আল্লাহকে কে সৃষ্টি করেছে ?
লিখেছেন লিখেছেন সত্যের বিজয় ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০২:১৫:৩৭ দুপুর
আমার মহল্লার এক
ছেলে।
তাবলীগে পুরা এক
চিল্লা দিয়ে এসেছে সদ্য। আমাকে দেখে সেদিন
বললো,
ভাইয়া আমার
একটা কথা আছে,
আপনার
কি একটু সময় হবে?
বললাম, হ্যাঁ বলো।
সে বললো,
ভাইয়া এতো দিন
তো ধর্ম-কর্ম নামাজ- কালামের ধার দিয়েও
হাটতাম না।
এখন একটু এ পথে আসার
চেষ্টা করছি; অথচ
মনের
মধ্যে একটা প্রশ্ন শুধু খোচায়!
বললাম, কী প্রশ্ন বলো।
সে বললো,
খালি মনে হয়
‘আল্লাহকে কে সৃষ্টি করেছে’? আমি বললাম, কেন, অন্য
কেউ কি নিজেকে
বিশ্বজাহানের
স্রষ্টা বলে দাবী করেছে না কি? সে যেন একটু
হকচকিয়ে গেল। বললামঃ
তাহলে সমস্যা কী?
অন্য কেউ
দাবী করলেনা একটা সমস্যা ছিলো। যে দাবী মাত্র একজনই
করেছে, কেউ
কোনো দিন
তাকে চ্যালেঞ্জ করার দুঃসাহস
দেখায়নি সেটা নিয়ে তো কোনো সমস্যার কথা নয়!
একটু থতমত
খেয়ে সে বললো,
না ভাইয়া!
এমন তো না, কিন্তু
মনের মধ্যে খালি এই
কথা এসে খোচায়!
বললাম,
এটা তো কোনো প্রশ্ন
নয়
এটা শয়তানের
একটা শিশুতোষ ধোঁকা!
ওয়াসওয়াসা ! এটা দিয়ে সে কেবল বোকাদেরকেই
ঘায়েল করতে পারে।
তুমি এতো আধুনিক যুগের বুদ্ধিমান মানুষ
হয়ে এতে আক্রান্ত হও কিভাবে?
সে যেন একটু সাহস
পেলো,
বললাম,
শোনো, তোমার মনের
ঘরে এতো দিন
কোনো সম্পদ
ছিলো না যে, শয়তান
তা চুরি করতে আসবে।
এখন সম্ভবত
ঈমানের সম্পদ একটু
একটু জমা হতে শুরু
করেছে। তাই শয়তানের
এই হানা,
তা চুরি করে নিতে।
তুমি সত্যিই
আন্তরিকভাবে জানতে ও
বুঝতে চাও,
নাকি শুধু তর্কের জন্য
তর্ক করতে চাও?
সে বললো, ছিঃ ভাইয়া!
আমি আপনার
সাথে তর্ক করবো?
আমি বললাম,
তাহলে শোনো,
‘আল্লাহকে কে সৃষ্টি করেছে’ প্রশ্ন
তো এখানেই শেষ
হয়ে যাবে না। এরপর
তোমার জানতে হবে,
তাকে কে সৃষ্টি করেছে, তারপর
তাকে কে? তারপর
তাকে কে? তারপর
তাকে কে? তাই না?
খানিকটা ভেবে সে বললো, হ্যাঁ, তাই তো!
আমি বললাম, ঠিক
আছে তুমি এক
কাজ করো;
এভাবে প্রশ্ন
করতে থাকো,
তাকে কে সৃষ্টি করেছে?
তাকে কে?
তাকে কে? তাকে কে?
তাকে কে?
তাকে কে? তাকে কে?
এভাবে প্রশ্ন
করতে থাকো। তারপর
যেখানে গিয়ে তুমি ঠেকে যাবে, যে আর পিছনে কেউ
নেই, তারপর
আমি জবাব দেবো যে,
তাকে সৃষ্টি করেছে।
সে একটু
মাথা চুলকিয়ে বললো,
হ্যাঁ, ভাইয়া।
বললাম, ঠিক
আছে আগে তোমার প্রশ্ন
আগে শেষ করো। এক কাজ
করো তুমি।
তুমি প্রশ্ন
করতে থাকো,
আল্লাহকে কে সৃষ্টি করেছে? তাকে কে সৃষ্টি করেছে?
তাকে কে?
তাকে কে? তাকে কে?
তাকে কে?
তাকে কে? তাকে কে?
তাকে কে?
তাকে কে? তাকে কে?
তাকে কে?
তাকে কে? তাকে কে?
তাকে কে?
তাকে কে? তাকে কে?
তাকে কে?
তাকে কে? তাকে কে?
তাকে কে?
তাকে কে? তাকে কে?
তাকে কে?
তাকে কে? তাকে কে?
তাকে কে?............
এভাবে প্রশ্ন
করতে থাকো.........।
আমি একটু বাজার
করে আসি।
তুমি যেখানে গিয়ে দেখবে যে আর পিছনে কেউ নেই
সেখানে দাঁড়িয়ে যাবে। তারপর
আমি দলীল প্রমাণ সহ
সেই
সত্ত্বাকে চিনিয়ে দেবো। ঠিক আছে?
সে সম্ভবত কিছু
বুঝে না উঠতে পেরে বললো,
ঠিক আছে ভাইয়া।
আমি বাজার
থেকে ফিরে এসে তাকে জিজ্ঞাসা করলাম কী খবর, শেষ পেয়েছো?
সে অসহায়ের
মতো বললো, না ভাইয়া,
এ প্রশ্নের
তো কোনো শেষ নেই?
বললাম, তুমি একটু
গভীরভাবে ভেবে দেখো,
তাহলেই
বুঝতে পারবে যে, সকল
কিছুর
অস্তিত্বের জন্য এমন
একজন স্রষ্টা থাকা চাই
যাকে কেউ অস্তিত্ব
দেয়নি,
যাকে কেউ
সৃষ্টি করেনি।
যিনি চিরঞ্জীব
চিরস্থায়ী; চিরকাল
ছিলেন, চিরকাল
থাকবেন। যিনি অনন্ত
অসীম; যিনি প্রথম
যিনি শেষ।
ছেলেটা আবেগে কাঁদো কাঁদো হয়ে বললঃ জী ভাইয়া বুঝতে পেরেছি।
আমি বললাম,
আসলে যার
কোনো স্রষ্টা আছে সে তো সৃষ্টি। যার
অস্তিত্বের জন্য
স্রষ্টা প্রয়োজন
সে তো স্রষ্টা হতে পারে না। স্রষ্টা আর সৃষ্টির
মৌলিক
একটা পার্থক্যই
তো এটাই।
তাছাড়া ‘আল্লাহর
স্রষ্টা কে’ এ
প্রশ্নের যেহেতু
কোনো শেষ নেই, তাই
আসলে এটা কোনো প্রশ্নই
নয়;
বরং এটা হলো নিছক
শয়তানের
কুমন্ত্রণা,ওয়াসওয়াসা। যখনই
তোমার মনে শয়তান
এমন
কুমন্ত্রণা দেবে সাথে সাথে আল্লাহর কাছে আশ্রয়
কামনা করবে। পড়বে, আউযুবিল্লাহি মিনাশ শাইত্ব-নির
রযীম। পড়বে,
রব্বী আউযুবিকা মিন হামাযাতিশ
শাইয়াইত্বীন,
ওয়া আউযুবিকা রব্বী আই ইয়াহ্দুরূন।
সূরা ইখলাস পাঠ
করবে। আল্লাহ
এবং তাঁর রসূল (সা.)
আমাদেরকে এ
কুমন্ত্রণা থেকে নিজেদেরকে রক্ষা কর ধরণের উপদেশই
দিয়েছেন।
সব শেষে সে বললো,
ঠিকই বলেছেন
ভাইয়া। শয়তান আর এই
ফালতু প্রশ্ন
নিয়ে আমার চিন্তার ত্রিসীমানায়ও
আসতে পারবে না।আমাকে আর ওয়াসওয়াসা দিয়ে বিভ্রান্ত করতে পারবেনা ইন-শা-আল্লাহ্
প্রিয় বন্ধুরা ! শয়তানের এধরনের ওয়াসওয়াসা দেখা দিলে চারটা আমল করতে হবে।
১.আউজু বিল্লাহি মিনাশ শাইত্বনির রযীম পড়তে হবে।
২.আমান্তু বিল্লাহি পড়তে হবে।
৩.এই চিন্তা বাদ দিতে হবে।
৪.অন্য কোন বিষয়ের দিকে চিন্তাকে ঘুরিয়ে দিতে হবে।
কুরআন মাযীদে বলা হয়েছেঃ
"তোমার কাছে যদি শয়তানের কোন ওয়াসওয়াসা আসে,তাহলে আউযু বিল্লাহি মিনাশ শাইত্বনির রযীম পড়ে নিবে।(তাহলে ওয়াসওয়াসা দূর হয়ে যাবে)।সূরা হামীম আস-সাজদাঃআয়াতঃ৩৬ ।
হে আল্লাহ ! আমাদের মনে সেই সব বিষয়ের চেতনা উদয় করে দাও যে গুলো আমাদের জন্য কল্যানকর।আর যা কিছু খারাপ তা থেকে এবং শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে আমাদেরকে হেফাজত কর। আমীন ইয়া রব !
বিষয়: বিবিধ
১৩৪০ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য






































পাঠকের মন্তব্য:
ইউ ছাব্বেহু বুখরাতাম ওছীলায়
[2] اللَّهُ الصَّمَدُ
[3] لَم يَلِد وَلَم يولَد
[4] وَلَم يَكُن لَهُ كُفُوًا أَحَدٌ
১) বলুন, তিনি আল্লাহ, এক,
২) আল্লাহ অমুখাপেক্ষী,
৩) তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কেউ তাকে জন্ম দেয়নি
৪) এবং তার সমতুল্য কেউ নেই।
এটা কোন প্রশ্ন ই হয় নাই
তেমনি আল্লাহকে কে বানাইছে
এটা ও প্রশ্ন ই হয় নাই
স্রষ্টাকে কে সৃষ্টি করেছে? চিন্তাশীল কোন মানুষ এ প্রশ্ন করেই বুঝবে - আসলে সে লাইফের সবচেয়ে বোকা প্রশ্নটা করেছে। সাদাসিদা ভাল মানুষরা এ প্রশ্নে হকচকিয়ে যায়। কিন্তু আপনার আলোচনাটা - তাদের জন্য বেশ উপকারী হবে। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
মন্তব্য করতে লগইন করুন