রাজনৈতিক পরিস্থিতির বদলে যখন বিচারপ্রার্থীদের ভুমিকাই পাল্টে যায়..
লিখেছেন লিখেছেন অনিবার্য বিপ্লবের ইশতেহার ১৩ অক্টোবর, ২০১৪, ০৫:৫১:৫০ বিকাল
১৯৭১ সালে যে অসংখ্য মানুষ শহীদ হয়েছে বা অসংখ্য নারী নির্যাতিত হয়েছে তাদের ব্যপারে আমরা বরাবরই সহানুভুতিশীল। এই সব অপরাধের সাথে যারা জড়িত তাদের বিচারের ব্যপারেও জামায়াতের কোন অনাগ্রহ নেই। কিন্তুু ইতিহাসের ঘটনা পরিক্রমাই স্বাক্ষী যে, ঘাদানিকের যে ব্যক্তিরা এই বিচারের দাবী করে আসছিলেন তারা বা তাদের ভুমিকা অতীতে সব সময় মোটেও স্থিতিশীল বা প্রশ্নাতীত ছিলো না।
ঘাদানিক যখন প্রথমবারের মত এই বিচারের দাবী তোলে তখন তার সমর্থনে আওয়ামী লীগও সংসদের ভেতরে-বাইরে বেশ কিছু বক্তব্য দিয়েছিল। কিন্তু এই ঘাদানিক কমিটির দাবী ও আওয়ামী লীগের সেই সব বিবৃতি অনেকটাই হালকা হয়ে আসে ১৯৯৪ সালের শেষ দিক থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত। রাজনৈতিক বাস্তবতায় দেখা যায়, আওয়ামী লীগ ও জামায়াত তখন একসাথে কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য তৎকালীন বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে।
আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে যখন সরকার গঠন করে তখনও জামায়াতের সাথে তাদের বেশ ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল। আর তাই সেই নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ যে মেনিফেস্টো তৈরী করে তাতেও যুদ্ধাপরাধের বিচারের মত কোন প্রতিশ্রুতি ছিলো না। ১৯৯৬ সালের আওয়ামী মন্ত্রীসভার সদস্যরাও আজকের মন্ত্রীদের মত বড় গলায় জামায়াতের বিরুদ্ধে কিছু বলেনি তখন। এমনকি আওয়ামী লীগের ঐ মন্ত্রী সভার দুজন সদস্যের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানী বাহিনীকে সহায়তা করারও অভিযোগ ছিল। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের আওয়ামী লীগ ঐ সরকার গঠন করলেও তখন এই যুদ্ধাপরাধ বিচারের দাবীও ওঠেনি, ট্রাইবুনালও গঠন করা হয়নি। আর বিচারের দাবী উত্থাপনকারী ঘাদানির ভুমিকাও তখন ছিল অনেকটাই ম্লান।
আওয়ামী লীগের সেই মেয়াদের একেবারে শেষ দুই বছর অর্থাৎ ২০০০-২০০১ সালে বিএনপির সাথে মিলে জামায়াত চার দলীয় জোট গঠন করে। সে সময়ও আওয়ামী লীগ জামায়াতকে যুদ্ধাপরাধী বলেনি বা এই বিচারের দাবীও তোলেনি। ২০০১ সালের নির্বাচনে ৪ দলীয় জোট দুই-তৃতীয়াংশ আসন পেয়ে সরকার গঠন করলে জামায়াত থেকে দলের আমীর ও সেক্রেটারী জেনারেল দুইটি মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব পান। কিন্তু সেই মেয়াদেও এই বিচারের দাবী জোরে শোরে তোলা হয়নি।
বিষয়: বিবিধ
১০৪৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন