অনেকদিন পর লগ-ইন করলাম- :D/ হক্বকথার গল্প
লিখেছেন লিখেছেন আবু সাইফ ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০১:১৩:৪১ রাত
আসসালামু আলাইকুম .... আলা মানিত্তাবায়াল হুদা
ব্লগের লেখক-পাঠক-সম্পাদক সবাইকে শুভেচ্ছা
অনেকদিন পর লগ-ইন করলাম, হয়তো ঈদ পর্যন্ত নিয়মিত হতে পারবো ইনশাআল্লাহ :D/
আজ মাত্র দুটো বিষয়ে কথা বলবো
(১)শৈশবে আমার দাদার কাছে একটা গল্প শুনেছিলাম, সেটার ভাষা ও শব্দগত পরিমার্জনা করে পাশ করছি-
আবেদ নামের একজন সাধারণ খেটে-খাওয়া মানুষ তার সচ্চরিত্রের জন্য এলাকাবাসীর খুব প্রিয় হয়ে উঠেছিলেন! সে কারণে তাঁর একমাত্র পুত্রসন্তানটিকেও মানুষে খুব আদর করতো! পূত্র কালামের বয়স সাত হলে সমাজে পরিচিত করা ও ন্যায়বিচারের শিক্ষা দেবার জন্য বাবা আবেদ তাকে কর্মক্ষেত্রে ও বিচারের মজলিশে সাথে নিয়ে যাওয়া শুরু করলেন!
এভাবে বছরাধিক কাল গড়ালে ছেলেটিও মানুষের সাথে কথাবার্তায় বেশ বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিতে লাগলো! কিন্তু তাক্বদীর সামনে এসে হাজির হলো, আকস্মিক অসুস্থতায় কয়েকদিন বিছানায় থেকে আবেদ ইন্তেকাল করলেন, কালাম ইয়াতীম হয়ে গেল!
কালামের বাবার সুনামকে পূঁজি করে কালামের মা এলাকার মানুষের সহায়তায় ঘরে বসেই কামাই-রোজগার করে ছেলেকে মানুষ করার চেষ্টা করতে থাকলেন! এলাকাবাসী আবেদের কারণে কালামকে বিশেষ স্নেহের নজরে দেখতে লাগলো, কালামও সমাজের সর্বস্তরের মানুষের আদরযত্নে বড় হতে থাকলো!
কিন্তু বছর না ঘুরতেই কালামের মায়ের কাছে অভিযোগ আসা শুরু হলো- কালাম নাকি যত বড় হচ্ছে ততই বেয়াদব হয়ে উঠছে, কথাবার্তায় মানুষকে লজ্জিত ও অপমানিত করাই তার প্রধান কাজ এখন!
কালামের মা ছেলেকে পরামর্শ দিতে থাকেন যেন ভালো কথা ছাড়া মন্দ না বলে, মানুষের ভালো ছাড়া মন্দ না করে, বাবার সুনাম রক্ষা করে ইত্যাদি ইত্যাদি . . ছেলেও মায়ের একান্ত অনুগত, সবকথাই সে মনযোগ দিয়ে শোনে এবং মেনে চলার ওয়াদা করে
কিন্তু অভিযোগ ক্রমশঃ বাড়তেই থাকলো, এক পর্যায়ে কালামের মা অতিষ্ঠ হয়ে ছেলের সাথে আলোচনা করে মূল সমস্যা খুঁজতে ও বুঝতে চাইলেন!
ছেলেকে বললেন, "দেখ বাবা, তোর বাবা চলে যাওয়ার পর কত কষ্ট করে তোকে মানুষ করছি, সব কষ্টই সহ্য হয়- কিন্তু তোর নামে এতো নালিশ তো আর সহ্য হয়না"
কালাম বললো, "মা, আমি তো বাবার শেখানো আদর্শ ও তোমার পরামর্শ মেনে চলতে কম করিনা, মানুষের ভালো ছাড়া মন্দ করিনা, হক্বকথা ছাড়া মন্দকথা বলিনা, তারপরেও মানুষ নালিশ করতে থাকলে আমি আর কী করতে পারি? আমি কি হক্বকথা বলা ছেড়ে দেবো?"
-যদি হক্বকথাই বলিস, ভালোকথাই বলিস, মানুষের মন্দ না করিস তবে এতো অভিযোগ কেন?
-মা, হক্বকথার বৈশিষ্টই এমন যে এটা কাউকে সন্তুষ্ট করেনা, যাকেই বলা হয় সে-ই নাখোশ হয়- তেড়ে আসে! এমন কি তুমি যে আমার মা, এতো কষ্ট করে আমাকে আগলিয়ে রেখেছো- সেই তুমিও হক্বকথা শুনলে আমাকে তেড়ে আসবে!
-সেটা আবার কেমন কথা! হক্বকথা বললে তেড়ে আসবে কেন?!
-শুনবে তুমি দু-একটা হক্বকথা? দেখি তুমি কেমন মা!
-বল তো শুনি তোর হক্বকথা!
-আচ্ছা মা, বাবা তো মারা গেছেন তিনবছর হয়ে গেছে, অথচ এখনো তুমি চুল বাঁধো, ঘর গুছাও, মাঝে মাঝে সাজুগুজুও করো- বলো তো এসব কার জন্য?? এসব কি এখন মানায়??
-ওরে বান্দর, এই তোর হক্বকথার নমুনা...
=============
আমরা অনেকেই এমনতর হক্বকথা বলতে ও বলাতে উতসাহবোধ করি- বরং কর্তব্য মনে করি!
একটা কথা এত্তো বড় হয়ে গেল!
আরেকটা কথা তাহলে একটু পরেই বলি
অপেক্ষায় রাখার জন্য দুঃখিত-
বিষয়: বিবিধ
১৪২২ বার পঠিত, ২২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ ভালো লাগলো
ধন্যবাদ, আপনিও কম যান না
জাযাকাল্লাহ.
জাযাকাল্লাহ.
সাইফের বাবা ভাইয়া আপনার তো ডবল কাফফার হোওয়া উচিত আসছেন অনেকদিন পরে আবার পেটের ভিতর কথা রেখে দিয়েছন ।
দেখছেন না- বের করে টেবিলে রেখেছি,
একটু দৈর্য ধরুন, পাতে দেয়া হবে!
এই নিন -
এতে কাফফারা হবে কি??
হক বলবেন তো চোখের কাঁটা হবেন, ধর্য্য ছাড়া সফলতা আশা করা যায়না।!!
আপনাদের দুজনের কে যে কখন বলছেন তা বোঝা বড় দায়!
হককথা বলার ধরণটাও "হক" হতে হয়, তা না হলে সেটা আর "হক" থাকেনা!!
কথায় কাউকে অযাচিত আঘাত না করাটাও "হক"এর বৈশিষ্ট্য
চমৎকার গল্প উপহার দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।
হ্বক কথা আসলেই তিতা। সাধারণত মানুষ নিজেকে সবচেয়ে বেশি ভালবাসে।তাই আমরা অন্যের সামান্য দোষ চোখে পড়লেও নিজের হাজার দোষের পক্ষে যুক্তি ধার করাই।নিজের দুর্বলতার কথা অপরের কাছে থেকে শুনতে তাই আমাদের ভালো লাগে না।
তবুও হককথা বলেই যেতে হবে-
তবে অবশ্যই সুন্দর করে-
এটাও হককথার হক্ব!
ভাল লাগল গল্প + গল্পের ভেতরের উপদেশ
তারচে' বরং বৃত্তবদ্ধ থেকেই ভাবনাকে বিশ্বনয় ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা্য উত্তম- কি বলেন?
যেমন জমিন ও আসমান
অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ
চমৎকার লিখাটির জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
শুভেচ্ছা রইলো।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
) )
হক কথা নিয়ে পোষ্ট শিক্ষনীয় ভালো লাগলো।জাজাকাল্লাহ খাইর।
অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ
জাযাকাল্লাহ,
সুন্দর পোস্ট! ধন্যবাদ
দ্বীনের ব্যাপারে সন্দেহ-সংশয় সৃষ্টি করা আর পরস্পরের বিরুদ্ধে মতপ্রকাশের বাড়াবাড়িতে মানুষ- বিশেষতঃ নতুন প্রজন্ম সংশয়বাদকে গ্রহনে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে-
অভিভাবক কতক্ষণ পাহারা দিয়ে রাখবেন??
আপনার কলমে একটা পোস্ট এলে খুব ভালো হয়!!
অনেক ধন্যবাদ,
জাযাকুমুল্লাহ
মন্তব্য করতে লগইন করুন