তোমার উৎসাহ-অনুপ্রেরণা আজ বড় বেশি প্রয়োজন
লিখেছেন লিখেছেন আলমগীর মুহাম্মদ সিরাজ ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৪, ০৮:২৬:১১ রাত
একটা কিছু লিখতে ইচ্ছে করছে কিন্তু কি লিখবো? বুঝতে পারছি না! তাছাড়া কাকে নিয়েইবা লিখবো? কারো মায়াবী মুখ, হরিণী চোখ আমাকে এখনো মুগ্ধ করেনি। অথবা কোন এক অচেনা রূপসীর রেশমী চুল আমাকে বিভ্রান্ত করেনি। আমার এখনো ভুল হয়নি। সো...
কে হবে আমার হৃদয়ে রাণী? যে তার সবটুকুন উজাড় করে আমাকে ভালোবাসবে। হাসাবে, কখনোবা অনভিপ্রেত কাঁদাবে! তার জাদুকরী প্রেমের প্রভাবে হয়তো ছন্দ-গন্ধ-আনন্দে ভরে ওঠবে আমার লেখাসমগ্র। শব্দের উপযুক্ততা, ভাবের নিবিড়তা, ছন্দের গতিশীলতা সব মিলিয়ে আমার লেখা হয়ে ওঠবে প্রবাহমান স্রোতস্বিনী। যার কলকল ছলছল গানে মুখরিত হয়ে ওঠবে সহজ-সবুজ পল্লীলোক। আমি কখন লিখবো সেই-
‘চাঁদেরে হেরিয়া কাঁদে চকোরিণী
বলে না তো কিছু চাঁদ।।
চেয়ে’ চেয়ে’ দেখি ফোটে যবে ফুল
ফুল বলে না তো সে আমার ভুল
মেঘ হেরি’ ঝুরে’ চাতকিনী
মেঘ করে না তো প্রতিবাদ।
তুমি সুন্দর তাই চেয়ে থাকি প্রিয়
সেকি মোর অপরাধ?’
অথবা শ্রাবণ-ধারা, শরৎ শুভ্র কাশফুল, অকপট নীলাকাশের শৈল্পিক প্রচ্ছদ, ভাদ্রের হিমেল হাওয়াতে আমি এখন বিভোর না। এখানে কেমন যেন রুক্ষতা তুষারপাতের মতো ঝরতে ঝরতে জমাট বেঁধে আছে, এ যেন হিমালয়ের পাদদেশ। কাজেই যা হবার তাই হচ্ছে। কিন্তু এটা কখনো কামনীয় না।
কে হবে আমার স্বপ্ন-চেতনায় সাহসী বীর? আঘাতের পর আঘাতে যে ভেঙ্গে দিবে হৃদয়ের সব জড়তা, বাঁধা-প্রতিবন্ধকতা। শব্দ-কথার মহা প্রশান্তে ডুবতে ডুবতে আমি হয়তো জেগে ওঠবো আবার। কোন এক সৌভাগ্যবান কৃষকের মতো রচনা করে যাবো বিশাল এক সোনালি পাথার। অজস্র সৃজন উৎসবে উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠবে রুক্ষ এ মন। আমি হয়তো বলে ওঠবো-
‘আজ সৃষ্টি সুখের উল্লাসে
মোর মুখ হাসে মোর চোখ হাসে মোর
টগবগিয়ে খুন হাসে
আজ সৃষ্টি সুখের উল্লাসে।
আজকে আমার রুদ্ধপ্রাণের পল্বলে
বান ডেকে ঐ জাগলো জোয়ার দোয়ার ভাঙ্গা কল্লোলে
আসল হাসি, আসল কাঁদন
মুক্তি এল, আসল বাঁধন
মুখ ফোটে আজ বুক ফাটে মোর তিক্ত দুখের সুখ আসে
ঐ রিক্ত বুকের দুখ আসে
আজ সৃষ্টি সুখের উল্লাসে।’
কিংবা রাতের আঁধার, আঁধারে ঝিঁঝিঁদের গান, ব্যাঙের ডাক, তারা ভরা আকাশ, আকাশে রূপালী চাঁদ আমার কাছে এখন এ সব যেন অনুভূতিহীন কিছু শক্ত পাথর। যাদের নেই কোন ভাব, নেই কোন ভাষা। আশা তো দূরের কথা, আশার মরিচীকাও এখানে অপ্রতুল। সো...
কে হবে আমার ভাবনা-কল্পনায় রঙিলা অরুণ? যার আলোতে আমি দেখে নিব জ্ঞান বিজ্ঞানের অজানা-অচেনা রহস্যালোক। জ্ঞানের অমিয় সুধা পিয়ে যেন প্রাণ চাতকী মিটিয়ে নিবে তার অনন্ত তৃষ্ণা। ঊষা পেরিয়ে হয়তো এখানে আসবে মধ্য দুপুর। আলোর সাগরে ভেসে ভেসে আমি হয়তো আলো ফেরি করে ফিরবো শহর নগরের যান্ত্রিক অন্ধকারে। কোন এক দিন হয়তো দরাজ কণ্ঠে আমিও গেয়ে ওঠবো-
‘আমি কভু প্রশান্ত, -কভু অশান্ত দারুণ স্বেচ্ছাচারী,
আমি অরুণ খুনের তরুণ, আমি বিধির দর্পহারী!
আমি প্রভঞ্জনের উচ্ছ্বাস, আমি বারিধির মহাকল্লোল,
আমি উজ্জ্বল, আমি প্রোজ্জ্বল,
আমি উচ্ছল জল-ছল-ছল, চল ঊর্মির হিন্দোল-দোল!-
আমি বন্ধনহারা কুমারীর বেনী, তন্বী নয়নে বহ্নি,
আমি ষোড়শীর হৃদি-সরসিজ প্রেম উদ্দাম, আমি ধন্যি!’
কিন্তু কখন আসবে সেই দিন? লেখালেখির এই জগতে এসে আমি বুঝতে পারছি- তোমার উৎসাহ-অনুপ্রেরণা আজ বড় বেশি প্রয়োজন। কিন্তু কে তুমি সে???
৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দ।
আনোয়ারা, চট্টগ্রাম
(কবিতার উদ্ধৃতিগুলো নজরুলের ‘তুমি সুন্দর তাই চেয়ে থাকি প্রিয়’, ‘সৃষ্টি সুখের উল্লাসে’ এবং ‘বিদ্রোহী’ কবিতা থেকে)
বিষয়: সাহিত্য
১২৭৭ বার পঠিত, ২৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনাকে ধন্যবাদ অনেক
শুনেন দুনিয়ার সকল বড় কবির বউ তার আগে ইন্তেকাল করেছেন। কেবল নজরুল এর বউ বেঁচে ছিলেন কিন্তু তার সৃষ্টিক্ষমতা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল!!
রবিন্দ্রনাথ,ইকবাল,হাফিজ,মিলটন সবাই বেী মারা যাওয়ার আগে ও পরেই শ্রেষ্ঠ লিখাগুলি লিখেছেন। তাই তার কোন প্রয়োজন নাই। নিজেই লিখতে পারবেন!!!
সো... সো... সো....
হুমম, তার ভুমিকা আসলেই অনেক Important
সঠিক সময়ে বুঝে নিন খুজে নিন..........
আশা করি খুব শীঘ্রই কারো মায়াবী মুখ, হরিণী চোখ, রেশমী চুল,অনভিপ্রেত কাঁন্না,জাদুকরী প্রেম আপনাকে মুগ্ধ করবে, বিভ্রান্ত করবেনা ইনশাআল্লাহ
যে হবে আপনার হৃদয়ে রাণী !!!!!!!!!!!!!!!
তবে মোদ্দা কথা হল, যে কোন মানুষে খ্যাতির শীর্ষে পৌছার জন্য প্রয়োজন
- জীবন বিদ্রোহের কঠিন দিনের পোড় খা্ওয়া অভিজ্ঞতা
- ব্যর্থ প্রেমের অসহ্য যাতনায় প্রসব করা সাহিত্য
- আপন মনকে চিন্তা চেতনা দিয়ে বিস্ফোরণ ঘটানো।
আপনার সদিচ্চার সেই অপেক্ষমান নায়িকার ছোড়ায় তীরের মত আঘাত করে ভেঙ্গে দিক এ হৃদয়কে, তার পর তৈরী হোক বিদ্রোহী কবির অহস্য আর্তনাদে শ্রেষ্ঠ কবিতা। সে অপেক্ষায় থাকলাম।
মন্তব্য করতে লগইন করুন