কিছু অপ্রিয় সত্য সবার জানা ও আমার ভাবনাঃ-.
লিখেছেন লিখেছেন সত্য নির্বাক কেন ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৪, ১১:৪৯:১১ সকাল
১.সমাজের ভাল মানুষ বলে দাবী করা(যদি ও এটি দাবী করার বিষয় না) ভদ্র লোক সুশীল রা রাজনীতির সমালোচনা করেন ।
যথেষ্ট প্রমান ও আছে সামালোচনার বিষয়ের। সমালোচনা খারাপ ও না।
কিন্তু তারা রাজনীতিতে আসবেন না এটি অসভ্য মানুষের জায়গা বলে!!
২. এত খারাপ রাজনীতি এর সাথে কি করে ধর্মের সম্পর্ক থাকতে পারে এই চিন্তায় অনেক ধার্মিক নামের বিশেষত বেশ ভুষার অধিকারীরা রাজনীতিকে অধার্মিক কাজ মনে করেন । এবং দূরে থাকেন রাজনীতি থেকে।
৩.অন্য দিকে খারাপ মাস্তান টাউট দুর্নীতি পরায়ণ লোক গুলো ও ধর্মকে আর ভালো লোক গুলোকে রাজনীতি ধার্মিক আর ভাল মানুষের জায়গা না বলে রাজনীতি থেকে তাদের দূরে থাকার পরামর্শ দেন।
উপলব্ধিঃ- একটি গ্লাস পানি না থাকলে কি খালি থাকে?? হ্যা আপাত দৃষ্টিতে সবাই বলবে খালী গ্লাস । কিন্তু সেখানে ও কিছু পদার্থ থাকে যার নাম বাতাস। কিন্তু রাজনৈতিক নেতৃত্বে ভাল মানুষ না আসলে সেইখানে নিষ্ক্রিয় বাতাস থাকে না , থাকে হারামজাদারা। এবং তাদের মন মতলবি করেই দেশ চালান।
আর ভাল মানুষ গুলো শুধু তওবা তওবা এরা এত খারাপ বলে বলে দিন কাঁটাই মূলত এরা ভাল মানুষ ও নয় ধার্মিক ও নয় বরং এরা কাপুরুষ।
আল্লাহ বলেনঃ- ﴿هُوَ الَّذِي أَرْسَلَ رَسُولَهُ بِالْهُدَىٰ وَدِينِ الْحَقِّ لِيُظْهِرَهُ عَلَى الدِّينِ كُلِّهِ وَلَوْ كَرِهَ الْمُشْرِكُونَ﴾
৯) তিনিই সেই মহান সত্তা যিনি তাঁর রসূলকে হিদায়াত এবং ‘দীনে হক’ দিয়ে পাঠিয়েছেন যাতে তিনি এ দীনকে অন্য সকল দীনের ওপর বিজয়ী করেন, চাই তা মুশরিকদের কাছে যতই অসহনীয় হোক না কেন৷১৩
১৩. মুশরিকদের জন্য অসহনীয় হলেও । অর্থাৎ যারা আল্লাহর দাসত্বের সাথে অন্যদের দাসত্বও করে থাকে এবং আল্লাহর দীনের সাথে অন্য সব দীন ও বিধানকে সংমিশ্রিত করে, শুধু এক আল্লাহর আনুগত্য ও হিদায়াতের ওপর গোটা জীবনব্যবস্থা কায়েম হোক তারা তা চায় না । যারা ইচ্ছামত যে কোন প্রভু ও উপাস্যের দাসত্ব করতে সংকল্পাবদ্ধ এবং যে কোন দর্শন ও মতবাদের ওপর নিজেদের আকীদা-বিশ্বাস, নৈতিকতা এবং তাহযীব তামুদ্দুনের ভিত্তিস্থাপন করতে প্রস্তুত এমনসব লোকের বিরোধিতার মুখেও বলা হচ্ছে যে, তাদের সাথে আপোষ করার জন্য আল্লাহর রসূলকে পাঠানো হয়নি । বরং তাকে পাঠানো হয়েছে এ জন্য যে, তিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে যে হিদায়াত ও জীবনব্যবস্থা এনেছেন তাকে গোটা জীবনের সব দিক ও বিভাগের ওপর বিজয়ী করে দেবেন । অবস্থা যাই হোক না কেন, তাঁকে এ কাজ করতেই হবে । কাফের ও মুশরিকরা তা মেনে নিক আর না নিক এবং এ বিরোধিতায় সর্বশক্তি নিয়োগ করলেও সর্বাবস্থায় রসূলের এ মিশন সফলকাম হবে এবং পূর্ণতা লাভ করবে । ইতিপূর্বে কুরআন মজীদের আরো দুটি স্থানে এ ঘোষণা এসেছে এক, সূরা তাওবার ৩৩ আয়াতে । দুই, সূরা ফাতহের ২৮ আয়াতে । এ স্থানে তৃতীয়বারের মত এ ঘোষণার পুনরুক্তি করা হচ্ছে । (আরো ব্যাখার জন্য দেখুন, তাফহীমুল কুরআন আত তাওবা টীকা, ৩২; সূরা আল ফাতহ টীকা ৫১ । )
নেতৃত্বের আসনে ভাল মানুষ না থাকলে , দ্বীনে হক অন্য দ্বীনের উপর বিজয়ী হয় কেমনে ? তবে ঐসব মৌ লোভীরা কি জ্ঞান পাপী নাকি কোরআনের কিছু আয়াত মানে আর কিছু আয়াত অস্বীকার করে??
সুরা আত তওবা ৩৩ ন ং আয়াত
﴿هُوَ الَّذِي أَرْسَلَ رَسُولَهُ بِالْهُدَىٰ وَدِينِ الْحَقِّ لِيُظْهِرَهُ عَلَى الدِّينِ كُلِّهِ وَلَوْ كَرِهَ الْمُشْرِكُونَ﴾
৩৩) আল্লাহই তার রসূলকে পথনির্দেশ ও সত্য দীন সহকারে পাঠিয়েছেন যাতে তিনি একে সকল প্রকার দীনের ওপর বিজয়ী করেন, ৩২ মুশরিকরা একে যতই অপছন্দ করুক না কেন৷
৩২ . কুরআনের মূল আয়াতে "আদদীন" শব্দ ব্যববহার করা হয়েছে । আমি এর অনুবাদে বলেছি, সকল প্রকার দীন ইতিপূর্বে যেমন বলে এসেছি, এ দীন শব্দটি আরবী ভাষায় এমন একটি জীবন ব্যবস্থা বা জীবন পদ্ধতি অর্থে ব্যবহৃত হয় যার প্রতিষ্ঠাতাকে সনদ ও অনুসরণযোগ্য বলে মেনে নিয়ে তার আনুগত্য করতে হয়। কাজেই এ আয়াতে রসূল পাঠাবার উদ্দেশ্য বর্ণনা করে বলা হয়েছে দীন জাতীয় বা দীনের শ্রেনীভুক্ত অন্য কথায় জীবন বিধান পদবাচ্য সমস্ত পদ্ধতি ও ব্যবস্থার ওপর জয়ী করবেন। অন্য কথায় রসূলের কখনো এ উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়নি যে, তিনি যে জীবন ব্যব্স্থা নিয়ে এসেছেন তা অন্যান্য জীবন ব্যবস্থার কাছে পরাজিত হয়ে ও সেগুলোর পদানত থেকে তাদের দেয়া সুযোগ সুবিধা ভোগ করার মধ্যে নিজেকে সীমাবদ্ধ ও সংকোচিত করে রাখবে । রবং তিনি আকাশ ও পৃথিবীর একচ্ছত্র অধিপতির প্রতিনিধি হয়ে আসেন এবং নিজের মনিবের সত্য ও ন্যায়ের ব্যবস্থাকে বিজয়ী দেখতে চান। দুনিয়ায় যদি অন্য কোন জীবন ব্যবস্থার অস্তিত্ব থাকে তাহলে তাকে আল্লাহর ব্যবস্থার আওতাধিনেই তার দেয়া সুযোগ -সুবিধা হাত পেতে নিয়ে বেঁচে থাকতে হবে। যেমন জিযিয়া আদায় করার মাধ্যমে যিম্মিরা নিজেদের অধীনতার জীবন মেনে নেয়।
﴿هُوَ الَّذِي أَرْسَلَ رَسُولَهُ بِالْهُدَىٰ وَدِينِ الْحَقِّ لِيُظْهِرَهُ عَلَى الدِّينِ كُلِّهِ ۚ وَكَفَىٰ بِاللَّهِ شَهِيدًا﴾
২৮) আল্লাহই তো সে মহান সত্তা যিনি তাঁর রসূলকে হিদায়াত ও সত্য দীন দিয়ে পাঠিয়েছেন যেন তাকে সমস্ত দীনের ওপর বিজয়ী করে দেন৷ আর এ বাস্তবতা সম্পর্কে আল্লাহর সাক্ষই যথেষ্ট৷৫১
৫১. এখানে একথা বলার কারণ হলো যখন হুদাইবিয়াতে সন্ধিচুক্তি লিপিবদ্ধ করা হচ্ছিলো সে সময় মক্কার কাফেররা নবীর ( সা) সম্মানিত নামের সাথে রসূলুল্লাহ কথাটি লিখতে আপত্তি জানিয়েছিলো, তাদের একগুঁয়েমির কারণে নবী ( সা) নিজে চুক্তিপত্র থেকে একথাটি মুছে ফেলেছিলেন । তাই আল্লাহ তা'আলা বলেছেন, আমার রসূলের রসূল হওয়া একটি অনিবার্য সত্য, কারোর মানা বা না মানাতে তাতে কোন পার্থক্য সূচিত হয় না । কিছু লোক যদি তা না মানে না মানুক । তা সত্য হওয়ার জন্য আমার সাক্ষই যথেষ্ট । তাদের অস্বীকৃতির কারণে এ সত্য পরিবর্তিত হয়ে যাবে না । তাদের অস্বীকৃতি সত্ত্বেও এ রসূল আমার পক্ষ থেকে যে হিদায়াত ও দীন নিয়ে এসেছেন তা অন্য সব দীনের ওপর বিজয় লাভ করবে । তা ঠেকিয়ে রাখার জন্য এসব অস্বীকারকারীরা যত চেষ্টাই করুক না কেন ।
'সব দীন' বলতে বুঝানো হয়েছে সেসব ব্যবস্থাকে যা দীন হিসেবে গণ্য । আমরা পূর্বেই তাফহীমুল কুরআন সূরা যুমারের ব্যাখ্যায় ৩ টীকায় এবং সূরা শূরার ২০ টীকায় এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি । এখানে আল্লাহ তা'আলা যে কথাটি পরিস্কার ভাষায় বলেছেন তা হচ্ছে শুধু এ দীনের প্রচার করাই মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পাঠানোর উদ্দেশ্য ছিল না, বরং উদ্দেশ্য ছিল একে দীন হিসেবে গণ্য সমস্ত জীবনাদর্শের ওপর বিজয়ী করে দেয়া । অন্য কথায় জীনের সমস্ত দিক ও বিভাগের ওপর কোন বাতিল জীবনাদর্শ বিজয়ী হয়ে থাকবে আর বিজয়ী সে জীবনাদর্শ তার আধিপত্যাধীনে এ দীনকে বেঁচে থাকার যতটুকু অধিকার দেবে এ দীন সে চৌহদ্দির মধ্যেই হাত পা শুটিয়ে বসে থাকবে এ উদ্দেশ্যে নবী ( সা) এ দীন নিয়ে আসেননি । বরং তিনি এ জন্য তা এনেছেন যে, এটাই হবে বিজয়ী জীবনাদর্শ । অন্য কোন জীবনাদর্শ বেঁচে থাকলেও এ জীবনাদর্শ যে সীমার মধ্যে তাকে বেঁচে থাকার অনুমতি দেবে সে সীমার মধ্যেই তা বেঁচে থাকবে ।
সুরা যুমার আয়াত ২৯ এ বলেছেনঃ-
আল্লাহ একটি উপমা পেশ করেছেন একজন ক্রীতদাসের- সে কতিপয় রূঢ় চরিত্র প্রভুর
মালিকানাভুক্ত, যারা সবাই তাকে নিজের দিকে টানে এবং আরেক ব্যক্তির যে
পুরোপুরী একই প্রভুর ক্রীতদাস৷ এদের দু’জনের অবস্থা কি সমান হতে পারে?
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ৷ কিন্তু অধিকাংশ মানুষ অজ্ঞতার মধ্যে ডুবে আছে৷ এ উপমাতে আল্লাহ তা'আলা শিরক ও তাওহীদের পার্থক্য এবং মানব জীবনের ওপর এ
দু'টির প্রভাব এমন পরিস্কারভাবে বর্ণনা করেছেন যে, এতো বড় বিষয়কে এর চেয়ে
সংক্ষিপ্ত কথায় এবং এতটা কার্যকর পন্থায় বুঝিয়ে দেয়া সম্ভব নয়। একথা সবাই
স্বীকার করবে যে , যে ব্যক্তি অনেক মালিক বা মনিবের অধীন এবং তারা
প্রত্যেকেই তাকে নিজের দিকে টানে। তারা এমন বদমেজাজী যে , প্রত্যেক তার
সেবা গ্রহণ করতে চায় কিন্তু অন্য মালিকের নির্দেশ পালনের সুযোগ তাকে দেয় না
, তাছাড়া তাদের পরস্পর বিরোধী নির্দেশ শুনতে গিয়ে যার নির্দেশই সে পালন
করতে অপরাগ হয় সে তাকে শুধু ধমক ও বকাঝকা দিয়েই ক্ষান্ত হয় না , বরং শাস্তি
দিতেও বদ্ধপরিকর হয় , এমন ব্যক্তির জীবন অনিবার্যরূপেই অত্যন্ত সংকীর্ণতার
মধ্যে পতিত হবে। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি একই মনিবের চাকর সে ব্যক্তি অতীব
আরাম ও শান্তিতে জীবন যাপন করবে। তাকে অন্য কারো খেদমত এবং সন্তোষ বিধান
করতে হয় না। এটা এমন সহজ করল কথা যা বুঝার জন্য বড় বেশী চিন্তা - ভাবনা
করার প্রয়োজন হয় না। এ উপমা পেশ করার পর কারো জন্য একথা বুঝাও কঠিন নয় যে
এক আল্লাহর দাসত্বে মানুষের জন্য যে শান্তি ও নিরাপত্তা আছে বহু সংখ্যক
ইলাহর দাসত্ব করে কখনো তা লাভ করা যেতে পারে না।
এখানে
একথাও ভালভাবে বুঝে নেয়া দরকার যে , পাথরের মূর্তির সাথে বহু সংখ্যক বক্র
স্বভাবের এবং পরস্পর কলহপ্রিয় মনিবদের উপমা খাটে না। এ উপমা সেসব জীবন্ত
মনিবদের ক্ষেত্রেই খাটে যারা কার্যতই পরস্পর বিরোধী নির্দেশ দান করে এবং
বাস্তবেও তাকে নিজের দিকে টানতে থাকে। পাথরের মূর্তি কাকে কবে আদেশ দেয় এবং
কাকে কখন নিজের খেদমতের জন্য ডাকে ৷ এ তো জীবন্ত মনিবদের কাজ। মানুষের
নিজের প্রবৃত্তির মধ্যে , বংশের মধ্যে , জ্ঞাতি - গোষ্ঠির মধ্যে , জাতি ও
দেশের সমাজের মধ্যে , ধর্মীয় নেতাদের মধ্যে , শাসক ও আইন প্রণেতাদের মধ্যে ,
কায়কারবার ও জীবিকার গণ্ডির মধ্যে এবং পৃথিবীর সভ্যতার ওপর প্রভাব
বিস্তারকারী শক্তিসমূহের মধ্যে সর্বত্র বিদ্যমান। তাদের পরস্পর বিরোধী
আকাংখা ও বিভিন্ন দাবী মানুষকে সবসময় নিজের দিকে টানতে থাকে । সে তাদের যার
আকাংখা ও দাবী পূরণ করতে ব্যর্থ হয় সে তাকে নিজের কর্মের গণ্ডির মধ্যে
শাস্তি না দিয়ে ছাড়ে না। তবে প্রত্যেকরে শাস্তিতর উপরকরণ ভিন্ন ভিন্ন্ ।
কেউ মনে আঘাত দেয় , কেউ অসন্তুষ্ট হয় , কেউ উপহাস করে , কেউ সম্পর্ক ছিন্ন
করে। কেউ নির্বোধ বলে আখ্যায়িত করে , কেউ ধর্মের ওপর আক্রমণ করে এবং কেউ
আইনের আশ্রয় নিয়ে শাস্তি দেয়। মানুষের জন্য এ সংকীর্ণতা থেকে বাঁচার একটিই
মাত্র উপায় আছে। আর তা হচ্ছে তাওহীদের পথ গ্রহণ করে শুধু এক আল্লাহর বান্দা
হয়ে যাওয়া এবং গলদেশ থেকে অন্যদের দাসত্বের শৃঙ্খল ছিঁড়ে দূরে নিক্ষেপ
করা।
তাওহীদের পথ অবলম্বন করারও দু'টি পন্থা আছে এবং এর ফলাফলও ভিন্ন ভিন্ন।
একটি
পন্থা এই যে , কেউ ব্যক্তিগত পর্যায়ে এক আল্লাহর বান্দা হয়ে থাকার
সিদ্ধান্ত নেবে কিন্তু আশে - পাশের পরিবেশ তার সহযোগী হবে না। এ ক্ষেত্রে
তার জন্য বাইরের দ্বন্দ্ব - সংঘাত ও সংকীর্ণতা আগের চেয়েও বেড়ে যেতে পারে।
তবে সে যতি সরল মনে এ পথ অবলম্বন করে থাকে তাহলে মনের দিক দিয়ে শান্তি ও
তৃপ্তি লাভ করবে। সে প্রবৃত্তির এমন প্রতিটি আকাংখা প্রত্যাখ্যান করবে যা
আল্লাহর নির্দেশের পরিপন্থী বা যা পূরণ করার পাশাপাশি আল্লাহভীরুতার দাবী
পূরণ করা যেতে পারে না। সে পরিবার , গোত্র , গোষ্ঠী , জাতি , সরকার ,
ধর্মীয় নেতৃত্ব এবং আর্থিক কর্তৃত্বেরও এমন কোন দাবী গ্রহণ করবে না যা
আল্লাহর আইনের সাথে সাংঘর্ষিক । এর ফলে সে সীমাহীন দুঃখ - দুর্দশার
সম্মুখীন হতে পারে তথা অনিবার্যরূপেই হবে কিন্তু তার মন এ ব্যাপারে
পুরোপুরি পরিতৃপ্ত থাকবে যে , আমি যে আল্লাহর বান্দা তার দাসত্বের দাবী আমি
সম্পূর্ণরূপে পূরণ করছি। আর আমি যাদের বান্দা নই আমার কাছে তাদের এমন কোন
অধিকার নেই , যে কারনে আমি আমার রবের নির্দেশের বিরুদ্ধে তাদের দাসত্ব
করবো। দুনিয়ার কোন শক্তিই তার থেকে মনের এ প্রশান্তি এবং আত্মার এ শান্তি ও
তৃপ্তি ছিনিয়ে নিতে পারে না। এমনকি তাকে যদি ফাঁসি কাষ্ঠেও চড়তে হয় তাহলে
সে প্রশান্ত মনে ফাঁসির কাষ্ঠেও ঝুলে যাবে । সে একথা ভেবে সামান্য
অনুশোচনাও করবে না যে , আমি কেন মিথ্যা প্রভুদের সামনে মাথা নত করে আমার
জীবন রক্ষা করলাম না।
আরেকটি
পন্থা এই যে , গোটা সমাজ তাওহীদের ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাক এবং সেখানে
নৈতিক চরিত্র, সভ্যতা , সংস্কৃতি , শিক্ষা , ধর্ম , আইন , কানুন , রীতিনীতি
ও দেশাচার , রাজনতি , অর্থনীতি মোট কথা জীবনের প্রতিটি বিভাগের জন্য আকীদা
- বিশ্বাস হিসেবে সেসব মূলনীতি মেনে নেয়া হোক এবং কার্যত চালু করা হোক যা
মহান আল্লাহ তাঁর কিতাব ও রসূলের মাধ্যমে দিয়েছেন। আল্লাহর দীন যেটিকে
গোনাহ বলবে আইন সেটিকেই অপরাধ হিসেবে গণ্য করবে , সরকারের প্রশাসনিক
ব্যবস্থাপনা সেগুলোকে উৎখাত করার চেষ্টা করবে , শিক্ষা - দীক্ষা সেটি থেকে
বাঁচার জন্য মন মানসিকতা তৈরী করবে। মিম্বার ও মিহরাব থেকে এর বিরুদ্ধেই
আওয়াজ উঠবে সমাজ এটিকে দোষণীয় মনে করবে এবং জীবিকা অর্জনের প্রতিটি কাজ-
কারবারে তা নিষিদ্ধ হবে। অনুরূপভাবে আল্লাহর দীন যে জিনিসকে কল্যাণ ও
সুকৃতি হিসেবে আখ্যায়িত করবে আইন তাকেই সমর্থন করবে। ব্যবস্থাপনার শক্তি
তার লালন পালন করবে। গোটা শিক্ষা ব্যবস্থা মন মগজে সেটিকে বদ্ধমূল করতে এবং
চরিত্র ও কর্মে প্রতিফলিত করার চেষ্টা করবে। মিম্বর ও মিহরাব তারই শিক্ষা
দেবে , সমাজও তারই প্রশংসা করবে। তার ওপরেই প্রচলিত রীতিনীতি কার্যত
প্রতিষ্ঠিত করবে এবং কায়-কারবার ও জীবন জীবিকার প্রক্রিয়াও সে অনুসারেই
চলবে। এভাবেই মানুষ পূর্ণ আভ্যন্তীণ ও বাহ্যিক শান্তি লাভ করে এবং বস্তুগত ও
আধ্যাত্মক উন্নতির সমস্ত দরজা তার জন্য খুলে যায়। কারণ , আল্লাহ ও
গায়রুল্লাহর দাসত্বের দাবীর যে দ্বন্দ্ব - সংঘাত তা তখন প্রায় শেষ হয়ে যায়।
ইসলাম
যদিও প্রত্যেক ব্যক্তিকে এই বলে আহবান জায়ায় যে , দ্বিতীয় অবস্থাটা সৃষ্টি
হোক বা না হোক সর্বাবস্থায় সে তাওহীদকেই তার আদর্শ হিসেবে মেনে চলবে এবং
সব রকম বিপদ - আপদ ও দুঃখ - কষ্টের মোকাবিলা করে আল্লাহর দাসত্ব করে।
কিন্তু এ কথা অস্বীকার করা যায় না যে , ইসলামের চূড়ান্ত লক্ষ এ দ্বিতীয়
অবস্থা সৃষ্টি করা । সমস্ত নবী ও রসূল আলাইহিমুস সালামের প্রচেষ্টা ও দাবীও
এই যে , একটি মুসলিম উম্মাহর উত্থান ঘটুক যারা কুফর ও কাফেরদের আধিপত্য
থেকে মুক্ত হয়ে জামায়ত বদ্ধভাবে আল্লাহর দীন অনুসরণ করবে। কুরআন ও সুন্নাত
সম্পর্কে অজ্ঞ এবং বিবেক - বুদ্ধিহীন না হয়ে কেউই একথা বলতে পারে না যে ,
নবী রসূল আলাইহিমুস সালামের চেষ্টা সাধানার লক্ষ ছিল শুধু ব্যক্তিগত ঈমান ও
আনুগত্য। সামাজিক জীবনে ' দীন হক ' বা ন্যায় ও সত্যের আদর্শ কয়েম করার
উদ্দেশ্য আদৌ তাঁদের ছিল না।
বিষয়: বিবিধ
১৩৪০ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন