স্বাধীনতার ৪২তম বছরে এসে প্রশ্ন জাগে, স্বাধীন হয়ে আমরা কী পেলাম!
লিখেছেন লিখেছেন পেন্সিল ২৬ মার্চ, ২০১৩, ১২:১৮:০২ দুপুর
..........
....................
স্বাধীনতার ৪২তম বছরে এসে প্রশ্ন জাগে, আমাদের জন্য স্বাধীন হওয়াটা কতটুকু দরকার ছিল এবং স্বাধীন হয়ে আমরা কী পেলাম!
যে স্বাধীনতা আমাকে আমার ধর্মের কথা বলতে বাঁধা দেবে,
যে স্বাধীনতা আমার বিবেককে সোচ্চার হতে দেবে না ভিনদেশী কর্তাদের পদলেহনের বিরুদ্ধে,
যে স্বাধীনতা আমাকে ক্ষমতার বর্মে আবৃত অমানুষদের ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত্র করে তুলবে প্রতিনিয়ত,
যে স্বাধীনতা দুগ্ধপোষ্য শিশু নামিরাকে মায়ের আদর থেকে বঞ্চিত করবে,
যে স্বাধীনতা মুকাদ্দাস, ওয়ালিউল্লাহদেরকে গুম করবে,
যে স্বাধীনতা ইয়াহিয়া, সেলিমদের জালিমের কারাগারে বন্দি করে রাখবে, যে স্বাধীনতা ইমরান, আবিদ, মুন্নাদেরকে মায়ের বুক থেকে ছিনিয়ে নেবে
যে স্বাধীনতা ৫ই ফেব্রুয়ারী, ২৮শে ফেব্রুয়ারী, ২৮শে অক্টোবরের মতো বর্বর ইতিহাস সৃষ্টি করবে -----সে স্বাধীনতা আমার দরকার নেই। কী করবো এই স্বাধীনতা দিয়ে?
একটা স্বাধীন দেশে যদি বাক্-স্বাধীনতাই না থাকবে, নিজ গৃহে পরবাসী হয়ে থাকতে হবে তাহলে কি দরকার ছিল এত এত তাজা জীবন দিযে পাকিস্তানীদের থেকে আলাদা হওয়ার? পরাধীন থেকে পাকিস্তানীদের শাসন মেনে নেয়াই কি শ্রেয় ছিল না? তবে স্বাধীনতা আর পরাধীনতার মাঝে পার্থক্য থাকলো কোথায়?
স্বাধীনতা প্রাপ্তি উত্তেজনাময় ও আনন্দদায়ক। দায়িত্বহীনভাবে স্বাধীনতা ভোগ করা দূর্গতি ও কলঙ্কের সূত্রপাত করে। এবং স্বাধীনতা হারানোর মধ্য দিয়ে দাসত্বমূলক গ্লানি ও যাতনার অভিশাপে আড়ষ্ট হয়ে আসে জীবন।
আমাদের স্বার্থচিন্তা ও গৃহবিবাদ আমাদেরকে কখনই রক্ষা করতে পারবে না। দশের স্বার্থ নষ্ট হওয়ার সময় চুপ করে থাকলে নিজের স্বার্থটাও আর ধরে রাখা যায় না। জাতির দুশমন ও গাদ্দারদের হাত থেকে দশকে বাঁচাতে না পারলে ঘরের চার দেয়ালের অধিকারটুকুও তারা যেকোন সময় ছিনিয়ে নিতে পারে।
সত্যকে ধারণ করতে না পারলে সামনে উত্তরণের পথ খোলা অসম্ভব। একটা জাতিকে পরিচালিত করার দায়িত্ব যাদের ওপর ন্যাস্ত তাদের মধ্যে যদি এ উপলব্ধি না থাকে তাহলে জাতীয় ব্যর্থতা বাড়বে। আর এ ব্যর্থতাই একদিন আমাদের জাতীয় অস্তিত্বকে বিপন্ন করে তুলবে।
গণ আন্দোলন যখন একবার শুরু হয়ে গেছে তখন একে দমানোর কোন অস্ত্র সরকারের নেই। আমরা একবার স্বাধীনতার জন্যে যুদ্ধ করেছি। এবার না হয় শান্তির জন্য যুদ্ধ করবো। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে, গণযুদ্ধ কখনো পরাজয় মানে না। যুদ্ধের স্বাদ যত তিক্তই হোক, প্রিয়জনের বিয়োগ ব্যথা যত বড় মর্মান্তিকই হোক, ধ্বংসযজ্ঞ যত বড় ভয়ঙ্করই হোক না কেন জনগণই পরিশেষে বিজয়ী হয়। দেশপ্রেম যখন নিঃস্বার্থতার মাপকাঠিতে পরিপক্ব হয়, তখনই পরাধীনতার শৃংখল চিরতরে নিশ্চিহ্ন করে দেবার অভিপ্রায়ে জাতি জেগে ওঠে।
সঙ্ঘাতের রাজনীতি থেকে দেশকে মুক্ত রাখার জন্য প্রত্যেকেই প্রত্যেকের অবস্থান থেকে যথাযথ ইতিবাচক ভূমিকাটাই পালন করবেন, সেটাই এ দেশের সাধরণ মানুষের স্বাভাবিক প্রত্যাশা।
বিষয়: বিবিধ
২০৫১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য






































পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন