‌‌‌‌‌‌দারসূল কোরঅান

লিখেছেন লিখেছেন গ্রীণ ওয়ে ২৬ আগস্ট, ২০১৪, ০৬:৩২:০২ সন্ধ্যা

সুরা আল মূমিনুন

وَالَّذِينَ هُمْ عَنِ اللَّغْوِ مُعْرِضُونَ (3) الَّذِينَ هُمْ فِي صَلَاتِهِمْ خَاشِعُونَ (2)قَدْ أَفْلَحَ الْمُؤْمِنُونَ (1)

إِلَّا عَلَى أَزْوَاجِهِمْ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُمْ فَإِنَّهُمْ غَيْرُ مَلُومِينَ (6) وَالَّذِينَ هُمْ لِفُرُوجِهِمْ حَافِظُونَ (5)

وَالَّذِينَ هُمْ لِأَمَانَاتِهِمْ وَعَهْدِهِمْ رَاعُونَ (8) فَمَنِ ابْتَغَى وَرَاءَ ذَلِكَ فَأُولَئِكَ هُمُ الْعَادُونَ (7)

وَالَّذِينَ هُمْ عَلَى صَلَوَاتِهِمْ يُحَافِظُونَ (9)

الَّذِينَ يَرِثُونَ الْفِرْدَوْسَ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ (11 أُولَئِكَ هُمُ الْوَارِثُونَ (10)

সরল অনুবাদ:

১। নিশ্চিত ভাবেই সফলকাম হয়েছে মুমিনরা।

২।যারা নিজেদের নামাযে বিনয়ী ও নম্র।

৩।যারা বাজে বা বেহুদা কথা কাজ থেকে দুরে থাকে।

৪। যারা তাজকিয়া বা পরিশুদ্ধির ব্যাপারে কর্মতৎপর হয়।

৫। এবং যারা নিজেদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে।

৬।তবে তাদের স্ত্রীদের ও মালিকানাভুক্ত দাসীদের ক্ষেত্রে না রাখলে তারা তিরস্কৃত হবে না।

৭। তবে যদি কেউ তাদের ছাড়া অন্য কাউকে (যৌন ক্ষুধা মেটাবার জন্য) কামনা করে তবে তারা হবে সীমালংঘনকারী।

৮। এবং যারা তাদের আমানতসমূহ এবং ওয়াদাচুক্তির (অঙ্গীকার) রক্ষনাবেক্ষন করে।

৯।এবং যারা তাদের নামাযসমূহ যথাযথভাবে সংরক্ষন করে।

১০।তারাই (এসব গুনের অধিকারী) উত্তরাধিকার লাভ করবে

১১। তারা উত্তরাদিকার হিসাবে ফিরদাউস পাবে এবং সেখানে চিরদিন থাকবে।

নামকরন:

সুরার নামকরন দুই ভাবে হয়ে থাকে- 1)শব্দ ভিত্তিক যেমন- নাস, ফালাক 2)বিষয়ভিত্তিকঃ যেমন- সুরা ফাতেহা, ইখলাস। এ সুরাটি ১ম আয়াতের আল মুমিনুন শব্দ থেকে নামকরন করা হয়েছে।

নাযিল হবার সময়কাল ও মূল বিষয়বস্তুঃ

সুরাটি মক্কী, হিজরতের পূর্বে নাজিল হয়েছে। তবে ঠিক কোন সময়ে নাজিল হয়েছে তা সঠিক তথ্য না থাকলেও বর্ণনাভঙ্গি ও বিষয়বস্তু হতে প্রতিয়মান হয় যে, এ সুরা রাসুল করীম (সঃ) এর মক্কী জীবনের মাঝামাঝি সময়ে নাজিল হয়েছিল। এ সুরার মুল আলোচ্য বিষয় হচ্ছে রসুলের আনুগত্য করার, মুমিনদের কতিপয় গুনাবলী, বিশেষ গুণাবলী অর্জনকারীদের সফলতা, মানব সৃষ্টির বিভিন্ন স্তরের কথা আলোচনা করা হয়েছে এবং স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে যে, যিনি সৃষ্টি করতে সক্ষম তিনি তোমাদেরকে পরকালে তার সামনে হাজির করতেও সক্ষম এসব বিষয়গুলিই এ সুরায় আলোচনা করা হয়েছে।

শানে নুযূল/পটভূমি:

অত্র সুরা বিশেষ করে তেলাওয়াতকৃত আয়াতগুলো নাজিলের মক্কার কাফেররা যেমন ছিল ইসলামের চরম বিরোধী, তেমনি পার্থিব উপকরণ সব ছিল তাদের হাতের মুঠোয়। অপরদিকে মুসলমানদের অবস্থা ছিল শোচনীয় (আর্থিক ও সামাজিক অবস্থানগত দিক থেকে)। এই অবস্থায় কাফেররা নিজেদের অধিক সফল এবং মুসলমানদের ব্যর্থ মনে করত। তখন মুমিনদের প্রকৃত সফলতার ঘোষণা দিয়ে এ আয়াতগুলি নাজিল করেন।

সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাঃ

قَدْ أَفْلَحَ الْمُؤْمِنُونَ (1) অর্থঃ নিশ্চিত ভাবে সফলকাম হয়েছে মুমিনরা।

এখানে মুমিন বলতে তারা যারা রাসূল (সাHappy এর উপর ঈমান এনে তার আনীত বিধান মেনে নিয়েছে এবং তার দেখানো জীবনপদ্ধতি অনুসরন করেছে।

মুমিনদের সাতটি গুনঃ

প্রথম গুনঃ অর্থ্যাৎ ‘যারা তাদের নামাযে বিনয়ী বা নমনীয়।

الَّذِينَ هُمْ فِي صَلَاتِهِمْ خَاشِعُونَ (2)

নামাযে খুশু বলতে বিনয় ও নম্র হওয়া বুঝায়। খশুর আভিধানিক অর্থ স্থিরতা। শরীয়তের পরিভাষায় এর মানে অন্তরে স্থিরতা থাকা। অর্থ্যাৎ আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন কিছুর কল্পনা অন্তরে ইচ্ছাকৃত ভাবে না করা এবং অঙ্গ প্রত্যঙ্গ স্থির রাখা।

দিলের খুশু হয় তখন যখন কারো ভয়ে বা দাপটে দিল ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে ওঠে। আর দেহের খুশু এভাবে প্রকাশ পায় যে, কারো সামনে গেলে তার মাথা নিচু হয়ে যায়। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হয়ে পড়ে চোখের দৃষ্টি নত হয়ে আসে, গলার স্বর ক্ষীণ হয়ে যায়।

হাদীসে হযরত আবু যার (রাHappy থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল (সাHappy বলেন- নামাযের সময় আল্লাহ তায়ালা বান্দার প্রতি সর্বক্ষণ দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখেন যতক্ষণ না নামাযী অন্যদিকে ভ্রুক্ষেপ করে। যখন সে অন্যকোন দিকে ভ্রুক্ষেপ করে তখন আল্লাহ তায়ালা তার দিক থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে নেন। (নাসায়ী-আবু দাউদ)

যেসব কাজ নামাযে খুশু সৃষ্টিতে বাধা দেয়:

১. নামাযের মধ্যে নিজের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিয়ে খেলা করা বা নাড়াচাড়া করা।

হাদীস- একবার নবী (সাHappy এক ব্যক্তিকে নামাযের মধ্যে মুখের দাড়ী নিয়ে খেলা করতে দেখে বললেন-

لَوْ خَشَعَ قَلْبُ هذَا خَشَعَتْ جَوَارِحُه

“যদি এ লোকটির দিলে খুশু থাকত তাহলে তার অঙ্গ প্রত্যঙ্গের উপরও খুশু থাকত। (বায়হাকী)

২. নামাযে এদিক ওদিক তাকালে নামাযে একগ্রতা বা খুশু নষ্ট হয়ে যায়। এ সম্পর্কে নবী (সাHappy বলেন- এটা নামাযীর (মনোযোগের) উপর শয়তানের থাবা।

৩. নামাযে ছাদ বা আকাশের দিকে তাকালে নামাযের খুশু নষ্ট হয়ে যায়। নবী করিম (সাHappy বলেন-

مَا بَالُ أَقْوَامٍ يَرْفَعُونَ أَبْصَارَهُمْ إِلَى السَّمَاءِ فِي صَلَاتِهِمْ فَاشْتَدَّ قَوْلُهُ فِي ذَلِكَ حَتَّى قَالَ لَيَنْتَهُنَّ عَنْ ذَلِكَ أَوْ لَتُخْطَفَنَّ أَبْصَارُهُمْ

‘লোকেরা যেন নামাযে তাদের চোখকে আকাশমুখী না করে। (কেননা তাদের চোখ) তাদের দিকে ফিরে নাও আসতে পারে।’(বুখারী)

৪. নামাযে হেলা-ফেলা করা ও নানাদিকে ঝুকে পড়া।

৫. সিজদায় যাবার সময় বসার জায়গা বা সিজদার জায়গা বার বার পরিস্কার করলে নামাযের একাগ্রতা নষ্ট হয়ে যায় (তবে ক্ষতিকারক হলে একবার সরানো যাবে)।

মহানবী (সাHappy বলেন- إِذَا قَامَ أَحَدُكُمْ إِلَى الصَّلاَةِ فَإِنَّ الرَّحْمَةَ تُوَاجِهُهُ فَلاَ يَمْسَحِ الْحَصَى

‘কোন ব্যক্তি যেন নামাযের অবস্থায় (সিজদার জায়গা হতে) কংকর না সরায়। কেননা আল্লাহর রহমত নামাযী ব্যক্তির উপর প্রসারিত হয়।’ (আহমেদ, নাসায়ী, তিরমিযী, আবু দাউদ, ইবনে মাযাহ)

৬. একটানা গর্দান খাড়া করে দাড়ানো এবং খুব কর্কশ স্বরে কোরআন পড়া কিংবা গীতের স্বরে কুরআন পাঠ।

৭. জোরে জোরে হাই এবং ঢেকুর তোলা। ইচ্ছা করে গলা খেকরা বা কাশি দিলে নামাযের একাগ্রতা নষ্ট হয়।

রাসূল (সাHappy বলেন- নামাযে হাই ওঠে শয়তানের প্রভাব থেকে যদি কারো হাই ওঠে তার উচিত সে যেন সাধ্যমতো হাই প্রতিরোধ করে। (মুসলিম, তিরমিযী)

৮. তাড়াহুড়ো করে নামায আদায় করা। নামাযে রুকু সিজদা কিয়াম সঠিক ভাবে আদায় না করা।

নবী (সাHappy বলেন- ‘মদখোর, ব্যভিচারী ও চুরি করা কবীরা গুনাহ এবং তার সাজাও খুব তবে সবচেয়ে জঘন্য চুরি হলো সেই যে ব্যক্তি নামাযে চুরি করে। সাহাবীরা বললেন নামাযে কিভাবে চুরি হয়। রাসূল (সাHappy বললেন নামাযে রুকু ও সিজদা ঠিকমতো না করা।’ (মালেক, আহমেদ, দারেমী)

৯. নামাযীর সামনে পর্দায় কোন ছবি থাকলে নামাযে খুশু বা একাগ্রতা নষ্ট হয়ে যায়।

নামাযে খুশু সৃষ্টির জন্য যা করতে হবেঃ

১. আল্লাহ তায়ালাকে সবসময় হাজির নাজির জানা।

হাদীসে জীবরীলে ইহসান সম্পর্কে মহানবী (সাHappy কে রাসূল (সাHappy প্রশ্ন করলে তার প্রতিউত্তরে তিনি বলেন,

أَنْ تَعْبُدَ اللَّهَ كَأَنَّكَ تَرَاهُ فَإِنْ لَمْ تَكُنْ تَرَاهُ ، فَإِنَّهُ يَرَاكَ

“তুমি এভাবে আল্লাহর ইবাদত করবে (নামাযে) যেন তুমি আল্লাহকে দেখতে পাচ্ছ। আর যদি তোমার পক্ষে এটা সম্ভব না হয়। তবে তুমি অবশ্যই মনে করে নেবে যে আল্লাহ তোমাকে দেখছেন।”

২. নামাযে পঠিত দোয়া, কালাম অন্তর থেকে পড়া।

৩. নামাযে খুশু সৃষ্টি করার জন্য নামাযীর দৃষ্টি সিজদার দিকে থাকবে।

৪. নামাযে একাগ্রতা সৃষ্টির জন্য নামাযে যা পড়া হয় তার অর্থ জানা।

দ্বিতীয় গুন ঃ ‘যারা বেহুদা কাজ ও কথা থেকে দুরে থাকে।’

غْوِ مُعْرِضُونَ وَالَّذِينَ هُمْ عَنِ ا

এমন প্রতিটি কাজ এবং কথাকে যা অপ্রয়োজনীয়, অর্থহীন ও নিস্ফল। যেসব কথা এবং কাজের কোনই ফল নেই।

اللَّغْوُ “এর অর্থ উচ্চস্তরের গুনাহ যাতে ধর্মীয় উপকার তো নেই বরং ক্ষতি বিদ্যমান।

রাসূল (সাHappy বলেন-

مِنْ حُسْنِ إِسْلَامِ الْمَرْءِ تَرْكُه مَالَا يَعْنِيْهِ

“মানুষ যখন অনর্থক বিষয়াদি ত্যাগ করে তখন ইসলাম সৌন্দর্যমন্ডিত হয়।(তিরমিজি)।” আল্লাহ বলেন-

وَإِذَا مَرُّوا بِاللَّغْوِ مَرُّوا كِرَامًا

অর্থ্যাৎ- “যখন এমন কোন জায়গা দিয়ে তারা চলে যেখানে বাজে কথা হতে থাকে অথবা বাজে কাজের মহড়া চলে তখন তারা ভদ্রভাবে সে জায়গা অতিক্রম করে চলে যায়।” ( ফুরকান-৭২)

মুমিনের মাঝে সবসময় দায়িত্বানুভুতি জাগ্রত থাকে।

তার কাছে দুনিয়াটা পরীক্ষাগার। পরীক্ষার হলে নির্দিষ্ট সময়ে সবকিছু করতে হয়।

ফুটবল, ক্রিকেট খেলা দেখায় পার্থিব বা আখেরাতের কোন কল্যাণ নেই।

তৃতীয় গুন ঃ “যারা যাকাত বা পরিশুদ্ধির ব্যাপারে কর্মতৎপর হয়।

وَالَّذِينَ هُمْ لِلزَّكَاةِ فَاعِلُونَ

আরবী ভাষায় যাকাত শব্দের দুটি অর্থ বিদ্যমান

১। পবিত্রতা, পরিশুদ্ধতা, পরিশুদ্ধি।

২। কোন জিনিসের বিকাশ সাধনে যেসব জিনিস প্রতিবন্ধক হয়ে দাড়ায় সেসব দুর করা এবং তার মৌলবস্তুকে বিকশিত ও সমৃদ্ধ করা।

এই দুটি ধারনা মিলিয়ে যাকাতের পরিপূর্ণ ধারনা সৃষ্টি হয়।

এর ৬টি অর্থ প্রকাশ পায়-

আত্মার পরিশুদ্ধি, চরিত্রের পরিশুদ্ধি, জীবনের পরিশুদ্ধি, তার পারিবারিক পরিশুদ্ধি, সমাজ ও রাষ্ট্রের পরিশুদ্ধি, অর্থের পরিশুদ্ধি।

উপরোক্ত প্রত্যেকটি দিকের পরিশুদ্ধি পর্যন্ত এর ব্যপ্তি ছড়িয়ে পড়বে। এছাড়া এর অর্থ কেবল নিজেরই জীবনের পরিশুদ্ধি পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে না বরং নিজের চারপাশের জীবনের পরিশুদ্ধি পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে পড়বে।

কুরআনের অন্যত্র আল্লাহ বলেন,

قَدْ أَفْلَحَ مَنْ زَكَّاهَا (৯) وَقَدْ خَابَ مَنْ دَسَّاهَا (১০)

“সফলকাম হলো সে, যে নিজের নফসকে পবিত্র বা তাযকিয়া করলো। আর ব্যর্থ হলো সে যে নিজেকে কলুষিত করল।”(সুরা আশ শামস:৯,১০)

এ আয়াতে গোটা সমাজ জীবনের কথা বলা হয়েছে।

চতুর্থ গুণ ঃ‘যারা লজ্জাস্থানের হেফাজত করেন।’

وَالَّذِينَ هُمْ لِفُرُوجِهِمْ حَافِظُونَ

তবে তাদের স্ত্রীদের এবং মালিকানাভুক্ত দাসীদের ক্ষেত্রে সংযত না করলে তারা তিরস্কৃত হবে না। তবে কেউ যদি এদের ছাড়া অন্য কাউকে কামনা তবে এক্ষেত্রে তারা হবে সীমালংঘনকারী।

লজ্জাস্থান হেফাজত করার দুটি অর্থ হতে পারে।

১) নিজের লজ্জাস্থান ঢেকে রাখা।

২) যৌন শক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে লাগামহীন হয় না।

এটি প্রাসঙ্গিক বাক্য। লজ্জাস্থানের হেফাজত করে বাক্য থেকে সৃষ্ট বিভ্রান্তি দূর করার জন্য লজ্জাস্থানের সাধারণ হুকুম থেকে দু’ধরনের লোককে বাদ দেয়া হয়েছে।

প্রথমত- যেসব নারীকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করা হয়েছে।

দ্বিতীয়ত- এমন বাদী যার উপর মানুষের মালিকানা অধিকারী।

এ বাক্যটি উপরোক্ত দুটি পন্থা ছাড়া কামনা চরিতার্থ করার যাবতীয় পথ অবৈধ করেছে।

হারাম উপায়গুলি-

যিনা যেমন হারাম তেমনি হারাম নারীকে বিয়ে করাও যিনার মধ্যে গণ্য।

স্ত্রী অথবা দাসীর সাথে হায়েজ-নেফাস অবস্থায় কিংবা অস্বাভাবিক পন্থায় সহবাস হারাম।

পুরুষ-বালক বা জীবজন্তুর সাথে কামনা চরিতার্থ করা হারাম।

অধিকাংশ তাফসীরবিদগণের মতে হস্তমৈথুন এর অন্তর্ভুক্ত।

এছাড়া যৌন উত্তেজনা সৃষ্টিকারী কোন অশ্লীল বই পড়া, ছবি দেখা, ভিডিও উপরোক্ত সবকিছুই সীমালংঘনের মধ্যে গণ্য হবে।

৫ম ও ৬ষ্ঠ গুন ঃ ‘যারা তাদের আমানতসমূহ এবং ওয়াদা বা প্রতিশ্র“তি রক্ষা করে।’

وَالَّذِينَ هُمْ لِأَمَانَاتِهِمْ وَعَهْدِهِمْ رَاعُونَ

আমানত শব্দের অর্থ অত্যন্ত ব্যাপক। আভিধানিক অর্থে এমন একটি বিষয় শামিল যার দায়িত্ব কোন ব্যক্তি বহন করে এবং সে বিষয়ে কোন ব্যক্তির উপর আস্থা রাখা যায় ও ভরসা করা যায়। বিধায় আমানত শব্দটি বহুবচন অর্থে ব্যবহৃত।

দু’ধরনের আমানত সংক্রান্ত কথা-

হক্কুল্লাহ

হক্কুল ইবাদ বা

১) হক্কুল্লাহ বা আল্লাহর হক ঃ শরীয়ত আরোপিত সকল ফরজ ও ওয়াজিব পালন করা এবং যাবতীয় হারাম ও মাকরুহ বিষয় থেকে দুরে থাকা।

মানুষ আল্লাহর খলিফা। খিলাফতের দায়িত্ব পালনের আমানত রক্ষা করা।

২) হক্কুল ইবাদ বা বান্দার হক। ঃ কোন ব্যক্তি বা সংগঠন কর্তৃক আরোপিত ধনসম্পদের আমানত।

গণতান্ত্রিক দেশে ভোটারদের ভোট আমানত।

আল্লাহ তায়ালা বলেন:

إِنَّ اللَّهَ يَأْمُرُكُمْ أَنْ تُؤَدُّوا الْأَمَانَاتِ إِلَى أَهْلِهَا

আল্লাহ তোমাদের যাবতীয় আমানত তার হকদারদরে হাতে ফরেত দবোর নর্দিশে দচ্ছিনে৷ (সূরা নিসা:৫৮)

রাসুল (সাHappy বলেন:

إِيْمَانَ لِمَنْ لَا أَمَانَةَ لَه لَا

“তার ঈমান নেই যার আমানতদারী নেই।” (আহমাদ)

তাছাড়া মোনাফেকের যে চারটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তন্মধ্যে একটি হচ্ছে ১) ‘কোন আমানত তার কাছে সোপর্দ করা হলে সে তার খেয়ানত করে।’ (বুখারী)

وَإِذَا اؤْتُمِنَ خَانَ.

সপ্তম গুনঃ “যারা তাদের নামায সমূহকে যথাযথভাবে সংরক্ষণ করে।”

وَالَّذِينَ هُمْ عَلَى صَلَوَاتِهِمْ يُحَافِظُونَ

এখানে পাঁচওয়াক্ত নামায মুস্তাহাব বা আউয়াল ওয়াক্তে যথাযথভাবে পাবন্দী সহকারে আদায় করা বুঝায়।

এখানে নামায সমূহের সংরক্ষণ বলতে নামাযের বাইরের এবং ভেতরের যাবতীয় নিয়মনীতি যথাযথভাবে পালন করা। অর্থ্যাৎ আরকান-আহকাম পালন।

১। শরীর, পোশাক, পরিচ্ছদ পাক পবিত্র।

২। সময়মত নামায।

৩। অযু ঠিকভাবে করে নামায আদায়।

৪। জামায়াতের সাথে নামায।

৫। শুদ্ধ, ধীরস্থিরভাবে দোয়া কালাম পাঠ করা।

৬। নামায প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নামাযের হেফাজত করা।

৭। এহসানের সাথে নামায আদায়।

কোরআনে এসেছে: إِنَّ الصَّلَاةَ تَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالْمُنْكَرِ “নামায নিশ্চয়ই মানুষকে অশ্লীল, অপকর্ম থেকে বিরত রাখে।

শিক্ষাঃ

১। সফলতা নিছক ঈমানের ঘোষনা অথবা নিছক সৎ চরিত্র ও সৎকাজের ফল নয়। বরং উভয়ের সম্মিলনের ফল।

২। নিছক পার্থিব ও বৈষয়িক প্রাচুর্য ও সম্পদশালীতা এবং সীমিত সাফল্যের নাম সফলতা নয়। আখেরাতের স্থায়ী সাফল্যই প্রকৃত সাফল্য।

৩। খুশু খুযুর সাথে নামায আদায়।

৪। বাজে কথাও কাজে সময় নষ্ট না করা

৫। সর্ববস্থায় নিজেকে পরিশুদ্ধ করতে সচেষ্ট হওয়া।

৬। অবৈধ পন্থায় কাম প্রবৃত্তি চরিতার্থ করার চিন্তাও না করা।

৭। আমানতের হেফাজত করা এবং অঙ্গীকার বা ওয়াদা যথাযথভাবে পালন করা।

৮। নামাযে পাবন্দী করা এবং প্রত্যেক নামায মোস্তাহব ওয়াক্তে আদায় করা।

বিষয়: বিবিধ

১৮৫৪ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

258490
২৬ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:২৫
শেখের পোলা লিখেছেন : একটু বড়ই হয়েছে৷ জাজাকাল্লাহু৷ আরও লেখেন৷
258533
২৬ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৯:৪৪
ব১কলম লিখেছেন : ভালো লাগলো

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File