সংরক্ষক
লিখেছেন লিখেছেন ড: মনজুর আশরাফ ২৬ মে, ২০১৭, ০৬:০৯:৫১ সন্ধ্যা
রাশিয়া। কমিউনিজমের পতন হয়েছে মাত্র। একদল ইসলামপ্রেমী দা'য়ী মস্কোতে রমজানের তারাবি কিভাবে শুরু করা যায় তার পরিকল্পনা করছেন। বিগত কয়েক যুগ মুসলমানদের ঘরে ঘরে রাষ্ট্রীয় ভাবে তল্লাশি চালানো হয়েছে। কোরআন পাওয়া গেলেই এরেস্ট, শাস্তি অথবা মৃত্যুদন্ড - যা কমিউনিজমের শাসনের সাধারণ রূপরেখা মাত্র। যুগের পর যুগ কত হাফেজ, আলেম নিখোঁজ রয়েছে বা মারা গিয়েছে তার কোন হিসেবে নেই। যখন রাষ্ট্রই ঘোষণা দিয়ে হত্যাকারী - তখন সে হিসেব না থাকাই স্বাভাবিক।
দলনেতা পত্রিকায় হাফেজ চেয়ে বিজ্ঞপ্তি দিলেন। তিনি ভেবেছিলেন কেউ হয়ত আসবে না - ভাগ্য ভাল হলে একজন কি দুইজন হয়ত যোগাযোগ করবে। কারন অন্যদেশ থেকে আসা ইসলাম প্রচারের সে জামায়াতের দল তখনও পর্যন্ত মস্কোতে স্থানীয় কোন হাফেজের সন্ধান পাননি।
যাহোক, তাদের আশ্চর্য করে গিয়ে আবেদনের পর আবেদনপত্র আসতে থাকল! দশ, বিশ, একশ নয় - সর্বমোট হাফেজের পজিশনে আবেদন পত্র জমা দিলেন ১৪ হাজার!
অনেকের সাথে কথা বলে তারা জানলেন -
"যখন পুলিশ বাসা বাসা হাফেজ, আলেম বা কোরআনের সন্ধানে আসত, দরজা ভেঙে ঢুকে পড়ত - সে কঠিন সময়ই অনেক মুসলমানের বাড়িতে কৃত্রিম ভাবে আন্ডারগ্রাউন্ড ছোট রুম তৈরী করা হয়েছিল। যা মাটি থেকে ছোট ছিদ্র দিয়েই প্রবেশ করা যেত। আর যে রুমের মাধ্যমে সে আন্ডারগ্রাউন্ড রুমে যেতে হত - সে রুমের চারিদিকে থাকত মদের বোতলের সমাহার - সেই সাথে শুকনা শুকরের মাংসের সমন্বয়। যাতে পুলিশের মনে বিন্দুমাত্র সন্দেহ না আসে কি হচ্ছে সে বাসায় - সে আন্ডারগ্রাউন্ড রুমে।
সে আন্ডারগ্রাউন্ড রুমে যা হত - তা হল একজন বয়স্ক হাফেজ ছয় মাসের প্ল্যান নিয়ে ২-৩ জন পরবর্তী প্রজন্মকে হাফেজ বানানোর জন্য থাকতেন। খাবার দেয়া , টয়লেটের বজ্য সরানো ইত্যাদি হত সেই ছোট ছিদ্র দিয়েই। অকল্পনীয়। ইসলাম ধ্বংসের সর্বত প্রচেষ্টার মাঝেও প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে কোরআন সংরক্ষণের জন্য মানুষের আত্মত্যাগ আর ভালবাসার এক নমুনা।
কোন মসজিদ না থেকেও, কোন দৃশ্যমান নামাজের অবস্থিতি না বুঝার পরও মস্কোতে এক তারাবির নামাজের হাফেজ অনুসন্ধানের বিজ্ঞপ্তিতে ১৪ হাজার হাফেজের এগিয়ে আসা যুগের পর যুগ সে অঞ্চলের ইসলাম প্রেমী মানুষের নিরলস আত্মত্যাগেরই ফলশ্রুতি!
আল্লাহ বলেন: "আমি স্বয়ং এ উপদেশ গ্রন্থ অবতারণ করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক" (সূরা হিজর:৯)
** ** **
মুফতি জিয়াদের এক বয়স্ক বন্ধুই ছিলেন সেই দলপতি। তিনি এখনও মস্কোতে আছেন।
-- এশা পরবর্তী মুফতি জিয়াদের আলোচনা থেকে।
পিজিসিসি, ডাভটন, মেলবোর্ন
মে' ২৬, ২০১৭
বিষয়: বিবিধ
১২৬৯ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য






































পাঠকের মন্তব্য:
আমার মনে হয় বাংলাদেশের মুসলমানেরা খুবই দৃষ্টিকটুভাবে অসাম্প্রদায়িক। পৃথিবী আর কোন দেশের সংখ্যাগরিষ্ট জনগনেরা এরকম বোকামী করে না । তারা তাদের দাপট সংখ্যালঘুদের উপর দেখাতেই পছন্দ করে । সেটাকে বিশ্বমিডিয়াও সমালোচনা করে না।
মন্তব্য করতে লগইন করুন