সত্য উন্মোচন --- আলি সিনা (১)
লিখেছেন লিখেছেন শুভ্র আহমেদ ১২ জুলাই, ২০১৪, ০৫:০৩:১৩ বিকাল
শুরুর আগে কিছু কথাঃ
সিনা নামটা অনলাইন জগতের ভালো একটা প্লাটফর্ম তৈরি করলেও আজ পর্যন্ত এই নামের কারো চেহারা দেখা যায় নাই। তবে অনলাইনে তার ভালোই প্রভাব পড়েছে, পড়েছে নাস্তিকদের মস্তিষ্কের উপড়। দীর্ঘদিন পর্যন্ত তার ওয়েব সাইটের হোম পেজে একটা লেখা লক্ষ করেছি। ডাঃ জাকির নায়েক এবং উইলিয়াম ক্যাম্পবেল -এর ডিবেটকে ডিফেন্স করে কোরআনন - কে সাইন্টিফিক এরর প্রমানের এক ( অপ) চেষ্টা করেছেন তিনি সেই লেখায় । জাকির নায়েক যে সেই ডিবেটে জিতেছে, সেটা কিন্তু অস্বীকার করা কোনো ভাবেই যাবে না। কিন্তু আলি সিনার মতে, ডাঃ জাকির নায়েক একজন ম্যাজিশিয়ান। কেনো তিনি ডাঃ জাকির নায়েককে ম্যাজিশিয়ান বললেন? এখানে ম্যাজিকের কিছু ঘটেছিল কি? আলি সিনার মতে, ফটাফট রেফারেন্স দেওয়া একটি মানুষকে আশ্চর্যিত করতে পারে। আর সেই ডিবেটে ডাঃ জাকির নায়েকের জয়ের কারণ, বাইবেলের ভুল গুলো কোড করায় উলিয়াম ক্যাম্পবেল এর মগজে আঘাত লেগেছিলো। তাই জাকির নায়েকের কথা গুলো আসলে যে কিছুই নয় তা-ই আলি সিনা এই লেখাটিতে লিখেছেন। । হয়তো এটাই আলি সিনার লেখা সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ লেখা, কারণ দীর্ঘদিন এই লিখাটাকেই হোম পেইজে রেখে দিয়েছেন। যাই হোক, তার এই (অপ)চেষ্টায় জল ঢেলে দিতে চাচ্ছি। আশা রাখা যায় সফল হবো। [যদিও লেখার প্রতি পর্বে কিছু ( D.....g) ঘেউ ঘেউ করবে, তবুও মনের মাঝে যে ইচ্ছা হয়েছে সেটা পূরণের চেষ্টা করে যাবো।
প্রথমত, জাকির নায়েক যে ইসলামকে প্রসারে অভূতপূর্ব অবদান রেখে চলেছেন, এটা আলি সিনার সহ্য হয় না। হয়তো তার চুলকানি আছে, নয়তো বিখ্যাত হওয়ার একটা সুবর্ণময় সুযোগে আছে। লেখাটা আমার পক্ষে এক দিনে শেষ করা সম্ভব নয়। তাই ১ পর্ব, ২ পর্ব, ৩ পর্ব.........করে শেষ করতে হবে। আলি সিনা প্রথমেই যে অভদ্রতা করেছেন, নিজে একটা ছবি ইডিট করেছেন। আপনারা লিংকে গেলেই খেয়াল করবেন। নাস্তিকরা প্রায় এই লিংকটি দিয়ে থাকে এই ভেবে যে, ২০০৪ সাল থেকে আলি সিনা ইনভাইট করে আসছে অথচ জাকির নায়েক কোনো পাত্তা দিচ্ছেন না। উল্লেখ্য, তাদের বোঝা উচিত যে, জাকির নায়েক আলি সিনাকে কোনো রিসপন্স বা আলি সিনা জাকির নায়েকের লেকচারে ভুল পেয়েছে এর মানে এটা নয় যে, জাকির নায়েক এগুলোর উত্তর জানেন না। আমি আর কথা না বাড়িয়ে, আলি সিনার লেখাটি মূল্যায়ন করবো। তিনি মোট ৩২ টি পর্ব করেছেন। তাই আমাকেও কম হলে ২০-২৫ টি পর্ব করতে হতে পারে। তাই পাঠক নিয়মিত আশা করছি।
আলি সিনা লিখেছেন মোট ৩২ টা পর্ব বা বিষয় নিয়ে, উপড়ে তিনটার উত্তর অলরেডি দেওয়া হয়ে গিয়েছে।
তাহলে আমরা এর পরের টা থেকে শুরু করবো যে পর্বের নাম আলি সিনা দিয়েছে " Big Bang in the Quran? " " কুরানে বিগব্যাং? "
আলি সিনা লিখেছেনঃ
(Dr. Naik) As far as Qur’an and modern Science is
concerned, in the field of ‘Astronomy’, the Scientists, the
Astronomers, a few decades earlier, they described, how
the universe came into existence - They call it the ‘Big
Bang’.
And they said… ‘Initially there was one primary
nebula, which later on it separated with a Big Bang, which gave rise to Galaxies, Stars, Sun and the Earth, we
live in.’ This information is given in a nutshell in the
Glorious Qur’an ,
in Surah Ambiya, Ch. 21, Verse No. 30,
which says…. (Arabic).... Do not the unbelievers see…?
…. (Arabic)…. ‘That the heavens and the earth were
joined together, and we clove them asunder?’
Imagine this information which we came to know recently, the
Qur’an mentions 14 hundred years ago."
(Ali Sina) In his fervor to make the Quran look scientific
Dr. Naik overlooks the fact that the theory of Big Bang
precludes the concept of creation. If Big Bang is true
then the story of the creation and Adam and Eve must be
false and vice versa. This is elemental.
21:30 ,
‘ The heavens and the earth were joined together,
and we clove them asunder’
This is not an allusion to the Big Bang. It is the
rehashing of the Genesis:
6 And God said, "Let there be an expanse between the
waters to separate water from water." 7 So God made
the expanse and separated the water under the expanse
from the water above it. And it was so. 8 God called the
expanse "sky." And there was evening, and there was
morning—the second day. (Gen 1: 6-9)
So if this is a miracle, the credit should go to the Bible
and not to the Quran. This fable, like many others, is
borrowed from the Bible.
আমার জবাবঃ
দেখুন এই প্রশ্ন কথা গুলোই কিন্তু ক্যাম্পবেল সাহেব বলেছিলেন। তাহলে শুধু শুধু লেখার দরকার কি ছিলো? এখানে আলি সিনা যে ক্লেইম টা করেছেন সেটি হল, কোরআন বাইবেলের জেনেসিস থেকে চুরি করা। এই উত্তর ডাঃ জাকির নায়েক কিন্তু দিয়েছেন। http://www.irf.net/irf/dtp/dawah_tech/t18/t18a/pg1.htm এবং http://www.youtube.com/watch?v=e535Mj98bec&feature=youtube_gdata_player
নবীজি ছিলেন নিরক্ষর, অর্থাৎ একটি বই থেকে কোনো কিছু কপি করে যে বলতে হবে এই যোগ্যতা টুকু তার ছিলো না। অর্থাৎ কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছিল না। এরপরেও আয়াত দুটো খেয়াল করলে যে কেউ এর মধ্যকার পার্থক্য দেখে উচ্চস্বরে হেসে উঠবে। আর এমন হাস্যকর অবাস্তব কথাটা লিখেই আলি সিনা একটু অংহকারের মধ্যে ছিলেন। যাই হোক, তার কাজ ইসলামকে গালমন্দ ছিটকানো, সেটা তিনি করেছেন, আর কি লাগে?
একটা জিনিস আমি জানি না, কেউ যেনে থাকলে জানাবেন, আলি সিনা থাকে কানাডা। কানাডা তো কোনো ইসলাম প্রধান দেশ না, তাহলে কেনো তিনি লুকিয়ে আছেন ?এখানে ধারনা করা যায় যে, তিনি ( আলি সিনা) নামক কোনো এক্স-মুসলিম ই নাই। এটা কোনো বোকা খ্রিষ্টান অথবা ইহুদীদের ই কাজ।
আলি সিনা লিখেছেনঃ
21:30 presents also another problem. It contradicts with
the verse 41.11
"Moreover He comprehended in His design the sky, and
it had been (as) smoke: He said to it and to the earth:
"Come ye together, willingly or unwillingly. They said:
"We do come (together), in willing obedience."
So which story is the right tale of the creation? Were the
heaven and the earth joined together and Allah clove
them asunder or were they apart and Allah told them to
come together?
আমার জবাবঃ
পাঠক, আলি সিনা বলছেন আয়াত ২১:৩০ এবং ৪১:১১ আয়াত পরস্পর বিরোধী তথা দুটো দুই রকম কথা বলছে।
আসুন আলোচনার মাধ্যমে কি প্রমানিত হয় একটু দেখি।
আয়াত দুটির প্রসঙ্গ আলাদা। প্রথম আয়াতে মহাবিশ্বের সৃষ্টির কথা এবং দ্বিতীয়
আয়াতে সৃষ্টির
পরবর্তীতে ডিজাইনের
কথা বলা হয়েছে। আরো লক্ষ্যণীয় যে, প্রথম
আয়াতে ‘হেভেন্স’ এবং দ্বিতীয়
আয়াতে ‘হেভেন’ ব্যবহার
করা হয়েছে। কোরআনে সাধারণত
‘হেভেন্স’ বলতে পৃথিবী ছাড়া সম্পূর্ণ
মহাবিশ্বকে বুঝানো হয়েছে
এবং ‘হেভেন’ বলতে আকাশকে বুঝানো
হয়েছে। ‘Come both of you (heaven
and earth)’ বলতে পৃথিবী ও আকাশকে বুঝানো হয়েছে। এখন যেভাবে পৃথিবী ও আকাশ
পাশাপাশি অবস্থান
করে একটি ভারসাম্য
রক্ষা করছে, পৃথিবী সৃষ্টির শুরুতে হয়তো তেমন ছিল না। আয়াত ৪১:১১-তে কিন্তু
কোনো ভাবেই হেভেন্স ও
পৃথিবীকে একত্রিত করে ‘ওয়ান ইউনিট’ বানানোর কথা বলা হয়নি। আয়াত ২১:৩০
একটি বৈজ্ঞানিক ঈঙ্গিত । বিজ্ঞানীদের মতে ,
“বিগ-ব্যাং এর অনেক
পরে যেহেতু
পৃথিবী সৃষ্টি হয়েছে সেহেতু
বিগ-ব্যাং এর সময় হেভেন্স ও
পৃথিবী আলাদা হয়
কীভাবে?
সাদা চোখে দেখলে সেরকমই
মনে হয়। যেহেতু
কোরআন লিখা হয়েছে পৃথিবী বাসিন্দাদের জন্য সেহেতু
কোরআনে সম্পূর্ণ মহাবিশ্বকে ‘হেভেন্স’ ও
‘পৃথিবী’ দ্বারা দুটি পৃথক ব্লকে ভাগ করা হয়েছে (হেভেন্স +
পৃথিবী = মহাবিশ্ব)। অনুরূপভাবে, মঙ্গল গ্রহে বসে কোরআন লিখা হলে সম্পূর্ণ
মহাবিশ্বকে ‘হেভেন্স’ ও ‘মঙ্গল
গ্রহ’ দ্বারা ভাগ করা হতো। অতএব, এই পৃথিবী বর্তমান অবস্থায় অনেক পরে এলেও
বিগ-ব্যাং এর সময় কি মহাবিশ্বের একটি অংশ
ছিল না? নাকি পৃথিবীটা পরবর্তীতে
আবার শূন্য থেকে দ্বিতীয়
বিগ-ব্যাং এর
মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছে! সুতরাং আলি সিনা এখানে একটা কাতুকুতু করে কোরআনকে ভুল প্রতিপন্নের চেষ্টা চালিয়েছেন। আর ব্যাপক ভাবে ব্যর্থও হয়েছেন। অতএব, আয়াত ২১:৩০ এবং ৪১:১১ - বলছে যে,
সূরা আম্বিয়া:30 - কাফেররা কি ভেবে দেখে না যে, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর মুখ বন্ধ ছিল, অতঃপর আমি উভয়কে খুলে দিলাম এবং প্রাণবন্ত সবকিছু আমি পানি থেকে সৃষ্টি করলাম। এরপরও কি তারা বিশ্বাস স্থাপন করবে না?
- অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোযোগ দিলেন যা ছিল ধুম্রকুঞ্জ, অতঃপর তিনি তাকে ও পৃথিবীকে বললেন, তোমরা উভয়ে আস ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায়। তারা বলল, আমরা স্বেচ্ছায় আসলাম।"
এখানে পৃথিবীর অস্তিত্ব কিভাবে এলো সেটা বর্ননা করা হচ্ছে। আর ২১:৩০ বিগ ব্যাং ব্যাং এর কথা বলছে।
পরের পর্বে যে ভুলুটা আলি সিনা করেছেন, সেটা জানার পরে কোনো যুক্তিবাদী মানুষই মানতে পারবে না, যে আমি সিনা একজন সৎ ব্যক্তিত্ব।
presented By: Shuvro Ahmed.বিষয়: বিবিধ
১১৮৮ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তার ভণ্ডামী নিয়ে আমার একটি লেখা-
কুর'আনে বিগ ব্যাঙের উল্লেখ; আলি সিনার ব্যর্থ বিতর্ক প্রচেষ্টা
মন্তব্য করতে লগইন করুন