রাসুলের হুকুম অমান্য করেও সাহাবী রা:
লিখেছেন লিখেছেন ইসলামী দুনিয়া ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৪, ১২:০৯:০৯ দুপুর
"হোদায়বিয়ার সন্ধি" মুসলমানদের একটি বড় বিজয় বলে অখ্যায়িত করা হয়। বাস্তবেও তাই। কিন্তু অনেকেই এটিকে ভুল ব্যাখ্যা দাঁড় করার চেষ্টাও করে। যে এটি নাকি প্রথম মানব রচিত সংবিধান। এজন্য আমাদের প্রচলিত মানব রচিত সংবিধান জায়েজ করার ব্যার্থ অপচেষ্টা করে। এটি আমাদের বুঝতে হবে এটি কোন সংবিধান ছিল না। বরং এটি ছিল একটি "চুক্তিপত্র"। এটিতে কোরআর ও হাদীস বিরোধী কিছু ছিল না। এবং এটি ছিল সময়িক, যা শুধু মক্কা মদীনার লোকগুলোর জণ্য প্রোজেয্যছিল। এটি খয়বরের, রোমের বা পারস্যের লোকদের জন্য বাধ্যবাধকতা ছিল না। অথচ আমাদের কিছু লোক, যারা কোরআন হাদীস বিষয়ে একেবারেই অজ্ঞ তারা, এই হোদায়বিয়ার সন্ধিকে মনবরচিত সংবিধান বলতে ভুল করে না। যাক সে বিষযগুলো, এগুলো নিয়ে হয়তবা অন্যদিন লিখব ইনশাআল্লাহ। আমি যেটি বলতে চাচ্ছিলাম। হোদায়বিয়ার সন্ধির অনেকগুলো শর্তের মধ্যে কেটি ছিল, * মক্কা থেকে কোন নওমুসলিম হিজরত করে মদীনায় যেতে পারবে না, কেউ যদি লুকিয়েও যায়, তাহলে সেই নওমুসলিমটিকে ফেরত দিতে বাধ্য থাকবে মুহাম্মদ সা:।
* অপরপক্ষে কোন হিজরতকারী মুসলিম যদি স্বেচ্ছায় মদীনায় ফেরত আসে তাহলে তাকে ফেরত দেওয়া লাগবে না বা ফেরত দেওয়া হবে না।
কারন হিজরত করে পুরনায় বাড়ি ফেরত যাওয়া যাবে না। তবে কেউ যদি এ হুকুম অমান্য করে তাহলে সে ইসলাম থেকে বহিস্কৃত, অতএব তাকে আর মুসলিমদের প্রোয়জন নাই। কারন সে মুরতাদ।
এবার আসল কথায় আসি। বসির রা: নামে একজন নওমুসলিম লুকিয়ে মদীনাতে হিজরত করল। শর্ত অনুযায়ী মক্কার মুশরিকরা রাসুল সা: এর কাছে তাকে ফেরত চাইল। রাসুল সা: বসির রা: কে মুশরিক প্রতিনিধিদের সাথে ফেরত পাঠালেন। প্রতিনিধি ও বসির রা: মক্কার উদ্দ্যেশ্যে রওয়ানা হয়ে মদীনার উপকন্ঠে পৌছে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। মুশরিক প্রতিনিধিদের কাছে তলোয়ার ছিল, বসির রা: তলোয়ারে খুব প্রশংসা করলেন, অতপর বললেন আমি কি তোমাদের এই তলোয়ার হাতে নিয়ে দেখতে পারি, তারা বলল, হ্যা অবশ্যই। এবার বসির রা: তলোয়ার দুটি হাতে নিয়ে আরো প্রশংসা করলেন এবং বললেন, একটু পরিক্ষা করে দেখতে পারি? মুশরিক দুটো বললেন অবশ্যই। এই বলে বসির রা: একটা মুশরিকের গলার এক কোপ মারলেন। এতে প্রথম মুশরকি নিহত হল। ২য় মুশরিক পালাতে লাগলেন মদীণার দিকে। বসির রা: মুশরিকের পিছু ধাওয়া করলেন। আল্লাহর নবী সা: এর কাছে এসে বসির রা: এর বিরুদ্ধে তার সাথীকে হত্যার অভিযোগ করলেন। বসির রা: এর বিষয়ে বললেন এ লোক তো যুদ্ধের দামামা বাজিয়ে দিয়েছে, আরো বললেন, কে আছো ওকে (বসির রা) কে দেখবে। বসির রা: এবার রাসুল সা: এর কাছে এসে বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ আপনি আপনার দায়িত্ব পালন করেছেন। আর আল্লাহ আমাকে সেখান থেকে গণিমত দান করেছেন। এই বলে বসির রা: তলোয়ার দুটি নিয়ে মদীনার অদুরে সমুদ্র পাড়ে সিরিয়া যাওয়ার রাস্তার পাশে আশ্রয় নিলেন।
যখনই কোন কাফির কাফেলা সিরিয়াতে ব্যবসার উদ্দেশ্যে যেত এবং আসার পথে তাদের মালামাল কেড়ে নিত। এভাবে বসিরের নাম প্রচার হতে লাগল, এবার নওমুসলিমরা হিজরত করতে মদীনাতে না গিয়ে বসির রা: এর দলে যোগ দিতে শুরু কর। এতে করে মক্কার মুশরিকদের ব্যবসার করা প্রায়ই বন্ধ হযে গেল। তখন মক্কার মুশরিকরা নিরুপায় হয়ে রাসুল সা: কে চিঠি লেখলো আপনি বসির রা:সে মদীনায় ফিরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ করল এবং হোদায়বিয়ার সেই শর্ত বাতিল ঘোষনা করছি। রাসুল সা: বসির রা: কে চিঠি লেখলেন। বসির রা: তখন মৃতু্শয্যায় তখন তিনি চিঠি পেয়ে চুমু খেলেন এবং ইহলোক ত্যাগ করলেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। বাকী সাহাবীরা রা: মদীনাতে চলে আসলেন। এর পরেই হল মক্কা বিজয়।
বিষয়: বিবিধ
১০৮৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন