কাঁদলেন আশরাফুল! কাঁদালেন ভক্তদের!
লিখেছেন লিখেছেন নাওয়াজ মারজান ০৩ জুলাই, ২০১৩, ১০:৩৬:০৫ রাত
১১ই এপ্রিল ২০০১। একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অভিষেক হয় ১৬ বছর বয়সী কিশোর মোহাম্মদ আশরাফুলের। তখনকার ব্য়াট্সম্য়ানদের জন্য় মুর্তিমান আতংক মুরালিধারানকে বেসামাল করে দিয়ে ৭ সেপ্টেম্বর আশরাফুল যা করলেন টেস্ট ক্রিকেটের ১৩০ বছরের ইতিহাসে তা করতে পারেনি আর কেউই। হলেন ইতিহাসের সর্বকনিস্ট অভিশেক টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান। আবির্ভাবেই নিজের জাত চিনিয়ে দেয়া এ্য়াশ ক্রমেই হয়ে উঠেন দেশের ক্রিকেটের আশার ফুল। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ব্য়াক টু ব্য়াক সেঞ্চুরি,ভারতের বিপক্ষে ১৫৮ রানের মহাকাব্য়িক ইনিংসের পর তার হাত ধরেই রচিত হয় রুপকথার সেই কার্ডিস্ক কাব্য়। টানা দু'বারে বিশ্ব চ্য়াম্পিয়ন অসট্রেলিয়াকে আকাশ থেকে পাতালে নামিয়ে আনেন বিশ বছরের আশরাফুল। ঠিক ১০০ বল হাঁকিয়ে দুর্দান্ত সেই ম্য়াচ উইনিং সেঙ্চুরিতে এমন কিছু উদ্ভাবনি শর্ট দেখিয়েছেন যা এক জীবনে দেখাতে পারেনি ক্রিকেটের বরপুত্র ব্রায়ান লারা কিংবা লিটল মাস্টার শচিন টেন্ডুলকার্ও। ঠিক পরের ম্য়াচেই ইংল্য়ান্ডের বিপক্ষে যেনো আরো ঘুরে দাঁড়ালো আশরাফুলের উইলো। দুর্দান্ত সব স্কুপ আর ফুল শর্ট খেলে তিনি দিশেহারা করে দেন ইংলিশ বোলিং লাইন্আপ। ৫২ বল খেলে ৯৪ রানের তার অসাধারন ইনিংসটি যারা দেখেছেন তারা যেনো স্বপ্নেই বিভোর ছিলেন আর বাস্তবে ফিরেছেন মুহুর্মুহু করতালিতে। বাংলাদেশের এই লিটল মাস্টারের এই দুর্দান্ত ইনিংস শুধু অসট্রেলিয়ার বিরুধ্য়েই সীমাবদ্ধ থাকেনি। পরপর তিনি শিকার বানিয়েছিলেন দক্ষিন আফ্রিকা ও পরাক্রমশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ও। বাংলাদেশ্ও পারে এই সাহস টাইগারদের বুকে সঞ্চালন করে দেন সবার প্রিয় এ্য়াশ। ২০০৮ এ বিদ্রোহী লিগ আইসিএলের থাবায় যখন পঙ্গু এদেশের ক্রিকেট। হাবিবুল বাশারের নেতৃত্বে যখন আফতাব,অলক,নাফিসরা বিক্রি হয়ে যান টাকার কাছে ঠিক তখন্ই পরম মমতায় এদেশের ক্রিকেটকে আগলিয়ে রাখেন এই আশরাফুল্ই। ক্য়ারীয়ারে অনেক উথান-পতন থাকলেও এই সেইদিন বিপিএলের সেঞ্চুরী আর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৯০ রানের অনবদ্য় ইনিংস খেলে আশরাফুল বুঝিয়ে দিলেন''ফর্ম ইজ টম্পোরেরি বাট কনফিডেন্স ইজ ফারমানেন্ট''। কিন্তু ভদ্র লোকের খেলায় যেখানে আপোষের কোনো জায়গা নেই সেখানে ক্রিকেটের আদর্শ হয় ভুলুন্টিত । ফিক্সিং নামক অন্ধকার জগৎ হঠাৎ্ই যেনো ছোঁ মেরে কেড়ে নিল কোটি কোটি ক্রিকেট প্রেমি মানুষের প্রিয় আশরাফুলকে। নৈরাশের কালো কালো অন্ধকারে পরিণত হল সবার প্রিয় আশরাফুল। আলো য্য়োতি ছড়িয়ে এদেশের ক্রিকেটকে উদ্ভাসিত করা আশরাফুল অন্ধকারের কানাগড়িতে ঢুকে প্রমান করলেন,রুপকথা আসলে রুপকথাই। বাস্তব বড়্ই নির্মম বড়্ই কঠিন। নিজের ভেতর গুমড়ে কেঁদে মরা আশরাফুল কি একা কাঁদছেন?রুপকথার এই রাজপুত্রের কান্নাভেজা চোখ অজান্তেই হয়ত কাঁদিয়েছেন ১৬ কোটি মানুষকে। আমরা কি ক্ষমা করতে পারিনা আমাদের প্রিয় আশরাফুলকে?সারা জীবন তো আশরাফুল আমাদের আনন্দ দিলো। আজ কী আমরা তার মনে আনন্দ ফিরিয়ে দিতে পারিনা?আশরাফুল ছয় হাঁকালে বাহবা দেই আর বিপদে পড়লে চেপে ধরাই কি আমাদের আদর্শ?আমাদের ধর্মে কি নেই ক্ষমা অতি উত্তম?আমাদের বিবেক কি আজ চেতনা ধারিদের কাছে বিক্রি করে দিলাম?
বিষয়: বিবিধ
১৪৩৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য






































পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন