প্রবন্ধ-২/৪ : সিরাতুল মোস্তাকিম : জান্নাতের রোডম্যাপ (ধারাবাহিক পর্ব -৪)
লিখেছেন লিখেছেন মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম ২০ মে, ২০১৫, ০১:০১:৩৪ দুপুর
চতুর্থ পর্ব :
সাওম :
আরবী সাওম রোজা হিসাবে বেশি পরিচিত। ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ রোকন। হিজরী রমজানে তথা প্রতি চন্দ্র মাসের একমাস রোজা রাখা মুসলমানদের জন্য ফরজ। রোজা আমাদের সংযম ও ত্যাগ শিক্ষা দেয়। কুপ্রবৃত্তি থেকে রক্ষা করে, নৈতিকতা ও শৃঙ্খলা শিক্ষা দেয়, মানুষের কল্যাণ কামনা, সহানুভুতি ও সহমর্মিতা শিক্ষা দেয় এবং সিয়াম সাধনা শিক্ষা দেয়। রোজার শিক্ষা, তাৎপর্য ও গুরুত্বের শেষ নেই। মহাগ্রন্থ আল্ কোরআনে এরশাদ হয়েছে,
“হে ঈমানদাররা! তোমাদের প্রতি রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমনিভাবে ফরজ করা হয়েছিল, তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর। যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার।’’ (সুরা বাকারাÑ১৮৩)
১। আল্লাহর রাসূল (সা) বলেছেন, রমজান মাসের প্রথম দশদিন আল্লাহর রহমত নাজিল হয়, দ্বিতীয় দশদিন মাগফেরাত এবং তৃতীয় দশদিন দোজখ থেকে মুক্তি দেয়া হয়। যে ব্যক্তি এতে আপন অধীনস্থ দাস-দাসী ও চাকর-বাকর হতে কাজের বোঝা হালকা করে দেয়, আল্লাহপাক তাকে ক্ষমা করে দেবেন এবং দোজখের আগুন থেকে নাজাত দেবেন। (বায়হাকী)
২। হযরত আবু হোরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা) বলেছেন, যখন রমজান মাস আগমন করে, তখন আসমানের দরজাসমুহ খুলে দেয়া হয়। কোন কোন বর্ণনায় আছে, জান্নাতের দরজা সমুহ খুলে দেয়া হয়, জাহান্নামের দরজা সমুহ বন্ধ করে দেয়া হয় এবং শয়তানগুলোকে (শিকল দ্বারা) বন্দী করা হয়। (বুখারী ও মুসলিম)
৩। হযরত আবু হোরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা) বলেছেন, আদম সন্তানের প্রতিটি নেক কাজের জন্য দশ থেকে সাতশ গুণ পর্যন্ত সওয়াব নির্ধারিত রয়েছে। কিন্তু আল্লাহ বলেন, রোজা এর ব্যতিক্রম। সে একমাত্র আমার জন্যই রোজা রেখেছে এবং আমি নিজেই এর পুরষ্কার দেব। সে আমার জন্যই যৌন-বাসনা ও খানা-পিনা ত্যাগ করেছে। রোজাদারের ২টা আনন্দ। একটা হচ্ছে ইফতারের সময় এবং অন্যটি হচ্ছে আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের সময়। আল্লাহর কাছে রোজাদারের মুুখের গন্ধ মেশক-আম্বরের সুঘ্রাণের চেয়েও উত্তম। (বুখারী ও মুসলিম)
৪। হযরত সাহল বিন সা’দ (রা) থেকে বর্ণিত নবী করিম (সা) বলেছেন, বেহেশতে “রাইয়ান” নামক একটি দরজা আছে। রোজাদার ছাড়া আর কেউ সেই দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। রোজাদাররা প্রবেশ করার পর তা বন্ধ করে দেয়া হবে এবং ঐ দরজা দিয়ে আর কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। (বুখারী, মুসলিম ও ইবনে খোযাইমা)
৫। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা) বলেছেন, রোজা সমূহ এবং আল্ কোরআন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। রোজা বলবে, হে প্রভুু! আমি এ ব্যক্তিকে দিনে খাবার ও অন্যান্য কামনা-বাসরা থেকে বিরত রেখেছি। আপনি আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। আর কোরআন বলবে, আমি এ ব্যক্তিকে রাতের নিদ্রা থেকে ফিরিয়ে রেখেছি আপনি আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। আল্লাহ তাদের সুপারিশ গ্রহণ করবেন। (বায়হাকীÑমিশকাত) রমজানে সওয়াব লাভের অপূর্ব সুযোগ আছে। এ মাসে মহাগ্রন্থ আল্ কোরআন নাযিল হয়েছে। এ মাসে লাইলাতুল কদর রয়েছে, যাতে ইবাদত করলে হাজার মাসের সওয়াব লাভ করা যায়। এতেকাফ রাখা যায়, যাতে অনেক নেকী আছে এবং জাহান্নাম থেকে দুরে রাখে। সেহরী, ইফতার, তারাবী, কিয়াম-সিয়াম প্রভৃতিতে ভরপুর এ মাস।
যাকাত :
যাকাত সামর্থ্যবানদের জন্য আর্থিক ইবাদত স্বরূপ। যাকাত সম্পদের পবিত্রতা আনয়ন করে, দারিদ্র দূর করে, বৈষম্য দূর করে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা প্রদান করে। যাকাত ধনীদের কাছে আমানত কৃত গরীবের হক, সম্পদের আবর্তনে ধনী-গরীব ব্যবধান কমে যায়। যা দ্বারা নি:স্ব, অসহায়ের মধ্যে স্বনির্ভরতা আনে। মুহাদ্দিস হযরত শাহওয়ালী উল্লাহ দেহলবী (র) বলেন, মূলতঃ দু’টি লক্ষ্যে যাকাত নিবেদিত। যেমনÑআইন-শৃঙ্খলার উন্নয়ন এবং সামাজিক দারিদ্রতা বিমোচন। যাকাত না দেয়ার পরিণামও কিন্তু ভয়াবহ। আল্ কোরআন ও হাদীসের অনেক স্থানে সালাত কায়েম করার পাশাপাশি যাকাত প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন।
১। “আপনি তাদের ধন-সম্পদ থেকে যাকাত গ্রহণ করে তাদের পবিত্র ও পরিশুদ্ধ করে দিন।” (সূরা তাওবা-১০৩)
২। “তোমরা সালাত আদায় করো, যাকাত দাও এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অনুসরণ করো।” (সূরা আহযাব-৩৩)
৩। “সাদকা (যাকাত) তো কেবল নিঃস্ব, অভাবগ্রস্থ এবং সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের জন্য, যাদের মন জয় করা যায়, দাসমুক্তির জন্য, ঋণগ্রস্তদের জন্য, মুসাফির এবং আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করার জন্যে। এটা আল্লাহর বিধান, তিনি সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।” (সূরা তাওবা-৬০)
৪। “যারা স্বর্ণ এবং রৌপ্য সঞ্চয় করে রাখে এবং তা আল্লাহর পথে খরচ করে না, তাদেরকে কঠিন শাস্তির সুসংবাদ দাও।” (সূরা তাওবা-৩৪)
৫। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ যাকাত( সাদাকা) ফরজ করেছেন যা ধনীদের কাছ থেকে আদায় করে দরিদ্রদের মধ্যে বন্টন করা হবে।” (বুখারী ও মুসলিম)
৬। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন, “যে ব্যক্তিকে আল্লাহ ধন-সম্পদ দিয়েছেন অথচ সে তার যাকাত আদায় করে নি, শেষ বিচারের দিন ধন-সম্পদ এমন বিষধর সাপে পরিণত হবে যার মাথার ওপর থাকবে দু’টি কালো দাগ। এ সাপ সে ব্যক্তির গলায় পেঁচিয়ে ধরে তার দু’গালে ছোবল মারতে থাকবে এবং বলবে, আমি তোমার মাল, আমি তোমার সঞ্চিত সম্পদ।” (বুখারী)
হজ্ব :
হজ্ব একটি ইসলামের মৌলিক ইবাদত, এটা দৈহিক শ্রমসাধ্য ব্যাপার, আর্থিকও বটে। সামর্থ্যরে ভিত্তিতে জীবনে একবার হজ্ব করা ফরজ। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এরশাদ করেন,
“মানুষের ওপর আল্লাহর হক এই যে, এ কা’বা ঘর পর্যন্ত আসার সামর্থ যাদের আছে তারা হজ্ব করার জন্য এখানে আসবে। যারা কুফরী করবে (অর্থাৎ সামর্থ্য থাকাও পালন করবে না), তারা জেনে রাখুক যে, আল্লাহ সৃষ্টি জগতের মুখাপেক্ষী নন।” (সূরা আলে ইমরানÑ৯৭)
আল্লাহর কা’বা সমগ্র দুনিয়ার জন্য হেদায়েতের কেন্দ্রস্থল ও নিরাপত্তার প্রতীক। এরশাদ হচ্ছে,
“মানুষের জন্য সর্বপ্রথম যে ঘর নির্দিষ্ট করা হয়েছিল তা মক্কার ঘর, তাতে কোন সন্দেহ নেই। এটা অতন্ত পবিত্র, বরকতপূর্ণ এবং সারা দুনিয়ার জন্য হেদায়েতের কেন্দ্রস্থল। এতে আল্লাহর প্রকাশ্য নিদর্শনসমূহ বিদ্যমান রয়েছে,
‘মাকামে ইবরাহীম’ রয়েছে এবং যে-ই এখানে প্রবেশ করবে সে-ই নিরাপত্তা লাভ করবে।”(সূরা আলে ইমরানÑ৯৬)
হযরত আবু হোরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা) কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, “কোন আমল সর্বোত্তম?” জবাবে তিনি বলেন, “আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনা”। জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, তারপর কোন্টি? তিনি বললেন, “আল্লাহর পথে জিহাদ।” জিজ্ঞেস করা হয়েছিল? তারপর কোন্টি? তিনি বললেন, “মাবরুর হজ্ব।” যে হজ্বে নাফরমানী করা না হয়। (মুনতাকী)
হযরত আবু হোরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা) বলেছেন, “যে ব্যক্তি হজ্ব করল, কিন্তু কোন অশ্লীল যৌন ক্রিয়া করল না এবং আল্লাহর নাফর মানীর কোন কাজ করল না, তাহলে সে গুনাহ থেকে এমনভাবে পাক-সাফ হয়ে প্রত্যাবর্তন করল যেন সে মায়ের পেট থেকে ভুমিষ্ঠ হল।” (বুখারী ও মুসলিম)
আরেক হাদীসে আছে, “তোমরা হজ্ব কর। কেননা হজ্ব এমনভাবে আমলনামা থেকে গুনাহ মুছে ফেলে যেমনিভাবে পানি দ্বারা ময়লা পরিষ্কার হয়ে যায়।” (তিবরানী) সুতরাং হজ্বের ফরজিয়াত নি:সন্দেহ।
জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ :
আল্ কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ১। “তোমাদের ওপর যুদ্ধ ফরজ করা হলো, যদিও তোমাদের কাছে উহা অপছন্দ এবং এমন অনেক জিনিসকে তোমরা অপছন্দ কর অথচ উহা তোমাদের জন্য ভাল এবং কোন কোন বস্তুকে তোমরা ভালবাস, অথচ তোমাদের জন্য উহা মন্দ। আল্লাহই জানেন এবং তোমরা জান না।” (সূরা বাকারাÑ২১৬)
২। “তবে যারা ইহকালের পরিবর্তে পরকালকে খরিদ করে তাদের উচিত আল্লাহর পথে জিহাদ করা এবং যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে জিহাদ করবে সে তাতে মারা যাক অথবা বিজয়ী হোক, অচিরেই আমরা তাকে মহান প্রতিদান দেব।” (সূরা নিসা)
৩। “কি হয়েছে তোমাদের! তোমরা আল্লাহর পথে জিহাদ করবে না অসহায় নারী ও শিশুদের জন্যে? যারা ফরিয়াদ করছে, হে আল্লাহ, “এ জনপদ যার অধিবাসী জালিম হতে আমাদেরকে অন্যকোথাও নিয়ে যাও; তোমার নিকট হতে কাউকে আমাদের অভিভাবক করো এবং কাউকে সাহায্যকারী পাঠাও।”(সুরা নিসা-৭৫)
৪। “তোমরা তাদের সাথে যুদ্ধ করতে থাক ততক্ষণ, যতক্ষণ না ফিতনা দূর হয়ে না যায় এবং দ্বীন আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট হয়ে না যায়।” (সুরা বাকারা-১৯৩)
৫। “যারা মু’মিন তারা আল্লাহর পথে লড়াই করে। আর যারা কাফের তারা লড়াই করে তাগুতের পথে।” (সুরা নিসা-৭৬)
৬। “নিশ্চয় আল্লাহপাক মু’মিনদের জান-মাল জান্নাতের বিনিময়ে কিনে নিয়েছেন, তারা লড়াই করে আল্লাহর পথে, অতঃপর দুশমনদের মারে এবং নিজেরাও মরে (শহীদ হয়)”। (সুরা তাওবা-১১১)
৭। “আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসেন, যারা সীসা ঢালা প্রাচীরের ন্যায় তাঁর পথে লড়াই করে।” (সূরা ছফÑ৪)
রাসূল (সা) বলেছেন,
১। “আল্লাহর পথে মৃত্যুবরণ আমার কাছে সারা দুনিয়ার অধিবাসীগণ অমর হয়ে যাওয়ার চেয়েও প্রিয়।” (নাসায়ী, হযরত আবু উমায়ের (রা) থেকে বর্ণিত)
২। “শপথ সেই সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার জীবন, যে ব্যক্তিই আল্লাহর পথে আহত হয়, আল্লাহ তাকে ভালভাবেই জানেন। রক্তের রং এবং মেশকের সুগন্ধি নিয়ে কেয়ামতের দিন তার আগমন হবে।” (হযরত আবু হোরায়রা থেকে বর্ণিত)
৩। “জেনে রাখ, তরবারির ছায়াতলেই জান্নাত রয়েছে।” (বুখারী, মুসলিম ও আবু দাউদ, হযরত আবদুল্লাহ বিন আবি আওফা থেকে বর্ণিত)
৪। “আল্লাহ আমাকে যে পাঁচটি বিষয়ের নির্দেশ দিয়েছেন আমিও তোমাদেরকে তারই হুকুম দিচ্ছি। তা হলোÑজামায়াত, নেতৃত্বের আদেশ শ্রবণ, আনুগত্য, হিজরত এবং আল্লাহর পথে জিহাদ।” (হাদীসের অংশ বিশেষÑআহমদ ও হাকেম, হযরত হারিছিল আশয়ারী (রা) থেকে বর্ণিত)
৫। মুয়ায ইবনে জাবাল (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা) বলেছেন, আমি কি তোমাকে দ্বীনের মস্তক, স্তম্ভ এবং চূঁড়ার কথা জানাবো না? (জেনে রাখো) দ্বীনের মস্তক হচ্ছে ইসলাম, স্তম্ভ হচ্ছে সালাত এবং চূঁড়া হচ্ছে জিহাদ) (মিশকাত)
দুনিয়ার মানুষকে জুলুম নির্যাতন এবং আল্লাহর প্রভুত্ব কায়েমে জিহাদের বিকল্প নেই। জিহাদ ঈমানের অনিবার্য দাবী। দুনিয়ার কোন স্বার্থ হাসিলের জন্য জিহাদ করা হয় না। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যেই জিহাদ করতে হয়। যে জমিনে আল্লাহর দ্বীন কায়েম নেই, তার প্রচেষ্টা করাও জিহাদ। আখেরাতে নাজাত পেতে হলে আল্লাহর পথে জান-মাল দিয়ে জিহাদ করতে হবে।
ইনফাক ফি সাবিলিল্লাহ :
ইনফাক ফি সাবিলিল্লাহ বা আল্লাহর পথে খরচ সম্পর্কে কোরআন মজীদে অনেক আয়াত রয়েছে।
এরশাদ হচ্ছে, ১। “যারা গায়েবে বিশ্বাস করে, সালাত কায়েম করে এবং যে রিযিক আমি দিয়েছি তা থেকে খরচ করে।” (সূরা বাকারা-৩)
২। “যারা নিজেদের মাল আল্লাহর পথে খরচ করে তাদের খরচের উদাহরণ হচ্ছে এমন যে, যেমন একটা বীজ বপন করা হল এবং তা থেকে সাতটা ছড়া বের হল এবং প্রতিটি ছড়ায় একশ’ করে শস্যবীজ হল। আল্লাহ যার আমলকে চান বহুগুণ বাড়িয়ে দেন। আল্লাহ উদার ও মহাজ্ঞানী।” (সূরা বাকারা-২৬১)
৩। “যারা সালাত কায়েম করে এবং আমার দেওয়া রিযিক থেকে খরচ করে, এরাই মু’মিন।”
(সূরা আনফাল-৪)
৪। “এবং যারা স্বীয় পালনকর্তার সন্তুষ্টির জন্য সবর করে, সালাত প্রতিষ্ঠা করে আর আমি যা দিয়েছি তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে এবং মন্দের বিপরীতে ভাল করে তাদের জন্য রয়েছে পরকালের আবাস বা জান্নাত।” (সূরা রা’দ-২২)
৫। “যারা নিজেদের ধন-সম্পদ দিয়ে দিন-রাত গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে তাদের প্রতিদান রয়েছে তাদের রবের কাছে এবং তাদের কোন ভয় ও দুঃখ নেই।” (সূরা বাকারা-২৭৪)
৬। “তোমাদের কি হয়েছে যে, তোমরা আল্লাহর পথে খরচ করছ না? অথচ আসমান ও জমিনের উত্তরাধিকার তো আল্লাহরই জন্য। তোমাদের মধ্যে যারা বিজয়ের পর খরচ করবে ও জিহাদ করবে তারা কখনো তাদের সমান হতে পারবে না, যারা বিজয়ের আগে খরচ করেছে ও জিহাদ করেছে। তাদের মর্যাদা তাদের তুলনায় অনেক বেশী, যারা বিজয়ের আগে খরচ ও জিহাদ করেছে। অবশ্য আল্লাহ সবার জন্যই ভাল ওয়াদা করেছেন। আর তোমরা যাকিছু কর তা আল্লাহর জানা আছে। এমন কে আছে, যে আল্লাহকে করয দেবেÑ করযে হাসানা, যাতে তিনি তা কয়েক গুণ বাড়িয়ে য়েরত দিতে পারেন? আর তার জন্য রয়েছে উত্তম প্রতিদান।” (সূরা হাদীদ: ১০-১১)
হাদীস থেকে :
১। হযরত আবু হোরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা) বলেছেন, “দানকারী আল্লাহর নিকটতম, জান্নাতের নিকটতম, মানুষের নিকটতম হয়ে থাকে। আর জাহান্নাম থেকে দূরে থাকে। পক্ষান্তরে কৃপন ব্যক্তি অবস্থান করে আল্লাহ থেকে দূরে, জান্নাত থেকে দূরে, মানুষ থেকে দূরে এবং জান্নামের নিকটবর্তী। অবশ্যই একজন জাহেল দাতা একজন বখিল আবেদের তুলনায় আল্লাহর কাছে অধিকতর প্রিয়।” (তিরমিযী)
২। হযরত আবু হোরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা) বলেছেন, “কৃপণতা এবং ঈমান একজন মুসলমানের হৃদয়ে কখনো একত্রিত হয় না।” অপর হাদীসে আছে, “প্রতারক, বখীল ও দান করে অনুগ্রহ প্রদর্শনকারী ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না।” (তিরমিযী)
৩। হযরত আবু হোরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা) বলেছেন, “আল্লাহ আদম সন্তানকে লক্ষ্য করে বলেন, তুমি খরচ কর, তোমার জন্যে খরচ করা হবে।” (বুখারী ও মুসলিম)
(চলবে..)
বিষয়: সাহিত্য
১৩১৩ বার পঠিত, ১৩ টি মন্তব্য






































পাঠকের মন্তব্য:
১। আল জিহাদ-সাইয়্যেদ আবুল আ’লা মওদুদী(র)
২। ইসলামে যাকাতের বিধান-ইউসুফ আল কারযাভী
৩। জিহাদ ঈমানের অপরিহার্য দাবী-আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী
৪। ইনফাক্ক ফী সাবিলিল্লাহ ও কৃপণতার পরিণাম-আবদ্দু দাইয়ান মুহাম্মদ ইউনুছ।
এছাড়া আপনার পছন্দমত সংগ্রহ করতে পারেন। আপনার পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন