রাসূলুল্লাহ (স) কে কটুক্তীকারীদের শাস্তির বিধান ।
লিখেছেন লিখেছেন লুঙ্গি পাগলা ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ১১:৪৮:২৫ রাত
বিসমিল্লাহির রাহ মানির রাহিম ।
আল্লাহ সুবহানু তায়ালা ইরশাদ করেন "নিসন্দেহে আপনি (মুহাম্মদ (স)) মহান চরিত্রের উপর অধিষ্ঠত হয়েছেন ।"(সূরা আল কালাম:৪)
আল্লাহ সুবহানু তায়ালা যেখান যে নবীর নামে সাক্ষ দিয়েছেন নিসন্দহে তিনি মহান চরিত্রের অধিকারী ।যেখান আবূ লাহাব আবূ জেহেলরা পর্যন্ত আল্লাহর নবীর চরিত্র নিয়ে কোন কথা বলার সাহষ পায় নি ।যেখানে কিছু বাঙ্গালী কুলাঙ্গার নাস্তিক মহানবী (স) কে একেকপর এক কটুক্তি করে যাচ্ছেন। অথচ আমাদের মুসলীম ভায়েরা কিছুই করতে পারছেন ।অনেকে আবার বলছেন তাদের নাকি পার্থিব কোন শাস্তির বিধান নেই ।ইংশাল্লাহ আজ আমি প্রমান করবো এসব নাস্তিক কুলাঙ্গার দের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদন্ড
আবদুল্লাস ইবনে ওমার (রা) থেকে বর্ণিত : তাবুকের যুদ্ধের সময় এক ব্যাক্তি জনসমাবেশে বসা ছিল ।সে বলেছিল : আমাদের এই কোরান পাঠকারী লোকদের দেখি যে , তারা আমাদের মধ্যে বড় পেটুক বড় মিথ্যাবাদী এবং যুদ্ধের সময় বড় কাপুরুষ " ।ওখানে থাকা এক ব্যাক্তি বললো তুমি মিথ্যা বাদী তুমি মুনাফেক ।আমি অবশ্যই এটি রাসূলুল্লাহ (স) কে বলেদিব । রাসূলুল্লা (স) কে যখন বিষয়টি জানানো হলো তখনরাসূলুল্লাহ (স) তাদের এর কারন জিজ্ঞেস করা হলে সে বললো " আমরা শুধু হাসি তামাশা করছিলাম ।" আল্লাহরনবী কিছু বলার আগেই আল্লাহর কাছ থেকে জবাব এল"তোমরা এখন কোন অজুহাত দেখিয়োনা , তোমরাতো ঈমান আনার পর কুফরী করেছো ,যদিও আমি তোমাদের মধ্যে কতক কে ক্ষমা করে দেই কতোকে শাস্তি দিবোই । কারন তোমরাঅন্যায় করেছো ।(সুরা তাওবা৬৬) [বিস্তারিত জানার জন্য তাফসির ইবনে কাসির :সুরা তাওবাহ ৬৫-৬৬]
আর ইসলামী শরীয়া অনুযায়ী যে ব্যাক্তি ঈমান আনায় পর কুফরি করে যে ব্যাক্তি ঈমান ত্যাগ করে তার পরিচয় হচ্ছে সে মুরতাদ । আর মুরতাদের শাস্তির ব্যাপারে আল্লাহর নবী ফতোয়া দিয়েছেন তাকে যেখানে পাও হত্যা করো ।(দেখুন বূখার ৩১১৭, তীরমিযী ১৪৫৮,নাসায়ী ৭০৭০)
আবদুল্লাহ ইবনে খত্তাল নামে এক লোক মদিনায় ইসলাম গ্রহন করেছিলো । পরবর্তী সে মুরতাদ হয়ে যায় ।শুধু সে মুরতাদ হয়েই খ্যান্ত যায়নি তার দুই দাসী ছিল যাদের দিয়ে যে আল্লাহ নবীরনামে অস্লিল গান গাওয়াত । পরবর্তীতে আল্লাহর নবী যখন মক্কা বিজয় করলেন তখন তিনি মদিনার সবাইকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষনা করলেও এই খত্তার কাবা শরীফের গিলাফ ধরে থেকেও ক্ষমা পায়নি তাকে সেখানে হত্যা করা হয় ।এত বড় বড় নির্যাতনকারীকেও ক্ষমা করে দিয়েছিলেন কিন্তু এই খত্তালকে আল্লাহর নবী ক্ষমা করেন নি । কিন্তু আজ আমাদের কিছু মুসলীম ভাই বলছেন তাদের নাকি শাস্তি নেই ।
আবূ লাফ নামে মক্কায় এক ধণাট্য ব্যাক্তি ছিলেন ।যিনি আল্লাহর রাসূলের নামে অস্লিল কটুক্তি করার জন্য জলসা বসাতেন । নবীজী (স) একদিন সাহাবিদের বললেন তোমাদের মধ্যে এমন কেও কি আছ যে এই আবূ রাফকে শায়েস্তা করতে পারবে?আবদূল্লাহ ইবনে আতিক (রা) দাড়িয়ে গেলেন এবং বললেন হেরাসূল (স) আমাকে অনুমতি দিনআমি একে শায়েস্তা করবো । আবদুল্লাহ ইবনে আতিক (রা) তার সঙ্গিদের নিয়ে দূর্গের কাছে গেলেন তার সঙ্গিদের দুরে দাড়িয়ে থাকতে বলে তিনি মানুষের মাঝে মিশে গেলেন এবং পেশাবকরার ভান করে দূর্গের দরজার পাশে বসে পরলেন । দূর্গের প্রহরি তাকে বললেন ভেতরে প্রবেশ করলে কর তাহলে দরজা বন্ধ করে দেব । তিনি ভেতরে প্রবেশ করলেন এবং লক্ষ করলেন প্রহরী কোথায় চাবি রাখেন ।প্রহরি যখন দূর্গে তালা দিয়ে ঘুমাতে গেলেন তখন তিনি একে একে সব গুলো দরজা বাইরে বন্ধ করে দিলেন এবং আবূ রাফের ঘরের পাশে গিয়ে তাকে ডাক দিলেন আবূ রাফ উত্তর নেবার সঙ্গে সঙ্গে আতিক (রা) তার উপর আক্রমন করলেন কিন্তু লক্ষ ভ্রস্ট হল । আতিক (রা) একটু দুরে গিয়ে কন্ঠ পরিবর্তন করে আবার ডাক দিলেন আবূ রাফ বললো তুমি কে একটু আগে কে যেন আমার উপর আক্রমন করেছিলো ।একথা বলার সাথে সাথে আতিক (রা) তার উপর আক্রমন করলেন তরবারী আবূ রাফের বুক দিয়ে বিদ্ধ হয়ে উপাশ দিয়ে বের হয়ে গেল ।আতিক (রা) তার সঙ্গিদের কাছে এসে তাদের চলে যেতে বললেন এবং তিনি বললেন তিনিমৃত্যুর সংবাদ না শোনা পর্যন্ত এখান থেকে যাবেন না । ভোর বেলায় যখন তিনি মৃত্যু সংবাদ শুনলেন তখন তিনি নবীজী (স) কে সংবাদটি দিতে গেলেন উত্তেজনায় সিড়ি শেষ হয়েছে ভেবে সে পা দিলেন কিন্তু তখন ও একটি সিড়ি ছিল আতিক (রা) এর পা মচকে গেলো ।নবীজী (স) তার পায়ে হাত বুলালেন তিনি সুস্থ হয়ে গেলেন এবং এমন ভাবে সুস্থ হলেন যেনো তার পায়ে ব্যাথাই ছিলো না ।(পড়ুন বূখারি ৪০৩৯ )
ঠিক একই রকম আরেক জন ছিলেন কাব অবনে গাছরাফ ।তিনিও আল্লাহর নবীর নামে অস্লিল ছড়া করতেন । তাকেও হত্যা করা হয়েছিল । একই ভাবে তত্কালীন কিছু কবিকে আল্লাহর নবী হত্যার আদেশ দিয়েছিলেন ।তাদের মধ্যে আবূ আফাক ছিলেন অন্যতম ।
একবার কবিকে যিনি আল্লাহর নবীকে নিয়ে অস্লিল কাব্য রচনা করেছিলেন তাকে ওসমান (রা) নিয়ে এলেন নবীজী (স) এরকাছে ব্যাইয়্যাই নিতে ।আল্লাহর নবী বারবার হাত শরিয়ে নিচ্ছিলেন ব্যাইয়্যাত নিচ্ছিলেন না । শেষে ওসমান (রা) এর অনুরোধে ব্যাইয়্যাত নিলেন। লোকটা চলে যাবার পর নবী করীম (স) বললেন তোমাদের মাঝে কি এমন বোঝধার লোক ছিলনা যে যখন দেখলো আমি ব্যাইয়্যাত নিচ্ছিনা তখন তাকে হত্যা করে ।এক সাহবী বললেন হে আল্লাহর নবী (স) আমরা তো আপনার মনের খবর জানি না আপনি একটু চোখ দিয়ে ইশার দিলেন না কেন ? নবীজী (স) তখন বললেন কোন নবীর জন্য চোখের খেয়ানত করা জায়েজ নয় ।
আসুন এবার দেখি বিভিন্ন মাযহাবের ঈমানগন এব্যাপারে কি বলেন :
হানাফি =>
হানাফি মাযহাবের প্রসৃদ্ধবই কান যুদ্ধা কায়েকের আলবাহারুর রায়েক সরহানু যুদ্ধা কায়েক নামক কবিতায় বলা হয়েছে "যে ব্যাক্তি আল্লাহর রাসূলের নামে কটুক্তি করবে সে মুরতাদ হয়ে গেছে তার উপর মুরতাদেরশাস্তি বর্তাবে আর মুরতাদের শাস্তি মৃত্যুদন্ড ।
সাফি=>
সাফি মায়হাবে বিখ্যাত ইমাম ইমান ইবনুল মন্জুর (র)বলেন "যে ব্যাক্তি আল্লাহয়নবীকে গালি গালাজ করবে স্ সে হোক নামধারী মুসলীম কিংবা কাফির তাকে হত্যা করা ওয়াজিব হয়ে যাবে ।"
সাফি মাযহাবের আরেক ইমাম,ইমান আল ফারসি (র) বলেন "যেব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ (স) কে গালি দিবে তাকে হত্যা করতে হবে এবং কি তার তাওবাও গ্রহন করা হবে না ।"
বাকি মাযহাবের ইমানগন ও একই মত পোষন করেছেন ।
বিষয়: বিবিধ
১৪১১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য






































পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন