বাসর
লিখেছেন লিখেছেন আলোর আভা ১৫ জানুয়ারি, ২০১৪, ১১:১০:৪৪ রাত
মানহা ক্লাস এইটে পরে এই সময়ে তার পিছনে লাগে মহল্লার বখাটে ছেলে বাদল ।সে মানহাকে স্কুলে আসা -যাওয়ার পথে এত বেশী উত্যক্ত করা শুরু করে বাধ্য হয়ে মানহার বাবা মতিন সাহেব মানহার স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেন ।
বাসায় দুইজন প্রাইভেট টিচার রেখে দেন আর সিন্ধান্ত নেন শুধু পরিক্ষার সময় স্কুলে গিয়ে পরিক্ষা দিবে ।
এটা মানহা নিরবে মেনে নিলেও বাদল আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে।সে এখন সারা ক্ষন মানহাদের বাসার চার পাশে ঘোরা-ফেরা করে ঢিল ছুড়ে জানালার গ্লাস ভাংগে ,আজে-বাজে কথা লিখে কাগজ ছুড়ে মারে ।আর অনেক সময় উচ্চস্বরে মানহার নাম ধরে ডাকে।
কিন্তু এই অবস্থায় মতিন সাহেব মান-সন্মান এর ভয় আর মেয়ের ভবিষ্যত নিয়ে সংকিত হয়ে মেয়েকে বিয়ে দেয়ার সিন্ধান্ত নেন ।
মতিন সাহেবের বড় ভাইয়ের ৩য় ছেলে সাব্বির দেখতে খুব সুন্দর নম্র-ভদ্র মেধাবী ও পরহেজগার আর অতিরিক্ত লজ্জাশীল।
সাব্বিরের বয়স যখন সাত কি আট মানহা তখন মায়ের গর্ভে মতিন সাহেব কথায় কথায় বলেছিলেন আমার মেয়ে হলে তোর সাথে তার বিয়ে দিব ।তার কিছু দিন পড়েই মানহার জন্ম ।সে হিসাবে পরিবারের সবাই ধরে নিয়েছে সাব্বিরের সাথেই মানহার বিয়ে হবে।
সাব্বির এত বেশী লাজুক চাচার এই কথাকে স্বরনে রেখে সে
ছোট বেলায় মানহাকে নিয়ে এবাড়ি আসলেও সে কখনো মানহাকে কোলে নেয় নি আর মানহার বয়স যখন ১০-১২ বছর তখন আসলে মানহা যেখানে থাকত সে তার আশে পাশেও থাকতো না ।
সময়ের পরিক্রমায় মতিন সাহেব সাব্বিরকে বলা কথা ভুলে গেলে ও ভুলে যান নি মানহার মা রাবেয়া বেগম ।রাবেয়া বেগম যদি ও শশুর বাড়ি তেমন যান নি কিন্ত শশুর বাড়ির লোকজনের প্রতি সন্মান ও দায়িত্ব কর্তব্য পালনে কখনো অবহেলা করেনি ।তার মাঝে সাব্বিরের প্রতি ছিল বিশেষ নজর ।সাব্বিরের স্বভাব চরিত্র,আচার আচরণ ,তার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে প্রকাশ না করলেও মনে মনে ইচ্ছা পোষন করতেন মানহাকে সাব্বিরের কাছেই বিয়ে দিবেন ।তাই সব সময় সাব্বিরের লেখা পড়ার ব্যাপারে খোজ খবর ও টাকা পয়সা দিয়ে হেল্প করতেন ।
আজকে মতিন সাহেব যখন মেয়ের বিয়ের কথা ভাবছেন তখন রাবেয়া বেগম এগিয়ে এসে বলেন সাব্বির আমাদের বাড়ির ছেলে তাকে তো আমরা চিনি জানি সাব্বিরই ভাল হবে আমাদের মেয়ের জন্য।
মতিন সাহেব আমতা আমতা করে বলেন সাব্বির কেবল এস এইচ সি পাশ করে ইউনির্ভারসিটি ভর্তি হল ওর বড় দুই ভাই অবিবাহিত তা ছাড়া আমি তো মানহার জন্য ভাল ছেলেই পাব ।
জানি ভাল ছেলে পাবে কিন্তু তোমার মেয়ের লেখাপড়া হবে না ,সাব্বিরের সাথে বিয়ে হলে সাব্বির যেহেতু ছাত্র তাই মানহা আমাদের কাছে থেকেই ওর লেখা পড়া চালিয়ে যেতে পারবে।এখন চাকরিজীবি ছেলের কাছে বিয়ে দিলে মেয়ের সাথে বয়সের ব্যাবধান হবে বেশী তাছাড়া সাব্বির ভাল ছাত্র সে ভবিষ্যতে ভাল করবে ।
রাবেয়ার কথার যুক্তিতে মতিন সাহেব নরম হন ।
অতপর মতিন সাহেব ও রাবেয়া বেগম পরামর্শ করে তার ভগ্নিপতি সাঈদকে পাঠান বড় ভাইএর কাছে সাব্বির ও মানহার বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে ।
সাব্বির এর বাবা মা প্রস্তাব শুনে ,আমরা তো মানহার জন্মের পর থেকে তাকে ছেলের বউ হিসাবে গ্রহন করে নিয়েছি ।এতে আর আমাদের আপত্তির কি আছে মতিন যা ভাল মনে করে তাই হবে ।
কিন্তু বেঁকে বসেন সাব্বির ।সাব্বির চায় মানহাকে বিয়ে করতে তবে এই মূহুর্তে না।
আমার পড়াশুনা শেষ হবে মানহা ও পড়া শুনা করতে থাকুক তার পর ।আমার খরচ আমি চালাতে পারি না ব্উ এর খরচ কে চালাবে,তাছাড়া আমার বড় দুই ভাই এখন ও বিয়ে করে নি আমি কি ভাবে এখন বিয়ে করি ।
সাব্বিরের বাবা ও ফুপা এসব নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না ।
মুরুব্বীরা সবাই বসে বিয়ের দিন তারিখ থিক করে ফেলে ।
মানহা জন্মের পর থেকেই জেনে আসছে সাব্বির এর সাথে তার বিয়ে হবে কিন্ত সাব্বির ছেলে হয়ে এত লাজুকতা তার পছন্দ না হলে মানহার মনে কিছুটা হলে দূর্বলতা ছিল সাব্বিরের প্রতি ।
আজ মানহার বিয়ে । এনিয়ে তার মাঝে কোন ভয়,শংকা , লজ্জা ,আনন্দ ,বেধনা কোনটাই পরিলক্ষীত হয় না ।
বর আসবে বিকালে রাত্রে বিয়ে হবে ।বিকাল গড়িয়ে রাত ১০টা বেজে যায় বর আসে না ।কাজী সাহেবও চলে যান ।অবশেষে ১১টার দিকে সাব্বিররা এসে পৌছে মানহাদের বাসায় ।
কাজী সাহেব চলে যাওয়াতে সে রাতে আর বিয়ে পড়ানো হয় না ।রাতের খাওয়া সেরে যে যার মত ঘুমিয়ে পরে।
পরের দিন সকালে যখন বিয়ে পড়ানো হবে সাব্বিরের বাবা
শুধু একটা আংটি ও একটা নাকফুল নিয়ে এসেছে । মানহার বড় খালা এ নিয়ে হই চই শুরু করে দেন ।সাব্বিরের বাবাকে অন্তত একটা নতুন শাড়ি তো আনবেন ,নতুন শাড়ি ছাড়া বিয়ে হবে না ,এখন যান শাড়ি নিয়ে আসুন।
সাব্বিরের বাবা দোকানে গিয়ে ৫০০ টাকা দিয়ে একটা মালা শাড়ি নিয়ে আসেন। মানহারর খালারা এ বিয়েতে কেউই রাজী ছিল না ।তার উপর এই অবস্থা দেখে মানহার খালারা মানহার মাকে উদ্দেশ্য করে :
মেয়ে বেশী হয়ে গিয়েছে মেয়ের গলা কেটে নদীতে ভাসিয়ে দিতে পারিস নি।এভাবে মেয়ের জীবন নষ্ট করার কোন মানে হয় ।আরো অনেক ধরনের কথা তারা বলতে থাকে ।
এতেও মানহার মাঝে কোন প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় না ।তাকে ৫০০ টাকার মালা শাড়ী পড়িয়ে বিয়ের সাজে সাজানো হয় ।
এর পর শুরু হয় মোহরের ক্যাচাল ।মানহার মায়ের ইচ্ছা ৫ লক্ষ টাকা মোহর দিতে ।সাব্বিরের বাবার এ ব্যপারে আপত্তি না থাকলেও ,সাব্বির প্রতিবাদ করে ,
শরিয়া যা বলে সেই অনুসারে মোহর দিব।
৫০০টাকা দেওয়ার সামর্থ আমার নাই আমি কি ভাবে ৫ লক্ষ টাকা মোহর দিব ।আমি ৫০ হাজার টাকার বেশী মোহর দিতে পারব না ।
এ নিয়ে অনেক কথা হয় সাব্বিরকে অনেক বুঝানো হয় ,তুমি ৫০হাজার টাকাও তো এখন দিতে পারবে না ,সেটাও তো বাকি থাকবে তাহলে ৫লক্ষ দিলে সমস্যা কি সেটাও তোমাকে এখন দিতে হবে না ।
কিন্তু সাব্বির কিছুতেই রাজী হয় না ,শেষ পর্যন্ত ১লক্ষ ১ টাকা মোহর ধার্য করা হয় ।
সাব্বিরের যখন বিয়ে পড়ানো হয় তখন সাব্বিরের দুচোখ বেয়ে পানি পড়তে থাকে ,সাব্বিরের এই বোবা কান্নায় তার চেহারা এ্তটাই করুন আর অসহায় দেখাচ্ছিল ওখানকার সবার চোখেই পানি আসে ।আর পরে এ নিয়ে অনেক নিগেটিভ কথাবার্তা চলতে থাকে ।
মানহার বিয়ে পড়ানোর সময় সাব্বিরের বোনের জামাই ,অমুকের ছেলে তমুক ,তমুকের সাক্ষীতে এত টাকা মহর দিয়ে পুরাটা বাকী রেখে তোমার সাথে বিবাহ বন্দনে আবদ্ধ হতে চায় তুমি রাজী থাকলে বল আলহামদুল্লীলাহ ....
.উনার বলা শেষ না হতেই মানহা উচ্চ স্বরে বলে,
আলহামদুল্লিলাহ
এতে রুমের ভিতর হাসির রুল পরে যায় যদিও মানহা সে হাসিতে যোগ দেয় নি।
বিয়ে পড়ানোর সময় সাধারনত তিন বার কবুল বা হ বলতে হয় ।কিন্তু মানহা জোড়ে আলহামদুল্লিলাহ বলাতে মুরুবীরা ঘরের সবাই তো শুনছে তিনবার বলতে হবে ।
একবার আলহামদুল্লিলাহ বলেই মানহার বিয়ে হয়ে গেল ।
মানহার বয়স কম বলে তার পক্ষে কাবিনের কাগজে সাইন করেছে ।
দুপুরে খাওয়া দাওয়া করে বর পক্ষের লোকজনের সাথে সাব্বিরও চলে যান ।সাব্বির ও মানহার দেখাও হয় না ।
সাব্বির ইউনির্ভারসিটির হলে থাকে সেখান থেকে মানহাদের বাড়ি যেতে মাত্র দের ঘন্টা লাগে ।
সাব্বির এর পর ২ সপ্তাহ পরে মানহাদের বাড়ি আসে
চাচা -চাচী মানে এখন শশুর -শাশুরীর সাথে সালাম ও কুশুল বিনিময়ের পর মানহার ভাই মহিম এর রুমে চলে যায় ,আগে যখন আসত তখন ও মহিমের রুমেই থাকত ।
রাতের খাওয়ার পর ও সাব্বির মহিম এর রুমে যেয়ে শুয়ে পড়ে ।মানহার মা তখন মানহার নানীকে পাঠায় সাব্বিরকে ডেকে আনার জন্য ।
মানহার নানী সাব্বিরকে ,কি গো ভাই আমার নাতনী তোমাকে খুজব না কি তুমি আমার নাতনীকে খুজবা ।যাও মানহার রুমে গিয়ে ঘুমাও ।
সাব্বির লজ্জিত হয়েই নানী আমি শুইতে আসি নাই ।আপনি মানহাকে একটু পাঠিয়ে দেন আমি ওর সাথে একটু কথা বলি ।
নানী ফিরে এসে মানহাকে পাঠিয়ে দেয় ।মানহাকে দেখেই সাব্বির বস ,আমি তোমাকে কিছু কথা বলতে চাই ।
মানহা মুখে কিছু না বলে মাথা নিচু করে বসে ।
সাময়িক ভোগ বিলাসের কথা চিন্তা করলে আমাদের হবে না ।সুন্দর ভবিষ্যত তৈরী করার জন্য আমাদের সবুর আর ধৈর্য ধরতে হবে ।
মূর্খ মানুষ যমের মত ,আর যমকে আমি ভয় পাই ,তোমাকে অনেক লেখা পড়া করতে হবে ।কেবল পর ক্লাস এইটে তোমাকে মাস্টার্স পাশ করতে হবে ।
আমি যদি এখন তোমার সাথে মেলা মেশা করি তাহলে আমার লেখা পড়া চালিয়ে যেতে সমস্যা হবে না আমি পারব সে বিস্বাস আমার আছে কিন্তু সমস্যা হবে তোমার ,তোমার বয়স কম তুমি পারবে না তাই আমি এই মুহুর্তে তোমার সাথে মেলা মেশা করতে চাচ্ছি না ।
আশা করি তুমি আমাকে ভুল না বুঝে আমাকে হেল্প করবে এব্যাপারে ।
মানহা নীচু করেই ওকে আপনি যা চান তাই হবে ।
তাহলে যাও এখন ঘুমিয়ে পড়।
এভাবেই বিয়ের ছয় মাস কেটে যায় সাব্বির প্রতি মাসেই দুই বার মানে এক সপ্তাহ পর পর মানহাদের বাসায় আসে কখনো সকালে আসে বিকালে চলে যায় আবার কখনো সন্ধ্যায় এসে সকালে চলে যায় তার যা কথাবার্তা চাচা-চাচী মানে শুশুর শাশুরীর সাথে বলে বাকী সময় মানহার ভাই মহিমের সাথে কাটায়।
মানহাকে সাব্বির কখনো কাছে তো ডাকেই না মানহা নিজ থেকে গেলেও সাব্বির শুধু বলে কেমন আছ ?লেখাপড়া কেমন হচ্ছে এটুকু জিঙ্গেস করেই বলে মানহা তুমি এখন যাও ,আমার কষ্ট হয় ।মানহা তখন নিরবেই চলে আসে ।
মানহা এ নিয়ে কারো কাছে কোন অভিযোগ না করলে মনে মনে একটু আকটু রাগ হয় বা মনেও কষ্ট পায় ।
এভাবে আরো ছয় মাস মানে ১বছর হয়ে যায় মানহা ও সাব্বিরের বিয়ের ।সাব্বিরের এই আচরনে আত্বীয়-স্বজনরা নানা ধরনের কথা বলতে শুরু করে সাব্বির কি শেষ পর্যন্ত মানহার সাথে সংসার করবে নাকি সাব্বিরের কোন সমস্যা এই সব আর কি ।মানহার মা সাব্বিরকে অনেক ভালবাসালেও শেষ পর্যন্ত সেও বলতে বাধ্য হয় আগে জানলে আমি মেয়ের বিয়ে দিতাম না।
সাব্বিরের অনেক জ্বর হয়েছে সে হল থেকে মানহাদের বাসায় চলে আসে ।এবার সাব্বিরের মাথায় পানি দেয়া ,সময় মত ওষুধ খাওয়ানো ,গাঁ মুছে দেয়া সাব্বির না চাইলেও বাধ্য হয়েই এ সব কিছু মানহাকেই করতে হয় ।আর এই সুযোগে মানহা চলে আসে সাব্বিরের অনেক কাছে ।
প্রায় এক মাস পর সাব্বির সুস্থ হয়ে হলে ফিরে যায় ।এখন ও সাব্বির মাসে দুইবার আসে তবে এখন সে মানহার সাথে আগের চেয়ে একটু বেশী সময় কাটায় ,মাঝে মাঝে মানহাকে নিয়ে বাহিরে বেড়াতেও যায় ।
আর এভাবেই সাব্বিরের কাছে ধরা পরে মানহার ধৈর্য ,সবুর ,সততা আর বুদ্ধিমত্তার ।
সাব্বির অনার্স শেষ করে মাষ্টার্স শুরু করেছে আর মানহা এস এস সি পাশ করে কলেজে ভর্তি হয়েছে ।
সাব্বির আর মানহাও কাছা কাছি আসতে আসতে কখন যে তারা বিবাহীত জীবন শুরু করেছে নিজেরাও বুঝতে পারে না
সাব্বির মানহাকে এখন এত বেশী ভালবাসে এখন আবার আত্বীয় স্বজনরা বলতে থাকে ,সাব্বির বেশী বউ পাগল ,বউকে বেশী ভালবাসে ,বউ যা বলে তাই শুনে ।
সাব্বির অবশ্য মানহার ব্যাপারে কাউকেই ছেড়ে দেয় না সে ও বলে বউ তো ভালবাসার জিনিসই তাই ভালবাসি আর বউ এর কথা শুনি ,আমি প্রতিটা কাজেই তার সাথে পরামর্শ করি যখন দেখি আমার প্লানটার চেয়ে তার প্লানটা ভাল তখন তার মত করি এটা তো খারাপ কিছু না ।
সাব্বির পড়াশুনা শেষ করে ভাল একটা চাকরীতে জয়েন করে ।মানহা বি এস সি পাস করে এম এস সিতে ভর্তি হয় । এর মাঝে এক ছেলে সন্তানের মাও হয়েছে ।
সাব্বির আর মানহা এবার আলাদা বাসা নিয়ে নিজেদের মত সংসার শুরু করে ।সেখানে অর্থের প্রাচ্যুর্য না থাকলে ও ভালবাসার কোন কমতি নেই ।তাদের অনাবিল ভালবাসার মাঝে জন্ম হয় তাদের আরো এক কন্যা সন্তানের ।স্বামী,ছেলে মেয়ে নিয়ে মানহার সুখের সংসার ।
বিকাল বেলা সাব্বির অফিস থেকে ফিরে দেখে মানহা মন খারাপ করে শুয়ে আছে ।
মানহা কি হয়েছে মন খারাপ কেন ?
মানহা সাব্বিরের কথায় উঠে সাব্বিরের গলা জড়িয়ে সাব্বির আমার তো বিয়ে হয়েছে কিন্তু বাসর তো হয়নি ।
সাব্বির জোরে হেসে বিয়ে হয়েছে ১২ বছর আর এখন বাসর হয়নি বলে মন খারাপ করে আছ ?
হাসছ কেন আমি তো আমি তো হাসির কিছু বলি নি ,মানুষের জীবনে বাসর রাতের আনন্দ তো জীবনে একবার আসে তুমি আমাকে সেই আনন্দ থেকে বঞ্চিত করেছ ।
সরি মানহা ,মানুষের জীবনে বাসর রাত আসে একটা আর আমি মনে করি তোমার সাথে আমার প্রতিটা রাত বাসর রাত।
তা কি করে হয় ,বাসর রাতে দুজন নতুন মানুষ অচেনা অজানা থাকে সেই এক রাতে তারা দুজনকে চিনে জানে তারা দুজন এত কাছা কাছি আসে তারা হয়ে যায় আপনের চেয়েও আপন।
তুমি আমার আপন চাচাতো ভাই হলেও তোমার সাথে আমার তেমন দেখা হয়নি কথা তো নয়ই কাজেই তুমি আমার কাছে ছিলে অচেনা অজানা তাই বিয়ের দিনই যদি আমাদের বাসর রাত হত তাহলে আমি বাসর রাতের ভয় ,আনন্দ কেমন সেটা আমি উপলদ্ধি কেমন বুঝতে পারতাম ।কিন্তু তোমার কারনে সেটা হয় নি ।
সরি,সরি অনেক সরি মানহা আমাকে কি ক্ষমা করা যায় না ।
ক্ষমা করা যায় বেশী না দুই বছর তুমি আমাকে ছাড়া থাকবে আমার সাথে দেখা কথা বা কোন প্রকার যোগাযোগ করতে পারবা না এই শর্তে ।
এত কঠিন শর্ত তুমি পারবে তো ! আমি একদিন ও পারব না বলেই সাব্বির হেসে উঠে।
সাব্বির অফিসে চলে গেছে ছেলে মেয়ে স্কুলে কাজের ভুয়াকে কাজের কথা বলে এই সময়টা মানহা ফ্রী থাকে তাই বিভিন্ন বই পড়ে বা ফোনে কথা বলে এই সময়টা কাটায় আজকে কিছুই ভাল লাগছে না কেমন যেন অস্থির লাগছে ,এমন কেন লাগছে ভাবতে ভাবতেই ফোন বেজে উঠে মানহা ফোন উঠাতেই ওপাশ থেকে আপনার স্বামী মোটর সাইকেল এস্কিডেন্ট করেছে আপনি তাড়া তাড়ি ঢাকা মেডিকেলে চলে আসুন বলেই ফোন কেটে দেয় মানহাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ।
মানহা টেক্সি নিয়ে চলে আসে ঢাকা মেডিকেলে সেখানে প্রথমেই পেয়ে যায় সাব্বিরের ছোট ভাই শিহাবকে তার সাথে সাব্বিরের রুমে ।
সাব্বিরের সমস্ত শরীরে সাদা কাপড়ে ডাকা শুধু মুখ খোলা এখন বেঁচে আছে এটা বুঝা যায় তবে চোখ বন্ধ ,মানহার চিৎকারে সাব্বির চোখ মেলে তাকায়
কেদনা---------- মানহা-----আমি----চলে----যাচ্ছি ------তোমার--------বাসর ------সাজাতে --------তুমি-------এস--- জান্নাতে-----হবে-------আমাদের--------বাসর ।
সাব্বির চিরদিনের জন্য চোখ বন্ধ করে।
মানহা বড় বড় চোখ করে সাব্বিরের মুখের দিকে তাকিয়ে এটা হতে পারে না, আমি এটা চাইনি মানহার দুচোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়তে থাকে ........মানহা চিৎকার করে সাব্বির আমি বাসর চাই না তুমি ফিরে এস ........তুমি ফিরে এস.... এরপর মানহা স্তদ্ধ হয়ে যায় শুধু মানহার দুচোখ বেয়ে ঝরতে থাকে অশ্রু ধারা.....................।
বিষয়: বিয়ের গল্প
৫৮৭৩৮ বার পঠিত, ৪৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ , চালিয়ে যান।
যাক, আমরা নীরস হলেও কিছ কিছু মানুষের শখ দেখ ভালই লাগে
তবে আপনি ঠিক বলেছেন, শখ জান্নাতে পূরণ হওয়াই ভাল
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু ।
আর যত দ্রুত সম্ভব বিয়ে করে ফেলবে। @রাহু
আমি----চলে----যাচ্ছি ------তোমার--------বাসর ------সাজাতে
একথাটা শুনে আমার ভিতরে একটা ধারণা জমেগেলো যে -
সাব্বির কি অভিমান করে ইচ্ছেকরেই দুর্ঘটনা ঘটিয়ে এ বিপদ ডেকে আনলো?
টক-ঝাল-মিষ্টি
অসাধারণ সৃষ্টি
হল কেন শেষ
লাগছিল বেশ
আল্লাহ আমাদের সবাইকে ভাল রাখুন ।আমীন ।অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু ।
khub valo laglo golpoti. kichuta otripti thakle Jannate pawar r kichu thakbena. Tai shesher tragedy o amader life er e ongsho.
Allah apnake amon Shundor Shundor golpo upoharer beshi beshi taufik daan koruk.
Aamiin
মন্তব্য করতে লগইন করুন