নারী হিসেবে ভাবনা ?

লিখেছেন লিখেছেন আইল্যান্ড স্কাই ০১ জুন, ২০১৩, ০৫:৩১:৩৬ বিকাল



আজীবন আপামর বাঙালি নারি হিসেবে রক্ষা করে এসেছেন নিজের সতিত্ত্ব। কখনো কোন পুরুষকে নিজের দিকে কুদৃস্টিতেও তাকাতে দেননি, আন মেরাইটাল সেক্সকে সারাজীবন ভয়ঙ্কর হিসেবে জেনে এসেছেন, বিয়ের পর নিজের প্রান প্রিয় স্বামিকে নিজের সেই সৌন্দর্য যখন উদারহাতে দিয়েছেন তখন হয়তো প্রতিজ্ঞা করেছেন এই সোন্দর্য শুধু এই মানুষটার জন্যই।

সেই আপনাকেই আজকে টেনে হিচড়ে নিয়ে যাচ্চে কতিপয় হিংস্র, মদ্যপ লোলুপ বদমাস। আপনার স্বামীকে তারা তাড়িয়ে দিল। অসহায় আপনাকে নিয়ে বাড়ির দরজা বন্ধ করে বুঝিয়ে দিল আপনি কতটা অসহায়। এরপর শুরু হল আপনাকে নিয়ে ইদুর বিড়াল খেলা, তাড়িয়ে উপভোগ করা আপনার অসহায়ত্ব। এরই মধ্যে ডেকে আনা হল আরো কিছু হায়েনাকে। তারা ঝাপিয়ে পরল একসাথে। চারিদিক থেকে শুরু হল তাদের নোংরা আক্রমন। আপনার এমন যায়গায় তারা চলে গেল, এমন অবস্থায় আপনাকে তারা নিয়ে গেল যা কখনো হয়তো আপনার স্বামিকে দিতেও লজ্জিত হতেন।এমন রসালো মজা তারা আপনাকে নিয়ে করতে লাগল পারলে হয়তো আপনি মাটির নিচে চলে যেতেন। কিন্তু এতেই শেষ নয়। একসময় বুঝতে পারলেন লজ্জা শরম সতিত্ত্ব সব কিছুর চাইতেও এখন মুল হয়ে দাড়িয়েছে ভয়ানক পৈশাচিক শারিরিক নির্যাতন। কি করে সইবে আপনার শরির এতগুলো পশুর আক্রমন।

এরই মধ্যে পার হয়ে গেল দেড়টি ঘন্টা। আপনার কাছে সহস্র বছর। বিধ্বস্ত অবস্থায় পুলিশ আপনাকে উদ্ধের করলো। কিন্তু তাতে কি ? আপনার সব কিছুকি স্বাভাবিক হয়ে গেল ?

প্রথম আলো ও অন্যান্য মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারলাম কলেজছাত্রী এক নৃত্যশিল্পীকে শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণ চেষ্টা মামলায় সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হুদা ওরফে পলাশকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।(প্রথম আলো ) অর্থাৎ একদিনের মধ্যেই ধর্ষন হয়ে গেল ধর্ষন চেস্টা। একথা কিভাবে বিশ্বাস করি কিছু মদ্যপ লোলুপ বদমাশ হায়েনা দেড় ঘন্টা একটি মেয়েকে আটকে রেখে শুধু চেস্টা করেই ক্ষান্ত ছিল ? নিশ্চই না। পুলিশ স্বীকার করেছে তারা ধর্ষিতাকে বিবস্ত্র ও বিদ্ধস্ত অবস্থায় উদ্ধার করেছে।এদিকে আসামিদের প্রথম দিন গ্রেপ্তারের পরেই ছেরে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল।কারণ তারা মুজিবের আদর্শ ধারন কারী ছাত্রলীগের সোনার ছেলে। এতেই বোঝা যাচ্ছে ডাল মে কুচ কালা হ্যায়।দৈনিক যুগান্তরের অনুযায়ী কিছুটা আচ করা যায়। তারা বলছে লোকলজ্জা ও মানহানির ভয়ে (যদিও বিশ্বাস করি প্রভাবশালিদের হুমকিতে) ধর্ষন চেস্টার মামলা করা হয়েছে। একই সাথে মামলাটিও নানা টালবাহানার পরে ধর্ষনচেস্টা হিসেবে রেকর্ড করা হয়। ওই রিপোর্ট লেখার সময় অপরাধিরা থানার কাছেই এক প্রভাবশালির আশ্রয়ে ছিল।(যুগান্তর ) আমি মনে করি বাকি টুকু আমাদের নিজস্ব অভিজ্ঞতা দিয়ে সহজেই আচ করা যায়।

কিন্তু এ ঘটনার পর অনেকেই ছাত্রলীগকে দুষছে। কিন্তু আসলেই কি তাই ? এর পেছনে কি ছাত্রলীগের কোন এজেন্ডা বা আদর্শ কাজ করেছিল ? অবশ্যই না। তাহলে তা কি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ? এবারো উত্তর না।এটি আসলে আমাদের সমাজের টোটাল অবক্ষয়ের বাস্তব রুপ। এখানে কাজ করছে সবার অবৈধ অন্যায় কাজের প্রতি নিশ্চুপ সমর্থনের প্রভাব। এমন একটি ঘটনাতো আপনার আমার জীবনেও ঘটতে পারতো ? কিন্তু আমরা কি করছি ? যে পুলিশ এই ঘটনা ভিন্ন ভাবে প্রবাহিত করার চেস্টা করছে, যে প্রভাবশালি সারাদিন ধর্ষকদের আশ্রয় দিয়েছে, যে মানুষটি ঘটনাটি ধর্ষন জেনেও চুপ থাকছে তারা সবাই কি ধর্ষক না ? তার পরিবার আত্নিয়স্বজন যারা এই ঘটনাকে পুর্ব পরিকল্পিত শত্রুতা বলছে তারা আসলে কি ? এই আমরাই যারা এই নিয়ে একদমই কথা বলব না ( নিজ দলের কারো অপকর্ম বলে) , অথবা কয়েকদিন আফসোস করে আবার ভুলে যাবো আমরাও কি ধর্ষক নই ? এই আমাদের কারনেই একদিনের ব্যাবধানে ধর্ষন মামলা হয়ে যায় ধর্ষন চেস্টার মামলা। ধর্ষনের মামলা না করে ধর্ষন চেস্টার মামলা কিভাবে একজন ধর্ষিতার মান বাঁচায় তা আমি জানি না তবে এটুকু বুঝি আর কিছুদিন পর জানতে পারবো এই ঘটনা নিছক ভুল বোঝাবুঝি ছিল। তখন আমাদের ধর্ষনের ষোল কলা পুর্ন হবে।

এখন মেয়েটির কি হবে ? বাকি জীবনটি তারর কেমন কাটবে?তার জীবনের সমস্ত হাসি আনন্দ আলো এক নিমিষে নিভে গেল, এই যন্ত্রনা তাকে সারাজীবন বহন করতে হবে।হয়তো সে সাহসী হয়ে সব ভুলে যাবে, আবার শুরু করবে নতুন জীবন। বাস্তবে তা কতটুকু সম্ভব। আমরা যারা এই পোস্ট পড়ছি তারা কি বুঝতে পারছি আজ এই সময়ে মেয়েটির সত্যিকারের মানষিক অবস্থা কেমন? না বুঝতে পারছি না, আর বুঝতে পারছিনা, পারিনা বলে আমরাই আসল ধর্ষক।

বিষয়: বিবিধ

১৪০৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File