ইসলাম ও অন্য ধর্মে তালাক (প্রথম পর্ব)

লিখেছেন লিখেছেন প্রিন্সিপাল ২৬ জানুয়ারি, ২০১৪, ০৭:৫৮:২০ সন্ধ্যা



তালাক নিয়ে তিনটি ধর্মে ব্যাপক মতানৈক্য রয়েছে। খৃষ্টান ধর্মে তালাককে পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা বাইবেলের নতুন নিয়মের(New Testament) বর্ণনা থেকে স্পষ্ট বোধগম্য হয়। ঈসা আ. এর নামে প্রচার করা হয় যে, তিনি বলেছেন: "আমি বলছি যে তার স্ত্রীকে তালাক দেবে সে যেন তার স্ত্রীর জন্য ব্যভিচারের দরজা উন্মুক্ত করে দিল। আর যে তালাকপ্রাপ্তাকে বিবাহ করল সে যেন ব্যভিচারে জড়িয়ে পড়ল"। (ম্যাথিউঃ৫/৩২)

কিন্তু, এগুলো বাস্তবে বাস্তবায়ন করা হয় না। এগুলো ধার্মিকতার দাবি হওয়া সত্বেও কখনও সম্ভব নয়। বৈবাহিক জীবনের ব্যর্থতার কারণে যদি স্বামী-স্ত্রীর জীবনযাপন অনিশ্চয়তার দিকে ধাবিত হয়, তাহলে তালাক নিষিদ্ধ হওয়ার বিধান তাদের কোন উপকারে আসবে না। স্বামী স্ত্রীর জীবনযাপন অসম্ভব হয়ে গেলে তাদেরকে জোর করে একত্র রাখার কোন অর্থ হয় না। তবে আশ্চর্য হওয়ার কিছুই নেই যে, খৃষ্টান সমাজ আজ তালাককে বৈধতা প্রদান করতে বাধ্য হয়েছে।

পক্ষান্তরে ইহুদীরা কোন কারণ ছাড়াই তালাককে বৈধতা দিয়েছে। পুরাতন নিয়ম (Old Testament) পুরুষকে অধিকার দিয়েছে যে,নিছক পছন্দ-অপছন্দের কারণেই সে তার স্ত্রীকে তালাক দিতে পারে। বলা হয়েছে- " কোন পুরুষ কোন নারীকে বিবাহ করার পর কোন ত্রুটির কারণে তাকে পছন্দ না হয়। এরপর সে তালাক লিখে স্ত্রীকে দিয়ে দিল। স্ত্রী তার বাড়ী থেকে বের হয়ে গিয়ে আবার আরেকজনকে বিবাহ করল। সেও স্ত্রী পছন্দসই না হওয়ার কারণে তালাক লিখে স্ত্রীর হাতে দিয়ে দিল। এমতাবস্থায় প্রথম স্বামীর জন্য এ স্ত্রী পুনরায় বৈধ হবে না। কেননা, স্রষ্টার দৃষ্টিতে সে তখন নাপাক। তোমাকে আল্লাহ তায়ালা যে অংশ নির্ধারণ করে দিয়েছেন তার অতিরিক্ত গ্রহণ করতে পদক্ষেপন করো না"। (ডিউটারনমী:২৪/১-৪)

ইহুদী পন্ডিতরা "অপছন্দ ও দোষ" শব্দ দুটির ব্যাখ্যায় মতবিরোধ করেছেন। ইহুদী ধর্ম শাস্ত্র "তালমুদে" তাদের এ সমস্ত মতবিরোধের বর্ণনা এসেছে। " শামাঈ" গোত্রের মতে স্ত্রী পাপাচারে লিপ্ত না হলে তাকে তালাক দেয়া যাবে না। "হালীল" গোত্রের মতে- যে কোন কারণে এবং যখন খুশি স্ত্রীকে তালাক দেয়া যাবে। এমনকি নিছক খাদ্য নষ্ট করে ফেললেও। ইহুদী পন্ডিত "আকীবা" বলেনঃ স্বামীর অধিকার আছে সে বর্তমান স্ত্রীর চেয়ে বেশী সুন্দরী স্ত্রী পেলেও আগের স্ত্রীকে তালাক দিতে পারবে" ।(গিট্টিন ৯০ A-B)

নতুন নিয়ম (New testament) শামাঈদের মতকে গ্রহণ করেছে। অপর দিকে ইহুদী আইনে "হালীল ও আকীবার" মতামতকে গ্রহণ করেছে। আর এ মতই বহুল প্রচলিত।

এ আইন স্বামীকে অধিকার দেয় কোন কারণ ছাড়াই স্ত্রীকে তালাক দেয়ার। পক্ষান্তরে,পুরাতন নিয়ম (Old Testament) পুরুষকে অপছন্দ হলে তালাক দেয়ার শুধু বৈধতাই দেয় না; বরং তাকে নির্দেশও দেয়। বলা হয়েছে" খারাপ স্ত্রী তার স্বামীর জন্য অপমান বয়ে আনে এবং সে অপরের ঠাট্টা বিদ্রুপের পাত্র হয়। তার এ স্ত্রী তাকে সৌভাগ্যবান বানাতে পারে না। নারীরা পাপাচারের কেন্দ্র বিন্দু; তাদের পাপাচারের কারণেই আমাদের সবাইকে মরতে হবে। খারাপ স্ত্রীকে যা খুশি তা বলতে দিও না। যদি সে তা মেনে না নেয় তাহলে তালাক দিয়ে তার থেকে মুক্ত হও"। (এক্সিলেসিয়াসটিকাসঃ২৫/২৫)

ইহুদী ধর্ম গ্রন্থ তালমুদে তালাক বৈধ হওয়ার কিছু কারণ বর্ণনা করা হয়েছে যার কারণে স্বামী তার স্ত্রীকে তালাক দিতে পারে। তন্মধ্যে একটি হচ্ছে " যদি সে রাস্তায় খাওয়া দাওয়া করে। ইহুদী পন্ডিত "মায়ার" বলেন উক্ত স্ত্রীকে তালাক দেয়া আবশ্যক"। (তালমুদঃ গিট্টিন ৮৯ A)

তালাক নিয়ে তিনটি ধর্মে ব্যাপক মতানৈক্য রয়েছে। খৃষ্টান ধর্মে তালাককে পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটা বাইবেলের নতুন নিয়মের(New Testament) বর্ণনা থেকে স্পষ্ট বোধগম্য হয়। ঈসা আ. এর নামে প্রচার করা হয় যে, তিনি বলেছেন: "আমি বলছি যে তার স্ত্রীকে তালাক দেবে সে যেন তার স্ত্রীর জন্য ব্যভিচারের দরজা উন্মুক্ত করে দিল। আর যে তালাকপ্রাপ্তাকে বিবাহ করল সে যেন ব্যভিচারে জড়িয়ে পড়ল"। (ম্যাথিউঃ৫/৩২)

কিন্তু, এগুলো বাস্তবে বাস্তবায়ন করা হয় না। এগুলো ধার্মিকতার দাবি হওয়া সত্বেও কখনও সম্ভব নয়। বৈবাহিক জীবনের ব্যর্থতার কারণে যদি স্বামী-স্ত্রীর জীবনযাপন অনিশ্চয়তার দিকে ধাবিত হয়, তাহলে তালাক নিষিদ্ধ হওয়ার বিধান তাদের কোন উপকারে আসবে না। স্বামী স্ত্রীর জীবনযাপন অসম্ভব হয়ে গেলে তাদেরকে জোর করে একত্র রাখার কোন অর্থ হয় না। তবে আশ্চর্য হওয়ার কিছুই নেই যে, খৃষ্টান সমাজ আজ তালাককে বৈধতা প্রদান করতে বাধ্য হয়েছে।

পক্ষান্তরে ইহুদীরা কোন কারণ ছাড়াই তালাককে বৈধতা দিয়েছে। পুরাতন নিয়ম (Old Testament) পুরুষকে অধিকার দিয়েছে যে,নিছক পছন্দ-অপছন্দের কারণেই সে তার স্ত্রীকে তালাক দিতে পারে। বলা হয়েছে- " কোন পুরুষ কোন নারীকে বিবাহ করার পর কোন ত্রুটির কারণে তাকে পছন্দ না হয়। এরপর সে তালাক লিখে স্ত্রীকে দিয়ে দিল। স্ত্রী তার বাড়ী থেকে বের হয়ে গিয়ে আবার আরেকজনকে বিবাহ করল। সেও স্ত্রী পছন্দসই না হওয়ার কারণে তালাক লিখে স্ত্রীর হাতে দিয়ে দিল। এমতাবস্থায় প্রথম স্বামীর জন্য এ স্ত্রী পুনরায় বৈধ হবে না। কেননা, স্রষ্টার দৃষ্টিতে সে তখন নাপাক। তোমাকে আল্লাহ তায়ালা যে অংশ নির্ধারণ করে দিয়েছেন তার অতিরিক্ত গ্রহণ করতে পদক্ষেপন করো না"। (ডিউটারনমী:২৪/১-৪)

ইহুদী পন্ডিতরা "অপছন্দ ও দোষ" শব্দ দুটির ব্যাখ্যায় মতবিরোধ করেছেন। ইহুদী ধর্ম শাস্ত্র "তালমুদে" তাদের এ সমস্ত মতবিরোধের বর্ণনা এসেছে। " শামাঈ" গোত্রের মতে স্ত্রী পাপাচারে লিপ্ত না হলে তাকে তালাক দেয়া যাবে না। "হালীল" গোত্রের মতে- যে কোন কারণে এবং যখন খুশি স্ত্রীকে তালাক দেয়া যাবে। এমনকি নিছক খাদ্য নষ্ট করে ফেললেও। ইহুদী পন্ডিত "আকীবা" বলেনঃ স্বামীর অধিকার আছে সে বর্তমান স্ত্রীর চেয়ে বেশী সুন্দরী স্ত্রী পেলেও আগের স্ত্রীকে তালাক দিতে পারবে" ।(গিট্টিন ৯০ A-B)

নতুন নিয়ম (New testament) শামাঈদের মতকে গ্রহণ করেছে। অপর দিকে ইহুদী আইনে "হালীল ও আকীবার" মতামতকে গ্রহণ করেছে। আর এ মতই বহুল প্রচলিত।

এ আইন স্বামীকে অধিকার দেয় কোন কারণ ছাড়াই স্ত্রীকে তালাক দেয়ার। পক্ষান্তরে,পুরাতন নিয়ম (Old Testament) পুরুষকে অপছন্দ হলে তালাক দেয়ার শুধু বৈধতাই দেয় না; বরং তাকে নির্দেশও দেয়। বলা হয়েছে" খারাপ স্ত্রী তার স্বামীর জন্য অপমান বয়ে আনে এবং সে অপরের ঠাট্টা বিদ্রুপের পাত্র হয়। তার এ স্ত্রী তাকে সৌভাগ্যবান বানাতে পারে না। নারীরা পাপাচারের কেন্দ্র বিন্দু; তাদের পাপাচারের কারণেই আমাদের সবাইকে মরতে হবে। খারাপ স্ত্রীকে যা খুশি তা বলতে দিও না। যদি সে তা মেনে না নেয় তাহলে তালাক দিয়ে তার থেকে মুক্ত হও"। (এক্সিলেসিয়াসটিকাসঃ২৫/২৫)

ইহুদী ধর্ম গ্রন্থ তালমুদে তালাক বৈধ হওয়ার কিছু কারণ বর্ণনা করা হয়েছে যার কারণে স্বামী তার স্ত্রীকে তালাক দিতে পারে। তন্মধ্যে একটি হচ্ছে " যদি সে রাস্তায় খাওয়া দাওয়া করে। ইহুদী পন্ডিত "মায়ার" বলেন উক্ত স্ত্রীকে তালাক দেয়া আবশ্যক"। (তালমুদঃ গিট্টিন ৮৯ A)

চলবে:....

বিষয়: বিবিধ

১৩৮৮ বার পঠিত, ২২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

168086
২৬ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৮:০৫
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : অপেক্ষায় রইলাম ,,,
২৬ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৯:০৭
122025
প্রিন্সিপাল লিখেছেন : পড়ার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে
168089
২৬ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৮:১২
ভিশু লিখেছেন : ভালো...Happy Good Luck
২৬ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৯:০৭
122026
প্রিন্সিপাল লিখেছেন : ধন্যবাদ আপনাকে।
168103
২৬ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৮:৩৫
শেখের পোলা লিখেছেন : অন্যদের কথা বাদ দিলেও দেখবেন ইসলাম পন্থিদের মাঝেও তালাক নিয়ে হাজার মতভেদ আছে৷ পেশাদার হিলা কারীও পাবেন৷
২৬ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৯:১০
122029
প্রিন্সিপাল লিখেছেন : ইসলামে হিলা বিবাহ নেই। যারা সেটাকে টিকে রেখেছে, তারা তাদের পকেট ভরানোর জন্যই করছে।

তবে মনে থাকলে পরবর্তীতে হিলা সম্পর্কে লিখব। ইনশাআল্লাহ।

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
168105
২৬ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৮:৩৯
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : পড়ে দেখলাম আরো রয়েছে।
২৬ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৯:১০
122030
প্রিন্সিপাল লিখেছেন : হ্যা, আছে আরো।
ধন্যবাদ পড়ার জন্য।
168116
২৬ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৮:৫৩
বিন হারুন লিখেছেন : আগামী পর্বের অপেক্ষায় Waiting
২৬ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৯:১১
122031
প্রিন্সিপাল লিখেছেন : হ্যা, আসবে ইনশাআল্লাহ।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
168146
২৬ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৯:৪৯
শেষ বিকেলের লিখেছেন : আইন তালাক, বাইন তালাক, তিন তালাক। অতপর হিল্লা বিয়ে।
২৬ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ১০:৪৩
122074
প্রিন্সিপাল লিখেছেন : হ্যা, এভাবে অনেক সমাজে চলে, যা ইসলাম বিরোধী কাজ।
অনেক ধন্যবাদ।
২৭ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ১২:১১
122096
শেষ বিকেলের লিখেছেন : কে বলেছে ইসলাম বিরোধী কাজ!!

সুরা ২:২৩০ ; তারপর যদি সে স্ত্রীকে (তৃতীয়বার) তালাক দেয়া হয়, তবে সে স্ত্রী যে পর্যন্ত তাকে ছাড়া অপর কোন স্বামীর সাথে বিয়ে করে না নেবে, তার জন্য হালাল নয়। অতঃপর যদি দ্বিতীয় স্বামী তালাক দিয়ে দেয়, তাহলে তাদের উভয়ের জন্যই পরস্পরকে পুনরায় বিয়ে করাতে কোন পাপ নেই। যদি আল্লাহর হুকুম বজায় রাখার ইচ্ছা থাকে। আর এই হলো আল্লাহ কতৃক নির্ধারিত সীমা; যারা উপলব্ধি করে তাদের জন্য এসব বর্ণনা করা হয়।


168255
২৭ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ১২:৫১
প্রিন্সিপাল লিখেছেন : সেখানে বিয়ের কথা বলা হয়েছে, হিলার কথা বলা হয়নি।
হিলা বিবাহ না।
রাসূল (সাঃ) হিলা থেকে কঠুরভাবে নিষেধ করেছেন। কেননা তা জাহেলী যুগি বিদ্যমান ছিল।
168260
২৭ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০১:০৪
নূর আল আমিন লিখেছেন : ২য় পোষ্টে আপনার জবাব দেয়া আছে শেষ বিকেলের নাস্তিক
২৭ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৩:৫১
122172
শেষ বিকেলের লিখেছেন : মুক্ত তথ্য-প্রযুক্তির যুগে ইসলাম ধর্মের বর্বর বিধান লুকিয়ে রাখা সম্ভব নয় জনাব!

বলেন তো, এটা কি ধরনের বিয়ে??

Sahih Bukhari Volume 007, Book 063, Hadith Number 186.
Narrated By 'Aisha : The wife of Rifa'a Al-Qurazi came to Allah's Apostle and said, "O Allah's Apostle! Rifa'a divorced me irrevocably. After him I married 'Abdur-Rahman bin Az-Zubair Al-Qurazi who proved to be impotent." Allah's Apostle said to her, "Perhaps you want to return to Rifa'a? Nay (you cannot return to Rifa'a) until you and 'Abdur-Rahman consummate sex."
169224
২৮ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ১১:২৭
আলোর আভা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ ।
২৮ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ১১:৪১
123014
প্রিন্সিপাল লিখেছেন : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
১০
169667
২৯ জানুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৫:৩৯
বুড়া মিয়া লিখেছেন : ভালো লাগলো
২৯ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:১২
123441
প্রিন্সিপাল লিখেছেন : ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।
১১
170015
৩০ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০২:৩৪
অজানা পথিক লিখেছেন : ধন্যবাদ
৩০ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ১২:১৭
123953
প্রিন্সিপাল লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ আপনাকেও।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File