ভালবাসার সাইক্লিক অর্ডার (ধারাবাহিক গল্পঃ শেষ পর্ব)
লিখেছেন লিখেছেন মামুন ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৪:০৯:২৯ বিকাল
সকালবেলাটা রাহাতের কাছে খুব ভাল লাগে।
সেই ছেলেবেলা থেকেই। বাবার সাথে ভোরবেলা খালি পায়ে মাটির রাস্তায় হেঁটে হেঁটে কত বেড়িয়েছে। বাবা বলতেন, ‘ মাটির এই শরীর আমাদের। মাটির সংস্পর্শে প্রতিদিন কিছু সময় কাটাবে।‘ ব্যাচেলর কোয়ার্টার পার হবার সময় রাহাতের মনে হল, আজ বাবা বেঁচে থাকলে কতো খুশী হতেন এই ক্যাম্পাসের ভিতর ভোরবেলা হাঁটতে পারলে।
সেনওয়ালিয়ার শেষ প্রান্ত থেকে একেবারে সেই এম এস হলের গেইট পর্যন্ত এতো বড় রাস্তা, যার দু’পাশে গাছের সারি- খুব কম যায়গায়ই আছে। দ্রুত হাটলেও যাওয়া-আসায় ঘন্টারও বেশী সময় লেগে যায়।
পানধোয়ার বাসা থেকে সকালে অফিসে প্রতিদিন সে হেঁটেই যায়। যদিও বাইক আছে ওর। কিন্তু পিম্পি চায় সে হেঁটেই অফিসে যাক। সাড়ে সাতটা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত অফিস। এর ভিতরে অনেকে কতবার যে বাসায় আসে, যার গরু আছে সে গরুকে ঘাস কেটে খাওয়ায়, ছেলে-মেয়েকে স্কুলে দিয়ে আসা এবং নিয়ে যাওয়ায়ও কাটে বেশ কিছু সময়। কাঁধের ল্যাপটপ এর ব্যাগটা একটু অ্যাডজাস্ট করতে করতে এই কথাগুলো ভাবছিল। এতো আরামের চাকুরি, তারপরও সবাই কত অভিযোগ করে!
রাহাত প্রশাসনিক অফিসার। এখন ট্রান্সপোর্ট এ বদলি হয়েছে। পোষ্ট অফিসের সাথেই ওর বসার জায়গা। ভালই লাগছে এই ক্যাম্পাসের জীবন। রাজনৈতিক অস্থিরতা না থাকলে এতো সুন্দর ক্যাম্পাস খুব কমই আছে। শাহেদ সাহেবকে পথে পেলেন সেই ভিসি স্যারের বাসার কাছে গিয়ে। দুজনে হাল্কা কথা বলতে বলতে হেঁটে চললেন। পাশ দিয়ে আরো অনেকে বাইকে কিংবা রিক্সায় ওদেরকে ক্রস করলেন। যাবার সময়ে সৌজন্যমুলক হাসি দিতে কেউই ভুললেন না। তবে এরাই সময়ে একজন আর একজনের চীরশত্রু হতে দ্বিধা করবে না।
যেমনটি করছে না এখন সে আর পিম্পি। আসলেই কি ওদের ভিতরের সেই আগের সম্পর্ক আর নেই? কীভাবে এই দুরত্ত তৈরী হল? অফিসে এসে চেয়ারে বসে কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে রইলেন। পিওন আল-আমিন একবার রুমে এসে বসের এই অবস্থা দেখে নীরবে সরে গেল।
রাহাতের ৬ মাস আগের এক রাতের কথা মনে পরল। একটা জরুরী ফাইল খুঁজতে গিয়ে শেষে এমন কিছু একটা পেয়ে গেল... এমন একটা কষ্টকর জিনিস! নিজের কেবিনেট খুজে পিম্পির টায় খোঁজা শুরু করল। অনেক কাগজপত্রের ভিতরে কয়েকটা গিফট কার্ড বের হল। প্রথমে সেদিকে তাকালোই না। ফাইলটা খোজায় মন দিল। কিন্ত অবচেতন মনে কার্ডগুলোর রং ওকে দ্বিধায় ফেলছিল। বিয়ের আগে থেকেই এতো পরিমাণে গিফট কার্ড সে পিম্পিকে দিয়েছে- সেগুলোর একটা নির্দিষ্ট প্যাটার্ণ ছিল। রঙের ব্যাপারেও তার খুঁতখুঁতে স্বভাব রয়েছে। ফাইলটা না পেয়ে সব কিছু আগের যায়গায় রেখে দিলেও কার্ড তিনটিকে সে রাখল না। দুরু দুরু বুকে পিঙ্ক কালারের কার্ডগুলো বের করল। ... একটাকে খুলে এক অচেনা হাতের লিখা দেখে... সাথে সাথে ওর এতোদিনের প্রিয়তমাও ওর কাছে অচেনা নারীতে পরিণত হল... মুহুর্তেই! কোনো প্রকার যাচাই সে করল না। কারণ এমন একটা লাইন লিখা ছিল ... পিম্পির নাম উল্লেখ করে... সব কিছুই এতে বোঝা যায়। তবে একজন পুরুষ কখনোই চাইবে না তার ভালবেসে বিয়ে করা বউ কোনো এক সময়ের তার প্রেমিকের গিফট কার্ড এতো দিন পর্যন্ত সযত্নে রেখে দিবে!
কেন?
পিম্পির কি প্রয়োজন ছিল ওগুলোকে এখনো সামলে রাখার?
তবে কি সে সেই অচেনা পুরুষটিকে মনে মনে এখনো লালন করছে?
ভালবাসার সময়গুলোতে সে দেখেছে চুমু'র ব্যাপারে পিম্পির ভীষণ অনীহা? এই একটা কাজ সে কখনো রাহাতের সাথে স্বতস্ফুর্ত ভাবে করেনি।
তবে কি ঐ কার্ড এর মালিকের জন্যই... নিজেকে সে এই একটি দিক থেকে সামলে রাখছে?
এভাবে ওদের বিবাহিত জীবনের এতোগুলো বছর পার করে দিয়ে সন্দেহ রাহাতের মনের ভিতর দানা বাঁধল। তবে সে একটা অক্ষম যন্ত্রনায় কষ্ট পেলেও পিম্পির সাথে এই ব্যাপারে কোনো কথাই বলল না। সে যে জিনিসগুলো দেখেছে- তার কোনো প্রমাণই সে রাখল না।
ভিতরে ভিতরে সে একেবারে ভেঙ্গে পড়েছিল।
এই সময়টাতেই রাস্না এলো ওদের পাশের ফ্ল্যাটটায়।
আর... সেখান থেকে একেবারে ওর হৃদয়ে!
... ...
জাহাঙ্গীরনগর স্কুল ও কলেজের সামনে থেকে একটা খালি রিক্সা দেখে উঠে পরে রাস্না। ছোট ছেলেটিকে পাশে বসিয়ে শক্ত করে ধরে রাখল। ওয়ানে পরে। বড়টি এবার এইটে। সে একা একাই বাসায় আসে। তবে ছোটটিকে ছুটির পরে এসে নিয়ে যেতে হয়।
রিক্সাটা ট্রান্সপোর্টের সামনে দিয়ে পোষ্ট অফিসে এসে দাঁড়ালো। ভাড়া দিয়ে ছেলের হাত ধরে অফিসের সামনের জানালায় গেল। এখান থেকেই টাকাটা তুলতে হবে। কর্মরত অফিস সহকারী ছেলেটির সাথে কথা বলায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এরই ফাঁকে বাবুটা ওর হাত ছেড়ে সামনে কাকে দেখে এগিয়ে যায়। ফর্ম ফিলাপে ব্যস্ত রাস্না খেয়ালই করে না। তবে সব শেষে টাকাটা পার্সে রেখে পাশে ফিরেই তোতনকে না পেয়ে চমকে উঠে। আশেপাশে তাকিয়ে দেখে। নাহ! কৈ গেল?
একটু ঘাবড়ে যায় রাস্না। পাশের দুটো রুমে উঁকি দিয়ে দেখে, সেখানেও নেই। এমন সময় ,’আম্মু’ শব্দে পিছনে ফিরে তাকায়। দুটো পরিচিত হাসিমুখ। একটা ওর তোতনের। আর অপরটা রাহাতের। একটু রাগ হয় রাহাতের উপর। কিন্তু কেন সেটা বুঝে উঠে না।
: ‘তুমি আবার আমাকে ঘাবড়ে দিয়েছ!’ – ছেলেকে বকা দেয়। ছেলে গাল ফুলিয়ে মাথা নীচু করে থাকে। একেবারে ওর বাবার মত। একটু মায়া লাগে। আদর করে কাছে টেনে নেয়। একই সময় অন্য একটা জিনিস রাস্নার চিন্তার জগতকে এলোমেলো করে দিয়ে যায়।
রাহাত এর অফিস সব শেষের রুমটাতে। রাস্নাকে সেখানে বসার আমন্ত্রণ জানালে সে কাজের অজুহাতে এড়িয়ে যায়। এককাপ চা এর অনুরোধটাও সে প্রত্যাখ্যান করে। রাহাত আর বেশী জোরাজুরি করে না। একটা খালি রিক্সা ডেকে তাতে মা-ছেলেকে উঠিয়ে দেয়।
রিক্সায় বসে ভাবনায় ডুবে যায় রাস্না। এই রাহাতের সাথে চ্যাটে কতই না সে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। কত সুন্দর করে কথার পিঠে কথা সাজিয়ে যায় দুজনে। সেটা কি তবে চোখের আড়ালে হবার দরুন? কেন সামনা সামনি এলেই রাজ্যের জড়তা এসে ভীড় করে ওর মনে।
সে কি পাভেলকে ছেড়ে এই লোকটাকে ভালোবাসা শুরু করেছে?
নাহ! পছন্দ করা আর ভালোবাসা দুটো এক নয়-আলাদা জিনিস। যে কাউকে যে কারো বা যে কোনো কিছুকে পছন্দ হতেই পারে। কিন্তু ভালোবাসা মুহুর্তে তৈরী হলেও সেটার একটা প্রেক্ষাপট এবং কিছু ক্যাটাগরী রয়েছে। রাহাত একজন ভাল বন্ধু হতে পারে তার ভার্চুয়াল জগতে। কিন্তু এর বেশী কিছু নয়।
আজ তোতনকে বকা দেবার সময় সে যখন মুখ ফুলিয়ে –নাকের পাতা ফুলিয়ে মাথা নীচু করে ছিল; অবিকল তখন দেখতে পাভেলের মতই লাগছিল। ছেলেকে কাছে টেনে নিয়ে আদর করার সময় আসলে সে মনে মনে পাভেলকেই আদর করতে চেয়েছে! তবে কেন এই ৬ মাস ধরে সে নেটে অন্য এই বিবাহিত পুরুষটির সাথে অনেক রাত পর্যন্ত সময় কাটাচ্ছে?
পাভেলের রামপুরায় থাকাকালীন ইভানার সাথের সেই ঘটনাটা ওকে অনেক কষ্ট দিয়েছে ঠিকই। তবে পরে সে আসল পরিস্থিতিটা বুঝে নিয়ে ওকে ক্ষমাও করে দিয়েছিল। ইভানাও পাভেলকে ক্ষমা করে দেয়। খুব ভাল এক যায়গায় ইভানার বিয়ে হয়েছে। এখনো বছরে দু’একবার সে পরিবার সহ ওদের বাসায় আসা-যাওয়া করে।
তবে কেন রাস্না পাভেলের চোখের সামনে এই প্রেম প্রেম খেলাটা খেলছে? সে কি একই সাথে দুজন পুরুষের হৃদয়কে এলোমেলো করে দিচ্ছে না? নিজের মনে উত্তরটা খোঁজার চেষ্টা করে। দীর্ঘক্ষণ পরে উত্তরটা পায়। না, সে রাহাতকে কোনো আশ্বাস দেয় নাই। বরং রাহাতকে বলেছে, নেটে সে শুধুই তার একজন ভাল বন্ধু। কিন্তু রাহাত যদি কল্পনায় দুঃস্বপ্ন দেখে থাকে তার দায় তো আর রাস্নার না।
রাস্না চায় রাতে পাভেল এসে ওর নেটবুকটাকে চুরমার করে দিয়ে ওকে বুকে টেনে নিক। ওকে পিষ্ট করে ফেলুক। কিন্তু সে এতোটাই ভদ্রলোক যে, সব কিছু তার সিস্টেমের ভিতরে করতে হবে। আসল কাজের সময়েও সে ওর অনুমতি নিয়ে তারপরে...
কিন্তু ব্যাবসার কাজে ইদানিং এতটাই ব্যস্ত যে, ছেলে দুটি সহ রাস্না কীভাবে জীবন কাটাচ্ছে- ওদের পড়ালেখার খবরাখবর এসব কোনোকিছুরই খেয়াল নেই। সে শুধু টাকা আয় করে সব রাস্নার হাতে তুলে দিতে জানে। কিন্তু রাস্না চায় ওর হৃদয়ের খবরটাও পাভেল জানুক। রাস্নাকে সে সময়ে অসময়ে জোর করুক। কিন্তু সব ইচ্ছাই কি পুর্ণ হবার?
রিক্সাটা বাসার সামনে এসে থেমে যায়। কিন্তু রাস্না ওর চিন্তার জগত থেকে বের হতে কিছুটা সময় নেয়। ওর বুকের ভিতর থেকে পাভেলের জন্য মায়া-কষ্ট ও ভালোবাসা এক হয়ে চোখের ভিতর দিয়ে বের হয়ে আসতে চায়।
নাহ! বন্ধুটার সাথে এ ক’দিন অনেক খারাপ ব্যবহার করা হয়ে গেছে। আজ সব কিছু সে নিজে উদ্যোগি হয়ে ভুলিয়ে দেবে। একটা শিহরণ রাস্নার সারা শরীরে বয়ে যায়। আশপাশটা হঠাত করে ওর চোখে খুব সুন্দর হয়ে উঠে।
ছেলের হাত পরম মমতায় পাভেলের হাতে রুপান্তরিত হয়। রাস্না নির্ভরতায় সে হাত ধরে সিড়ি বেয়ে উঠে যায়।
... ...
এখন অনেক রাত।
রাস্না একাকী সামনের বারান্দায় বসে আছে। শরীরে এবং মনে এক অদ্ভুদ আবেশ জড়ানো। নিশ্চুপ এই মাঝ রাতে কত কিছুই যে মনে হচ্ছে।
শেষ পর্যন্ত ওদের ভিতরের খরা কেটে গেছে। কিছুক্ষন আগে বৃষ্টি নেমেছিল... তবে কোনো ঝড় ছিল না। একটানা ঝির ঝিরে বৃষ্টি। পাভেলের সাথে যে দুরত্তটুকু এই ৬ মাসে তৈরী হয়েছিল, শান্ত লেকে ইঞ্জিন ছাড়া নৌকায় করে সময় কাটিয়ে সেই দুরত্ত ওরা নিমিষে পার করেছে... ঢেউয়ের তালে তালে কখনো পাভেল ... কখনো সে...
পাভেল ওর পাশে এসে দাড়িয়েছে। গোসল করার পরে চুলগুলো না আঁচড়ানোতে ওকে আরো আকষর্নীয় লাগছে। ল্যাপটপটা সামনে বাড়িয়ে দিয়ে বলে, ‘ নাও!’
রাস্না ওর দিয়ে তাকিয়ে হাত দিয়ে সেটা সরিয়ে দিয়ে বলে , ‘না। ওর কাজ ফুরিয়েছে।‘ পাভেলের হাত ধরে কাছে টেনে আনে... একটা পুরুষালি তৃষিত অধর তৃষ্ণা মেটাতে খুব কাছাকাছি চলে আসে...
নিশ্চুপ মাঝ রাতে... কোথাও কোনো শব্দ নেই।
শুধু ভালবাসা অন্ধকারের হাত ধরে জোনাকি হয়ে ভেসে বেড়ায়!
... ... ...
রাহাত স্ট্যাচুর মত বিছানায় বসে আছে।
আজ রাস্নাকে নেটে না পাওয়াতে ওর মোবাইলে ফোন দিয়েছিল। অনেক কথা হল। এখন একটা বিচ্ছিন্ন অনুভুতি নিয়ে সে চিন্তা করছে। রাস্না আজ ওকে জানিয়ে দিয়েছে, সে কেবলি ওর একজন ফেসবুক ফ্রেন্ড। অন্য কিছু যেন সে ভেবে কষ্ট না পায়। ৬ মাস ধরে ওদের ভিতর যেটা চলে আসছিল- তাকে কি নাম দেয়া যায়? ভালোবাসা বা প্রেম তো বলা যাবে না। প্রেম সে করেছে পিম্পির সাথেই। তবে কেন রাস্নার সাথে এই নতুন করে আবেগের শিকলে আটকে যেতে চাইছে সে? কবেকার কয়েকটা কার্ডের প্রকাশের ভিতরেই কি শেষ হয়ে যাবে ওর হৃদয়ের সকল ভাললাগা?
এতই ঠুনকো ভালোবাসা?
আবার এটাও মনে হল, আজ রাস্না ওর মনের ভিতরের চাওয়াটাকে শেষ করে দেয়াতেই কি এই ভাবে ভাবছে সে?
তবে ভাবনার জগতে আর একটা নতুন দিকের সন্ধানও পেল সে। রাস্না বলেছে, পাভেলের সাথে যতো কিছুই হোক না কেন, তাকে সে ভালবেসেছে... একবার ভালবাসলে তাকে আর ত্যাগ করা যায় না। সত্যিকারের ভালোবাসা কখনো মরে না। সেটা পলিতে আটকে যেতে পারে। কিন্তু তুমুল বৃষ্টি বা ঝড়ে সেই পলি ভেসে গিয়ে ভালবাসার নতুন ঝকমকে চেহারাটা ঠিকই ফুটে উঠে।
বিদ্যুৎ চমকের মত রাহাতও তখন রাস্নার যায়গায় পিম্পিকে বসায়। সেও তো রাহাতকে ভালবেসেছে। তবে ওর ধারনাটা সম্পুর্ণ ভুল ছিল। পিম্পি এখনো ওরই রয়ে গেছে। কাগজের কয়েকটা টুকরোর উপরে কয়েক লাইন লিখা দিয়ে কি সেটা ঢেকে দেয়া যায়?
পিম্পি হয়তো এক সময়ের ওর ভাললাগাকে সম্মান দিতে ঐ কার্ড গুলোকে রেখে দিয়েছে। একটা গোপন মধুর স্মৃতি হিসেবে...
পিম্পি শুয়ে শুয়ে কি যেন পড়ছিল। সেদিকে তাকিয়ে রাহাত এক পরম মমতা অনুভব করে। মুহুর্তে যে হৃদয় রাস্নার দিকে ঝুঁকে ছিল সেটা দিক পরিবর্তন করে পিম্পি অভিমুখী হয়ে পড়ে। ব্যাক টু দ্য প্যাভিলিয়ন...
পিম্পি বই রেখে রাহাতের দিকে তাকায়। ওর চোখে সেই পুরনো আলো জ্বলে উঠতে দেখে পিম্পির হৃদয়ে হাজার পাওয়ারের বাল্বটা আবারো জ্বলে উঠে। হৃদয় ভেসে যায় চোখের জলে। দুটি হৃদয় দু’দিক থেকে ভিন্ন ভিন্ন ভাললাগা যা তাদের জন্য ছিল না- সেটার মায়া কাটিয়ে এক হয়ে যায়...
একটা ঝড় উঠে... অনেক দিনের পরে।
এরপর শুধু একটানা বৃষ্টি...
শেষ কথা...
আমি নিজেকে একজন হৃদয় বিশেষজ্ঞ বলে আমার লিখায় পরিচয় দিয়ে থাকি। একজন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ। কিন্তু আমি আসলেই কি সেটা বা না- সেদিকে না যেয়ে একটা সোজা কথায় চলে যাই।
এখানে পাভেল-রাস্না পিম্পি-রাহাত... এরা আমি-আপনি এবং সে। আমাদের ভিতরে ছোট খাট বিভিন্ন ভুল বোঝাবুঝি কিংবা ঝোঁকের মাথায় এক হৃদয়ের অন্য হৃদয়ে কৌতূহলের বশে উঁকি মারার ফলে বিভিন্ন জটিলতার সৃষ্টি হয়। আমরা প্রিয়জন থেকে অনেক সময়ে অনেক দূরে সরে যাই। সেখান থেকে ফিরে আসা অনেক কষ্ট সাধ্য হয়ে দাঁড়ায়। অনেক সময় আর ফিরেই আসা হয় না। ভাললাগার মৃত্যু হয়।
এজন্য এই পরিস্থিতিতে নিজেরদের ভালোবাসা শুরুর সেই উদ্দাম প্রথম দিনগুলিতে ফিরে যেয়ে, সেখান থেকে পুরনো ভালোবাসা হৃদয়ে মেখে নিলেই দুরত্তটা কমে যাবে। আর একজন অন্যজনকে বোঝার চেষ্টা করতে হবে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে। চোখে যতই নেতিবাচক দেখা যাক না কেন যে কোনো ঘটনা- কিন্তু মনে রাখতে হবে আমি যা দেখছি সেটাই একমাত্র সত্য না। এর পিছনে আরো একটা কিছু আছে যা আমি এই মুহুর্তে উপলব্ধি করতে হয়তো পারছি না। কিন্তু একটু সময় নিয়ে পার্টনারের সাথে একান্তে সরাসরি আলোচনা করলেই সমাধান বেড়িয়ে আসবে।
এটা এই হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের ব্যাক্তিগত জীবনের উপলব্ধি।
সবাই ভাল থাকুন... হৃদয় যেন আপনারদের পার্টনারের সাথেই এক মুখী হয়...
আমি আর তুমিতেই যেন সীমাবদ্ধ থাকে... সে তে যেন না যায়!
বিষয়: সাহিত্য
১০৮৪ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আল্লাহ পাক তোমার দোয়া কবুল করুন-আমীন। তোমাকেও ভালো রাখুন।
অনেক শুভেচ্ছা রইলো।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
ইনশা আল্লাহ।
ভালো থাকুন।
অনেক শুভেচ্ছা।
অনেক শুভেচ্ছা আপনার জন্য।
ভালো থাকবেন।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
আপনার ফেসবুক আইডি'র লিঙ্কটি দিন- ইনবক্সে মোবাইল নাম্বার দিচ্ছি।
কিংবা ই-মেইন আইডি দিন, মেইল করছি।
অনেক ধন্যবাদ।
আমার ফেইসবুক আইডি লিংক মামুন ভাই.....
http://www.facebook.com/quamrulhasanforazi
রিকোয়েষ্ট পাঠাচ্ছি।
ইতোমধ্যে হয়তো গ্রহন করা হয়েও গেছে।
অনেক শুভেচ্ছা।
ভালো থাকবেন।
সামনের পথগুলোতে আপনার দোয়ার প্রত্যাশায় রইলাম।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
মন্তব্য করতে লগইন করুন