প্রাপ্তি অপ্রাপ্তি
লিখেছেন লিখেছেন মোঃ ওহিদুল ইসলাম ২৫ নভেম্বর, ২০১৪, ১১:৫৪:২৪ সকাল
কামাল মাগরিবের পর তার ছাত্রীর বাড়িতে যায়। টানা দুই ঘন্টা পড়ায়। এখানে পড়াতে খুব অস্বস্তি হয় তার। পড়ানো শেষ না হওয়া পর্য্ন্ত ছাত্রী রুবীর মা একটা চেয়ার নিয়ে কাছাকাছি বসে থাকেন। ছাত্রীর মায়ের এ বাড়তি খবরদারি কামাল এর কাছে অবমাননাকর ও চরম অস্বস্তিকর মনে হয়।মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয় বলে, খালামনি আপনার মেয়ের সাথে প্রেম করা আমার উদ্দেশ্য নয়, উদ্দেশ্য পড়ানো। কিন্তু বলা হয়না। অস্বস্তি নিয়েই প্রতিদিন পড়িয়ে যায়। অবশ্য এতদিনে ব্যাপারটা গা সওয়া হয়ে গিয়েছে। প্রথমদিককার মতো অতটা খারাপ লাগেনা আর এখন। তবে অন্য সব টিউশনির তুলনায় এখানে টাকাটা ভালো পায়, মাসে সাত হাজার টাকা । অন্য একটি টিউশনি ছেড়ে এটি নিয়েছে সে। ছাত্রীর মায়ের খবরদারি পছন্দ না হলেও কিছু করার নেই কামালের। এ দূর্মূল্যের বাজারে টিউশনি ছেড়ে দেয়া সম্ভব নয়। নিজে চলার পাশাপাশি গ্রামের বাড়িতে টাকা পাঠাতে হয় তাকে নিয়মিত। এটা ছাড়াও আরো দুটি টিউশনি করে সে।
ছাত্রীর মায়ের এ খবরদারির আসল কারণটি কামাল জানতে পেরেছে। বড় মেয়ের অপরাধে ছোট মেয়েকেও একদম বিশ্বাস করেননা মহিলা। বড় মেয়েটি হাউজ টিউটর এর সাথে প্রেম করে ভেগেছিল, সাথে নিয়েছিল মায়ের দশ ভরি সোনা আর ক্যাশ দুই লাখ টাকা। চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে পুলিশ দিয়ে ধরে আনা হয়েছিল দু জনকেই। কিন্তু মেয়ে সুইসাইড এর হুমকি দেয়। শেষ পর্য্ন্ত মেনে নিলেও খুব কড়াকড়ি আরোপ করা হয় ছোট মেয়ের উপর। ছোট মেয়ের জন্য অবশ্য মেয়ে টিচার পাওয়া গিয়েছিল। দুই মাসের মাথায় বিয়ে হয়ে যায় সে মেয়ের। এরপর যে মেয়ে এসেছিল সে ছিল মস্ত ফাঁকিবাজ। দুই দিন আসেতো তিনদিন খবর থাকেনা। একদিন বিনা নোটিশে এক সপ্তাহের জন্য হাওয়া। পাজি মেয়ে হাতের মোবাইলটিও বন্ধ করে রেখেছিল। শেষমেষ কামালকে নিয়োগ করা হয় এখানে।
মনটা বেশ খারাপ হয়ে আছে আজ কামালের। ছোটবোনের মেয়ে হয়েছে। মা জরুরী কিছু টাকা পাঠানোর জন্য ফোন দিয়েছিল। প্রথম মামা হলো কামাল, স্বভাবতই উৎফুল্ল। কিন্তু ভাগ্নিকে দেয়ার মতো সে রকম কিছুই নেই তার। এই ভেবে মনটাও বিষণ্ন। মায়ের ফোন পেয়ে আসাদ ভাই হতে পাঁচ হাজার টাকা ধার এনেছিল। আসাদ ভাই তাদের এলাকার। বিপদে আপদে আসাদ ভাই হতে টাকা পয়সা ধার নেয় কামাল। আসাদ ভাই হতে টাকাটা নিয়ে রিক্সায় বাসায় ফিরছিল কামাল। রিক্সায় চড়ার মত বিলাসিতা খুব কমই করে সে। আজ আর ভিড়ের মধ্যে ঠেলাঠেলি করে বাস ওঠতে ইচ্ছে করছিলনা, এছাড়া পকেটে এতগুলো টাকা।
রিক্সা একটু সামনে ফাঁকামতো জায়গায় আসতেই হুট করে এক লোক কামালের রিক্সায় ওঠে পড়ে। খুবই হকচকিয়ে যায় কামাল। কিন্তু তাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই লোকটি নিজেকে ডিবি পুলিশ হিসেবে পরিচয় দেয়। তাড়াতাড়ি পকেটে যা আছে দিতে বলে। নইলে জঙ্গি হিসেবে গ্রেফতার করে চালান করে দেয়ার ভয় দেখায়। কয়েকদিন ধরে সেভ করেনি কামাল, মুখে খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি। এটারই সুযোগ নিয়েছে বোধ হয় এ পুলিশ ব্যাটা। বুক পকেটে সাতশ টাকা ছিল। সেটা দিয়ে দেয়। লোকটা চলে যায়, কামাল ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে থাকে।
বাসায় ফিরে কিছুক্ষণ দাবা খেলে পাশের রুমের কামরুল ভাই এর সাথে। কামরুল ভাই বিবাহিত ব্যাচেলর। মানে বউ থাকে গ্রামের বাড়িতে। উনি ম্যাচে থাকেন। কম বেতনে চাকরি করেন, শহরে বউ রাখার মত সঙ্গতি নেই। মাস শেষে দু একদিনের জন্য বাড়ি যান। সব মাসে যাওয়াও হয়না।
‘টিউশনি করে আর কয়কাল। চাকরি বাকরির চেষ্টা কর মিয়া।’ কামরুল ভাই বলেন।
‘চেষ্টা কি আর করছিনা ভাই। মাস্টার্স্ পাশ করলামতো দেড় বছর হয়ে গেল। চাকরি হয়েছিলো দু একটা। কিন্তু বেতন এত কম যে তার চেয়ে টিউশনিতে ভালো আছি। তিনটা টিউশনি মিলে বার-তের হাজার পাচ্ছি। কয়েকটি কলেজে ইন্টারভিউ দিয়েছিলাম। এক জায়গায় হয়েওছিল, কিন্তু ডোনেশন চায় মোটা অংকের। অথচ পরিচিত এক ছেলের সে কলেজে চাকরি হলো যার রেজাল্ট আমার তুলনায় বেশ খারাপ। স্থানীয় এমপির সাথে খাতির ছিল তার। কলেজ কর্তৃপক্ষ এক প্রকার বাধ্য হয়েই তাকে চাকরি দেয়।’
‘আর কোথায় ট্রাই করেছো?’
‘ব্যাংকগুলোতে ট্রাই করছি। কয়েকটিতে রিটেনে উতরে গেছি। দুটি প্রাইভেট ব্যাংকে ভাইবাও দিয়ে আসলাম। কিন্তু শেষ পর্য্ন্ত হয়নি। লবিং আর টাকা ছাড়া এদেশে কিছু হয়না।’
‘আমার কেন যেন মনে হচ্ছে তোমার খুব ভালো একটা চাকরি হবে।’
‘আপনার মুখে ফুলচন্দন পড়ুক কামরুল ভাই। সবার আগে আপনাকে মিষ্টি খাওয়াবো।’
‘শুধু কি মিষ্টি খাবো? তোমারে মিয়া আমার বায়েরা ভাই বানামু। হাহাহা।’
‘হাহাহা। আপনার সুন্দরী শ্যালিকা আছে আগে বলবেনতো। হাহাহা।’
এ সময় মায়ের ফোন আসে আবার। টাকার জন্য তাগাদা দিচ্ছেন বেশ।
‘কত দিলে হবে মা? বেশি দিতে পারবোনা এখন।’
‘খোকা, চার আনার একটা চেইন দিতেও বারো তের হাজার টাকা লাগে। এর চেয়ে কম কিছু দিলে কি ইজ্জত বাঁচে?’
‘আমি হাজার পাঁচেক পাঠাচ্ছি। চেইন দেয়ার দরকার নেই এখন। একটা ভালো চাকরি বাকরি পেয়ে নিই। তখন আরো ভালো কিছু দেব। তুমি নাসিমাকে বুঝিয়ে বলো।’
‘পিটিয়ে আজ তোর ছাল তুলে ফেলবো।’ চুলের মুঠি ধরে কাঠের স্কেল দিয়ে রুবীকে পিটাতে পিটাতে বলছেন তার মা সালমা খান। দশ মিনিট ধরে পিটুনি চলছে। হাতের দু জায়গায় ফেটে রক্ত বের হচ্ছে। কিন্তু মায়ের থামার নাম নেই। এই সময় বাহির হতে বাবা এসে মেয়েকে উদ্ধার করেন।
‘কি হয়েছে? এসব কি? মেয়েটার হাত ফেটে রক্ত বের হচ্ছে। থামো বলছি।’ স্ত্রীর হাত হতে স্কেল কেড়ে নেন হাসান সাহেব।
‘তুমি লাই দিয়ে মেয়েকে নষ্ট করছো। অতি আদর পেয়ে বড়টা বাঁদর হয়েছে। এখন আমাদের ছেড়ে এক বাদাইম্মা পোলার লগে সংসার করছে। কয়দিন পর এটাও ভাগবে।’
‘কি হয়েছে বলোইনা।’
‘মেয়ে তোমার সেয়ানা হয়েছে। প্রেমপত্র লিখে, বুঝেছ এবার? বই এর ভিতর ৫ পৃষ্ঠার প্রেম পত্র। ভাবছে আমার চোখকে ফাঁকি দিবে। এত সোজা? এ টিচারকেও বিদেয় করবো। ছেলেটা ভালো। কিন্তু আমার মেয়েইতো খারা¬¬প। সে নামবিহীন এই প্রেমপত্র নিশ্চয়ই টিচারকে দিবে। নাহলে বই এর ভিতরে রেখেছে কেন? একটা মেয়ে টিচার নিতে হবে যে কোন ভাবে। প্রয়োজনে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে ইন্টারভিউ নেব।’
‘যা ভালো মনে হয় কর। তবে এভাবে পিটিয়ে আহত করা কোন সমাধান নয়।’
টিউশনিতে গিয়ে হোঁচট খায় কামাল। রুবী পড়তে আসেনি। অনেকক্ষণ পর কাজের ছেলে এসে নাস্তা দিয়ে যায়, অপেক্ষা করতে বলে। একটু পর রুবীর মা আসেন, হাতে একটি মোটা খাম। খামটি এনে সরাসরি কামালের হাতে দিয়ে সামনে বসেন তিনি। কামাল হকচকিয়ে যায়। এ মাস এখনো শেষ হয়নি, এখনই খাম। তার মানে টিউশনি শেষ! কিন্তু খামটি এত মোটা কেন?
‘এখানে তোমার তিন মাসের বেতন আছে।’
‘জ্বি বুঝলামনা।’
‘কামাল তুমি ছেলেটা বেশ ভাল। কিন্তু আমাদের কিছু সমস্যা আছে। রুবীর জন্য একটা মেয়ে টীচার রাখবো এবার। তোমার সন্ধানে থাকলে জানিও। তুমি কাল হতে আর এসোনা।’
‘জ্বি, ঠিক আছে। এখানে তিন মাসের বেতন কেন? এছাড়া চলতি মাসও তো শেষ হয়নি।’
‘এটা তোমার প্রাপ্য। তোমাকে কোনো নোটিশ দেয়া হয়নি। চাকরির ক্ষেত্রেও স্ট্যান্ডার্ড নোটিশ পিরিয়ড তিন মাস। যেহেতু তোমাকে তাৎক্ষণিক নোটিশে আসতে নিষেধ করেছি সেহেতু তিন মাসের বেতন তোমার প্রাপ্য। রুবীর বাবার যে কয়টি প্রতিষ্ঠান আছে সব কটিতে চাকুরিজীবিদের জন্য এই নিয়ম প্রযোজ্য।’
‘দুঃখিত, এটা আমি নিতে পারবোনা। আপনি এক মাসের টাকাই দিন প্লিজ।’
‘গ্রামে তোমার কে কে থাকেন?’ অন্য প্রসঙ্গ টানেন সালমা খানম।
‘বাবা মা আর ছোট ভাই। ছোট বোন ছিল, বিয়ে হয়ে গেছে।’
‘সংসার কিভাবে চলে?’
‘বাবার পেনশন আছে। আমি কিছু সহযোগিতা করি। কিছু জমিজমা আছে গ্রামে।চলে যায় মোটামুটি।’
‘তোমাদের গ্রামের কি নাম?’
‘কুসুমপুর।’
চমকে ওঠেন সালমা খানম। নামটি খুব পরিচিত ঠেকছে। কিন্তু মনে করতে পারছেননা কিছু। নিজের অতীতে হারিয়ে যান সালমা খানম। কত হবে তখন আর বয়স? পাঁচ বছর হয়তো। ঢাকায় বেড়াতে এসেছিলেন বাবার সাথে। একদিন বাবার হাত ধরে চিড়িয়াখানায় ঘুরতে এসে হারিয়ে যাওয়া। একা একা সে কি কান্না? তারপর? একটি ভালো পরিবারের হাতে পরেছিলেন। তখন শুধু নিজের আর গ্রামের নামটিই ঠিকভাবে বলতে পারতেন। তারা অনেক খোঁজ খবর করেছিলেন। কিন্তু আর পাওয়া যায়নি কোন হদীস। তখনকার যুগে যোগাযোগের কোন ভালো ব্যবস্থাও ছিলনা। সে পরিবারেরই একজন হিসেবে বড় হতে লাগলেন। তাদেরকেই বাবা মা ডেকেছেন। ভালো পড়াশোনা, ভালো বিয়ে সব ব্যবস্থাই করেছিলেন তারা।
‘তোমার মায়ের নাম কি?’ আনমনা ভেঙে জিজ্ঞেস করেন।
‘সাবিনা।’
আবারো চমকান সালমা। কি কাকতালীয়। নিজের হারিয়ে যাওয়া গ্রাম ও বড় বোনের নাম। জগত বড়ই রহস্যময়।
‘তুমি কি রাগ করেছ? তোমাকে আপন মনে হলো তাই জিজ্ঞেস করলাম।’
‘জ্বি না রাগ করবো কেন?’
কিছুক্ষণ চুপ থেকে ভদ্রমহিলা বললেন, ‘আমি শুনেছি তুমি চাকরি খুঁজছ, পাচ্ছনা। রুবীর বাবাকে বলে দেব যদি কিছু করতে পারে। ওরতো অনেক জানাশোনা আছে। নিজেরও প্রতিষ্ঠান আছে কয়টি।’
‘ধন্যবাদ, তার প্রয়োজন নেই। আজ আসি তাহলে।’
‘আচ্ছা এস। তবে টাকাটা তুমি নিলে আমি খুশি হবো। প্রয়োজনে ধার হিসেবেই নাও। যখন ভালো চাকরি পাবে তখন ফেরত দিলে হবে।’
ইতস্তত করে টাকাটা নেয় কামাল। এত খারাপ লাগছে তা বলার নয়। কিন্তু এতগুলো টাকা তুচ্ছ করার মতো মনের জোরও নেই তার। টাকাটা এ মুহুর্তে তার বেশ প্রয়োজন।
‘মার কান্ড দেখেছো। তোমার জন্য আমাকে এত মাইর দিল। সেদিন তোমার পুরনো এক বইয়ের মাঝে একটা চিঠি পেলাম। তোমার লেখা প্রেমপত্র। আমি কি মনে করে আমার বইয়ের মধ্যে রেখেছি। তুমিতো জান, তোমার বিয়ের ঘটনার পর মা খুব সন্দেহ করেন আমাকে। তোমার হাতের লেখা আর আমারটা প্রায় এক। মা ধরেই নিল-এ চিঠি আমি লিখেছি টিচারকে দেয়ার জন্য।’ বড়বোন সায়মাকে বলে রুবী। রুবী আজ সকালে বড় বোনের বাসায় এসেছে।
‘সরি লক্ষী বোনটি আমার। শুধু শুধু মাইর খেলি আমার জন্য।’
‘মাইর খাওয়ার জন্য দুঃখ হচ্ছেনা। দুঃখ হচ্ছে মা আমাকে ভুল বুঝলো। আবার বাবাকেও বললো। বাবাও নিশ্চয়ই বিশ্বাস করেছে মার কথা।’
‘তুই কেন বলিসনি সত্যি কথাটা মাকে।’
‘বলেছিলাম, বিশ্বাস করেনি।’
‘আমি মাকে ফোন করে বলি সত্যি কথাটি।’
‘লাভ হবেনা তাতে। মা ভাববে, তুমি প্রেম করে বিয়ে করেছ। এখন আমাকেও ইন্ধন দিচ্ছ। টিচারকেও বিদেয় করে দিয়েছেন মা। আমার খুব খারাপ লাগছে আপু।’ ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে রুবী।
কামাল এই নিয়ে সাত বার পড়েছে নিয়োগপত্রটি। বিশ্বাসই হচ্ছিলনা। কোন ইন্টারভিউ না দিয়েও চাকুরী। স্বনামধন্য একটি শরীয়া নিয়ন্ত্রিত প্রাইভেট ব্যাংকে। শুরুতেই প্রায় অর্ধলক্ষ টাকা বেতন। কেউ কৌতুক করছেনাতো? মানুষ মাঝে মাঝে নির্মম রসিকতাও করে। না রসিকতা নয়। ব্যাংকের হিউম্যান রিসোর্স ডিপার্টমেন্ট এ ফোন করে নিশ্চিত হয়েছে কামাল। এখানে তো সে ইন্টারভিউ দেয়নি, তাহলে কি কেউ তার অজান্তেই সুপারিশ করেছিল? একবার ভাবে, এটা রুবীর মায়ের কাজ হয়তো। কিন্তু এতে কি স্বার্থ উনার। পরোপকার?
দু বছর পরের ঘটনা। কামাল এর বিয়ে। মায়ের পছন্দেই বিয়ে করছে কামাল। ছোটবেলায় মায়ের হারিয়ে যাওয়া ছোটবোনটি ফিরে এসেছে। তার খুব মিষ্টি একটা মেয়ে আছে। সে মেয়েকেই পছন্দ করেছেন পুত্রবধূ হিসেবে। ব্যস্ততার কারণে কামাল মেয়ে দেখতে যায়নি, মায়ের পছন্দে তার শতভাগ মত আছে জানালো।
বিয়ের আসরে রুবীকে কনে সাজে দেখে শরীরে বিদ্যুত খেলে যায় কামালের। হকচকিয়ে যায়, এ কি দেখছে সে? সে কি স্বপ্ন দেখেছে। চিমটি কাটে নিজ শরীরে। না এ তো বাস্তব। চরম বাস্তব। এইতো দেখা যা্চ্ছে রুবীর মাকে। রহস্যের জট খুলতে এগিয়ে আসেন রুবীর মা।
‘হ্যা বাবা, তুমি ভুল দেখছোনা। ও রুবী, একটু পর তোমার স্ত্রী হতে যাচ্ছে। তুমি খুশী।’
‘অবশ্যই আমি খুশি। আমার মায়ের পছন্দের প্রশংসা করতেই হয়। কিন্তু ইয়ে মানে আপনি…’
‘হ্যা, আমিই তোমার মায়ের হারিয়ে যাওয়া বোন, তোমার খালামনি।’ ঘটনার আকস্মিকতায় অনেকক্ষণ মুখে কথা সরেনা কামালের।
এক সময় মুখ তুলে লাজুকভাবে বলে ‘ব্যাংকে আমার চাকরির ব্যবস্থা বোধহয় আপনিই করেছিলেন খালুকে বলে।’
সালমা খানম হাসেন। বেশ রহস্যময় সে হাসি।
কাজী সাহেব এসে গেছেন। বেশ ভালোভাবেই সম্পন্ন হলো শুভকাজ।
বিষয়: সাহিত্য
১৩৫৭ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এ ধরনের ঘটনা নিয়ে আগে খুব নাটক , সিনেমা হত । এখন এসব কাহিনী পাবলিক আর খেতে চায় না।
তবে ‘অবশেষে তাহারা সুখে শান্তিতে বসবাস করিতে লাগিল’ এমন মেসেজ না থাকিলে বাঙ্গালী পাঠক মন খারাপ করে।
এন্ডিং টা ছাড়া বাকি গল্প ভাল।
মন্তব্য করতে লগইন করুন