লাইফ লোকেটর থাকলেই বাঁচানো যেত বহু প্রাণ সরকার এখনো যন্ত্রটি ক্রয় করেনি!!!
লিখেছেন লিখেছেন মুক্তি পেতে চাই এই অসহায়ত্ব থেকে ২৮ এপ্রিল, ২০১৩, ০১:৪৬:৫২ রাত
29 Apr, 2013
সাভারের রানা প্লাজা দুর্ঘটনার আজ ৬ষ্ঠ দিন। আলো, অক্সিজেন, খাবার ও পানি ছাড়া ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়া মানুষগুলোর জীবনপ্রদীপ একের পর এক নিভে যাচ্ছে। দেয়ালে চাপা পড়ে কতক্ষণই বা আর ক্ষত-বিক্ষত দেহ নিয়ে বেঁচে থাকবেন দুর্ভাগা মানুষগুলো। ফলে একে একে বাড়ছে সাভার ট্র্যাজেডিতে মানুষের মৃত্যু সংখ্যা। অথচ শুরু থেকেই সেনাবাহিনী ছাড়াও উদ্ধারকাজে ফায়ার সার্ভিস, রেড ক্রিসেন্ট ও প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করছেন। বাদ যাননি সাধারণ মানুষ। অপ্রশিক্ষিত মানুষরা মানবতার টানে জীবনবাজি রেখে ধ্বংসস্তূপের ভেতরে গিয়ে বাঁচিয়ে আনছেন এক একটি প্রাণ। এ অবস্থায় সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা দেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। তাদের মতে উদ্ধারকাজে যন্ত্রপাতির অপর্যাপ্ততা উদ্ধারকাজ ধীর করেছে। সেই সঙ্গে উদ্ধার বাহিনী ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের কাছে 'লাইফ লোকেটর'-এর মতো আধুনিক যন্ত্রপাতি না থাকায় বাঁচানো যায়নি শত শত প্রাণ। তারা আশঙ্কা করছেন এ মুহূর্তেই ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে বড় কোনো দুর্যোগে যন্ত্রপাতির অভাবে রানা প্লাজার দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে।
বড় ধরনের বিপর্যয়ে আশঙ্কায় আট বছর আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে প্রয়োজনীয় আধুনিক যন্ত্রপাতি ক্রয়ে সে সময় সংশ্লিষ্ট একটি কমিটি সুপারিশ করে। এতে বেশ কিছু আধুনিক যন্ত্রপাতি ক্রয়ের বিষয় ওঠে আসে। সেই কমিটির একজন সদস্য সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা প্রকৌশলী জামিলুর রেজা চৌধুরী এ ব্যাপারে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সে সময় কমিটি দুর্যোগ কাজে উদ্ধারে বেশ কিছু আধুনিক যন্ত্রপাতি ক্রয়ের জন্য সুপারিশ করে। এর মধ্যে অন্যতম 'লাইফ লোকেটর।' এর সাহায্যে ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়া বহু মিটার দূরের জীবিত প্রাণীর অবস্থান সহজেই শনাক্ত করা সম্ভব। লাইফ লোকেটরের স্ক্রিনে জীবিত মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাস, নড়াচড়া ইত্যাদি রশ্মির মাধ্যমে ধরা পড়ে। এর সাহায্যে উদ্ধারকারীরা সহজেই দেওয়াল বা ধসের নিচে থাকা ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে পারবেন।' জামিলুর রেজা জানান, সাভারে উদ্ধারকারীদের এ যন্ত্রটি ব্যবহার করলে হয়তো আরও বহু প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হতো। কিন্তু উদ্ধারকারীদের যন্ত্রটি ব্যবহার করতে দেখা যায়নি। অর্থাৎ সরকার এখনো যন্ত্রটি ক্রয় করেনি।' উল্লেখ্য, বিভিন্ন দেশে উদ্ধারকাজে লাইফ লোকেটরের বিপুল ব্যবহার হলেও বাংলাদেশে স্পেকট্রামের মতো ধসের ঘটনাসহ আরও বহু ধসের ঘটনার পরও কোনো মহলেই লাইফ লোকেটর বা আধুনিক অন্য যন্ত্রের ব্যবহার সীমিত। অন্যদিকে রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় উদ্ধার বাহিনীর যন্ত্রপাতির অপর্যাপ্ততার কারণে ইতোমধ্যেই দেশের বিভিন্ন সংগঠন নিজ উদ্যোগে ফেসবুকসহ অন্য সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে অর্থসাহায্য চেয়ে কনক্রিট কাটিং মেশিন, ড্রিলিং মেশিন ইত্যাদি সংগ্রহ করে আটকে পড়া জীবিতদের উদ্ধারে নেমে পড়েছেন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা যায়, বর্তমান সরকারকে জরুরি উদ্ধারকাজের জন্য মন্ত্রণালয় থেকে ১৬২ কোটি টাকার একটি প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু এর মধ্যে এখন পর্যন্ত মাত্র ৬৯ কোটি টাকার যন্ত্র কেনা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ভারনারলেবল স্টাডিজের অধ্যাপক মাহবুবা নাসরিন বলেন, সেনাবাহিনীর পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি থাকলেও দ্রুত সময়ের মধ্যে উদ্ধার কাজ চালাতে সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট মহলগুলোরও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি থাকা প্রয়োজন। এদিকে উদ্ধারের ৪র্থ দিনেও সাভারের ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৯ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। গতকাল আইএসপিআর জানায়, এখনো উদ্ধারে ভারী যন্ত্রের ব্যবহার এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
উৎসঃ মানবজমিন
বিষয়: বিবিধ
৯৫৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য






































পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন