তাবাচ্ছুমের আবদারগুলো (আবদার-৫)
লিখেছেন লিখেছেন গাজী সালাউদ্দিন ১১ মার্চ, ২০১৭, ১০:১৮:৪৭ রাত
বউয়ের সঙ্গে দৃষ্টি বিনিময়,কথা,গল্প,খাওয়া,ঘুম এমনকি ঘামের গন্ধ,সবই ভালো লাগে। বিয়ের প্রথম সময়টায় অন্তত এমনই হয়।
পেশাগত কাজে ঘর থেকে বেরিয়ে ফিরে আসা পর্যন্ত ছটফট করি। তাবাচ্ছুমকে সার্বক্ষণিক সঙ্গ দিতে না পারলেও হাল যুগের ভরসা মোবাইলের মাধ্যমে ঘণ্টা খানিক পর পর ফোন করে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাই।
ছোটবেলায় নতুন বিয়ে করা এক স্যারকে দেখতাম ক্লাস, দোকান, মিটিং- সবখানেই বউয়ের সাথে ননস্টপ ফোনালাপ করতে। আজ আমিও স্যারের চেয়ে কোনো অংশে কম যাইনা। একই কথাকে নয়শত বাহাত্তর বার বলেও মনে হয় কিছুই বলা হয়নি!
মাঝে মাঝে বারবার ফোন করেও ওপাশ থেকে সাড়া না পেলে খুন চেপে যায় মাথায়। “ফোন ধর নাই কেন”,জিজ্ঞেস করার আগেই নরম করে সরি বলে একটা একটা করে কারণ ব্যাখ্যা করে।
একদিন অফিসে কোনো এক কারণে মন বিগড়ে যায়। মন খারাপ হলেই তাবাচ্ছুমের শরণাপন্ন হই। বরাবরের মত সেদিনও ফোন করি। কিন্তু ধরার কোনো নাম গন্ধ নাই! এতে করে মন আরো বিগড়ে যায়।
একপর্যায়ে ফোন ধরে। শ্রাব্য-অশ্রাব্য মুখে যা আসে শুনিয়ে তবেই ক্ষান্ত হই। ওপাশ থেকে শুধু নাক টানার শব্দ শোনা যায়।
আধা ঘণ্টা পর তাবাচ্ছুম ফোন করে। কাঁদো কাঁদো গলায় বলে “সরি, নামাজে ছিলাম বলে ধরতে পারিনি। আপনার কাছে আমার একটা আবদার আছে। শুনে রাগ করবেন না তো”?
ততক্ষণে রাগ মাথা থেকে হাঁটুতে নেমে এসেছে। অভয় দিয়ে বলতে বলি।
“নামাজে দাঁড়ানোর পর আপনার ফোন আসলে অস্থির লাগে, একাগ্রতা ধরে রাখতে কষ্ট হয়। ভয় হয়, আল্লাহ্ যদি আমার উপর নাখোশ হন! তাই নামাজের সময়গুলোতে মোবাইল সাইলেন্ট করে রাখতে চাই, অর্থাৎ প্রতি নামাজের আওয়াল ওয়াক্তের সময়টা। আপনিও তখন ফোন করবেন না। প্লিজ, আমার কথায় কষ্ট না নিলেই খুশি হবো!”
কিছুক্ষণ চুপ করে থাকি। মনে মনে আল্লাহ্র নিকট তাওবা করে নেই। তারপর বলি, “সরি, তুমিই ঠিক। পুণ্যের কাজে আল্লাহ্ যেন আমায় আজীবন তোমার সহযোগী করেন.......................................”।
বিষয়: বিবিধ
১৭৩৯ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য






































পাঠকের মন্তব্য:
স্বামীকে ফোন দিলে কি ইগোর ফালুদা হয়ে যায়?
ইগোর ফালুদা হয়না। বোঝাপড়াটা ভালো হয়রে হতচ্ছাড়া!
এই ব্যাপারটায় আমিও যথেষ্ঠ সচেতন। ফাঁকি ঝুঁকি আমি অন্ত দিতে পারিনা। বিশ্বাস করি, আমার আল্লাহ্ সবই দেখছেন, কর্তৃপক্ষ না দেখলেও।
তবে বিষয়টি কাজের ধরণের উপর নির্ভর করে। আমার যে কাজ, আলহামদুলিল্লাহ্ বেশ দ্রুত করতে পারি। তাই কাজেরফাঁকে ফাঁকে এভাবে কথা বললে তেমন সমস্যা হয়না। তবে চেষ্টা থাকে, বার বার কথা বলবো কিন্তু অল্প কয়েক মিনিট করে। টাচে রাখতে চাই। এইতো বাচ।
তুলে ফেলেছি কোনো এক ভর দুপুরে, কিন্তু আমরা সানাই বাজাইনি, তাই আওয়াজ পাননি।
আমার বউকেই তো দিচ্ছি, পর নারীকে নয়!!!!!!
বউ আপনি করে বলাটা সন্মান দেখান নয়। আরবী বা ইংরেজি ভাষায় আপনি ডাকার সুযোগ নাই!!
সম্মান দেখানো নয়, বলতে পারেন অভ্যস্ততা।
গলা কেটে ফেললেও আপনি থেকে তুমিতে নেমে আসবেনা। আবার কেউ ছোট বড় সবার ক্ষেত্রেই তুই।
হ্যাঁ, ওইসব ভাষায় আপনি ডাকার সুযোগ নাই, কিন্তু আমাদের আছে বলে ডেকে যাই, তাতে অসুবিধা কোথায়।
মন্তব্য করতে লগইন করুন