সেরা প্রবাসীদের সেরা প্রাপ্তি!!!!
লিখেছেন লিখেছেন বিপ্লবী ০৬ জুন, ২০১৩, ০২:৪৬:০৪ রাত
মধ্যপ্রাচ্যে বসবাসরত বাংলাদেশিদের একটি সাধারণ নাম ‘প্রবাসী শ্রমিক’। এই শ্রমিক নামে আমাদের অভিহিত করেন রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তি থেকে শুরু করে কিছু তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরাও। আমার অনেক লেখায় এই আপত্তিকর অপবাদ থেকে অব্যহতি পাওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা বহুবার করেছি। আপাতদৃষ্টিতে তেমন ফল আমরা প্রবাসীরা পাইনি।
সৌদি আরবের বিশিষ্ট মানবতাবাদী ব্যক্তি, বুদ্ধিজীবী ও বহুল প্রচারিত সৌদি গেজেট পত্রিকার সম্পাদক মি. তারেক আল মায়না বিদেশিদের নিয়ে যত লেখা লিখেছেন সব লেখায় তিনি সৌদি আরবে অবস্থানরত সবদেশের প্রবাসীদের ‘অতিথি কর্মজীবী’ বলে সম্বোধন করেছেন।
ফিলিপাইন তার দেশের সকল প্রবাসী নাগরিকদের ‘সার্ভিস কর্মজীবী’ বলেই ক্ষান্ত হন না তাদের পাসপোর্টে পেশা হিসেবে সার্ভিস সেক্টর উল্লেখ কর থাকেন। সম্মান নিজের ঘর থেকেই শুরু হওয়া উচিত। আমাদের ‘আতেল মার্কা’ কর্তাব্যক্তিদের বোধোদয় আশা করি হবে।
সৌদি আরবের শিক্ষার সূতিকাগার নামে খ্যাত কিং সৌদ বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫৭ সালে যার বর্তমান শিক্ষার্থী সংখ্যা ৩৮ হাজার ৮৭৫ জন। বিশ্বের ৭২টি দেশ থেকে আগত শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন এখানে। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ৪ হাজার ৮৫০ জনের মতো শিক্ষক/শিক্ষিকা ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োজিত আছেন। ছাত্রীদের জন্য রয়েছে সম্পূর্ণ আলাদা ক্যাম্পাস ও ছাত্রী নিবাস।
মনোরম এবং প্রাকৃতিক পরিবেশে ২ হাজার ২২৪ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত এই কিং সৌদি বিশ্ববিদ্যালয়। কিং সৌদ বিন আব্দুল আজিজ এই ঐতিহ্যবাহী বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। আরবি ও ইসলামি বিষয় ব্যতীত অন্য সব জ্ঞানার্জনের মাধ্যম ইংরেজি ভাষা।
৩০ মে ২০১৩ বৃহস্পতিবার আমি একটি বিরল অনুষ্ঠানে যোগদান করে সত্যিই নিজেকে গর্বিত অনুভব করছি। অনুষ্ঠানটির আয়োজক ছিলেন কিং সৌদ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যয়নরত বাংলাদেশি ছাত্ররা। এই সমস্ত ছাত্ররা মেধার ভিত্তিতে বৃত্তি নিয়ে বাংলাদেশ থেকে এসেছেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রফেসর যিনি উচ্চতর ডিগ্রির জন্য এখানে এসেছেন।
এই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কলারশিপ বিভাগের উদ্যোগে বিদেশি ছাত্রদের নিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতি বছর তাদের নিজ নিজ দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, পোশাক, পর্যটন, খাবার ইত্যাদি মেলার মাধ্যমে তুলে ধরার সুযোগ দেওয়া হয়।
তারই ধারাবাহিকতায় এই বছরের ৬ই এপ্রিল থেকে সপ্তাহব্যাপী মেলায় ২৫টি দেশের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে মেলায় বাংলাদেশ প্রথম স্থান লাভের গৌরব অর্জন করেন।
এই মিলন মেলাকে আরও গুরুত্ববহ করে তুলেছে কিং সৌদি শিক্ষাদানরত বাংলাদেশি শিক্ষক ড. কাজী মহসীন, ড. কামরুজ্জামান, ড. সাইফুল ইসলাম, ড. ইউসুফ আলী, ড. মোহাম্মদ গোলাম মর্তুজাসহ প্রমুখদের উপস্থিতি।
আমার বলতে দ্বিধা নেই যে আমি দীর্ঘ দিন যাবৎ একটি ইউরোপিয়ান দূতাবাসে কর্মরত আছি এবং প্রবাসীদের সমস্যা-সম্ভাবনা নিয়ে লেখা-লেখি করি। এমনকি বাংলাদেশের সুনাম রক্ষার জন্য সৌদি আরবের পত্র-পত্রিকায় লেখার চেষ্টা করে যাচ্ছি। লেখা-লেখির সুবাদে অনেক অনুষ্ঠানে যাওয়ার সৌভাগ্য হয় বা হয়েছে এবং অনেক শিক্ষিত লোকদের মিলন মেলায় যোগ দিয়েছি কিন্তু বিদেশের মাটিতে এক সঙ্গে একই অনুষ্ঠানে এতোজন শিক্ষাগুরুদের সামনে আমি আমার প্রবাস জীবনের প্রথম উপস্থিত হতে পেরেছি। আমি সত্যি অভিভূত।
এই সমস্ত মেধাবী ছাত্রদের অনুষ্ঠানে এবং সম্মানিত শিক্ষাগুরুদের উপস্থিতি এবং মেলাতে এই শিক্ষাগুরুদের পরামর্শ সক্রিয় সহযোগিতায় সম্ভব প্রথম স্থান লাভ করা।
আসলে আমরা এই বাংলাদেশ দেখতে চাই প্রবাসের মাটিতে। রিয়াদের সকল বাংলাদেশি কলম সৈনিক বিশেষ করে যারা প্রবাসীদের নিয়ে লেখা-লেখি করেন যেমন, অহিদুল ইসলাম, মোহাম্মদ আল-আমীন, লোকমান বিন নুর হাশেম, মোহাম্মদ আলী, মামুনুর রশীদ, শাহপরান মিঠু, সাগর চৌধুরীসহ সবাইকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
লেখা-লেখির মাধ্যমে আমাদের জাতির ভাল দিকগুলো তুলে ধরে আমরা প্রমাণ করবো আসলেই আমরা কর্মঠ ও সৎ বাংলাদেশি। এই পরিচয়ই আমরা বিশ্বের দরবারে তুলে ধরবো এবং সফল আমরা হবই, অনেক ক্ষেত্রে হয়েছি যার প্রমাণ আমি দিতে পারবো।
আমার পুরানো লেখার একটি পুনরাবৃত্তি করে আমার আজকের লেখা শেষ করবো।
কিং সৌদ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০৮ সাল থেকে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী বাংলাদেশের অহঙ্কার ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নামে একটি চেয়ার আছে। যা বাংলাদেশের জন্য এক বিরল সম্মানের বিষয় এবং ড. ইউনূস এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সম্মানিত ভিজিটিং প্রফেসর।
আব্দুল আজিজ মির
Click this link
বিষয়: বিবিধ
১৬০৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য






































পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন