কাব্যঃ ভালবাসার স্মারক এবং( শহীদ ডা. ফয়েজ এর বর্ণাঢ্য জীবনের কিছু দুর্লভ স্মৃতিঃ ছবি ব্লগ )
লিখেছেন লিখেছেন অজানা পথিক ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৩, ১২:৫৮:৩৭ দুপুর
[শহীদ ডাক্তার ফয়েজ আহমাদ এবং কাউসার মঞ্জীলের সকল সদস্যকে উৎস্বর্গ করে। ]
মাটির পালঙ্কে শুয়ে আপনি কেন এত
প্রশান্তির ঘুমে আচ্ছন্ন হয়েছেন? স্বার্থপরের মত এভাবে
আমাদের রেখে চলে গেলেন? কিভাবে যেতে পারলেন?
একবার কথা বলুন! বলুন না, প্লীজ।
আমাদের লক্ষীগাঁয়ে এখন আর আপনি নেই একথা
নিজেকে আমি কিছুতেই বিশ্বাস করাতে পারিনা। মনে হয়
এইতো আপনি আছেন- পরনে আকাশী কাবলীস্যুট,
রাজহংসী লুঙ্গী আর আপদমস্তক সফেদ শুভ্রতা নিয়ে
চঞ্চল আলাপে ব্যাস্ত সবার সাথে।
ঈদে বাড়ী গেলে আপনি প্রায়ই বাবাকে ফোন করে
বলতেন বেয়াই সা’দ কি ঢাকা যাবে?
ওকে লক্ষীপুর পাঠিয়ে দিন আমাদের এরা সহ
একসাথেই যাক। আমি সংকোচ করতাম ।
আসতে চেতাম না। কেন যান আমার একাকীত্বই বেশী ভাল লাগতো। কিন্তু আপনার ভালবাসার কাছে পরাজিত হয়ে আমাকে আসতেই হতো।
ওদের বিয়ের দু,দিন পর আমাকে বলেছিলেন
শিফার বিয়েতে তুমি যেমন কনেপক্ষী ছিলে
এখন তোমার উজমা আপুর বিয়েতেও তুমি কনেযাত্রী। তোমার পক্ষ পরিবর্তন হয়নি। দুদিন পরেই
অনুষ্ঠান। খবরদার চলে যেতে পারবেনা কিন্তু।
আমি একটু হেঁসে বোঝাতে চেয়েছিলাম- দেশের
পরিস্হিতি তো বেশী ভালনা তাই ছুটি নেই।
আপনি রসিকতা করে বলেছিলেন- “তোমার
বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতিকে বলো- লক্ষীপুরের নায়েবে আমীর ও্র আমাকে এখান থেকে ছুটি দিচ্ছে না ’’
আমার মত ক্ষুদ্র মানুষকে আপনি কিভাবে
এত ভালবাসতে পারলেন? কি কর এত রসিক হলেন?
আপনি আমাদের সাথে কি আর কখনো এভাবে
রসিকতা করবেন না ?
আপনি যাওয়ার পর থেকে আমি একটি মুহুর্তের জন্যেও
ভালো থাকতে পারিনি। প্রতিরাত ফজর অব্দি
বিছানায় না গিয়ে বিচরন করি এক নিস্তব্দ খোলা মাঠে।
আর দূর থেকে শুনতে পাই উত্তর ষ্টেশনের পাশে
বুলেটের আওয়াজ!
বদর-ওহুদ-খন্দক নয়।
বালাকোট নয়, মতিহার নয়, শাপলাও নয়!
তিনতলা একটি বাড়ী। যার নাম কাউছার মঞ্জীল হল কেন?
এসব ভাবতে ভাবতে মুয়াজ্জিনের কন্ঠে
ধ্বনিত হয়- আসসালাতু খাইরুম ..................।
সেদিন করুনাময়ের দরবারে আপনি কি আমার নাম
সুপারিশ করবেন? সত্তর জনের তালিকায় সত্তর নাম্বারে
হলেও আমার নামটি বলতে ভুলে যাবেন না তো?
আর
ভাইয়া ( হাসান আল বান্না+ বেলাল আহমেদ)
তোমরা কাঁদছো?
চোখের পানি মুছে ফেল।
বাবার কবরের সামনে গিয়ে দাড়াও।
সেখানে গেলেই অজস্র মধুমক্ষীকার গুঞ্জন শুনতে পাবে।
যারা প্রভুর অনন্ত রহমতের অফুরন্ত
প্রশংসার গান গাচ্ছে প্রতিনিয়ত।
তোমরা বঞ্চিত হওনি! শীঘ্রই তোমাদের যাবতীয় আধিকার
ও পাওনা আদায় করতে বিধাতার সাথে সংলাপ হবে।
রুদ্ধদ্বার সংলাপ। রজনী গভীর হলেই।
আপু.......... (ছালেহা কাউসার + উজমা কাউসার)
আর কেঁদোনা। তোমাদের প্রতিফোটা অশ্রু
অভিশাপের বহ্নিশীখা হয়ে ভেঙ্গে তছনছ করে দেবে
জালিমের মসনদ। বাবার দেখিয়ে যাওয়া স্বপ্ন তোমরা
পরিপূর্ণই দেখতে পাবে সবুজ এ ঘাসের দেশে।
এবং ইতোমধ্যেই তোমরা শহীদের
উত্তরসূরী হওয়ার গৌরব অর্জন করেছ।

মা.......
আর দুশ্চিন্তা করোনা।
তোমার চোখ থেকে যে অশ্রু ঝরছে তা যদি
হ্রদয়ের রক্ত হয় এবং ইতোমধ্যেই তুমি যদি শোক কে
শক্তি তে পরিনত করতে পারো
তাহলে তোমাকে একটি সুসংবাদ দিতে পারি।
তোমার অভিমানি স্বামী আবার ফিরে আসবে
যার হতে থাকবে জান্নাতী ঘ্রানে সুবাশিত একটি রক্ত গোলাপ
আর রজনী গন্ধা। তোমাদের আভিনন্দন জানাতে
যেন অপেক্ষা করছে। অচিরেই তোমরা
প্রবেশ করতে যাচ্ছ এক ধবল জ্যোৎনার রাজ্যে।



=============================
আরও কিছু ছবি
ছেট ছেলের বউ ভাত অনুষ্ঠানে বি এন পি নেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যনী এম. পির খোঁজ খবর নিচ্ছেন ডা. ফয়েজ আহমেদ।
শহীদ পরিবারের দুই গর্বিত সন্তান
ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ডিরেক্টর ও ইসলামী ব্যাংক ফাউন্ডেশনের বর্তমান চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম ডা. ফয়েজ আহমেদের বেয়াই হন।
শহীদের আত্মীয় স্বজনদের একটি বিশেষ মুহুর্ত।










সদা হাস্যেজ্জল ডা. ফয়েজ আহমেদ।
লেখা এবং ছবির জন্যে যাদের কাছে কৃতজ্ঞ
১. বেলাল আহমেদ( শহীদের ছোট ছেলে)
২.ফয়েজ আহমেদ (লক্ষীপুরের ছাত্র নেতা)
৩. তাকিব হোসেন( বিশিষ্ট অনলাইন সংগঠক)
৪. হাবীবুর রহমান সহ আরও অনেকে
বিষয়: বিবিধ
৫৭২৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য






































পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন