সাইকো গল্প "লতিফের জবাই" (দূর্বলচিত্তের পড়া বারণ)
লিখেছেন লিখেছেন ইনতেহাব হোসাইন জাওয়াদ ০২ অক্টোবর, ২০১৪, ০৬:২৪:৪৮ সন্ধ্যা

আমাকে ছেড়ে দাও, আমি বাঁচতে চাই"- চিৎকার করছে আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী... কিন্তু তার কথায় কেউ কর্ণপাত করছে না। জুতা বৃষ্টিতে আক্রান্ত রক্তাক্ত লতিফকে দু'জন র্যাব সদস্য প্রায় চ্যাঙদোলা করে টেনে-হিচড়ে নিয়ে আসছেন কুরবানী মঞ্চের দিকে। মঞ্চের চারিপাশ লোকে লোকারণ্য, তিল ধারনের ঠাই নেই। উত্তেজিত জনতার শ্লোগান- "জবাই জবাই জবাই চাই, নাস্তিক লতিফের জবাই চাই" "এক দফা এক দাবী, মুরতাদ লতিফ কুরবানী হবি"...
সাংবাদিক ও ক্যামেরাম্যানদের ব্যস্ত পদচারনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দেশের সবগুলো টেলিভিশন চ্যানেল আজ এই ঐতিহাসিক মুহুর্তটি লাইভ টেলিকাস্ট করবে। মুহুর্তটির স্বাক্ষী হওয়ার জন্য ইতোমধ্যেই বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে মঞ্চের পাশে ভিভিআইপি গ্যালারীতে অবস্থান নিয়েছেন। এদিকে মুরতাদ লতিফের শিরোচ্ছেদ করার জন্য উতলা হয়ে অপেক্ষা করছেন দেশসেরা কসাই জনাব শামীম ওসমান গুমপুরী। লতিফের ধড় থেকে কল্লাটা বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার জন্য গুমপুরীর হাত নিশপিশ করছে। জীবনে বহু মানুষ কেটেছেন জনাব গুমপুরী- কিন্তু আজকের মত এত আনন্দ তিনি আগে কখনো অনুভব করেননি বলে এক নিউজ চ্যানেলকে এইমাত্র জানালেন।
প্রধান অতিথি জনাবা শেষ রাতের তাহাজ্জুদীর জন্য অপেক্ষায় আছে সবাই। তিনি আসলেই নবী অবমাননাকারী এই কুখ্যাত মুরতাদের কুরবানী বাস্তবায়ন করা হবে।
নির্ধারিত সময়েই আসলেন প্রধানমন্ত্রী জনাবা শেষ রাতের তাহাজ্জুদী! উল্লাসে ফেটে পড়লো জনতা। সবাই দাড়িয়ে সম্মান প্রদর্শন করলো। এরপরই লাউডস্পিকারে জনাব গুমপুরীর উদ্দেশ্যে কুরবানী বাস্তবায়নের আদেশ দিলেন জনাবা তাহাজ্জুদী। চারিদিকে পিনপতন নীরবতা নেমে আসলো। সবকিছু স্তব্ধ করে দিয়ে হঠাৎ গা শিউরানো এক অট্টহাসি দিয়ে টিভি ক্যামেরার দিকে ছুরি উচিয়ে ধরলেন কসাই জনাব গুমপুরী। একটা ঝা চকচকে ছুরি তিনি জনতার উদ্দেশ্যেও প্রদর্শন করলেন। এটা দিয়েই আজ নাস্তিক লতিফকে জবাই দিবেন। টিভি ক্যামেরার নজর এখন কুরবানী মঞ্চের দিকে- দু'জন গর্বিত র্যাব সদস্য হাত-পা বেধে রাখা মুরতাদটাকে কুরবানীর বেদীতে ঘাড় চেপে ধরে রেখেছেন। চারিদিক থেকে আবারো রক্ত গরম করা শ্লোগান উঠতে থাকলো- "জবাই, জবাই, জবাই চাই..."। কসাই গুমপুরী "আল্লাহু আকবার" বলে চিৎকার করে উঠলেন, অতঃপর গুমপুরীর ছুরি দ্বারা মুরতাদ লতিফের গলা দ্বিখন্ডিত হয়ে যেতে দেখলো সবাই। ফিনকি দিয়ে রক্ত বেরিয়ে আসতেই প্রতিবাদী জনতা উল্লাসে ফেটে পড়লো। কুরবানী সম্পন্ন হওয়ার কিছুক্ষণ পর জনতার দিকে হাত নাড়িয়ে অভিনন্দনের জবাব দিয়ে কুরবানীস্থল ত্যাগ করলেন প্রধান অতিথি জনাবা শেষ রাতের তাহাজ্জুদী..
বিষয়: বিবিধ
৩২২৫ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য






































পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন