একাল ও সেকাল৷
লিখেছেন লিখেছেন শেখের পোলা ২০ মার্চ, ২০১৪, ০৮:৫৩:৩৫ রাত
একাল ও সেকাল
সেকেলেরা সেকাল নিয়ে গর্ব করে বলে,
আসবেনা আর দিনগুলি ফের যা গিয়েছে চলে।
স্বস্তি ছিল শান্তি ছিল, শ্রদ্ধা ভালবাসা,
ফল-ফষলে পূর্ণ ধরা, খাল বিলে মাছ ঠাসা।
সামনে খোলা আকাশ ছিল, দিগন্ত জোড়া মাঠ,
মাঠের পরে মাঠ ছিল আর গঞ্জে ছিল হাট।
ছায়া ঘেরা গ্রাম ছিল আর আম কাঁঠালের গাছ,
গোয়াল ভরা গরু ছিল পুকুর ভরা মাছ।
খাল বিলেতে শাপলা শালুক, শোভা অপরূপ,
পানকৌড়ি ঘন ঘন দিত সেথায় ডুব।
পালের হাওয়ায় নৌকা বেঁধে ধরত মাঝি গান,
ভাটিয়ালী গানের মাঝে হারিয়ে যেত প্রান।
জোনাক জ্বলা আঁধার রাতে কূপীর বাতি জ্বেলে,
গাজী কালুর পুঁথি খানি কেউ ধরত মেলে।
শীতের রাতের পিঠা পুলি খেজুর গাছের রসে,
রাত পোহালে সাত সকালে পুবের দাওয়ায় বসে
হাডুডু আর ষাঁড়ের লড়াই,নৌকা বাইচ হলে,
সাত গ্রামের মানুষ যেত এক গ্রামে চলে।
বর্ষা শেষে পাট উঠত শীতের শেষে ধান,
কোষ্টা হত সোনালী আঁশ, রাখত দেশের মান।
বৌ আসত পালকি চড়ে কিংবা গরুর গাড়ী,
কেউবা আবার পানসী নিয়ে ধরত বিলে পাড়ি।
এ কাল এসে বললে বাপু, আমার কথা শোন,
যা কিছু সব গেছে চলে,তারে না আর টানো।
খালে বিলে নাইকো পানি, চিন্তা মোদের নাই,
স্যালো মেশিন চালিয়ে মোরা তিন গুনা ধান পাই।
ডিম মুরগীর যোগান মোদের পল্ট্রি হতে আসে,
গরু খাসী তাজা করণ খামার আছে পাশে।
দিনে দিনে বাড়ছে মানুষ, করতে হবে ঠাঁই,
বিল গুলো সব ভরাট করে উঠছে বাড়ী তাই।
বাড়ীর উপর বাড়ী করে দিচ্ছি আকাশ ঘিরে,
আকাশ টারে রাখছি ধরে ‘নভো থিয়েটারে’
বোতাম টিপে বাতি জ্বালাই, ফ্যানের বাতাস পাই,
ঘরকে করি ঠাণ্ডা গরম যখন যেমন চাই।
দেশ বিদেশে ঘুরছে মানুষ হাওয়াই জাহাজ চড়ে,
কামলা দিয়ে, পকেট ভরে, আনছে সোনা ঘরে।
কলের লাঙ্গল চালাই মোরা,নৌকা চলে কলে,
কলের গাড়ি সাজাই মোরা বউ আনতে হলে।
ডিস লাইনে যাত্রা পালা,মুঠো ফোনে কথা,
অন লাইনে পাঠাই চিঠি, যখন খুশী যেথা।
বোতাম টিপে আনতে পারি বিশ্বটারে কাছে,
সেকাল নিয়ে গর্ব করার কিইবা বাকী আছে!
বিষয়: বিবিধ
১১৬২ বার পঠিত, ১৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আহা...কি সুন্দর...
মন্তব্য করতে লগইন করুন