নয়া যমানার ডাক-৪ (ঐক্য ব্যতিত উপায় কি ?)
লিখেছেন লিখেছেন নকীব আরসালান২ ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৫, ১০:৪৬:০০ সকাল
উম্মাহর দুর্ভাগ্য যে, ইসলামের সূচনা লগ্নেই হযরত আলীর (রাঃ) খিলাফত কেন্দ্রিক বিবাদে উম্মাহ শিয়া- সুন্নি দুইভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। আর উভয় দলের চিন্তা-চেতনা অনুযায়ী হাদীস, তাফসীর, ফিকাহ, সীরাত, তারীখ ইত্যাদি বিন্যস্থ করা হয়। এখন এই দুই দলকে ঐক্যবদ্ধ করতে হলে তাদের আকিদা বিশ্বাস ও ধর্মগ্রন্থরাজি অক্ষুন্ন রেখেই ইসলামের বুনিয়াদি বিষয় যথা তাওহীদ, রিসালাত, ইহকাল, পরকাল ইত্যাদি ভিত্তির উপর ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। দেড় হাজার বছর পর শিয়া-সুন্নীর আকিদা, বিশ্বাস ও ধর্মগ্রন্থগুলি একাকার করে ঐক্য সম্ভব হবে না। যাই হউক পরবর্তিতে এই দুই দল থেকে আরো অনেক শাখা ফেরকার জন্ম হয়। যেমন সুন্নীদের মাঝে মৌলিক আকিদা বিশ্বাস ঠিক রেখে শুধু ধর্মানুষ্ঠান পালন বা আদায়ের রীতি, নীতি, পদ্ধতি অনুযায়ী শাখাগত এখতেলাফি মাসয়ালার উপর ভিত্তি করে বহুল প্রচলিত পাঁচটি মাযহাব জন্ম নেয়। যেমন হানাফী, শাফেয়ী, মালেকী, হাম্বলী, সালাফী বা ওয়াহাবী। এ পাঁচটি মাজহাবই ছোট-খাট ত্রুটি-বিচ্যুতি ব্যতীত সম্পূর্নরুপে হকের উপর প্রতিষ্ঠিত রয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় এ প্রত্যেকটি দল পরস্পরকে স্বীকৃতি না দিয়ে কুকুরের মত কামড়া কামড়ি করে মরছে। প্রত্যেকেই বরহক প্রতিষ্ঠিত জানা সত্ত্বেও একে অন্যকে স্বীকৃতি দিচ্ছে না বরং ফাসিক, ফাজির, বদকার এমনকি কাফের পর্যন্ত ঘোষণা করছে। যেহেতু দলগুলির মাঝে ইসলামের বুনিয়াদি বিষয়ে কোন এখতেলাফ নাই বিধায় তাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। কারণ বুনিয়াদি বিষয়ে এখতেলাফ জায়েয নাই কিন্তু ফুরুয়ি-শাখাগত বিষয়ে জায়েয আছে। কাজেই ঐক্য আবিশ্যম্ভাবি। যারা ঐক্যে অনিহা প্রকাশ করবে ইসলাম ও উম্মাহ ধ্বংসের দায় তাদের ঘাড়ে বর্তিয়ে তাদের গর্দান মেরে দেয়া হবে। কারণ এরাই হিযবুশ শয়তান বা সরাসরি শয়তান।
এরপর সরাসরি চলে আসি ভারত বর্ষে। উপমহাদেশের মুসলমান জাতি এতই কমবখত, এতই বদবখত, এতই অপরিনামদর্শি যে, তারা একই ধারা-একই মাযহাব তথা সুন্নী-হানাফী হয়েও কোরআনের নির্দেশানুযায়ি ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারলনা, অসংখ্য ফিরকায় বিভক্ত হয়ে গেল। বস্তুত এটা সমগ্র উম্মাহর দুর্ভাগ্য। কারণ ভারত বর্ষ হল ইসলামের শস্যক্ষেত্র, আলেমের খনি এবং রাসূল (সাঃ)এর ভবিষ্যৎবাণীর উপলক্ষ। যেমন রাসূল (সাঃ) বলে গেছেন খোরাসানের (সমগ্র ভারত বর্ষ) মুসলমানদের হাতে দাজ্জাল ধ্বংস হবে অর্থাৎ ইসলামের বিজয় হবে। আর তা আজ নাগাদ অবশ্যি হয়ে যেত যদি তারা বিভিন্ন ফিরকায় বিভক্ত না হত। এখনো হয়ে যাবে ইংশাআল্লাহ যদি তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে যায়।
ভারত বর্ষের মুসলমানদের অবিসংবাদিত মুর্শিদ শাহ ওয়ালি উল্লাহ মুহাদ্দেসে দেহলভী (রহঃ) এর পূর্বে কোন বিভক্তি ছিল না। কিন্তু ইংরেজ শাসন উম্মাহর দুর্ভাগ্য নিয়ে এল, উম্মাহ বিভক্ত হতে শুরু করল। যেমন, ব্যর্থ সিপাহি বিপ্লবের পর এর মূল অনুঘটক আলেম সমাজের উপর বয়ে গেল রোজ কিয়ামতের বিভীষিকা। তখন ইংরেজরা একান্ন হাজার পাঁচশত জন শুধু আলেম হত্যা করেছিল। তখন ইসলাম ও মুসলিম জাতি অস্তিত সংকটের মুখে পতিত হল। কাজেই আলেমগণ ইংরেজের সাথে সম্মুখ সমরে রনে ভঙ্গ দিয়ে কৌশল অবলম্বন করলেন। তারা সিপাহি বিপ্লবে মুজাফফর নগর এলাকার সিপাহ সালার মাওঃ আবুল কাশেম নানুতাবি (রঃ) এর নেতৃত্বে দেওবন্দ মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করলেন। উদ্দেশ্য মুসলমানদের মধ্যে ইসলামী শিক্ষার প্রসার ঘটিয়ে ইসলামকে টিকিয়ে রাখা, হিন্দু সংস্পর্ষে অনুপ্রবিষ্ট শিরক বিদআত কুসংস্কার নির্মুল করে ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠা করা এবং দেওবন্দকে ইংরেজ বিরোধি সৈনিক উৎপাদনের দুর্গ হিসাবে ব্যবহার করা। যার ফলাফল আমরা দেখতে পাই, মাওঃ মাহমুদুল হাসান দেওবন্দী (রঃ), হুসাইন আহমদ মাদানী (রঃ), উবায়দুল্লাহ সিন্দি তথা দেওবন্দের সকল ছাত্র ইংরেজ খেদাও আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন, বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছেন, মাল্টায় নির্বাসিত, নির্যাতিত হয়ে আত্মীয়-স্বজন বিচ্ছিন্নাবস্থায় ট্র্যাজিক মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছেন। এ দেওবন্দী ধারাটিই ইসলামী শিক্ষা, সভ্যতা ও সংস্কৃতির মূলধারা। উপমহাদেশের ইসলাম বলতে সিংহভাগ দেওবন্দের অবদান। কারণ এখনো যদি দেওবন্দীরা বয়কট করে যে, আমরা কোন ধর্মানুষ্ঠানে দায়িত্ব পালন করব না। তাহলে কোরআন হাদীস শিক্ষা তো দুরের কথা কোন মসজিদে ইমাম মুয়াজ্জিন পাওয়া যাবে না। শিশুকে বুগদাদি কায়দা পড়ানোর শিক্ষক, হুযুর পাওয়া যাবে না, এ কথা সর্বজন বিদিত। কিন্তু বর্তমান দেওবন্দী ধারার আলেমদের কুপমুন্ডুকতার কারণে বিশেষত অন্যদের সাথে রেষারেষি, ভ্রাতৃঘাতি বিভক্তি এবং ধর্ম শিক্ষা ও বিজ্ঞান শিক্ষাকে আলাদা করার কারণে ইসলাম ও উম্মাহ ধ্বংস হচ্ছে। এ সম্পর্কে আমি অন্যত্র বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
দেওবন্দের দাওয়া শাখা হচ্ছে তাবলীগ জামাত। মহান বুজুর্গ মাওঃ ইলিয়াস (রঃ) যখন দেখলেন হিন্দু ও খৃষ্টান মিশনারীরা মুসলমানদের ধর্মান্তর করছে এবং সাধারণ মুসলমানরা অজ্ঞতা ও শিরক বিদাতের পঙ্কে ডুবে গেছে। তখন এ মহান ব্যক্তির প্রাণ কেঁদে উঠল। তিনি রোজানা কামলা নিয়ে কাজ না করিয়ে মসজিদে বসে তালিম দিয়ে তাবলীগ জামাতের প্রবর্তন করেন। ফলে সাধারণ অশিক্ষিত শ্রেণী ও আধুনিক শিক্ষিত শ্রেণীর জন্য ধর্ম কর্ম শিখা, বুঝা ও আমল করার একটা নতুন দিগন্ত উম্মোচিত হল। উম্মাহ তাতে ভীষণ উপকৃত হল। কিন্তু বর্তমানে তাবলীগ লক্ষভ্রস্ট হয়ে গেছে। তারা জিহাদ ও খিলাফত প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম পরিত্যাগ করে একমাত্র তাবলীগকেই দ্বীনের কাজ, নবী ওয়ালা কাজ বলে গন্য করছে। আর অন্যদেরকে স্বীকৃতি দিচ্ছে না। কাজেই দেওবন্দী আলেমদের এখনই তাবলীগের লাগাম টেনে ধরতে হবে।
মহান বুজুর্গ মাওঃ সৈয়দ আহমদ খান (রঃ) তিনটি আপত্তিকর বিষয়ের অবতারণা করলেন। ১ রাসূল (সাঃ) নুরের সৃষ্টি, তিনি গায়েব জানেন। ২ দেওবন্দিরা কাফের। ৩ যখন সমগ্র আলেম সমাজ ইংরেজ শাসিত ভারতকে দারুল হরব ঘোষণা দিয়ে বৈরি নীতি অবলম্বন করেন তখন তিনি ভারতকে দারুল আমান ঘোষণা দিয়ে ইংরেজ তোষণনীতি অবলম্বন করেন। অথচ বাস্তবতা হলো প্রথম পয়েন্টটি সম্পূর্ন বিদআত। কারণ রাসূল(সাঃ) নূরের নাকি মাটির সৃষ্টি এমন আলোচনা পূর্বে কখনো ছিল না। আর কোরআন হাদীসের স্পষ্ট নস অনুযায়ী রাসূল (সাঃ) গায়েব জানেন না। আবার দেওবন্দীরা কোন বুনিয়াদি বিষয়ে এখতেলাফ করে না বা এমন কোন কাজ করে না যাতে কুফুরী আরোপ করা যায়। সর্বোপরি তারাই উপমহাদেশে ইসলামের মূল ধারক বাহক, কাজেই তারা কাফের হওয়ার প্রশ্নই আসেনা। আর ইসলাম ও উম্মাহ ধ্বংসকারী ইংরেজ তোষণ কোন মুসলমানের নীতি হতে পারে না। বাস্তবে দেখা যায় বেরেলভীরা এখনো ইংরেজ প্রবর্তিত সেক্যুলার পুঁজিবাদের সমর্থক। তারা কখনো খিলাফত প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করে না। এখন বেরেলভীদের কাছে আমাদের দাবী এ তিনটি বিষয় বিবেচনা পূর্বক ঐক্যের কাতারে শামিল হতে হবে।
অনন্তর পাশ্চাত্য শিক্ষা ও সভ্যতা যখন সব কিছু গ্রাস করা নিচ্ছে, মুসলিম আধুনিক শিক্ষিতরা সমাজতন্ত্র ও সেক্যুলার গণতন্ত্রের দিকে ব্যাপকভাবে ঝুকে পড়ছে তখন মাওঃ মওদুদীর (রঃ) মত এক মহান প্রতিভার আবির্ভাব ঘটে। তিনি সমাজতন্ত্র ও গণতন্ত্রের মোকাবেলায় ইসলামের প্রতিটি বিধানকে শানিত মুক্তি ও ক্ষুরধার কলমের সাহায্যে সর্বশ্রেষ্ঠ প্রমাণিত করেন। ফলে আধুনিক শিক্ষা ধারার ছাত্র সমাজ, সমাজতন্ত্র ও গণতন্ত্র পদপিষ্ট করে আল্লাহ্র সৈনিক হয়ে যায়। এ দেশের ছাত্র শিবির ধর্ম নিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্রের শ্লোগান না দিয়ে ইসলামের শ্লোগান দেয়, এটা মাওঃ মওদুদীর অবদান। যাই হউক, এভাবেই ভারতের সুন্নী-হানাফী মুসলমানরা দেওবন্দী, তাবলিগী, বেরেলভী ও জামাতী-এ চারটি ফেরকায় বিভক্ত হয়ে যায় এবং পরস্পরের বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত ও খুনখার হয়ে উঠে। যেমন দেওবন্দীরা সৈয়দ আহমদ খানসহ মাওঃ মওদুদীকে গালি দেয়, মিস্টার মওদুদী ডাকে। আবার বেরেলভী ও জামাতীরা মাওঃ ইলিয়াস ও দেওবন্দীদের গালি দেয়।
কিন্তু আমরা জেগে উঠেছি, গালা গালির দিন শেষ এখন ঐক্যের সময়। আমরা দেওবন্দী, বেরেলভী , জামাতী, তরিকতী ইত্যাদি সকল দলের মধ্যে ঐক্য স্থাপন করব, তারপর খিলাফত প্রতিষ্ঠা করব, ইংশাআল্লাহ। এ ঐক্যের মধ্যে কেউ অন্তরায় হলে সে কঠোরতার মুখোমুখি হবে। আর গালাগালি তো ফাসেকি কাজ। কারণ আ’লা হযরতের তিনটি ভুলের জন্য তার সারা জীবনের আমল অবশ্যি বরবাদ হয়ে যায়নি। কাজেই একজন পাক্কা মুমিনকে গালি দেওয়া ফাসেকি কাজ। আবার মাওঃ মওদুদী সাধারণ মানুষ ছিলেন বিধায় তার ভুল ত্রুটি আছে। কিন্তু এ জন্য ইসলামের এত বড় খাদেমকে গালি দেওয়া তো আরো জঘন্য। তার বহুল বিতর্কিত খিলাফত ও মুলকিয়্যত গ্রন্থ সম্পর্কে এতটুকু বলাই যথেষ্ট যা এর জবাবে লিখিত আল্লামা তকি উসমানীর “হযরত মোয়াবিয়া আওর তারীখী হাকায়েক” গ্রন্থে বলা হয়েছে “ আমাদের জন্য তো এটাই বোধগম্য নয় যে, আজকের এ ফিতনাসর্বস্ব যুগে ছাহাবা-বিরোধের মত নাযুক ও স্পর্শকাতর বিষয়ে কোন ভরসায় কলম ধরার সাহস করা হল? উম্মাহ বর্তমানে যেসব মৌলিক সমস্যা ও চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন, সেগুলোর সফল মোকাবিলা করতে হলে সময় ও উপায়-উপকরণের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও যে বিরাট কর্মযজ্ঞ আজ আমাদের আঞ্জাম দিতে হবে এবং সে জন্য যে একাগ্র প্রচেষ্টা, পারস্পরিক সম্প্রীতি ও সহযোগিতার প্রয়োজন, সে সম্পর্কে মওদুদী সাহেব অবশ্যই আমাদের চেয়ে ভালো জানেন” । কাজেই একমাত্র ইসলাম বিদ্বেষীরাই মাওঃ মওদুদীকে গালি দিতে পারে। আর দেওবন্দিদেরকে যারা গালি দেয়, আমি নিজে দেওবন্দি ধারার বিধায় কিছুই বলব না, শুধু তাদের বিবেকের উপর বিষয়টি ন্যস্ত থাকল। কাজেই ছোট খাট শাখাগত এখতেলাফ ভুলে আমরা ঐক্য হব- কোন আযাযিলের প্রতিনিধি অন্তরায় হলে সে নিজেই অন্তরালে চলে যাবে।
সর্বোপরি ঐক্য ব্যতীত উপায় কি? ভাঙ্গন তো অবিরাম গতিতে চলছে। টাঙ্গাইলের হুমায়ুন খান পন্নি আধুনিক শিক্ষিত একজন মানুষ। ইসলামের এ পতন যুগে চিন্তা ভাবনা করে কিছু বই লিখেছেন যার কিছু সঠিক, কিছু বেঠিক। তিনি আলেমদেরকে ধর্ম ব্যবসায়ি বলে এককভাবে দোষ চাপিয়েছেন। কিন্তু ইসলামের জন্য তাদের ত্যাগ তিতীক্ষা ও খিদমত অস্বীকার করেছেন। তার অনুসরণে হিযবুত তাওহীদ নামে একটি ফিরকা হয়ে গেছে। তারা পত্র পত্রিকা ও বিভিন্ন মাধ্যমে নিজেদের মতাদর্শ প্রচার করে যাচ্ছে। হিযবুত তাহরীর উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ না করে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু সংখ্যক লোক বিশ্বময় খিলাফত প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করে যাচ্ছে, যা ঐক্য ব্যতীত কখনোই সম্ভব নয়। ডাঃ জাকির নায়েক ইসলামের বিরাট খিদমত করে যাচ্ছে। তার কিছু ভুল ত্রুটির কারণে একমাত্র জামাত ছাড়া সবাই তার বিরোধিতা করছে। পিস টিভি বন্ধের চক্রান্ত করছে। এভাবে আল্লাহ্র যেসব মহান বান্দা ইসলামের খিদমত করছে তাদের অনুসরণে একেকটা ফিরকা জন্ম নিচ্ছে-যারা একে অপরকে স্বীকৃতি দেয়া তো দুরের কথা উল্টো পরস্পরকে ধ্বংসের চূড়ান্ত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এভাবে দিন যেতে থাকবে, মেধাবীরা ইসলাম ও উম্মাহকে নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করতে থাকবে, মুক্তির উপায় খুজতে থাকবে, আর নতুন নতুন ফিরকা জন্ম নিতে থাকবে। এমনিভাবে হয়ত একদিন দেখা যাবে প্রতিটা এলাকায়, মহল্লায়, মসজিদে ভিন্ন ভিন্ন ফেরকা গজিয়ে উঠেছে। উম্মাহ হাজার হাজার দলে বিভক্ত হয়ে গেছে। তারপর এক সময় দাজ্জালের হাতে চূড়ান্তভাবে ধ্বংস হয়ে যাবে।
দেহকোষ ভাঙ্গে-গড়ে, মানবদেহ পূর্নতায় পৌঁছে যায়। কিন্তু উম্মাহ শুধু ভাঙ্গছে, গড়ছে না। কাজেই এখন মুসলিম ভাই বোনদের কাছে আমার প্রশ্ন, এই যে উম্মাহর মধ্যে চলছে নিরন্তর ভাঙ্গন-বিভক্তির উদ্দাম নৃত্য, এ ধ্বংসলীলা থেকে মুক্তির উপায় কি ? বাতাও, মুক্তির উপায় কি ? বাতাও, মুক্তির উপায় কি ? যদি উপায়ান্তর না থাকে, তাহলে আল্লাহ্র ওয়াস্তে ডাকছি, রাসূল (সাঃ) এর নামে ডাকছি, কোরআনের নামে ডাকছি, ঐক্যবদ্ধ হও, ঐক্যবদ্ধ হও, ঐক্যবদ্ধ হও। যেহেতু ঐক্য ব্যতীত মুক্তি ও উত্থানের দ্বিতীয় কোন পথ নেই বিধায় আমরা ঐক্যবদ্ধ হবই হব ইংশাআল্লাহ। বস্তুত ঐক্যের বিষয়টা আমাদের আওতার মধ্যে। কারণ ফুরুয়ি বিষয়ে ছোট খাট মতভেদ গুলি বাদ দিয়ে পরস্পর হিংসা বিদ্বেষ ভুলে গেলেই আমরা ঐক্য হয়ে যেতে পারি। অথচ মনস্তাত্নিক এটুকু ত্যাগের জন্য আজ ইসলাম ও উম্মাহ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে-যা কোন আকলে সলীম মেনে নিতে পারে না। সুতরাং ঐক্য হতেই হবে। কাজেই এখন আমরা চলে যাব আমাদের মুর্শিদ শাহ ওয়ালি উল্লাহ দেহলভির (রঃ) কাছে। তারপরে আর কোন ফিরকা থাকবে না। ভারতীয় মুসলমানরা সুন্নী, হানাফী, (সালাফিসহ)। এখানে দেওবন্দী, তাবলিগী, জামাতী, বেরেলভী, ওয়াহাবী ইত্যাদি বাধার প্রাচীর গুড়িয়ে দেয়া হবে, তারপর খিলাফত প্রতিষ্ঠা করা হবে - ইংশাআল্লাহ।
বিষয়: রাজনীতি
১২৪৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন