পীর-তন্ত্রের বেড়াজালে ইসলাম

লিখেছেন লিখেছেন কাজী আবু নাবিল ২১ নভেম্বর, ২০১৪, ০১:০৬:০৬ রাত

পীরদের ভ্রান্ত আক্বীদা প্রশ্ন:পীর-মাশায়েখ নামধারী এক শ্রেণীর ধর্

মীয় আলেম সম্প্রদায় আল্লাহর নাজিলকৃত যে সকল আইন-বিধানকে বাতি

ল করেছেন তার কিছু উদাহরণ দিবেন কি? উত্তর: হ্যা! অবশ্যই। পীর

-মাশায়েখ নামধারী এক শ্রেণীর আলেমগন আল্লাহর নাজিলকৃত যেসকল আ

ইন-বিধানকে বাতিল করেছেন তার কিছু অংশ সংক্ষিপ্ত আকারে নিম্নে পেশ ক

রাহলো। শরিয়াহ মানার প্রয়োজন: কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক সহীহ আক্বি

দাহ হলো আল্লাহ (সুবHappy কর্তৃক প্রদত্ত ও রাসূলুল্লাহ (সাHappy কর্তৃক

প্রদর্শিত শরিয়ার আইন-বিধান কঠোরভাবে মান্য করা জরুরী। পবিত্র

কুরআনে আল্লাহ (সুবHappy বলেন: شَرَعَ لَكُمْ مِنَ الدِّينِ مَا وَصَّى

بِهِ نُوحًا وَالَّذِي أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ وَمَا وَصَّيْنَا بِهِ إِبْرَاهِيمَ وَمُوسَ

ى وَعِيسَى أَنْ أَقِيمُوا الدِّينَ وَلَا تَتَفَرَّقُوا فِيهِ অর্থ: "তিনি তো

মাদের জন্য দ্বীন (জীবন ব্যবস্থা) বিধিবদ্ধ করে দিয়েছেন; (তা হচ্ছে

ঐই জীবন ব্যবস্থা) যার ব্যাপারে তিনি নূহ (আHappy কে নির্দেশ দিয়েছিলেন।

আর আমি (আল্লাহ) তোমার কাছে যে ওহী পাঠিয়েছি এবং ইবরাহীম, মূসা ও ঈ

সাকে যে নির্দেশ দিয়েছিলাম তা হল, তোমরা দ্বীন কায়েম করো এবং এই ব্যা

পারে একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ো না।" (সুরা শু'রা ২৬:১৩) এই আ

য়াত দ্বারা বুঝা গেল, আল্লাহ (সুবHappy জীবন ব্যাবস্থা নির্ধারণ করে দিয়ে

ছেন। এবং ঐ জীবন ব্যাবস্থাই কায়েম করা আদেশ করেছেন। সুতরাং মুসলি

মের কর্তব্য হলো আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত জীবন ব্যাবস্থাই পালন

করবে এবং কায়েম করবে। অন্য কারো হুকুম যদি আল্লাহর হুকুমের বিরোধি

হয় তাহলে তা প্রত্যাখান করবে। কিন্তু পীর-মাশায়েখগণ বলেন: পীর য

দি হুকুম করেন তা মানতে হবে যদিও আল্লাহ প্রদত্ত শরিয়তের প্রকাশ্

য বিরোধী হয়। যেমন চরমোনাই পীর বলেন: بمی سجادہ رنگن ک

ن گرت پیر مغاں گوید+کہ سالک بےخبر نہ بود زراہ ور

سم منزل অর্থ: "কামেল পীরের আদেশ পাইলে নাপাক শারাব দ্বারাও জা

য়নামাজ রঙ্গিন করিয়া তাহাতে নামাজ পড়। অর্থাৎ শরীয়তের কামেল পীর

সাহেব যদি এমন কোন হুকুম দেন, যাহা প্রকাশ্যে শরীয়তের খেলাফ হয়, ত

বুও তুমি তাহা নিরাপত্তিতে আদায় করবে। কেননা, তিনি রাস্তা সব তৈরী করি

য়াছেন। তিনি তাহার উঁচু-নিচু অর্থাৎ ভালমন্দ সব চিনেন, কম বুঝের দ

রুন জাহেরিভাবে যদিও তুমি উহা শরীয়তের খেলাফ দেখ কিন্তু মূলেখেলাফ নহে

।" ('আশেক মাশুক' মাওলানা সৈয়দ মোহাম্মদ এছহাক রচিত ৩৫ নং পৃষ্ঠা

য়।) অথচ আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূল (সাHappy এর হুকুমের বিরূদ্ধে কারো

হুকুম মানার কোন সুযোগ নেই। হাদীসে ইরশাদ হয়েছে: عَنْ أُمِّ حُصَيْنٍ

قَالَتْ قَالَ رَسُولُ الله صَلَّى الله عَلَيه وسَلَّم لاَ طَاعَةَ لِمَ

خْلُوقٍ في مَعْصِيَةِ الخَالِقِ অর্থ:"উম্মে হুসাইন (রাHappy থেকে বর্

ণিত রাসূলুল্লাহ (সাHappy ইরশাদ করেছেন: স্রষ্টাকে অমান্য করে সৃষ্টিজগ

তের কারো আনুগত্য চলবে না"। (জামেউল আহাদীস: হা: ১৩৪০৫, মুয়াত্তা

: হা: ১০, মু'জামূল কাবীর: হা: ৩৮১, মুসনাদে শিহাব: হা: ৮৭৩ আবি শাই

বা: হা: ৩৩৭১৭, কানযুল উম্মাল: হা: ১৪৮৭৫।) এছাড়া নিম্নের হাদী

সটিতে বিষয়টিকে আরও স্পষ্ট করা হয়েছে: عَنْ عَلِىٍّ قَالَ بَعَثَ رَ

سُولُ اللَّهِ -صلى اللهعليه وسلم- سَرِيَّةً وَاسْتَعْمَلَ عَلَيْهِ

مْ رَجُلاً مِنَ الأَنْصَارِ وَأَمَرَهُمْ أَنْ يَسْمَعُوا لَهُ وَيُطِيعُوا فَأَ

غْضَبُوهُ فِى شَىْءٍ فَقَالَ اجْمَعُوا لِىحَطَبًا. فَجَمَعُوا لَهُ ثُمَّ

قَالَ أَوْقِدُوا نَارًا. فَأَوْقَدُوا ثُمَّ قَالَ أَلَمْ يَأْمُرْكُمْ رَسُولُ اللَّهِ

-صلى الله عليه وسلم- أَنْ تَسْمَعُوا لِى وَتُطِيعُوا قَالُوا بَلَ

ى. قَالَ فَادْخُلُوهَا. قَالَ فَنَظَرَ بَعْضُهُمْ إِلَى بَعْضٍ فَقَالُوا

إِنَّمَا فَرَرْنَا إِلَى رَسُولِ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- مِنَ ا

لنَّارِ. فَكَانُوا كَذَلِكَ وَسَكَنَ غَضَبُهُ وَطُفِئَتِ النَّارُ فَلَمَّا رَجَعُ

وا ذَكَرُوا ذَلِكَ لِلنَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ لَوْ دَخَلُ

وهَا مَا خَرَجُوا مِنْهَا إِنَّمَا الطَّاعَةُ فِى الْمَعْرُوفِ অর্থ: "আ

লী (রাHappy থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (সাHappy একটি সেনাদল যুদ্ধাভিযানে প্রের

ণ করলেন। এক আনসারী ব্যক্তিকে তাদের সেনাপতি নিযুক্ত করলেন। এবং

সাহাবীদেরকে তার কথা শুনা ও মানার জন্য নির্দেশ দিলেন। অতপরতাদের

কোন আচরণে সেনাপতি রাগ করলেন। তিনি সকলকে লাকড়ি জমা করতে বললে

ন। সকলে লাকড়ি জমা করলো এরপর আগুন জ্বালাতে বললেন।সকলে আগুন

জ্বালালো। তারপর সেনাপতি বললো রাসূলুল্লাহ (সাHappy কি তোমাদেরকে আমার আ

নুগত্য করারএবং আমার কথা শুনা ও মানার নির্দেশ দেন নাই? সকলেই

বললো, হ্যা। তিনি বললেন, তাহলে তোমরা সকলেই আগুনে ঝাঁপিয়ে পড়। সাহা

বীগণ একে অপরের দিকে তাকাতেলাগলেন। এবং বললেন, আমরাতো আগুন থেকে

বাঁচার জন্যই রাসূলুল্লাহ (সাHappy এর কাছে এসেছি। এ অবস্থায় কিছুক্ষন

পর তার রাগ ঠান্ডা হলো এবং আগুনও নিভে গেল। যখন সাহাবারা মদীনায়

প্রত্যাবর্তণকরলেন তখন বিষয়টি রাসূলুল্লাহ (সাHappy এর কাছে উপস্থা

পন করা হলো। উত্ তরে রাসূলুল্লাহ (সাHappy বললেন 'তারা যদি আমীরের ক

থা মতো আগুনে ঝাঁপ দিতো তাহলে তারা আর কখনোই তা থেকে বের হতে পারতো না

। প্রকৃতপক্ষে আনুগত্য কেবল ন্যায় এবং সৎ কাজেই।"(সহীহ মুসলিম

হা:নং: ৪৮৭২, সহীহ বুখারী হা: নং: ৪৩৪০, সহীহ মুসলিম বাংলা; ইসলামি

ক ফাউন্ডেশন কতৃক তরজমা; হা: নং: ৪৬১৫।) এ হাদীস থেকে পরিষ্কার

হয়ে গেল যে, শরিয়তের বিরূদ্ধে কারো হুকুমের আনুগত্য করা যাবে না। অথ

চ পীর সাহেবদের কাছে কুরআন ও হাদীসে বর্নিত এসকল বিষয়ের কোনই

গুরুত্ব নেই।এমনকি তাদের ধর্ম ও মাযহাব ভিন্ন বলে তারা দাবী করে

থাকে। যেমন: 'ভেদে মারেফাত বা ইয়াদে খোদা' এর ৭২ নং পৃষ্ঠায় বলা হয়ে

ছে عاشقاں را ملت و مذہب جداست+عاشقاں را ملت

و مذہب خداست অর্থ: "মাওলানা রুমি ফরমাইয়াছেন: প্রেমিক লোক

দের জন্য মিল্লাত ও মাজহাব ভিন্ন। তাহাদের মিল্লাত ও মাজহাব শুধু

মা'বুদ কেন্দ্রিক।" উল্লেখ্য যে,সকল মুসলিমদের দ্বীনই আল্লাহ কেন্

দ্রিক এবং আল্লাহর কর্তৃক নির্ধারিত। এখানে গোপন কোন বিষয় নেই ব

রং দ্বীনে ইসলাম স্বচ্ছ এবং পরিষ্কার একটি ধর্ম।তাহলে পীর সাহেব

রা আল্লাহ্‌ কেন্দ্রিক কোন ধর্মের কথা বলতে চাচ্ছেন যা অন্যদের ধর্ম

থেকে আলাদা? তাহলে দ্বীনে ইসলামের মধ্যে এমনো কোন বিষয় আছে কি যা রা

সূলুল্লাহ (সাHappy উম্মতের সকলেরসামনে প্রকাশ করেননি? এটাতো শীয়াদের

বক্তব্য । পীর সাহেবরাও কি শীয়াদের মতাদর্শকে সমর্থণ করছে? তাছা

ড়া ছয় লতিফা সম্পর্কে চরমোনাইয়ের পীর মাওলানা সৈয়দ মোহাম্মদ ইস

হাক সাহেব বলেন, 'ছয় লতিফার কথা কুরআনে পাক ও হাদীস শরীফে নাই, ত

বে আল্লাহ পাকের ওলীগণ আল্লাহ পাককে পাইবার জন্যএকটা রাস্তা হিসা

বে ইহা বাহির করিয়াছেন। যদি লতীফার ছবক আদায় করিতে চান, তবে এক

জন উপযুক্ত পীরের দরবারে থাকিতে হইবে। ('ভেদে মা'রেফাত বা ইয়াদে খো

দা' পৃষ্ঠা নং: ৫০।) তাহলে প্রশ্ন থেকে যায়, আল্লাহ (সুবHappy কে পাইবার

জন্য রাসূলুল্লাহ (সাHappy কি কোন রাস্তা বলে দেননি? যদি বলে দিয়ে থাকেন

তাহলে নতুন করে রাস্তা বানানোর দরকার পরলো কি? তাছাড়া আল্লাহকে পাও

য়ার রাস্তা উম্মতের সামনে স্পষ্ট করে দেয়া সাধারণ কোন শাখাগত বিষয়

নয় যে, বিষয়টি উম্মতের ইজতিহাদের উপর ছেড়ে দেওয়া হবে। পীরের কাছে

মুরীদ হওয়া ফরজ: কুরআনের নির্দেশ অনুযায়ী ফরজ বিধান দেওয়ার মালি

ক একমাত্র আল্লাহ (সুবHappy। ইরশাদ হচ্ছে: إِنِ الْحُكْمُ إِلَّا لِلَّهِ অর্

থ: "বিধান দিবার অধিকার আল্লাহরই।"(সূরা ইউসুফ ১২:৪০) আল্লাহ

(সুবHappy আরও ইরশাদ করেছেনঃ أَلَا لَهُ الْخَلْقُ وَالْأَمْرُ অর্থ: "জেনে রে

খো সৃষ্টি এবং বিধান তাঁরই।"(সূরা আরাফ ৭:৫৪।) পীর-সূফীদের আক্বীদা

হ হলো পীরের কাছে মুরীদ হওয়া ফরজ। যেমন চরমোনইয়ের পীরসাহেব '

মাওয়ায়েজে এসহাকিয়া' নামক কিতাবে বলেন: 'পীরের কাছে মুরীদ হওয়া ফরজ

'। তিনি আরও বলেন,'যদি কারো দুইজন পীর হয় তবে দুই পীর তোমার দুই

ডানা ধরে বেহেশতে নিয়ে যাবেন। কোনই ক্ষতি নাই।' ('মাওয়ায়েজে এছহাকিয়া

' সৈয়দ মা:মো: মোমতাজুল করীম রচিত: পৃষ্ঠা নং: ৫৫-৫৬ ) এছাড়া তিনি

আরও বলেন: 'যার কোন পীর নাই তার পীর শয়তান।' এজন্য তারা একটি

আরবী বাক্য তৈরী করেছে যাতে সাধারণ মানুষের আরবী দেখে এটাকেকুরআন-হা

দীস মনে করে বিনা আপত্তিতে মেনে নেয়। সে বাক্যটিহলো: مَنْ لَيْسَ لَهٌ

شَيْخٌ فَشَيْخُه شَيْطَانٌ অর্থ: "যার কোন পীর নাই তার পীর শয়তান

।" ('ভেদে মারেফাত বা ইয়াদে খোদা' মাওলানা সৈয়দ মোহাম্মদ এছহাক রচিত

: পৃষ্ঠা নং: ২৩।) এ আরবী বাক্য শুনে অনেকেই এটিকে হাদীস বলে বিশ্বা

স করে অথচ এটি কোন হাদীস নয় পীর-সূফীদের মনগড়া একটি বাক্য মাত্

র। পীরদের যতগুলো সিলসিলা রয়েছে প্রায় সকলের আক্বিদাই এরকম ।

যেমন চরমোনাই পীরদের আক্বিদাহ তাদের বই থেকে উপরে উল্লেখ করা হ

লো। এনায়েতপুরী পীর ও তার অনুসারীদের আক্বীদাহ-বিশ্বাসও একই রক

ম। তাদের রচিত কিতাব 'শরীয়তের আলো' নামক কিতাবে উল্লেখ আছে, 'পীর

ধরা সবার জন্য ফরজ'।( 'শরীয়তের আলো' খাজা বাবা এনায়েতপুরী সাহেবে

র অনুমোদন ক্রমে মাওলানা মো: মকিম উদ্দিন প্রণীত। প্রকাশক পীরজা

দা মৌ: খাজা কামার উদ্দিন (নুহ মিয়া)।) সুরেশ্বরী পীর লিখেছেন: 'পীরের

নিকট দীক্ষিত না হইলে কোন বন্দেগী কবূল হয় না।'(নুরে হক গঞ্জে নু

র, পৃষ্ঠা নং ২৫, সুরেশ্বর দরবার এর পক্ষে সৈয়দ শাহ নূরে মঞ্জুর

মোর্শেদ (মাহবুবে খোদা) ও ভ্রাতাগণ কর্তৃক প্রকাশিত, একদশ সংস্কর

ণ ১৯৯৮।) ভায়া মাধ্যম: আল্লাহ (সুবHappy পবিত্র কুরআনে ঘোষণা করেছে

ন মানুষ যত বড় পাপ ও গুনাহকরুক না কেন যদি তারা খাঁটি মনে আল্লাহ

র কাছে তওবা করেন তবে আল্লাহ (সুবHappy অবশ্যই তাকে ক্ষমা করে দিবেন

। এজন্য কোন ভায়া মাধ্যমের প্রয়োজন নাই। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ

(সুবHappy ইরশাদ করেন:وَمَنْ يَعْمَلْ سُوءًا أَوْ يَظْلِمْ نَفْسَهُ ثُمَّ يَ

سْتَغْفِرِ اللَّهَ يَجِدِ اللَّهَ غَفُورًا رَحِيمًا অর্থ:"আর যে ব্যক্তি মন্

দ কাজ করবে কিংবা নিজের প্রতি যুলম করবে তারপর আল্লাহর কাছে ক্ষ

মা চাইবে, সে আল্লাহকে পাবে ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।" (সুরা নিসা: ১১০)

এখানে সরাসরি আল্লাহরকাছে ক্ষমা চওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কো

ন প্রকারের ভায়ামাধ্যমের কথা নেই। আল্লাহ (সুবHappy আরও ইরশাদ করে

ন: قُلْ يَا عِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَى أَنْفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوا مِ

نْ رَحْمَةِ اللَّهِإِنَّ اللَّهَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعًا إِنَّهُ هُوَالْغَفُورُ ا

لرَّحِيمُ অর্থ: "বল, 'হে আমার বান্দাগণ, যারা নিজেদের উপর বাড়াবাড়ি

করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। অবশ্যই আল্লাহ স

কল পাপ ক্ষমা করে দেবেন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।"(সুরা

যুমার ৩৯:৫৩।) কিন্তু পীর-মাশায়েখগণ বলেন, বান্দা অসংখ্য গুনাহ ক

রলে পীরের মাধ্যমছাড়া আল্লাহ (সুবHappy মাফ করতে চাননা। যেমন: চরমো

নাইয়ের পীর বলেন:'বান্দা অসংখ্য গুনাহ করার ফলে আল্লাহ পাক তাহাকে

কবুল করিতে চান না। পীর সাহেব আল্লাহ পাকের দরবারে অনুনয় বিনয়

করিয়া ঐ বান্দার জন্য দোয়া করিবেন, যাহাতে তিনি কবুল করিয়া নেন। ঐ দো

য়ার বরকতে আল্লাহ পাক তাহাকেকবুল করিয়া নেন।' ('ভেদে মা'রেফাত বা ই

য়াদে খোদা' মাওলানা সৈয়দ মোহাম্মদ এসহাক রচিত, পৃষ্ঠা নং ৩৪।) তাদে

র এই বক্তব্য স্পষ্ট কুরআনের আয়াতের পরিপন্থি। ছোট বেলায় এক

টি কৌতুক শুনেছিলাম এক লোক শয়তানকে জিজ্ঞাসা করেছিলো; ওহেশয়তান! এ

ক লোক সারা জীবন অন্যায় করেছে, পাপ করেছে এখন সেবৃদ্ধ বয়সে এসে

তওবা করেছে আর কখনো গুনাহ করবে না বলে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তুমি

তাকে কিভাবে গোমরাহ করো? শয়তান হেসেবললো, এতো খুবই সহজ বিষয়। আ

মি তাকে বুঝাই তুমি সারা জীবন অন্যায় করেছ, পাপ করেছ। পাপ করতে কর

তে সীমালঙ্ঘন করেছ। তোমাকে আল্লাহ (সুবHappy এইভাবে ক্ষমা করবেন না

বরং তোমাকে একজন পীর ধরতে হবে। ঐ পীর যদি তোমার জন্য অনুনয়-বি

নয় করিয়া আল্লাহর কাছে তোমার জন্য ক্ষমা চান তাহলেই কেবলমাত্র তু

মি ক্ষমা পাইতে পার। এভাবে বুঝাইয়া-সমঝাইয়া তাকে একজন পীর ধরাইয়া

দেই। এরপরে আমার বাকী কাজ ঐ পীর সাহেবই আঞ্জাম দিয়ে থাকেন। এটি

একটি কৌতুক। এর কোন বাস্তবতা জানা ছিল না। কিন্তু চরমোনইয়ের পীর

সাহেবের 'ভেদে মারেফাত বা ইয়াদে খোদা' নামক বই পড়ার পরে শয়তানের এ

ই অভিনব কৌশলের বাস্তব দলীল পাওয়া গেল। আল্লাহর আন্দাজ নাই:

মুসলিম জাতির ঈমান-আক্বিদার একটি মূল ভিত্তি হলো যে, আল্লাহ (সুবHappy

সকল কাজ সুপরিকল্পিত ও সুপরিমিতভাবে করেন। আল্লাহ (সুবHappy পবিত্

র কুরআনে ইরশাদ করেন: إِنَّا كُلَّ شَيْءٍ خَلَقْنَاهُ بِقَدَرٍ অর্থ: "নি

শ্চয় আমি সব কিছু সৃষ্টি করেছি নির্ধারিত পরিমাণ অনুযায়ী (কোন ধরণে

র অসঙ্গতী ছাড়া)।"

া)।" (সুরা ক্বামার: ৪৯) এছাড়াও আল্লাহ (সুবHappy পবিত্

র কুরআনে ইরশাদ করেন: لَا يُسْأَلُ عَمَّا يَفْعَلُ وَهُمْ يُسْأَلُونَ অ

র্থ: "তিনি যা করেন সে ব্যাপারে তাকে প্রশ্ন করা যাবে না; বরং তাদেরকেই

প্রশ্ন করা হবে।" (সুরা আম্বিয়া: ২৩) কিন্তু চরমোনাইয়ের পীর সাহেব

'ভেদে মারেফাত নামক বইতে মছনবীয়ে রূমীর বরাত দিয়ে শামসূ তাবরিজীর

নকল শিরোনামে লিখেন: "বাদশাহ কুতুব সাহেবকে দরবারে হাজির করিয়া জিজ্

ঞাসা করিলেন, হুজুর, আপনি কি বলিয়া বৃদ্ধের নাতিকে জেন্দা করিয়াছেন? তি

নি বলিলেন যে আমি বলিয়াছি, হে ছেলে! আমার আদেশে জীবিত হইয়া যাও। বাদ

শাহ বলিলেন, আফসোস যদি আল্লাহর আদেশে জেন্দা হইতে বলিতেন। কুতুব

সাহেব উত্তর করিলেন মাবুদের কাছে আবার কি জিজ্ঞাসা করিব তাহার আন্দা

জ নাই। এই বৃদ্ধার একটি মাত্র পুত্র ছিল তাহাও নিয়াছে। বাকি ছিল এ

ই নাতিটি যে গাভী পালন করিয়া কোনরূপ জিন্দেগী গুজরান করিত এখন এটি

ও নিয়া গেল। তাই আমি আলস্নাহ পাকের দরবার থেকে জোড়পূর্বক রূহ নি

য়া আসিয়াছি।" (ভেদের মারেফাত বা ইয়াদে খোদা ১৫ পৃষ্ঠা।) এই ধরণের ঘ

টনা বর্ণনা করা এবং এর উপরে বিশ্বাস রাখা যে কুরআন বিরোধী তা বলার

অপেক্ষা রাখে না। ১২৬ তরীকা: আল্লাহ (সুবHappy কর্তৃক নাজিলকৃত বিধান

অনুযায়ী মানব জাতির মুক্তির পথকেবল মাত্র একটি। পবিত্র কুরআনেই

রশাদ হচ্ছে: وَأَنَّ هَذَا صِرَاطِي مُسْتَقِيمًا فَاتَّبِعُوهُ وَلَا تَتَّبِعُ

وا السُّبُلَ فَتَفَرَّقَ بِكُمْ عَنْ سَبِيلِهِ ذَلِكُمْ وَصَّاكُمْ بِهِ لَعَلَّكُ

مْ تَتَّقُونَ অর্থ: "আর এটিই আমার সোজা পথ। সুতরাং তোমরা তার অনুস

রণ কর এবং অন্যান্য পথ অনুসরণ করো না, তাহলে তা তোমাদেরকে তাঁর

পথ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেবে। এগুলো তিনিতোমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে

তোমরা তাকওয়া অবলম্বন কর।"(সুরা আনআ'ম ৬:১৫৩) এই আয়াতে আ

ল্লাহ (সুবHappy একটি তরীকাকেই অনুসরণ করতে বলেছেন। আল্লাহ (সুব:

) বলেন: وَعَلَى اللَّهِ قَصْدُ السَّبِيلِ وَمِنْهَا جَائِرٌ وَلَوْ شَاءَ لَهَدَا

كُمْأَجْمَعِينَ অর্থ: "আর সঠিক পথ বাতলে দেয়া আল্লাহর দায়িত্ব, এ

বং পথের মধ্যে কিছু আছে বক্র। আর তিনি যদি ইচ্ছা করতেন তবে তোমাদে

র সকলকে হিদায়াত করতেন।"(সুরা নহল ১৬:৯।) রাসূলুল্লাহ (সাHappy থে

কে 'সিরাতে মুস্তাকিম' সর্ম্পকে হাদীস বর্ণিত হয়েছে: عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْ

نِ مَسْعُودٍ قَالَ خَطَّ لَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّ

مَ خَطًّا ث ُمَّ قَالَ هَذَا سَبِيلُ اللَّهِ ثُمَّ خَطَّ خُطُوطًا عَنْ يَ

مِينِهِ وَعَنْ شِمَالِهِ ثُمَّقَالَ هَذِهِ سُبُلٌ قَالَ يَزِيدُ مُتَفَرِّقَةٌ عَلَ

ى كُلِّ سَبِيلٍ مِنْهَا شَيْطَانٌ يَدْعُو إِلَيْهِ ثُمَّ قَرَأَ : إِنَّ هَذَا صِرَ

اطِي مُسْتَقِيمًا فَاتَّبِعُوهُ وَلَا تَتَّبِعُوا السُّبُلَ فَتَفَرَّقَ بِكُمْ عَ

نْ سَبِيلِهِ অর্থ: "আবদুল্লাহ ইবনেমাসউদ (রাHappy বলেন রাসূলুল্লাহ (

সাHappy আমাদেরকে (সিরাতে মুস্তাকিম বুঝানোর জন্য) প্রথমেএকটি সোজা দাগ

দিলেন। আর বললেন এটা হলো আল্লাহর রাস্তা । অতপর ডানে বামে অনেক

গুলো দাগ দিলেন আর বললেন এই রাস্তাগুলো শয়তানের রাস্তা । এ রাস্তা

গুলোর প্রতিটি রাস্তার মুখে মুখে একেকটা শয়তান বসে আছে যারা এ রাস্তা

র দিকে মানুষদেরকে আহবান করে। অতপর রাসূলুল্লাহ (সাHappy নিজের কথার

প্রমাণে উপরে উল্লেখিত প্রথম আয়াতটি তেলাওয়াত করলেন।" (মুসনাদে

আহমদ ৪১৪২; নাসায়ী ১১১৭৫; মেশকাত ১৬৬।) কিন্তু পীর-মাশায়েখ

গণের তরীকা অনেক । যেমন: চরমোনাইয়ের পীর সৈয়দ মোহাম্মদ এসহাক

সাহেব তার প্রায় সকল বইতেই উল্লেখ করেছেনযে, "আমার প্রিয় বন্ধু

গণ! জানিয়া রাখিবেন, দোযখের আযাবেরপথ বন্ধ করিয়া বেহেশতে যাইবার

জন্য কেতাবে ১২৬ তরিক বয়ান করিয়াছেন। তন্মধ্যে চিশতিয়া ছাবেরিয়া

তরিকা একেবারে শর্টকাট এই তরিকার প্রথম ছবকখানা লিখিয়া এজাজত

দিলাম।" ('আশেক মা'শুক' সৈয়দ মাওলানা এসহাক রচিত পৃষ্ঠা নং ১১২,

একই লেখকের কিতাব 'ভেদে মারেফাত ইয়াদে খোদা' পৃষ্ঠা নং ৬।) আবার সূফী

দের কোন কোন বইতে বলা হয়েছে, 'তরীকার সংখ্যা অগনিত তবে বর্তমানে

পৃথিবীতে প্রায় তিন শতাধিক তরীকা বিদ্যমান রয়েছে'।( 'সূফী দর্শণ' ড:

ফকির আবদুর রশিদ রচিত, পৃষ্ঠা নং: ১৬৭।) অথচ রাসূলুল্লাহ (সাHappy

বলেছেন: عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَ

سَلَّمَ قَالَكُلُّ أُمَّتِي يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ إِلَّا مَنْ أَبَى قَالُوا يَا رَسُ

ولَ اللَّهِ وَمَنْ يَأْبَى قَالَ مَنْ أَطَاعَنِي دَخَلَ الْجَنَّةَ وَمَنْ

عَصَانِي فَقَدْ أَبَى অর্থ: আবু হুরায়রা (রাযিঃ) হতে বর্ণিত রাসূল (সাঃ

) ইরশাদ করেছেন; আমার সকল উম্মতই জান্নাতে প্রবেশ করবে। তবে

যে অস্বীকার করল (সে ব্যতিত)। সাহাবায়ে কেরাম প্রশ্ন করলেন, ইয়া

রাসুলুল্লাহ! অস্বীকার করলকে? রাসূল (সাঃ) বললেন, যে ব্যক্তি আমার

আনুগত্য করল সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যে আমার আনুগত্য কর

ল না সেই অস্বীকার করল (ফলে সে জাহান্নামে যাবে)। ( সহীহ বুখারী।) এ

ই হাদীস দ্বারা বুঝা গেল জান্নাতে যাওয়ার একমাত্র রাস্তা রাসূল (সাHappy

র তরিকায় চলা। চরমোনাইয়ের পীরদের বাতলানো চিশতিয়া ছাবেরিয়া তরিকা

নয়। এ সমস্ত তরিকার বয়ান পবিত্র কুরআনে ও হাদীসে নাই। তাহলে ১

২৬ তরিকা ওনারা কোন কিতাবে পেলেন? আল্লাহর সাথে মিশে যাওয়া: ইসলামে

তাওহীদের গুরুত্ব অপরিসীম। যার অর্থ হলো: এক ইলাহের সার্বভৌমত্

ব ও এক ইলাহের বিধান মেনে নেওয়া। উলুহিয়্যাত, রুবুবিয়্যাত ও আসমা

ওয়াস সীফাত সকল ক্ষেত্রে আল্লাহ (সুব) এর একাত্ব বজায় রাখা। কিন্

তু পীর-সূফীদের পরিভাষায় তাওহীদ মানে হলো 'আল্লাহর সাথে একাকার হয়ে

যাওয়া'। অর্থাৎ বান্দা ইবাদত করতে করতে এমন এক পর্যায়ে চলে যা

য় যেখন বান্দা ও আল্লাহর মাঝে কোন পার্থক্য থাকে না । চিনি যেভাবে পা

নির সঙ্গে মিশে যায় সেভাবে আল্লাহওয়ালাগণ আল্লাহর সঙ্গে মিশে যান ।

এরা তাদের এই মতের সপক্ষে নিম্নের হাদীসটিকে প্রমাণ স্বরূপ পেশ ক

রে থাকে: عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَ

لَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ اللَّهَ قَالَ مَنْ عَادَى لِي وَلِيًّا فَقَدْ آذَنْتُهُ بِالْحَ

رْبِ وَمَا تَقَرَّبَ إِلَيَّ عَبْدِي بِشَيْءٍ أَحَبَّ إِلَيَّ مِمَّا افْتَرَضْتُ

عَلَيْهِ وَمَا يَزَالُ عَبْدِي يَتَقَرَّبُ إِلَيَّ بِالنَّوَافِلِ حَتَّى أُحِبَّهُ فَإِذَ

ا أَحْبَبْتُهُ كُنْتُ سَمْعَهُ الَّذِي يَسْمَعُبِهِ وَبَصَرَهُ الَّذِي يُبْصِرُبِهِ

وَيَدَهُ الَّتِي يَبْطِشُ بِهَا وَرِجْلَهُ الَّتِي يَمْشِيبِهَا وَإِنْ سَأَلَنِي

لَأُعْطِيَنَّهُ وَلَئِنْ اسْتَعَاذَنِي لَأُعِيذَنَّهُ وَمَا تَرَدَّدْتُ عَنْ شَيْءٍ

أَنَا فَاعِلُهُ تَرَدُّدِي عَنْ نَفْسِ الْمُؤْمِنِ يَكْرَهُ الْمَوْتَ وَأَنَا أَكْ

رَهُ مَسَاءَتَهُ অর্থ: "আবূ হুরাইরা (রাHappy থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূ

লুল্লাহ (সাHappy বলেছেন: আল্লাহ তায়ালা বলেন, যে ব্যক্তি আমার কোন ওলী

র সাথে শত্রুতা রাখবে, আমি তার সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করি । আমার বান্দা আ

মি তার উপর যা ফরয করেছি তার চেয়ে আমার কাছে বেশী প্রিয় কোন ইবাদ

ত দ্বারা আমার নৈকট্য অর্জণ করতে পারে না। আমার বান্দা সর্বদা ন

ফল ইবাদত দ্বারাআমার নৈকট্য অর্জণ করতে থাকে, এমন কি অবশেষে

আমি তাকে আমার এমনপ্রিয় পাত্র বানিয়ে নেই যে, আমিই তার কান হয়ে যা

ই, যা দিয়ে সে শুনে। আমিই তার চোখ হয়ে যাই, যা দিয়ে সে সবকিছু দেখে। আ

র আমিই তার হাত হয়ে যাই, যা দিয়ে সে ধরে। আমিই তার পা হয়ে যাই, যাদ্

বারা সে চলে। সে যদি আমার কাছেকোন কিছু সাওয়াল করে, তবে আমি নিশ্চয়ই

তাকে তা দান করি। আর যদি সে আমার কাছে আশ্রয় চায়, তবে অব্যশই আ

মি তাকে আশ্রয় দেই। আমি যে কোন কাজ করতে চাইলে এটাতে কোন রকম দ্

বিধা সংকোচ করি না, যতটা দ্বিধা সংকোচ মু'মিন বান্দার প্রাণ হরণে করি।

সে মৃত্যুকে অপছন্দ করে আর আমি তার কষ্ট অপসন্দ করি।" (সহীহ

বুখারী ৬৫০২) এই হাদীস দ্বারা দলীল দিয়েই ভারত বর্ষের প্রসিদ্ধ

সুফীবাদী তাফসীর 'তাফসীরে মাযহারী' তে বলা হয়েছে: اِنَّ اللَّه تَعَالَي يَسْ

تَوْدِعُ فِيْ قُلُوْبِ بَعْضِهِمْ مَحَبَةً ذَاتِيَّةً مِنْهُ تَعَالَيْ مُوْجِبَةً لِل

مَعِيِّةِ الذَاتِيِّةِ অর্থ:"আল্লাহ (সুবHappy কোন কোন মানুষের অন্তরের মধ্

যে তার জাতি (সত্ত্বাগত) মুহাব্বত তৈরী করে দেন ফলে সে সত্ত্বাগতভাবে

আল্লাহর সাথে মিশে যায়।"('তাফসীরে মাযহারী' প্রথম খন্ড ৫০পৃষ্ঠায়

إِنِّي أَعْلَمُ مَا لَا تَعْلَمُونَ আয়াতের তাফসীরে দ্রষ্টব্য।)।) এভাবে 'মানসূর হাল্লাজ'

এই জঘন্য শিরকি আক্বিদার গোড়াপত্তণ করেন। পরবর্তীতে সূফীদের শা

য়খে আকবার 'মহিউদ্দীন ইবনে আরাবী' এই আক্বীদাকে আরও সম্প্রসার

ণ করে 'ওয়াহদাতুল অজুদ' এর আক্বীদাহ মুসলিম জাতির মধ্যে ছড়িয়ে দে

ন। যার সারকথা হলো, 'বান্দা এবংআল্লাহর অস্তিত্ব এক।' বর্তমান

পীর-সূফীদেরও একই আক্বীদাহ। যেমন: চরমোনাইয়ের পীর সাহেব বলেন:

'মানছুর হাল্লাজ যখন আল্লাহ পাকের এশকের জোশে দেওয়ানা হইতেন, ত

খন তিনি এই শেরপড়িতেন: من تو شدم تو من شودی منتن ش

دم تو جاںشدی بعدازاں کسی نگوید کہ من دیگر م تو

دیگری ওগো আমার মা'শুক মাওলা! আপনি আপন কুদরাতী নজরে আমার দি

কে চাহিয়াদেখুন। আমি এখন আমি নাই। আমি আপনি হইয়াছি আর আপনি আমি

হইয়াছেন। আমি হইয়াছি তন্, আপনি হইয়াছেন জান। আমি শরীর আপনি প্

রাণ। এরপর আর কেহ বলিতে পারে না যে, আমি একজন আপনি আর একজন

। বরং আমি ও আপনি এক হইয়া গিয়াছি, অর্থাৎ আমি আপনার জামালের খুশী

র মধ্যে ডুবিয়া গিয়াছি, আমার অজুদ ফানা হইয়া গিয়াছে এবং আমার রূহ আ

পনার নূরের সাথে মিশিয়া গিয়াছে। আমার আমিও যখন লয় হইয়া গিয়াছে, ত

খন আমি আর কোথায় আছি?আমি নাই। আপনিই ছিলেন, আপনিই আছেন, আপ

নিই থাকিবেন। আপনিতো আপনি, আমিও আপনি। আমি বলিতে আর কিছুই নাই।

" ('আশেক মাশুক বা ইশকেইলাহী' সৈয়দ মোহাম্মদ এসহাক রচিত, পৃষ্ঠা

নং ৪২।) অথচ এটি একটি মারাত্মক শিরকী আক্বিদাহ। কেননা আল্লাহ

হচ্ছেন খালেক বা সৃষ্টিকর্তা। মানুষ হলো মাখলূক বা সৃষ্টি। সৃষ্ট্রা ও

সৃষ্টির মধ্যে একাকার করে দেওয়া এটা হিন্দুদের আকিদাহ । তাদের বিশ্বা

স, স্রষ্টার কোন স্বতন্ত্র অস্ত্মিত্ব নেই, সৃষ্টির সবকিছুর মধ্যে

ই তিনি বিরাজমান। এজন্য তারা বলে থাকে 'সবকিছুই ঈশ্বর' তাদের পরি

চয়ও হলো...'সর্বেশ্বরবাদী' । অথচ মুসলিমদেরআক্বিদাহ হলো 'সবকি

ছুই আল্লাহর সৃষ্টি'। তবে...আল্লাহ নয়। মনসূর হাল্লাজের এই ভ্রান্ত আকিদার কারণে বাগদাদের

তৎকালিন সমস্ত আলেমদের সর্বসম্মতিক্রমে তাকে হত্যা করা হয়। আ

র বাগদাদ তখন ছিল বাগদাদ! অর্থাৎ ইসলামী জ্ঞানের প্রাণ কেন্দ্র

। এমতাবস্থায় সমস্ত ওলামায়ে কেরামদের কুরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক সর্

বসম্মতিক্রমে দেওয়া ফাতওয়াকে উপেক্ষা করে মানসুর হাল্লাজকে আল্লাহ

র অলী বলে আক্বিদাহ পোষণ করা মূলত: ইসলামী শরিয়াহ ও আলেম ওলামা

দেরসর্বসম্মত রায়কে বৃদ্ধাঙ্গুলীপ্রদর্শন করার শামিল । তাছাড়া পী

র-সূফীদের এই মহান গুরু মানসুর হাল্লাজ সম্পর্কে ইসলামী ইতিহাসের

সবচেয়ে গ্রহণ কিতাব ইমাম ইবনে কাসীর রচিত 'আল বিদায়া ওয়ান নিহা

য়া'তে বলা হয়েছে: قَالَ الْخَطِيْبُ فَأَمَّا الْفُقَهَاءُ فَحَكَي عَنْ غَيْرِ

وَاحِدٍ مِنَ الْعُلَمَاءِ وَالْاَئِمَّةِ إِجْمَاعُهُمْ عَلَى قَتْلِهِ، وَأَنَّهُ قُتِ

لَ كَافِرًا، وَكَانَ كَافِرًا مُمْخَرِقًا অর্থ: "খতীবে বাগদাদী বলেন: ফু

কাহায়ে কেরামদের অনেকেই বলেছেন যে, হাল্লাজকে কতল করার ব্যাপারে ওলা

মাদের ইজমা হয়েছিল এবং কাফের হিসেবেই তাকেকতল করা হয়েছে । সে ছিল

কাফের, মিথ্যাবাদী ।" (আল বিদায়া ওয়াননিহায়া ১১খন্ড ১১৫পৃষ্ঠা।) এ

র পর ইবনে কাসির (রHappy হাল্লাজের কিছু ভন্ডামি উল্লেখ করেছেন । যার

দ্বারা এর স্পষ্ট হয়ে যায় যে হাল্লাজ কোন আল্লাহওয়ালা ছিল না । বরং

সে ছিল প্রতারক। তাই যারা মনসুর হাল্লাজকে অনুসরণ করছেন তাদের

ভেবে দেখা উচিত । বিশেষ করে বিদায় নিহায়ার ১১খন্ডে উল্লেখিত মানসুর

হাল্লাজের জীবনি সকলের পড়া উচিত । সূফীদের দলীল হিসাবে পেশ করা আ

বূ হুরাইরা (রাHappyএর উপরোক্ত হাদীসটির জবাবে আমরাবলবো: ঐ হাদীসে মূ

লত আল্লাহর নুসরাত-সাহায্যের কথা বলা হয়েছে। আল্লাহর সঙ্গে একা

কার হয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়নি। হাদীসের শেষ অংশে তা স্পষ্ট করা হয়ে

ছে। সেখানে বলা হয়েছে 'সে যদি আমার কাছে কোন কিছু সাওয়াল করে, তবে আমি

নিশ্চয়ই তাকে তা দান করি । আর যদি সে আমার কাছে আশ্রয় চায়, তবে অ

বশ্যই আমি তাকে আশ্রয় দেই ।' স্বত্তাগতভাবেই যদি আল্লাহ সঙ্গে

মিশে যায় তাহলে আবার আল্লাহর কাছে সাওয়াল করা বা আশ্রয় চাওয়ার প্

রয়োজন কি? মূলত: এ জাতীয় বাক্যগুলো সাহায্য-সহানুভূতি করার ক্ষেত্রে

ই ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যেমন প্রধানমন্ত্রী কাউকে বললো, যাও! অ

মুক কাজটা তুমি করো আমি তোমার সঙ্গে আছি। এর অর্থ হলো আমার সাহায্

য-সহানুভূতি তোমার সঙ্গে থাকবে। এর মানে এই নয় যে, প্রধানমন্ত্রী

তার সঙ্গে স্বত্তাগতভাবে মিশে যায়। এ বিষয়টি একটি সাধারণ লোকেও বু

ঝে। কিন্তু সূফিবাদীরা নিজেদের ভ্রান্ত মতের স্বপক্ষে হাদীসটিকে অপব্য

বহার করে থাকে ।পীরদের ভ্রান্ত আকিদার উপর অডিওলেকচার ডাউনলোড

করতে নীচের লিন্কে ক্লিক করুন

বিষয়: বিবিধ

২৩৫২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File