?????? জীবনেতিহাসের ছেঁড়া পাতা---২ ??????
লিখেছেন লিখেছেন শেখের পোলা ২১ এপ্রিল, ২০১৬, ০১:৩১:৩২ রাত
ডিষ্ট্রিক্ট বোর্ডের রাস্তাটা পূর্ব হতে পশ্চিমে সোজা যাবার সময় আমাদের গ্রামটাকে উত্তর দক্ষীনে ভাগ করে দিয়ে গেছে৷ গ্রামের বড় অংশটা উত্তর পাশে থাকলেও গ্রামের বিশেষ বিশেষ জিনিষ গুলো দক্ষীন পাশেই রয়ে গেছে৷ ঐ অঞ্চলের একমাত্র প্রাইমারী স্কুলটা রাস্তার দক্ষীণ পাশে৷ তার সাথেই রয়েছে পোষ্ট অফিস৷ স্কুলের পুবের পাশেই আগা মাথা পাকা ঈদগাহ, আবার ঈদগার আঙ্গিনাতেই হাট, যা সপ্তায় দুদিন বসে গ্রামের মানুষের মাছ গোশ্ত, তরি তরকারীর প্রয়োজন মেটায়৷ রাস্তার উভয় পাশে রয়েছে কয়েকটা মুদী দোকান, কাপড়ের দোকান, স্বর্ণকার, মনিহারী, দর্জীর দোকান, বেশ কয়েকটি চা পান বিড়ির দোকান, মাটির তৈজস পত্রের দোকান প্রভৃতি৷
একটা ধূলা বালীর রাস্তা যা বড় রাস্তা থেকে শুরু হয়ে গ্রামের উত্তর সিমানায় শেষ হয়েছে তা আবার গ্রামটাকে পুব পশ্চিম দুটি পাড়ায় ভাগ করেছে৷ পুব পাড়ার একেবারে পুবের মাথায় রয়েছে কিছু আদীবাসী সাঁওতালদের বাস৷ তা সাঁওতাল পাড়া নামেই পরিচিত৷ সেখানে রয়েছে কয়েকটি কামার শালা৷ যা গ্রামবাসীর লাঙ্গল জোয়াল, গরুর গাড়ির চাকার যোগান দেয়৷
জন্মটা ভিন জেলায় হলেও আমার শৈশবটা এই গ্রামেই শুরু হয়৷ আমার আব্বার নিয়ম ছিল, যা আমিও পরবর্তীতে আমার ছেলের বেলায় অনুসরণ করেছি, তাহল ছোটদের নিজের তত্বাবধানে প্রথম শ্রেণীর বই শেষ করিয়ে স্কুলের সেই প্রথম শ্রেণীতে ভর্তি করা৷ হয়তবা এ কারণেই আমরা তিন ভাইবোনের রোল নং কখনও দুইয়ের নীচে নামেনি৷ আমার পড়ার বয়স তখনও হয়নি৷ আমার বড় ভাই যখন সুর করে পড়ত, ‘অ-এ অজগর আসছে চলে, আ-এ আনারসটি খাবে বলে৷ ইঁদুর ছানা ভয়ে মরে, ঈগল পাখি পাছে ধরে৷’ আমি তখন পাশে বসে শুনতাম৷ আর তখনই আমার নাকি বায়ান্নটা অক্ষরের ছড়া মুখস্থ হয়ে গিয়েছিল৷ এ সব আমার স্মরণ থাকার কথা নয়, তবে একটা ঘটনা মনে আছে৷ আমার প্রতিবেশী মজিদ চাচা পাশের গ্রামের মসজিদের ইমাম ছিলেন৷ সেখানে তার একটা মক্তবও ছিল৷ তাঁর ছাত্র-ছাত্রীদের আমার কৃতৃত্ব দেখাবার জন্য আমাকে একদিন সাথে করে নিয়ে গিয়েছিলেন৷ মক্তবে আমার বিদ্যা জাহির হবার সাথেই আশ পাশের বাড়িতে আমার ডাক পড়ে৷ সেখানে এক বাড়িতে যাবার সাথে সাথে, ‘কুটুম এসেছে বসতে দাও’ কথাটা শুনে অবাক হয়ে ছিলাম৷ যা আজও আমি যেন শুনতে পাই৷ তা উচ্চারিত হয়েছিল খাঁচায় বসা একটা শালিকের মুখ থেকে৷
আমার পড়ার বয়স হলে, ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয়ের ‘বর্ণ পরিচয়-প্রথম ভাগ ও ২য় ভাগ বই দুখানি আমার বড় বোন ও বড় ভাইকে কৃতার্থ করে, সাথে ধারাপাত আর শ্লেট পেন্সিল সহ আমার সম্পদে যোগ হল৷ আমি যথারীতি তেনাদের সম্মান দিয়ে ধারাপাতের শতকিয়া, কড়া কিয়া, বুড়ি কিয়া, গণ্ডা কিয়া, প্রথম নামতা দ্বিতীয় নামতা তৃতীয় নামতা সাথে ছোটখাট যোগ বিয়োগ গুন ভাগ শেষ করে স্কুলের প্রথম শ্রেণীতে প্রেরীত হলাম৷
বর্ণ পরিচয় বই দুখানির বিষয়ে একটু না বললেই নয়৷ প্রথম ভাগে ছিল বর্ণ, শব্দ, আকার ইকার সহ যুক্তাক্ষর বর্জিত সব ধরণের উপসর্গযুক্ত শব্দ ও ছোট ছোট বাক্য৷ আর দ্বতীয় ভাগে ছিল বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত সকল প্রকার যুক্তাক্ষর ও শিশুমনে প্রভাব ফেলার মত ছোট ছোট নীতি গল্প৷ বিদ্যা তখনও ব্যবসায়ীক পণ্য হয়ে ওঠেনি তাই বছর বছর পাঠ্য বই বদল করে অভিভাবকদের মাথায় নুতন বইয়ের লিষ্ট চাপানো হত না৷ বা কোনদিন কোন শিক্ষক কোন ছাত্রকে প্রাইভেটে পড়তে উৎসাহিত করতেন না৷তাই বলে তখন রবীন্দ্র নাথ, নজরুল ইসলাম, বিদ্যা সাগর বাবু বঙ্কিম চন্দ্র, শরৎ বাবু, মাইকেল মধু সূদন, ডঃ মোঃ শহীদুল্লাহ প্রমূখ স্বমহিমায় জেগে উঠতে বাধাপ্রাপ্ত হননি৷
প্রথম শ্রেণীতে কলমের ব্যবহার হত না৷ বাড়ির কাজ পেন্সীলে আর স্কুলে শ্লেট পেন্সীল ব্যবহার হত তবে যতদূর মনে পড়ে প্রথম দু পরীক্ষা মৌখীক হলেও ফাইনাল পরীক্ষাটা কাগজ আর পেন্সীলে হয়ে থাকবে৷ বাৎসরীক পরীক্ষার পর রেজাল্টের দিন সহপাঠি অনেকের নাম ডেকে দ্বিতীয় শ্রেণীতে নেওয়া হল৷ আমি প্রথম শ্রেণীতেই রয়ে গেলাম৷ তখনও পাশ ফেল বুঝতাম না৷ বন্ধুরা কেউ কেউ বলতে লাগল আমি নাকি পাশ করেছি, আমাকে ক্লাশ টুতে বসতে হবে৷ বিষয়টা হল, আমার আব্বা সারা বৎসরে একদিনও স্কুলে গিয়ে আমার নাম স্কুলের রেজিষ্টারে তুলে দেবার সুযোগ পায়নি তাই আমার নাম ডাকা হয়নি৷ এখন গিয়ে নাম লেখালেন আর আমি ক্লাশ টুতে উঠলাম, তবে উত্তীর্ণের স্থান আর জানা হলনা৷
দ্বিতীয় শ্রেণীতে নতুন বই পেলাম৷ স্কুলে তখনও শ্লেট আর পেন্সীল দিয়ে কাজ হত, বাড়ির কাজ কাঠ পেন্সীলে করতে হত৷ তবে পরীক্ষার খাতায় কলম দিয়ে লিখতে হত৷ তখনও ফাউন্টেন পেন বাজারে আসেনি৷ আমরা নিব হ্যাণ্ডেল আর দোয়াতের কালী ব্যবহার করতাম৷ নিব হ্যাণ্ডেল হল পালকের উন্নত সংষ্করণ৷ একটা লম্বা কলম যার মাথায় পিতলের একটা ছোট নিব ঠুঁষে দেওয়া হত, তা দোয়াতের কালিতে চুবিয়ে একটু ছেড়ে তার পর লিখতে হত৷ অতিরিক্ত কালি খাতায় পড়লে চোষ কাগজ দিয়ে তা চুষে নেওয়া হত৷ পরীক্ষার সময় কালী আর চোষ কাগজ স্কুল থেকে দেওয়া হত৷ বেশির ভাগ ছাত্র ছাত্রীই হাতে মুখে, বই খাতায়, কাপড়ে কালি মেখেই বাড়ী ফিরত৷ আমার ক্লাশে দক্ষীন পাড়ার বদরোদ্দোজা ওরফে বদু পড়ত৷ কোন এক পরীক্ষায় প্রায় শেষ বেলায় তার খাতার ওপর দোয়াত উল্টে গেল তা বেঞ্চ থেকে গড়িয়ে তার জামা প্যান্ট ভরে গেল মোছামুছি করতে গিয়ে তার চেহারাই বদল হয়ে হৈ হৈ শুরু হয়ে গেল৷ রাম প্রসাদ মাষ্টার মশাইয়ের এক তাড়ায় সব চুপ হল৷ সারা স্কুলের ছাত্র ছাত্রীরা উনাকে খুব ভয় পেত৷ কোন ছেলে স্কুলে না আসলে উনি খোঁজ নিতেন, প্রয়োজনে বয়ষ্ক ছেলেদের পাঠিয়ে চ্যাংদোলা করে আনিয়ে নিতেন৷ তবে পড়াতেন খুব যত্ন নিয়ে৷ শিক্ষা জীবনে যাদের শিক্ষকতা ভাল লেগেছে উনি তাদেরই একজন৷ এভাবেই দ্বিতীয় শ্রেনী শেষ করে প্রথম হয়ে তৃতীয় শ্রেণীতে উঠলাম৷
৩০/৩৫ হাত লম্বা মাটির দেওয়াল আর বাঁশের কাঠামোয় টালীর ছাউনী যার মাঝে কাঠের পার্টিশান দিয়ে তিনটি ক্লাশরুম হয়েছে৷ পাশেই আর একটা লম্বা পাকা দেওয়ালের উপর টিনের ছাউনি দিয়ে তিনটি রুম, যার একটা অফিস, একটা চতুর্থ শ্রেণীর জন্য আর একটিতে ছিল পোষ্ট অফিস৷ শুনলে অবাক হতে হয়, মাটির ঘর গুলি কবে তৈরী হয়েছে আমার জানা নেই৷ শেষ বার যখন ২০০৫ সালে গিয়ে ছিলাম দেখেছি সব কিছু ঠিক আগের মতই আছে৷ শুধু মাষ্টার মশাইরা বদল হয়েছেন৷
তৃতীয় শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় বাজারে ফাউন্টেন পেন বা ঝর্ণা কলম এল৷ আমাদের গ্রামে তখনও আসেনি তবে খবরটি এসে আমাদের অবাক করে দিয়েছিল৷ স্কুলে খবর রটে গেল, গটুর পোলের কাছের মনোহারীর দোকানে নতুন কলম পাওয়া যায় যাতে কালি ভরে রাখা যায়৷ বার বার দোয়াতে ডোবাতে হয়না৷ দাম সাড়ে ছয় আনা৷ আনা সম্পর্কে যাদের ধারণা নেই তাদের জন্য বলি, তখন চার পয়সায় এক আনা হত আর ষোল আনা বা চৌষট্টি পয়সায় এক টাকা হত৷ সেই বৎসরই ভারতে প্রথম নয়া পয়সা নাম নিয়ে আজকের দশমিক পয়সার প্রচলন ঘটে৷ চকচকে তামার ছোট ছোট পয়সা পোষ্ট অফিসে প্রথম আসে, আমরা এক আনায় ছয়টা কিনতাম৷ পরে বাজারে চালু হয়৷ হাঁ কলমের কথায় ফিরে আসি, আমাদের গ্রামের পুবে প্রায় দুই আড়াই মাইল দূরে ছোট একটি নদী, যার নাম কুন্তী নদী৷ তারই উপর নতুন ব্রীজ হয়েছে, রাস্তা পাকা হচ্ছে৷ সেখানের দোকানেই ঐ কলম পাওয়া যায়৷ আমাদের জন্য ঐ সাড়ে ছয় আনাও বিরাট ব্যাপার ছিল৷ কি ভাবে যোগাড় হয়েছিল মনে নেই তবে কয় বন্ধু মিলে পায়ে হেঁটে কলম কিনে এনেছিলাম৷ আগের কলম পকেটে রাখা যেত না৷ এ কলম বেশ রাখা যায়৷ কিন্তু সমস্যা হল লেখার সময় প্যাচের গোড়াদিয়ে কালি বার হয়ে হাতে কালি লাগে৷ তা ভেসলীন বা সাবান দিয়ে বন্ধ করতে হত৷ অবশ্য বেশী দিন এ সমস্যা ভোগ করতে হয়নি; বাজারে কলমের টিউব এল যা ড্রপারের মত কালি ভরে নিত আর লিক করত না৷ এর পর আরও ভাল ভাল দামী দামী কলম একের পর এক বাজারে আসতে লাগল৷ উইংসং,পাইলট, ফিদারের নাম শুনেছি অনেক পরে৷ কালি সহ দোয়াত কিংবা খালি দোয়াত কিনে দু পয়সায় বড়ি কালি কিনে গুলে নেওয়া যেত৷ অনেক সময় হারিকেনের চিমনীর কালি গুলেও লেখা হত৷
ঐ বৎসরই তিন গ্রামের মাঝখানে যেখানে ধান কাটার পর মাসভর যাত্রা পালা আর জুয়ার আসর বসত, তবলীগ জামাতের বদৌলতে একটা মাদ্রাসা গড়ে উঠল৷ তিন গ্রামের ছেলেমেয়েরা ছাড়াও দূর দূরান্তের ছেলেরাও মাদ্রাসায় ভর্তি হল৷ তাদের জন্য বিনা পয়সার বোর্ডিং ও চালু হল৷ গ্রামে মিলাদ মাহফীল ওয়াজে একরত্তি ছেলে মেয়েদের ক্বেরাত, না’ত, হামদ পড়া দেখে আমারও তাদের মত হতে মন চাইত৷ তাই ক্লাশ থ্রী পাশ করে নিজেই একদিন মাদ্রাসায় হাজির হলাম৷ আমার বাড়ি থেকে মাদ্রাসা মাঠের উপর দিয়ে ৮/১০ মিনিটের পথ, তবে বর্ষায় বড় রাস্তা ঘুরে প্রায় এক কিলো মিটার পথ হত৷
এ অঞ্চলের মুসলমানেরা প্রায়ই ছিলেন অবস্থাপন্ন৷ চাষ বাষ আর কারও কারও দোকাদারী এই ছিল পেশা৷ আশ পাশের অধিকাংশ হিন্দু ও সাঁওতালরা ছিল শ্রমিক বা দিন মজুর৷ এই অবস্থাপন্ন মানুষ গুলোই মাস ব্যাপী যাত্রা পালার আর জুয়ার আসর বসাতেন৷ ঐ তিন গ্রামের মাঝখানে, যেখানটায় মাদ্রাসা গড়ে উঠেছে৷
তখনকার দিনে যাত্রাদলে কোন মেয়ে শিল্পী থাকত না৷ পুরুষদের দিয়েই মহীলা পাট করানো হত৷ আর আমরা ছোটরা বটপাতার মুকুট আর তালের বেল্লো বা কাঠের তলোয়ার বানিয়ে পাড়ায় তাদের মত রাজা উজির সেজে মহড়া দিতাম৷
মুসলমান প্রধান গ্রাম, তাই মসজিদ সব গ্রামেই ছিল৷ নামাজ রোজা সাথে পীরের কাল্পনীক আস্তানায় মাটির ছোট ছোট ঘোঁড়া সাজানো আর সেখানে সন্ধ্যাবাতি দেওয়া, মানত করা, মহরমের সময় তাজিয়া বানিয়ে মাতম, আকর্ষনীয় লাঠিখেলা সহ বিভিন্ন খেলার প্রচলনও ছিল৷ তাবলীগ জামাতের বদৌলতে শেরেকী কার্যকলাপ বন্ধ হয়ে মানুষের মাঝে আমূল পরিবর্তন এল৷ ৫/৭ বছরের মধ্যে আমাদের পাড়ার নয় জন হজ্জ্ব করে এলেন৷ তখনের হজ্জ্ব এত সহজ ছিলনা৷ সংসারের মায়া ত্যাগ করে, বাসে ট্রেনে ৩/৪ দিনে বোম্বে, সেখান থেকে পানির জাহাজে যাতায়াত৷ তিন চার মাসের ব্যাপার ছিল৷
কথায় কথায় অন্যদিকে চলে গিয়েছিলাম৷ আবার নিজের কথায় ফিরে আসি, ক্লাশ থ্রীতে কেবল উঠেছি এমন এক দিন স্কুলে যাবার আগেই বাড়ির দরজায় দেখি হেড মাষ্টার জনাব মুজিবর রহমান আর রাম প্রসাদ মাষ্টার মশাই হাজির৷ ভয়ে জড়সড় হয়ে গেলাম৷ ভাবলাম আমার নামে কোন নালিশ আছে, আজ আর পাঁচনবাড়ি থেকে রেহাই নেই৷ আমার আব্বা আবার অন্যের ছেলের অন্যায় দেখতে পায়না৷ সব অন্যায় আমাদের আর শাস্তির কোন মাফও নেই৷ আব্বার শাস্তি ঠেকাবার কেউ আমাদের ছিলনা৷ এখন ভাবি সেটাই ঠিক ছিল নয়ত অন্যায় আদরে বয়েই যেতাম৷ আমার ধারণা ভুল ছিল যখন শুনলাম ওনারা আমার বড় ভাইয়ের ব্যাপারে এসেছেন৷
ব্যাপারটা হল, আমার বড় ভাই স্কুলের সেরা ছাত্র ছিল৷ ক্লাশ ফোর পাশ করার পর তার লেখা পড়া বন্ধ হল৷ কারণ আজও ভারতে প্রাইমারী স্কুল ক্লাশ ফোর পর্যন্ত৷ এর পর হাই স্কুল যা বহু দূরে দূরে৷ আমার আব্বার সংগতি ছিলনা দৈনীক বাস ভাড়া দিয়ে বা একটা সাইকেল কিনে দিয়ে সাথে বই খাতা আর স্কুলের বেতন দিয়ে ছেলে পড়ানোর৷ ইতিমধ্যে গ্রামের বড় রাস্তাটা পাকা হয়ে বাস চলাচল করছে৷ উনাদের দাবী ছিল আমার আব্বা ছেলেকে ছেড়ে দেবে আর উনারা সব দায়িত্ব নিয়ে স্কুলে ভর্তী করে দেবেন৷ বলে রাখা ভাল আমরা দু ভাইই হাজী মুহসীন ফাণ্ডথেকে স্টাইপেণ্ড পেতাম৷ আমার প্রন্তিক চাষী আব্বা এত সুযোগ পেয়েও ছেলেকে ছাড়তে পারেননি, কারণ সে এখন বড় হয়েছে চাষের কাজে সাহায্যের জন্য তাকে প্রয়োজন৷
বিষয়: বিবিধ
১৫৩২ বার পঠিত, ৩০ টি মন্তব্য






































পাঠকের মন্তব্য:
Hopes...joys... Fears...And painting miseries!!
Thanks for sharing those wonderful days
With us.
জীবন কাহানি লিখতে গেলে,
লিখা এক রাস্তা থেকে অন্য রাস্তায় পা বাড়াবে ই, এটা ই স্বাভাবিক।
মাঝে মাঝে বাস্তবতা এত কঠিন হয়ে পরে যে, পুথিগত বিদ্যা শিক্ষা তখন মুল্যহীন হয়ে পরে।
ছেড়া পাতা পড়ে অনেক ভাল লাগল ধন্যবাদ চাচাজান ।
সত্য বলেছেন। আজকাল পাণ্ডিত্য বেড়েছে কিন্তু সে পাণ্ডিত্য আবার উপরে বর্ণিত ব্যক্তিদের কাছ থেকেই নেওয়া।
এখন যত আদিখ্যেতা বাবা মায়েদের, সন্তানকে স্কুলে পড়ানো নিয়ে, অথচ বাবা মা কখনো আমাদের স্কুল মাদ্রাসায় যাননি।
কোথাও কোন মুসলমান বিধর্মীদের দ্বারা অত্যাচারিত হলে তাতে কষ্টের সীমা থাকেনা, অথচ এই মুসলমানগুলোর শ্রী দেখলে বুঝা যায় তারা কতটা সমবেদনা পাওয়ার যোগ্য।
ধারাবাহিক যখন লিখছেন, তখন লেখা এত বড় হবে কেন!!!!!!!!!
গ্রাম বাংলার কথাগুলো এইরকম সাধারণ ভাবে তুলে ধরলেই পড়তে ভালো লাগে।
শেখ ভাই এগিয়ে চলেন
না, আমনের সাথে আমি নাই
আমাদের স্কুল যুগে মানে ১৯৮৯ তে আমাদের স্কুলটিও উপর টিন ও সাইটে বাশের বেড়ার ছিল, অল্প হলেও স্কুলের পাঠদানের সিষ্টেম কিছুটা মিল পেলাম, তখনো তেমন প্রাইভেট কোচিং সিষ্টেম ছিল না। হয়তো শহরে ছিল, কিন্তু আমরা একদম গ্রামের লোকতো! আমাদের বাড়ীতে এখনো বিদ্যুৎ নেই, টিভি, টেপ, রেডিও নেই।
ইতিমধ্যে মোবাইল এসে হাজির, তাই দু'এক পরিবারের সৌরবিদ্যুতের ব্যবস্থা করেছেন, আর সব মোবাইল এদের বাড়িতে মিলন মেলায় পরিণত হয়।
টাকার অভাব আর কৃষিকাজে সহযোগীতার প্রয়োজনে আমাদের এলাকায় এখনো ক্লাস ফাইভ এর পর তেমন যাওয়া হয় না। মেট্রিক পাশ করা হাতেগোনা দু'চার জন পাবেন হয়তো!
ভন্ড পীরদের ভন্ডামী তাজিয়া, মিলাদ ইত্যাদি এখনকার যুগে অচল বলা চলে, আমাদের এলাকায় এগুলো নেই।
তাবলীগের অবদান শুনে সত্যিই মনটা আনন্দে ভরে গেল। জাযাকাল্লাহ খাইর চাচাজান। অনেক অনেক শুভ কামনা রইল।
হ্যাঁ ভাই, তবলীগ জামাতের অবদান অবশ্যই আছে৷ কিন্তু তারা যে বছরের পর বছর সেনা বাহিনীর মার্ক টাইম করার মত একই জায়গায় লেফ্ট রাইট করেই চলেছে৷ সামনে এ্যভান্স হচ্ছেনা এখানেই সমস্যা৷ আর সাথে আছে কোরআন হাদীশ অপেক্ষা অন্য কিতাবকে প্রাধান্য দেওয়া আর প্রকৃত জিহাদ বাদ দিয়ে লোটা কম্বলের মাঝে আটকে থাকা৷ আপনাকে অনেক ধন্যবাদ৷
কী যে আনন্দের ছিল সে দিনগুলো!!
আমার আম্মারও এমন হয়েছিল, কোন ব্যবস্থা করাই সম্ভব হয়নি আম্মার বাবা/দাদার পক্ষে!
আপনার অনেক কিছুই আমার স্মৃতিতে "কমন পড়ছে" দেখি!
গত কয়েক দিন মনটা খুবই খারাপ । সৌদিআরবে আমার কম্পানীতে একটু সমস্যা চলছে । প্রায় ৬ মাস যাবত বেতন দিতেছেনা পারিবারিকভাবে আন্ডার প্রেসারে আছি ছুটিতে যেতে কিন্তু আইডি কার্ড রিনু হচ্ছেনা তাই ব্লগে আপনার সুন্দর লেখা পড়ার জন্য আসতে পারি নাই
চমতকার
আপানকে অনেক ধন্যবাদ
মন্তব্য করতে লগইন করুন