কুঞ্চি বাঁশের চেয়ে মোটা হতে চাস নে...
লিখেছেন লিখেছেন স্বপ্নচারী মাঝি ২৯ মার্চ, ২০১৬, ০৯:২০:০০ রাত
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী তনু হত্যা নিয়ে দেশব্যাপি চলছে নানা গুঞ্জন। তনু হত্যা-ধর্ষণের সাথে সেনাবাহিনীর যোগসাজশ খুঁজে বের করারও একটা চেষ্টাও দৃশ্যমান হয়ে উঠছে। জনগণের আবেগ অনুভূতিতে আঘাত লাগার এই সুযোগ ব্যবহার করে শাহবাগীদের ভাঙ্গা দোকান পুনঃমেরামতের প্রচেষ্টাও লক্ষণীয়। বিভিন্ন স্থানে আগের মতই এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে জমিয়ে তোলায় চেষ্টা করা হচ্ছে তথাকথিত গণজাগরণ মঞ্চ। চাঙ্গা করার চেষ্টা চলছে চেতনা ব্যবসায়ীদের। তারই অংশ হিসেবে কুমিল্লার আন্দোলন টেনে আনার চেষ্টা চলছে শাহবাগে। এমনকি হাস্যকর হলেও সত্য যে, তনু হত্যার প্রতিবাদে শাহবাগে আয়োজন করা হয়েছে নাচ-গানের ওপেন কনসার্টের।
শুধু তনু কেন? আমরা কোন বোনের জীবনেই এমন বর্রতার ছোবল দেখতে চাই না। স্বাধীন সার্বভৌম দেশের নাগরিক হিসেবে এমন ঘটনা চরম লজ্জা ও অপমানের। এমন নির্লজ্জ, অনিরাপদ ও বিবেকহীন বাংলাদেশ আমাদের কারোই কাম্য হতে পারে না। প্রশ্ন ওঠে জাতির জন্য এমন অপমানজনক ঘটনা সেনানিবাস এলাকায় কি করে ঘটলো? যেখানে প্রবেশের জন্য সকলকেই পরিচয় দিয়ে প্রবেশের যৌক্তিক কারণ ব্যাখ্যা করতে হয়! আর তাই বিষয়টি নিয়ে তাই প্রশ্ন উঠেছে সর্বমহলে। কিন্তু অনেকেই মনে করতেন যে, এটি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কথিত বন্ধুরাষ্ট্র কর্তৃক পরিচালিত ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ঘটে যাওয়া একটি দুর্ঘটনা। যেমনিভাবে ২০০৯ এর ২৫শে ফেব্রুয়ারীতে বিপথগামী বিডিআরদের সহযোগিতায় পিলখানায় নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছিল। কিন্তু প্রশ্ন উঠতে পারে এর পেছনে কি উদ্দেশ্য থাকতে পারে?? এ গভীর প্রশ্নের জবাব কিছুটা হলেও আজ শাহবাগে মিলেছে। যার উত্তর আজ স্পষ্ট হলো।
একথা আজ মুখে মুখে প্রচলিত যে, শাহবাগ ওপারের ইশারা ছাড়া নড়ে না। যদিও ওপারের সর্বাত্মক সহযোগিতা সত্ত্বেও এদেশের জনগণের সচেতন হয়ে ওঠায় নিভে যেতে বাধ্য হয় শাহবাগের নাস্তিক্য চেতনার মশাল। যাইহোক তনু হত্যার প্রসঙ্গে ফিরে আসি। তনুকে গত ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকায় ধর্ষণের পর নিমর্মভাবে হত্যা করে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা। আর পরেরদিন ২১ মার্চ দেশের সেনানিবাসগুলোকে আইনের আওতায় আনতে ‘সেনানিবাস আইন, ২০১৬’পাশের প্রস্তাব তোলা হয় অবৈধ সরকরের মন্ত্রিসভায়। তবে এ প্রস্তাবে তিন বাহিনীর আপত্তি থাকায় ভেস্তে যায় সেদিনের পরিকল্পনা। ফলে আরো যাচাই-বাছাই ও তিন বাহিনীর মতামতসহ উপস্থাপন করার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ফেরত পাঠানো হয়।
এবার আসুন মিলিয়ে দেখা যাক। আজ শাহবাগে আন্দোলন চলাকালীন একটি সেনাবাহিনীর প্রাইভেটকারের পথরোধ করে কথিত আন্দোলনকারীরা। সেখানে নানা রংয়ের পোস্টার ও ফেস্টুন প্রদর্শণ করা হয়। দেয়া হয় সেনাবাহিনী বিরোধী উগ্র বক্তব্য। সেসময় আমাদের টিভি সাংবাদিকদের সে বক্তব্য ও ঘিরে ফেলার দৃশ্য ভিডিও করতে এবং লাইভ প্রচার করতে দেখা যায়। সেখানে একাধিক কথিত আন্দোলনকারীকে বহন করতে দেখা যায় “কুঞ্চি... বাঁশের চেয়ে মোটা হতে চাস নে” লেখা সম্বলিত পোস্টার। এখন আসুন হিসেব মেলানোর চেষ্টা করি। তনু ধর্ষণ ও হত্যার সাথে বাঁশ ও কুঞ্চির সম্পর্ক কোথায়? বাঁশের চেয়ে কুঞ্চি মোটা হওয়ার প্রসঙ্গই বা কেন? আপাত দৃষ্টিতে প্রশ্ন দুটি অপ্রাসঙ্গিক বলে মনে হচ্ছে? জ্বি না, এটি মোটেই অপ্রাসঙ্গিক বা অবান্তর প্রশ্ন নয়।
ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে সেনানিবাসগুলোকে আইন করে নিজেদের আওতায় নিতে চায় জনগণের পশ্চাতদেশ ভেদকারী বাঁশ নামক ভারতের আজ্ঞাবহ অবৈধ সরকার। সেখানে একমাত্র বাঁধা রয়ে গেছে কুঞ্চি নামক সেনাবাহিনী। ওপারের কাকাবাবু আর দাদাবাবুদের প্রশ্রয়ে বেড়ে ওঠা অবৈধ সরকারের জন্য এটাই সর্বশেষ হুমকি। যা দূর করতে পারলে ২০৪১ কেন ৩০০০ সাল পর্যন্ত ক্ষমতা আকড়ে থাকতেও তাদের কোন সমস্যা হবে না। তাই তনু ইস্যুতে বাড়াবাড়ি সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত ও জনবিরোধী সাব্যস্ত করে সেনানিবাসগুলোকে বাকশালী আইনের আওতায় আনার প্রচেষ্টার অংশ কিনা তা সেনাবাহিনীর পাশাপাশি দেশবাসীকেও ভেবে দেখার সময় এসেছে। এদেশের রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের প্রতিচ্ছবি আমাদের গর্বিত সেনাবাহিনীকে নখ-দন্তহীন পোষা কুকুরে পরিণত করতে পারলেই দেশটা সিকিমে পরিণত করা মিনিটের ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। নাসির উদ্দিন ইউসূফ বাচ্চুদের বক্তব্য সেদিকেই ইঙ্গিত করে।
যদি তাই না হবে তাহলে শাহবাগী এক্টিভিস্ট কৃষ্ণকলির নেশাগ্রস্ত স্বামীর লালসার শিকার গৃহকর্মী জান্নাত আক্তার শিল্পীকে হত্যা ও ধর্ষণ নিয়ে কেন তাদের মাথাব্যাথা নেই? জান্নাত আক্তারের কলেজে পড়ার সৌভাগ্য ছিল না বলে? নাকি ফেসবুক একাউন্ট নেই তাই? তনু আর জান্নাত উভয়েই পাশবিক লালসার শিকার। কিন্তু কেন একতরফা আন্দোলন? একদিকে নিজেরাই ধর্ষণ করে হত্যা করছে ভাগ্যাহত গৃহকর্মীকে আর অন্যদিকে বিচার চাইছে আরেক ধর্ষিতার ধর্ষকদের! কেন এমন তফাৎ...? জবাব একটাই। এসবকিছুই কুঞ্চি ছেটে ফেলার আয়োজন। বিচারের দাবি এখানে গৌণ...
বিষয়: রাজনীতি
২৯১০ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ওহ, আপনার লেখা পড়ছিলাম, আর বারবার শিহরিত হচ্ছিলাম! শাহবাগীরা আবারও মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে চাইছে, তাতে কোন সন্দেহ নেই।
বাঁশ কঞ্ছির বিষয়টা আমার কাছে খুবই প্রাসঙ্গিক মনে হচ্ছে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন