসলিমদের গ্রামগুলোতে এন্টি-বালাকা অতর্কিত হামলা চালানোর কারণে অনেকে জীবন বাঁচানোর জন্য বনের দুর্গম পথে যাত্রা করছেন। বিবিসি'র নিউজনাইটের সাংবাদিক টিম হোওয়েল বলছেন, মুসলিম নারীদেরকে দাসী হিসেবে আটক করছে এন্টি-বালাকা। এ বিষয়ে তার কাছে রেকর্ড রয়েছে।

সহিংসতার ঘটনায় মোট কতজন মুসলিম প্রাণ হারিয়েছেন সেটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে, নিহতের পরিমাণ হাজার হাজার। এছাড়া, যারা বেচেঁ আছেন তারাও প্রতিবেশী দেশগুলোতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছেন।

'আমি হব মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রের শেষ মুসলিম''

বিবিসি'র সাথে আলাপকালে মুসলিমদের দুর্দশার কথা তুলে ধরেছেন দেশটির রাজধানী বাংগুই-এর একজন ইমাম। তিনি বলেন, গত ডিসেম্বরের পর থেকে সংহিংসতার মাত্রা বেড়ে যায়। তারা (এন্টি-বালাকা) আমাদেরকে বড় ছুরি এবং আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে হত্যা করছে। রাজধানীর অধিকাংশ মসজিদ জালিয়ে দিয়েছে। পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের হাতেগোনা কয়েকটি মসজিদ অক্ষত রয়েছে।

আক্ষেপ করে এই ইমাম বলেন, আমি হতে চাই মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রের সর্বশেষ মুসলিম যে কিনা দেশ ত্যাগ করবে অথবা সর্বশেষ মুসলিম যাকে এখানে (বাংগুই) কবর দেয়া হবে। আমার বাবা এবং মা উভয়ের সর্বশেষ বিশ্রামের জায়াগা হলো এই দেশ। সূত্র: ওয়ার্ল্ডবুলেটিন, বিবিসি।

- See more at: http://www.timenewsbd.com/news/detail/7583#sthash.He917BLD.dpuf

বিষয়: বিবিধ

১২৩৪ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

196289
২২ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:২০
শিশির ভেজা ভোর লিখেছেন : খুব খারাপ লাগলো। সেখানকার মসজিদগুলো নাকি পানশালা বানানো হচ্ছে।
196292
২২ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:২৬
মেঘ ভাঙা রোদ লিখেছেন : দুঃখজনক যে বিশ্বের সবচেয়ে বেশী জনগোষ্ঠীর দল আজকে মার খাচ্ছে। এসবের কারণ হলো মুসলিমদের মধ্যে বিভাজন আর দ্বন্দ্ব।
196348
২২ মার্চ ২০১৪ রাত ০৯:২৯
বাংলার দামাল সন্তান লিখেছেন : দুঃখজনক যে বিশ্বের সবচেয়ে বেশী জনগোষ্ঠীর দল আজকে মার খাচ্ছে। এসবের কারণ হলো মুসলিমদের মধ্যে বিভাজন আর দ্বন্দ্ব।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File