"আ" প্রত্যয়ের ঘোরটোপে
লিখেছেন লিখেছেন এস এম আবু নাছের ২৩ অক্টোবর, ২০১৪, ০১:১৮:২৩ দুপুর
ইসলামে প্রবেশের পর ইসলামকে জীবন বিধান হিসেবে মানতে না পারার পিছনে রয়েছে দৃষ্টিভঙ্গি ও ছোট্ট একটি 'আ' প্রত্যয়ের পার্থক্য। দুনিয়াদারের কাছে ইসলাম অর্থ শৃঙ্খল; আর একজন মুমিনের কাছে সেটিই শৃঙ্খলা।
টাকা-পয়সা, খ্যাতি, নারীর প্রতি আকর্ষণ, মিউজিক, মুভি, সুন্দর বাড়ি, দামী গাড়ি- এগুলোর তাড়নায় অধিকাংশ মানুষ গাফেল রয়ে যায়, আল্লাহ পাকের আনুগত্য করতে শত অজুহাত জানায়? কিন্তু একবারও এগুলোর প্রকৃত বাস্তবতা উপলব্ধি করার চেষ্টা করেনা।
কেউ যদি প্রতি বেলায় পোলাও-কোর্মা খেতে থাকে, তবে দুদিনের মাথায় হয়ত সে হাঁপিয়ে উঠবে এবং ডাল-ভাতে ফিরে যেতে চাইবে। কিন্তু সে যদি আগেই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে যে প্রতি বেলায় পোলাও খাওয়াই ‘সুখের’ আলামত? তাহলে তার করুণ দশা হবে, কেননা সেক্ষেত্রে সে জোর করে পোলাও-কোর্মা খেতে থাকবে শুধুমাত্র মানুষের সামনে এ কথা প্রমাণের জন্যই যে সে কত ‘সুখী’! বড়ই আফসোস! এই খাবার তারই জন্য বরাদ্দ ছিল, রিযকের ভাগ সে পেতই। অথচ সে এই খাবারেরই দাসে পরিণত হল!
যারা দুনিয়াকে ‘ভোগ’ করে শেষ করতে চায়, তারা ঠিক এই লোকটির মত প্রতিবেলায় জোর করে পোলাও খাচ্ছে। অনেকক্ষেত্রে না চাইলেও তাদেরকে পৃথিবীকে ভোগ করার ঘানি টানতে হচ্ছে শুধুমাত্র এ কথা প্রমাণ করার জন্য যে তারা কত ‘সুখী’! সুখের মেকী আবরন তাদের ভুলিয়ে রাখছে। যারা টাকার পাহাড় গড়তে ব্যস্ত অথচ ভালো কাজে ব্যয় করতে নারাজ - তারা কি এই টাকার মালিক না এই টাকাই তাদের মালিক?
আবার একজন পুরুষের হৃদয় যদি কোন নারীর সাথে এঁটে যায়, তাহলে তার হৃদয় থাকে ওই নারীর কাছে বন্দি। নারীটি তার অধিপতি হয়ে বসে, পুরুষ তার ক্রীড়নকে পরিণত হয়। এভাবেই যারা তাদের প্রকৃত ‘ইলাহ’ আল্লাহর দাসত্বের ‘বন্ধন’ ছুঁড়ে ফেলতে চায়, তারা নিজেদের গলায় অসংখ্য দাসত্বের ‘বেড়ি’ পরিয়ে নেয়!
যদি কেউ এর বাস্তবতা বুঝতে চায়, তবে দুনিয়ার পেছনে ছুটতে থাকা কোন ধনী ব্যক্তির সাথে, মিডিয়া সেলিব্রেটিদের সাথে খোলামেলা আলাপ করে দেখুক। হতাশার উত্স আর অশান্তির মূলে খুঁজে পাবে এই ভোগবাদী চিন্তা আর দৃষ্টিভঙ্গি। যার ফলে শৃঙ্খলা না শিখে সে শঙ্খনীল শৃঙ্খলে আবদ্ধ হয়।
আর ইসলাম আমাদের জন্য এই সকল শৃঙ্খল থেকে মুক্তি দেয়, বহু সত্তার দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে মুক্তিকল্পে এক শাশ্বত শৃঙ্খলা শেখায়।
বিষয়: বিবিধ
১০৭৯ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
চমৎকার নান্দনিক উপস্হাপনা!
শৃঙ্খল আর শৃঙ্খলার মধ্যকার তফাত টা অসাধারণ সুন্দর ভাবে ফুটে উঠেছে লেখনীতে!
অনেক ধন্যবাদ ও জাযাকাল্লাহু খাইরান আপনাকে।
লেখাটি অনেক ভালো লেগেছে। অনেক ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা রইলো।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
মন্তব্য করতে লগইন করুন