দেশের সাদা কাগজ উৎপাদনকারী একমাত্র সরকারী প্রতিষ্ঠান পাকশী নর্থ বেঙ্গল পেপার মিল শীঘ্রই চালু করার উদ্যোগ সরকারের
লিখেছেন লিখেছেন আবডুল রহমান ২০ জানুয়ারি, ২০১৫, ০৬:২২:২১ সন্ধ্যা
দেশের সাদা কাগজ উৎপাদনকারী একমাত্র সরকারী প্রতিষ্ঠান পাকশী নর্থ বেঙ্গল পেপার মিল শীঘ্রই চালু হতে যাচ্ছে। বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ওয়াদা হিসেবে এই মিলটি চালু করা হবে আরও বৃহৎ আকারে উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে। মিল চালু হওয়ার সংবাদ পেয়ে মিল সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী ব্যক্তি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। কর্তৃপক্ষ মিলটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য দিন-রাত পরিশ্রম করছেন। দেশে সাদা কাগজের মোট চাহিদার প্রায় সব মেটানো হতো পাকশী নর্থ বেঙ্গল পেপার মিলের কাগজ দিয়ে। এলাকার বেকার জনশক্তির ও দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য পেপার মিল তৈরির সিদ্ধান্ত হয়।
চিনি মিল থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ এবং সহজে পানি গ্রহণ ও নিষ্কাশন এবং নদী, রেল ও সড়ক পথে সহজে কাঁচামাল এবং উৎপাদিত পণ্য পরিবহনের সুবিধার কথা চিন্তা করে উত্তরবঙ্গের পাকশীতে সরকারী মালিকানায় গড়ে তোলা হয়েছিল নর্থ বেঙ্গল পেপার মিল। দাতা দেশ জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্স আর্থিক সহায়তা দেয়। মূলত দেশের বিভিন্ন চিনিকল থেকে প্রাপ্ত আখের ছোবড়া (ব্যাগাস)-এর ওপরে ভিত্তি করেই মিলটি স্থাপিত হয়। এ আখের ছোবড়া (ব্যাগাস) পাকশী নর্থ বেঙ্গল পেপার মিলের মূল কাঁচামাল। এছাড়া সিলেট পাল্প, বেদেশী পাল্প, পাটকাঠী, গমের নাড়া, কাঁচামাল হিসাবে ব্যবহৃত হয়। চিনিকলগুলো চিনি উৎপাদনের জন্য আখ মাড়াইয়ের পর উদ্বৃত্ত আখের ছোবড়া (ব্যাগাস) সড়ক ও রেলপথে মিলে আনা হতো। নর্থ বেঙ্গল পেপার মিল কাগজ সভ্যতার ইতিহাসে অত্যাধুনিক মিল হিসাবে পরিচিতি পেয়েছিল। এই মিলের কাগজ উৎপাদন প্রক্রিয়া উন্নত ব্যাগাস ডাইজেস্টার পাল্প মিলওয়াশিং, স্কিনিং, রিচিং, রিফাইনিং, ওয়েবারজেশন, ডায়িং, ক্যালেন্ডারিং, রিউইনজিং, ফিনিশিং। দৈনিক ৬০ মেট্রিকটন (৬৫ জিএসএস) ভিত্তিতে বার্ষিক ১৫ হাজার মেট্রিকটন প্রডাক্ট মিক্সড ভিত্তিতে সাদা ছাপা বাদামি, মেনিফোল্ড, ব্লু ম্যাচ ইত্যাদি কাগজের উৎপাদন শুরু হয় ২৫ জুলাই ১৯৭০ সালে। এরপর মিলের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হওয়ার পর থেকে মিলটি চালু থাকার ২৭ বছর ধরে মিল কর্তৃপক্ষ ও সিবিএ নেতাদের নানা প্রকার দুর্নীতির কারণে লোকসান অব্যাহত থাকে। ২৭ বছরে লোকসানের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৩শ’ কোটি টাকা। অবশেষে বিপুল অঙ্কের লোকসানের বোঝা নিয়ে গত ৩০ নভেম্বর ২০০২ সালে মিলটি বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমান সরকার চলতি মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণ করে কাংক্ষিত মিলটি পুনরায় চালুর উদ্যোগ নিয়েছে।
বিষয়: বিবিধ
৭৮২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন